alt

news » bangladesh

তিস্তায় অবৈধ পাথর উত্তোলন চক্র ফের বেপরোয়া

প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী) : বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫

ডিমলা (নীলফামারী) : অভিযানের মাধ্যমে সাড়ে ৫ হাজার সিএফটি পাথর জব্দ করেন জেলা প্রশাসক -সংবাদ

কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তিস্তা হতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকরী সক্রিয় সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটিকে। মানছেনা প্রশাসনের বাধা নিষেধ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করা হলেও এতটুকু প্রভাব পড়েনি চক্রটির অবৈধ কর্মকান্ডে। আরো বেপরোয়া হয়ে তিস্তা নদী হতে পাথর উত্তলোন মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে অব্যাহত রেখে নতুন জনবল নিয়োগ করেছে। বলা চলে প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে বসেছে পাথর উত্তোলনকারী চক্রটি।

দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ‘ডিমলায় তিস্তা নদীতে চলছে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে উপজেলা প্রশাসন গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাড়ে ৫ হাজার সিএফটি পাথর জব্দ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোছা. ফারজানা আক্তার ও ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফজলে এলাহী।

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীতে পাথর উত্তোলনের কারণে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্ষতির শিকার হচ্ছে তিস্তা পাড়ের নদীভাঙ্গা সর্ববস্ব হারা বাসিন্দারা। স্থানীয়রা বলছেন, একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে নদী থেকে পাথর তুলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।নির্বিচারে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনসহ বর্ষাকালে আকস্মিক বন্যা এবং ফসলি জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাছে প্রতিনিয়ত ।

জানা যায়, প্রায় দুই মাস যাবত তিস্তা নদী ও সংলগ্ন এলাকায় মহাউৎসবে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলনের কাজ। অবৈধ এই কর্মকান্ডের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এই চক্রের হাতে নাজেহাল হয়েছেন অনেক সংবাদকর্মী। প্রশাসনকে জানিয়েও থামানো যায়নি তাদের দৌরাত্ব।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলো নদীভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। ভাঙন এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে এলাকার একাধিক প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় শ্রমিকরা।

তিস্তা ব্যারাজের আশপাশ, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, কালিগঞ্জ, ভেন্ডাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলনে প্রায় ১৫টি প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে। সম্প্রতি তিস্তা ব্যারেজের উজানে তেলির বাজার, ছোটখাতা ও ভাটিতে ডালিয়া বাইশপুকুর এলাক দেখা যায়, শ্রমিকেরা বেলচা, কোদাল ও শাবল ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করে অন্তত অর্ধশতাধিক নৌকায় বোঝাই করেছেন। পরে সে সব পাথর বিক্রির জন্য ট্রাক্ট্ররে করে নিয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে তিস্তা সেচনালার ধারে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানান, নৌকা চলন্ত অবস্থায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত পাখা দিয়ে নদীর তলদেশের বালু সরিয়ে পাথর তুলে পানির ওপরে নিয়ে আসা হয়। এভাবেই নদীর বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক সক্রিয় টিম পাথর উত্তোলন করছে। উত্তোলিত পাথর ৪০-৫০ টাকা সিএফটি দরে স্থানীয় সিন্ডিকেটটি ক্রয় করে জমজমাট ব্যবসা করে আসছে।

আর সিন্ডিকেটের এসব পাথর চরা মূল্যে ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি করে পাথর ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারের কাছে বলে জানান পাথর শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। পাথর পরিবহনকারী একটি ট্রাক্টরের চালক রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁরা ভাড়া চুক্তিতে ৩ মাস ধরে পাথর পরিবহন করছেন। ডালিয়া বাজারের আঃ করিম তাদের নিযুক্ত করেছেন।

এ বিষয়ে করিম বলেন, যারা নৌকার মালিক তারাই পাথর তুলছে। আমি বিভিন্ন দলের কাছে প্রতি সিএফটি পাথর ৬৯ টাকায় কিনে ৭১ টাকা দরে ব্যাবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। আমার মতো অনেকেই তিস্তা নদীর পাথর প্রতিদিন উত্তোলনকারী দলগুলোর কাছ থেকে কিনে নেন। তিনি জানান, গত ৫ বছর নদীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আবার জোরে সোরে শুরু হয়েছে।

নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধভাবে পাথর-বালু উত্তোলণ করে অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন। কিন্তু আমরা নি:স্ব সর্বস্বান্ত হয়েছি। আমাদের বসতভিটা ও আবাদি জমি বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। তাছাড়া পাথর পরিবহনের ট্রাক্টর থেকে পানি পড়ার কারণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ ও স্থানীয় সড়কের বেহাল অবস্থা হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুটিবাড়ি বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার সিএফটি পাথর জব্দ করা হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, নদীর বালু, পাথরের উত্তোলনের বিষয়ে দেখার দায়িত্ব আমাদের না উপজেলা প্রশাসনের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেন, নদী বা মাটির তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনের আইনগতভাবে কোন সুযোগ নেই তাই অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পাথরগুলো জব্দ করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিস্তা নদী হতে অবৈধ পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। থেমে নেই পাথর খেকো সঙ্গবদ্ধ সক্রিয় চক্রটি। মানছে না তারা আদেশ-নিষেধ। অনেকটাই তারা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে বসেছে।

ছবি

যশোরে ‘অনৈতিক’ কাজের অভিযোগে দুই পুলিশ ক্লোজড

ছবি

হাসিনা, সিনহাসহ ৩২ জনের বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে সুখরঞ্জন বালি

ছবি

ঘরে ঘরে জ্বর-কাশি: ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী সামলাতে হিমশিম

ছবি

আবারও সংঘর্ষে জড়ালো ঢাকা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা, পুলিশসহ আহত ১০

ছবি

জাকসু নির্বাচনে উত্তেজনা: ২৯৯ মনোনয়ন

ছবি

তারাগঞ্জে পিটিয়ে হত্যা: এজাহার পুলিশের সাজানো, রুপলালের স্ত্রীর অভিযোগ

ছবি

ভোটারদের আপ্যায়ন করলেই প্রার্থিতা বাতিল

ঘোড়াশালে কচুর লতি তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু

ছবি

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে নন-এসি বাসের ভাড়া বাড়ল ৫৫ টাকায়

ছবি

পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি’র বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ

ছবি

দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই অবৈধ পাথর ও ক্র্যাশার মিলের বিরুদ্ধে অভিযান

ছবি

সুখরঞ্জন ট্রাইব্যুনালে ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গুম ও নির্যাতনের তথ্য প্রকাশ

ছবি

নরসিংদীর মাঠে মাঠে আমন রোপণের ধুম

ছবি

সুন্দরবনসহ উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে শত শত ট্রলার, বন্ধ ইলিশ আহরণ

ছবি

কালের সাক্ষী হয়ে আছে মধুপুরের প্রাচীন চাপড়ী হাট

ছবি

জয়পুরহাটে যৌন নিপীড়নের দায়ে ইউপি কর্মকর্তা কারাগারে

ছবি

পানিতে ডুবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীর মৃত্যু

ছবি

সরিষাবাড়ীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলামের দাফন

ছবি

রাজবাড়ীতে শিশুখাদ্যে ভেজাল, কারখানাকে লাখ টাকা জরিমানা

ছবি

স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

ছবি

চাঁদপুর ক্লিনিং ক্যাম্পেইন

ছবি

কামারপাড়া-বাড়ইপাড়া ২ কিমি. সড়কে ভোগান্তি, সংস্কারের দাবি

ছবি

সুবর্ণচরের খালগুলো প্রভাবশালীদের দখলে

ছবি

মাগুরায় বাইকের ধাক্কায় কৃষক নিহত

ছবি

নাজিরপুরে চিরকুট লিখে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

ছবি

জগন্নাথপুরে সরকারি জায়গায় বিএনপি নেতার দোকান নির্মাণ

ছবি

সরাইলে হাসপাতালের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

মহেশপুরে ট্রাক-বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ১৫

ছবি

মোরেলগঞ্জে দেড় কিমি. রাস্তার অভাবে ৩ হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে

ছবি

নওগাঁয় চাঞ্চল্যকর শিক্ষার্থী হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই

ছবি

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মাদারগঞ্জের যুবক নিহত

ছবি

শ্রীমঙ্গলে কোটি টাকার খাস জমি পুনরুদ্ধার

ছবি

পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষের সম্ভাবনা উজ্জ্বল

ছবি

নোয়াখালীতে পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার ৩

ছবি

মোল্লাহাটে ইয়াবাসহ বিক্রেতা গ্রেপ্তার

ছবি

চট্টগ্রাম মহানগরে ২১ খাল পুনরুদ্ধারে শিগগিরই অভিযান চট্টগ্রাম ব্যুরো

tab

news » bangladesh

তিস্তায় অবৈধ পাথর উত্তোলন চক্র ফের বেপরোয়া

প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী)

ডিমলা (নীলফামারী) : অভিযানের মাধ্যমে সাড়ে ৫ হাজার সিএফটি পাথর জব্দ করেন জেলা প্রশাসক -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫

কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তিস্তা হতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকরী সক্রিয় সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটিকে। মানছেনা প্রশাসনের বাধা নিষেধ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করা হলেও এতটুকু প্রভাব পড়েনি চক্রটির অবৈধ কর্মকান্ডে। আরো বেপরোয়া হয়ে তিস্তা নদী হতে পাথর উত্তলোন মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে অব্যাহত রেখে নতুন জনবল নিয়োগ করেছে। বলা চলে প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে বসেছে পাথর উত্তোলনকারী চক্রটি।

দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ‘ডিমলায় তিস্তা নদীতে চলছে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে উপজেলা প্রশাসন গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাড়ে ৫ হাজার সিএফটি পাথর জব্দ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোছা. ফারজানা আক্তার ও ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফজলে এলাহী।

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীতে পাথর উত্তোলনের কারণে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্ষতির শিকার হচ্ছে তিস্তা পাড়ের নদীভাঙ্গা সর্ববস্ব হারা বাসিন্দারা। স্থানীয়রা বলছেন, একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে নদী থেকে পাথর তুলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।নির্বিচারে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনসহ বর্ষাকালে আকস্মিক বন্যা এবং ফসলি জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাছে প্রতিনিয়ত ।

জানা যায়, প্রায় দুই মাস যাবত তিস্তা নদী ও সংলগ্ন এলাকায় মহাউৎসবে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলনের কাজ। অবৈধ এই কর্মকান্ডের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এই চক্রের হাতে নাজেহাল হয়েছেন অনেক সংবাদকর্মী। প্রশাসনকে জানিয়েও থামানো যায়নি তাদের দৌরাত্ব।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলো নদীভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। ভাঙন এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে এলাকার একাধিক প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় শ্রমিকরা।

তিস্তা ব্যারাজের আশপাশ, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, কালিগঞ্জ, ভেন্ডাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলনে প্রায় ১৫টি প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে। সম্প্রতি তিস্তা ব্যারেজের উজানে তেলির বাজার, ছোটখাতা ও ভাটিতে ডালিয়া বাইশপুকুর এলাক দেখা যায়, শ্রমিকেরা বেলচা, কোদাল ও শাবল ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করে অন্তত অর্ধশতাধিক নৌকায় বোঝাই করেছেন। পরে সে সব পাথর বিক্রির জন্য ট্রাক্ট্ররে করে নিয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে তিস্তা সেচনালার ধারে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানান, নৌকা চলন্ত অবস্থায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত পাখা দিয়ে নদীর তলদেশের বালু সরিয়ে পাথর তুলে পানির ওপরে নিয়ে আসা হয়। এভাবেই নদীর বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক সক্রিয় টিম পাথর উত্তোলন করছে। উত্তোলিত পাথর ৪০-৫০ টাকা সিএফটি দরে স্থানীয় সিন্ডিকেটটি ক্রয় করে জমজমাট ব্যবসা করে আসছে।

আর সিন্ডিকেটের এসব পাথর চরা মূল্যে ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি করে পাথর ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারের কাছে বলে জানান পাথর শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। পাথর পরিবহনকারী একটি ট্রাক্টরের চালক রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁরা ভাড়া চুক্তিতে ৩ মাস ধরে পাথর পরিবহন করছেন। ডালিয়া বাজারের আঃ করিম তাদের নিযুক্ত করেছেন।

এ বিষয়ে করিম বলেন, যারা নৌকার মালিক তারাই পাথর তুলছে। আমি বিভিন্ন দলের কাছে প্রতি সিএফটি পাথর ৬৯ টাকায় কিনে ৭১ টাকা দরে ব্যাবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। আমার মতো অনেকেই তিস্তা নদীর পাথর প্রতিদিন উত্তোলনকারী দলগুলোর কাছ থেকে কিনে নেন। তিনি জানান, গত ৫ বছর নদীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আবার জোরে সোরে শুরু হয়েছে।

নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধভাবে পাথর-বালু উত্তোলণ করে অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন। কিন্তু আমরা নি:স্ব সর্বস্বান্ত হয়েছি। আমাদের বসতভিটা ও আবাদি জমি বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। তাছাড়া পাথর পরিবহনের ট্রাক্টর থেকে পানি পড়ার কারণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ ও স্থানীয় সড়কের বেহাল অবস্থা হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুটিবাড়ি বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার সিএফটি পাথর জব্দ করা হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, নদীর বালু, পাথরের উত্তোলনের বিষয়ে দেখার দায়িত্ব আমাদের না উপজেলা প্রশাসনের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেন, নদী বা মাটির তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনের আইনগতভাবে কোন সুযোগ নেই তাই অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পাথরগুলো জব্দ করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিস্তা নদী হতে অবৈধ পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। থেমে নেই পাথর খেকো সঙ্গবদ্ধ সক্রিয় চক্রটি। মানছে না তারা আদেশ-নিষেধ। অনেকটাই তারা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে বসেছে।

back to top