পূর্ব দিকে বংশাই নদী। ওপারে বসতি আর জনপদ। এ পারে নদীর তীরে বটের ছায়া। দক্ষিণে ঘাটাইল উপজেলা। উত্তর-পশ্চিমে মধুপুর উপজেলা। মাঝখান দিয়ে ছুটে গেছে পাকা সড়ক। পাশেই স্কুল কলেজ। মসজিদ মাদ্রাসা। ডাকঘরের মতো অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। মিলন মোহনার উপর দিব্যি একটা বট বৃক্ষ দাঁড়িয়ে আছে। ছায়া ঘেরা শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। বট বৃক্ষের গোড়া থেকে চার দিকে চারটি পিচ ঢালা সড়ক ছুটে গেছে বিভিন্ন জনপদে। সড়কের চার দিকে নানা দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। খাবার দোকান হোটেল,ব্যাংক বীমা, এনজিও অফিস ও কাজী অফিসসহ ডাকঘরের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে এ প্রাচীণ হাটটি। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুরের চাপড়ী হাটের কথা। হাটটি কত সালে প্রতিষ্ঠা তা এ সময়ে অনেকেই তথ্য দিতে পারেনি। জানা গেছে, বৃটিশ সময়ে হয়তো করা হয়েছে। যখন সোনালি আঁশে স্বর্ণ যুগ ছিল, তখন সময়ে প্রয়োজনে গড়ে তোলা এ হাটটি জমজমাট ছিল। তবে এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় মিমি শহরে রৃপান্তরিত হয়েছে।
সরজমিনে মধুপুর শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে কুড়ালিয়া ইউনিয়নের চাপড়ী হাটে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় হাট ছিল।এখন সময়ের প্রয়োজনে হাট বসে তবে বাজার বসে প্রতিদিন। তারা জানান, এক সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা একদম খারাপ ছিল। বর্ষাকালে মধুপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজে যাওয়া ছিল দুরূহ।নৌকা ছিল তাদের এলাকার প্রধান বাহন। নৌপথে আনারস কলা আদা কচুসহ বিভিন্ন উৎপাদিত কৃষি পণ্য যেতে বিভিন্ন জেলায়। পাটের চাষ ছিল ঐ সময় প্রচুর পরিমানে। পাট যেতে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন হাটগঞ্জে। চাপড়ী ঘাট ছিল নৌ পথের অন্যতম এলাকা। হাট- বাজার,আত্মীয় স্বজন বাড়িসহ নানা প্রান্তে নৌকায় যাতায়াত ছিল। বাইসাইকেল ছিল প্রধান বাহন। বর্ষাকালে চারদিকের সড়ক কাঁদাজলে একাকার হয়ে যেত। চলাচলের সীমাহীন কষ্টসাধ্য হয়ে যেত তাই তারা নৌকায় যাতায়াত করতো।
কালের পরিক্রমায় সেই প্রাচীণ চাপড়ী হাট এখন কালের সাক্ষী হয়ে গ্রামীণ হাটের ঐতিহ্য বহন করছে। এখন এ বাজারটি চারদিকে পাকা সড়ক।
স্কুল কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ব্যাংক বীমা এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে উন্নত গ্রামীণ রূপ ধারন করেছে। জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের সাথে নৌপথে এখন আর যাতায়াত না থাকলেও আধুনিক যানবাহনে চলছে এলাকার মানুষেরা।
মধুপুর শহরের রাখাল (৫০) জানান, তার বাবার মুখে চাপড়ী হাটের কথা শোনেছেন। প্রতি সোমবার নৌকায় ঐ হাটে যেতেন। তারমতে হাটটি বৃটিশ আমলের হতে পারে।
ধলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, চাপড়ী থেকে নৌকায় ঐ এলাকার মানুষ মধুপুর শহরে আসা যাওয়া করতো। তার বাবার মুখে এ হাটের অনেক গল্প তার শোনা। নিজেও প্রায় পাঁচ দশক ধরে দেখে আসছেন। প্রাচীণ এ হাটটি ছিল স্থানীয় মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিকিনিকির একটা বড় মাধ্যম। এ সময় পাটকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জেলায় নৌকা যেত বলে তিনি জানান।
স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগে প্রতি সোমবার হাট বসতো। এখন সোম ও শুক্রবার বসে। তবে সোমবারে লোকজনের বেশি আনাগোনা হয়। শুক্রবার কিছুটা কমলোক আসে। তবে তিনি জানান, সে জন্মের পর থেকে এ বাজার দেখে আসছে। যদিও যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকার কারণে হাটটি পিছিয়ে থাকলেও এখন হাটের স্থানটি বাজারে পরিনত হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আলকামা শিকদার জানান, হাটটির বয়স প্রায় দেড়শ বছরের মতো। এ হাটে এক সময় বল্লা থেকে কাপড় আসতো, পাটির দোকান, কামাড়, কুমার, গ্র্রামীণ খাবারের দোকান বসতো। তখন এ হাটের জৌলুস ছিল জমজমাট।
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
পূর্ব দিকে বংশাই নদী। ওপারে বসতি আর জনপদ। এ পারে নদীর তীরে বটের ছায়া। দক্ষিণে ঘাটাইল উপজেলা। উত্তর-পশ্চিমে মধুপুর উপজেলা। মাঝখান দিয়ে ছুটে গেছে পাকা সড়ক। পাশেই স্কুল কলেজ। মসজিদ মাদ্রাসা। ডাকঘরের মতো অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। মিলন মোহনার উপর দিব্যি একটা বট বৃক্ষ দাঁড়িয়ে আছে। ছায়া ঘেরা শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। বট বৃক্ষের গোড়া থেকে চার দিকে চারটি পিচ ঢালা সড়ক ছুটে গেছে বিভিন্ন জনপদে। সড়কের চার দিকে নানা দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। খাবার দোকান হোটেল,ব্যাংক বীমা, এনজিও অফিস ও কাজী অফিসসহ ডাকঘরের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে এ প্রাচীণ হাটটি। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুরের চাপড়ী হাটের কথা। হাটটি কত সালে প্রতিষ্ঠা তা এ সময়ে অনেকেই তথ্য দিতে পারেনি। জানা গেছে, বৃটিশ সময়ে হয়তো করা হয়েছে। যখন সোনালি আঁশে স্বর্ণ যুগ ছিল, তখন সময়ে প্রয়োজনে গড়ে তোলা এ হাটটি জমজমাট ছিল। তবে এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় মিমি শহরে রৃপান্তরিত হয়েছে।
সরজমিনে মধুপুর শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে কুড়ালিয়া ইউনিয়নের চাপড়ী হাটে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় হাট ছিল।এখন সময়ের প্রয়োজনে হাট বসে তবে বাজার বসে প্রতিদিন। তারা জানান, এক সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা একদম খারাপ ছিল। বর্ষাকালে মধুপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজে যাওয়া ছিল দুরূহ।নৌকা ছিল তাদের এলাকার প্রধান বাহন। নৌপথে আনারস কলা আদা কচুসহ বিভিন্ন উৎপাদিত কৃষি পণ্য যেতে বিভিন্ন জেলায়। পাটের চাষ ছিল ঐ সময় প্রচুর পরিমানে। পাট যেতে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন হাটগঞ্জে। চাপড়ী ঘাট ছিল নৌ পথের অন্যতম এলাকা। হাট- বাজার,আত্মীয় স্বজন বাড়িসহ নানা প্রান্তে নৌকায় যাতায়াত ছিল। বাইসাইকেল ছিল প্রধান বাহন। বর্ষাকালে চারদিকের সড়ক কাঁদাজলে একাকার হয়ে যেত। চলাচলের সীমাহীন কষ্টসাধ্য হয়ে যেত তাই তারা নৌকায় যাতায়াত করতো।
কালের পরিক্রমায় সেই প্রাচীণ চাপড়ী হাট এখন কালের সাক্ষী হয়ে গ্রামীণ হাটের ঐতিহ্য বহন করছে। এখন এ বাজারটি চারদিকে পাকা সড়ক।
স্কুল কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ব্যাংক বীমা এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে উন্নত গ্রামীণ রূপ ধারন করেছে। জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের সাথে নৌপথে এখন আর যাতায়াত না থাকলেও আধুনিক যানবাহনে চলছে এলাকার মানুষেরা।
মধুপুর শহরের রাখাল (৫০) জানান, তার বাবার মুখে চাপড়ী হাটের কথা শোনেছেন। প্রতি সোমবার নৌকায় ঐ হাটে যেতেন। তারমতে হাটটি বৃটিশ আমলের হতে পারে।
ধলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, চাপড়ী থেকে নৌকায় ঐ এলাকার মানুষ মধুপুর শহরে আসা যাওয়া করতো। তার বাবার মুখে এ হাটের অনেক গল্প তার শোনা। নিজেও প্রায় পাঁচ দশক ধরে দেখে আসছেন। প্রাচীণ এ হাটটি ছিল স্থানীয় মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিকিনিকির একটা বড় মাধ্যম। এ সময় পাটকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জেলায় নৌকা যেত বলে তিনি জানান।
স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগে প্রতি সোমবার হাট বসতো। এখন সোম ও শুক্রবার বসে। তবে সোমবারে লোকজনের বেশি আনাগোনা হয়। শুক্রবার কিছুটা কমলোক আসে। তবে তিনি জানান, সে জন্মের পর থেকে এ বাজার দেখে আসছে। যদিও যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকার কারণে হাটটি পিছিয়ে থাকলেও এখন হাটের স্থানটি বাজারে পরিনত হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আলকামা শিকদার জানান, হাটটির বয়স প্রায় দেড়শ বছরের মতো। এ হাটে এক সময় বল্লা থেকে কাপড় আসতো, পাটির দোকান, কামাড়, কুমার, গ্র্রামীণ খাবারের দোকান বসতো। তখন এ হাটের জৌলুস ছিল জমজমাট।