ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
প্রায় একযুগ ধরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের ব্যাটারি ঘাট এলাকায় ময়লা সংগ্রহের কাজ করেন মো. সাব্বির ও রাব্বি নামে দুই যুবক। ময়লা সংগ্রহের পর ওই এলাকার সিটি করপোরেশনের ময়লার ডিপোতেই থাকতেন তারা। ওই ডিপোর পাশে ভাঙারি ব্যবসা করা শহিদের মেয়ে আসমার সঙ্গে তাদের দুজনেরই ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে রাব্বি আসমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতেও আসমা রাজি হয়নি। উল্টো তারই সহকর্মী পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাব্বিরকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আসমা। একপর্যায়ে সাব্বির ও আসমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় এবং রাব্বির কারণে ভেঙেও যায়।
এরপরও প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষোভ থেকে সাব্বিরকে গলায় রশি পেঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ময়লার ডিপোতেই লাশ ফেলে রাখে রাব্বি। পরে সাব্বিরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর গত মঙ্গলবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায় কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। এর আগে গত শনিবার রাতে গলায় রশি পেঁচিয়ে সাব্বিরকে হত্যা করে রাব্বি।
এ ঘটনায় বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ সূত্র এ তথ্য জানান। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাব্বির বাবা মা নেই। সাব্বিরেরও বাবা নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে ময়লা সংগ্রহের কাজ করতো এবং একসঙ্গেই ময়লার ডিপোতে ঘুমাতো। সাব্বির মাদকাসক্ত হলেও রাব্বি কোনো নেশায় আসক্ত ছিল না। ৬ মাস আগে আসমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় রাব্বি। কিন্তু আসমা রাব্বিকে পছন্দ করতো না। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাব দেয় রাব্বি। বিয়ের প্রস্তাবও প্রত্যাখান করে আসমা।
এরই মধ্যে ৪ মাস আগে সাব্বিরকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসে আসমা। রাজি হয়ে যায় সাব্বির। আসমা ও সাব্বিরের এই প্রেমের সম্পর্ক মানতেই পারছিল না রাব্বি। ৩ সপ্তাহ আগে তাদের দুজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসমা সাব্বিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে দেন এবং দুজনকে স্বাভাবিক থাকতে বলেন। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারছিলেন না রাব্বি। ক্ষোভে সাব্বিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার সাব্বির নেশা করে এসে ঘুমিয়ে গেলে, রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে ডিপোর পাশেই লাশ লুকিয়ে রাখে রাব্বি। এরপর থেকে আর খোঁজ মিলছিল না সাব্বিরের। লাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে গত মঙ্গলবার দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সাব্বিরের মা রাবেয়া বেগম। আর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেয়া রাব্বি। যেখানে হত্যার কারণ সম্পর্কে আসমার কাছে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাবের প্রত্যাখান হওয়ার ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন তিনি।
যেভাবে ধরা পড়েন রাব্বি
সাব্বিরের লাশ অর্ধগলিত হওয়ার পর চিনতে পারছিলেন কেউ। এমনকি পুলিশ সাব্বিরের মাকে লাশ দেখতে বললে তিনিও প্রথমে চিনতে পারেননি। এরই মধ্যে রাব্বি বলে ওঠেনÑ ওই যে আমার বন্ধু সাব্বির। আর এতেই মনে সন্দেহ জাগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. আমিরুল ইসলামের মনে। কৌশলে রাব্বিকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। আর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সাব্বিরের মরদেহ পাঠানো হয় ঢামেক মর্গে।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই রাব্বি নারীঘটিত কারণে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আসমাকে জিজ্ঞাসাবাদেও একই রকম তথ্য পাওয়া গেছে।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওমর ফারুক বলেন, ব্যাটারি ঘাট এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬নং ওয়ার্ডের ময়লার ডিপো থেকে সাব্বিরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। এসআই বলেন, নিহত সাব্বির একটি ঠিকাদারি বেসরকারি কোম্পানির পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছিলেন বলে জানতে পেরেছি।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
প্রায় একযুগ ধরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের ব্যাটারি ঘাট এলাকায় ময়লা সংগ্রহের কাজ করেন মো. সাব্বির ও রাব্বি নামে দুই যুবক। ময়লা সংগ্রহের পর ওই এলাকার সিটি করপোরেশনের ময়লার ডিপোতেই থাকতেন তারা। ওই ডিপোর পাশে ভাঙারি ব্যবসা করা শহিদের মেয়ে আসমার সঙ্গে তাদের দুজনেরই ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে রাব্বি আসমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতেও আসমা রাজি হয়নি। উল্টো তারই সহকর্মী পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাব্বিরকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আসমা। একপর্যায়ে সাব্বির ও আসমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় এবং রাব্বির কারণে ভেঙেও যায়।
এরপরও প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষোভ থেকে সাব্বিরকে গলায় রশি পেঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ময়লার ডিপোতেই লাশ ফেলে রাখে রাব্বি। পরে সাব্বিরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর গত মঙ্গলবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায় কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। এর আগে গত শনিবার রাতে গলায় রশি পেঁচিয়ে সাব্বিরকে হত্যা করে রাব্বি।
এ ঘটনায় বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ সূত্র এ তথ্য জানান। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাব্বির বাবা মা নেই। সাব্বিরেরও বাবা নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে ময়লা সংগ্রহের কাজ করতো এবং একসঙ্গেই ময়লার ডিপোতে ঘুমাতো। সাব্বির মাদকাসক্ত হলেও রাব্বি কোনো নেশায় আসক্ত ছিল না। ৬ মাস আগে আসমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় রাব্বি। কিন্তু আসমা রাব্বিকে পছন্দ করতো না। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাব দেয় রাব্বি। বিয়ের প্রস্তাবও প্রত্যাখান করে আসমা।
এরই মধ্যে ৪ মাস আগে সাব্বিরকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসে আসমা। রাজি হয়ে যায় সাব্বির। আসমা ও সাব্বিরের এই প্রেমের সম্পর্ক মানতেই পারছিল না রাব্বি। ৩ সপ্তাহ আগে তাদের দুজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসমা সাব্বিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে দেন এবং দুজনকে স্বাভাবিক থাকতে বলেন। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারছিলেন না রাব্বি। ক্ষোভে সাব্বিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার সাব্বির নেশা করে এসে ঘুমিয়ে গেলে, রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে ডিপোর পাশেই লাশ লুকিয়ে রাখে রাব্বি। এরপর থেকে আর খোঁজ মিলছিল না সাব্বিরের। লাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে গত মঙ্গলবার দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সাব্বিরের মা রাবেয়া বেগম। আর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেয়া রাব্বি। যেখানে হত্যার কারণ সম্পর্কে আসমার কাছে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাবের প্রত্যাখান হওয়ার ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন তিনি।
যেভাবে ধরা পড়েন রাব্বি
সাব্বিরের লাশ অর্ধগলিত হওয়ার পর চিনতে পারছিলেন কেউ। এমনকি পুলিশ সাব্বিরের মাকে লাশ দেখতে বললে তিনিও প্রথমে চিনতে পারেননি। এরই মধ্যে রাব্বি বলে ওঠেনÑ ওই যে আমার বন্ধু সাব্বির। আর এতেই মনে সন্দেহ জাগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. আমিরুল ইসলামের মনে। কৌশলে রাব্বিকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। আর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সাব্বিরের মরদেহ পাঠানো হয় ঢামেক মর্গে।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই রাব্বি নারীঘটিত কারণে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আসমাকে জিজ্ঞাসাবাদেও একই রকম তথ্য পাওয়া গেছে।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওমর ফারুক বলেন, ব্যাটারি ঘাট এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬নং ওয়ার্ডের ময়লার ডিপো থেকে সাব্বিরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। এসআই বলেন, নিহত সাব্বির একটি ঠিকাদারি বেসরকারি কোম্পানির পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছিলেন বলে জানতে পেরেছি।