বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ -সংবাদ
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তিন দিন আগের ঘটনার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার,(২১ আগস্ট ২০২৫) দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা কলেজের অনার্স পড়া জামির (২২) ও সাব্বির (২১) নামে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে পুলিশসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের কারণে ওই এলাকার সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের সড়কও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর ২টার পর থেকে কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরে আসে।
জানা গেছে, নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে দুই কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্লাস করেন। গত ১৯ তারিখে কোচিংয়ে আইডি কার্ডকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয় এবং চড়-থাপ্পড়ের ঘটনা ঘটে। সেটাকে কেন্দ্র করে সেদিনও দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল, পরে সেটি শেষ হয়ে যায়। সেদিনের ঘটনাটি অবগত ছিল পুলিশ। তবে পুলিশ ভেবেছে, ওখানেই ঘটনা শেষ হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার আবারও ঝামেলা জড়ায় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা বাঁশ, কাঠ, হকস্টিক হাতে নিয়ে রাস্তায় নামে। এক কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একবার ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে সিটি কলেজ শিক্ষার্থীরা পিছু হটে, আবার সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা পিছু হটে। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি দ্রুত ঘুরিয়ে অন্য রুটে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় দোকানি, ফুটপাতের হকার ও কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে যার মতো করে দোকানে ঢুকে আশ্রয় নেন। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে হাজির হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ। ছুটে আসেন পুলিশের রমনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশের পেট্রোল পাম্প ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে অবস্থান নেয় ঢাকা কলেজের মারমুখী শিক্ষার্থীরা। সায়েন্সল্যাব সিগন্যাল পয়েন্টে অবস্থান নেয় সিটি কলেজের মারমুখী শিক্ষার্থীরা। তারা দুই প্রান্ত থেকে লাঠিসোঁটা উঁচিয়ে হুংকার দিতে থাকে। আর মাঝখানে অবস্থায় নিয়ে দুই গ্রুপকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। এর আগে দুইপক্ষের ছোড়া ইটপাটকেলে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। রাস্তায় অসংখ্য ইট ভাঙা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আতঙ্কে ওখানকার ফুটপাতের দোকানিরা ব্যবসা গুটিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। স্থায়ী দোকানিরা শাটার নামিয়ে ভেতরে অবস্থান নেন।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রফিকুল আলম জানান, হঠাৎ করে আমাদের শিক্ষার্থীরা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আমরা শিক্ষকরা ছুটে যাই। সিটি কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তাদের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার কথা জানাই। আমরাও আমাদের শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে বলি। তবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আমরা জানার পরপর পুলিশকেও জানাই। পরে পুলিশ আসে দুই গ্রুপকে নিবৃত্ত করে। শুনেছি, আমাদের দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে রফিকুল আলম বলেন, তিন দিন আগে কোচিং সেন্টারে ঘটে যাওয়া সামান্য ঘটনা নিয়ে আজকের ঘটনার সূত্রপাত বলে জানতে পেরেছি। ঘটনাটি কী ঘটেছিল এবং এর সঙ্গে কোন কোন শিক্ষার্থী জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। কয়েকদিন পর পর এমন ঘটনা ঘটে। এটি হতে পারে না।
ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, সংঘর্ষের খবরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। দুইপক্ষের মাঝখানে পুলিশ অবস্থান নেয়। এর ফলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজের সামনে চলে যান এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজের সামনে চলে যান। আমরা দুই কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি, যেন শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে যান। রাস্তাঘাটে যেন কোনো ঝামেলা সৃষ্টি না হয়, আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
মাসুদ আলম বলেন, এসব ঘটনা এখানে প্রায়ই ঘটে, ছোট ছোট বিষয় থেকে এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটে তা নিয়ে আমরা দুই কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। এখানে এ ধরনের ঘটনা কোনো কারণ ছাড়াই ঘটে। এ বিষয় নিয়ে আমরা এর আগেও আলোচনা করেছি। কিন্তু এবার আলোচনা করতে হবে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, এর মূলে যেতে হবে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কারণে জনগণকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তারা যখন মুখোমুখি অবস্থান নেয় তখন যে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।
সংঘর্ষের কারণ জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পূর্বের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকের এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে ক্লাস করে। সেখানে আইডি কার্ড নিয়ে ঝামেলা হয়।
সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন, নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতারা ও সাধারণ মানুষ। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে যানবাহনের চালকরা দ্রুত ওই সড়কটি ত্যাগ করে অন্য সড়ক দিয়ে গন্তব্যে চলে যান। তবে হঠাৎ করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় সায়েন্সল্যাবের ঠিক আগের সিগন্যাল অর্থাৎ ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। এদের কেউ কেউ দ্রুত সায়েন্সল্যাব সিগন্যাল অতিক্রম করে বাটাসিগন্যালের দিকে চলে যান। ব্যক্তিগত গাড়ি বাঁয়ে মোড় নিয়ে গ্রীন রোড হয়ে পান্থপথ ও মোতালিব প্লাজার সামনে দিয়ে গন্তব্যে চলে যায়।
আতঙ্কের কথা জানিয়ে লাটিম মার্কেটের সামনে ফুটপাতের দোকানি সুমন শেখ বলেন, কথা নাই, বার্তা নাই হঠাৎ করে ঝামেলা লেগে যায়। বৃহস্পতিবার (বুধবারও) তাই হয়েছে। চতুর্দিক থেকে মুহুর্মুহু ইট ছুড়ে শিক্ষার্থীরা। আমরা দোকানপাট বন্ধ করে দেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। না জানি কোন পক্ষের রোষানলে পড়ে হামলার শিকার হতে হয়। সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুপুর ২টার দিকে পরিস্থিতির স্বাভাবিক হয়েছে, যান চলাচল স্বাভাবিক। গত রোববার একটি কোচিং সেন্টারে দুইপক্ষের কথা কাটাকাটির জের ধরে বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানান ডিএমপির ধানমন্ডি অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান। তবে উপ-কমিশনার জিসানুল হক বলেন, ফুটবল খেলার মাঠে কথা কাটাকাটির জের ধরে এ সংঘর্ষ হয়েছে। সিকি কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকার এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। নানা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রায়ই তাদের সংঘাতে জড়ানোর খবর সংবাদের শিরোনাম হয়। গত ১৮ মার্চ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। তার আগে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং ১৯ জানুয়ারিও সংঘর্ষ হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তিন দিন আগের ঘটনার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার,(২১ আগস্ট ২০২৫) দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা কলেজের অনার্স পড়া জামির (২২) ও সাব্বির (২১) নামে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে পুলিশসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের কারণে ওই এলাকার সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের সড়কও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর ২টার পর থেকে কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরে আসে।
জানা গেছে, নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে দুই কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্লাস করেন। গত ১৯ তারিখে কোচিংয়ে আইডি কার্ডকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয় এবং চড়-থাপ্পড়ের ঘটনা ঘটে। সেটাকে কেন্দ্র করে সেদিনও দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল, পরে সেটি শেষ হয়ে যায়। সেদিনের ঘটনাটি অবগত ছিল পুলিশ। তবে পুলিশ ভেবেছে, ওখানেই ঘটনা শেষ হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার আবারও ঝামেলা জড়ায় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা বাঁশ, কাঠ, হকস্টিক হাতে নিয়ে রাস্তায় নামে। এক কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একবার ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে সিটি কলেজ শিক্ষার্থীরা পিছু হটে, আবার সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা পিছু হটে। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি দ্রুত ঘুরিয়ে অন্য রুটে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় দোকানি, ফুটপাতের হকার ও কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে যার মতো করে দোকানে ঢুকে আশ্রয় নেন। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে হাজির হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ। ছুটে আসেন পুলিশের রমনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশের পেট্রোল পাম্প ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে অবস্থান নেয় ঢাকা কলেজের মারমুখী শিক্ষার্থীরা। সায়েন্সল্যাব সিগন্যাল পয়েন্টে অবস্থান নেয় সিটি কলেজের মারমুখী শিক্ষার্থীরা। তারা দুই প্রান্ত থেকে লাঠিসোঁটা উঁচিয়ে হুংকার দিতে থাকে। আর মাঝখানে অবস্থায় নিয়ে দুই গ্রুপকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। এর আগে দুইপক্ষের ছোড়া ইটপাটকেলে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। রাস্তায় অসংখ্য ইট ভাঙা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আতঙ্কে ওখানকার ফুটপাতের দোকানিরা ব্যবসা গুটিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। স্থায়ী দোকানিরা শাটার নামিয়ে ভেতরে অবস্থান নেন।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রফিকুল আলম জানান, হঠাৎ করে আমাদের শিক্ষার্থীরা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আমরা শিক্ষকরা ছুটে যাই। সিটি কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তাদের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার কথা জানাই। আমরাও আমাদের শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে বলি। তবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আমরা জানার পরপর পুলিশকেও জানাই। পরে পুলিশ আসে দুই গ্রুপকে নিবৃত্ত করে। শুনেছি, আমাদের দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে রফিকুল আলম বলেন, তিন দিন আগে কোচিং সেন্টারে ঘটে যাওয়া সামান্য ঘটনা নিয়ে আজকের ঘটনার সূত্রপাত বলে জানতে পেরেছি। ঘটনাটি কী ঘটেছিল এবং এর সঙ্গে কোন কোন শিক্ষার্থী জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। কয়েকদিন পর পর এমন ঘটনা ঘটে। এটি হতে পারে না।
ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, সংঘর্ষের খবরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। দুইপক্ষের মাঝখানে পুলিশ অবস্থান নেয়। এর ফলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজের সামনে চলে যান এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজের সামনে চলে যান। আমরা দুই কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি, যেন শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে যান। রাস্তাঘাটে যেন কোনো ঝামেলা সৃষ্টি না হয়, আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
মাসুদ আলম বলেন, এসব ঘটনা এখানে প্রায়ই ঘটে, ছোট ছোট বিষয় থেকে এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটে তা নিয়ে আমরা দুই কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। এখানে এ ধরনের ঘটনা কোনো কারণ ছাড়াই ঘটে। এ বিষয় নিয়ে আমরা এর আগেও আলোচনা করেছি। কিন্তু এবার আলোচনা করতে হবে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, এর মূলে যেতে হবে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কারণে জনগণকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তারা যখন মুখোমুখি অবস্থান নেয় তখন যে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।
সংঘর্ষের কারণ জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পূর্বের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকের এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে ক্লাস করে। সেখানে আইডি কার্ড নিয়ে ঝামেলা হয়।
সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন, নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতারা ও সাধারণ মানুষ। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে যানবাহনের চালকরা দ্রুত ওই সড়কটি ত্যাগ করে অন্য সড়ক দিয়ে গন্তব্যে চলে যান। তবে হঠাৎ করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় সায়েন্সল্যাবের ঠিক আগের সিগন্যাল অর্থাৎ ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। এদের কেউ কেউ দ্রুত সায়েন্সল্যাব সিগন্যাল অতিক্রম করে বাটাসিগন্যালের দিকে চলে যান। ব্যক্তিগত গাড়ি বাঁয়ে মোড় নিয়ে গ্রীন রোড হয়ে পান্থপথ ও মোতালিব প্লাজার সামনে দিয়ে গন্তব্যে চলে যায়।
আতঙ্কের কথা জানিয়ে লাটিম মার্কেটের সামনে ফুটপাতের দোকানি সুমন শেখ বলেন, কথা নাই, বার্তা নাই হঠাৎ করে ঝামেলা লেগে যায়। বৃহস্পতিবার (বুধবারও) তাই হয়েছে। চতুর্দিক থেকে মুহুর্মুহু ইট ছুড়ে শিক্ষার্থীরা। আমরা দোকানপাট বন্ধ করে দেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। না জানি কোন পক্ষের রোষানলে পড়ে হামলার শিকার হতে হয়। সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুপুর ২টার দিকে পরিস্থিতির স্বাভাবিক হয়েছে, যান চলাচল স্বাভাবিক। গত রোববার একটি কোচিং সেন্টারে দুইপক্ষের কথা কাটাকাটির জের ধরে বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানান ডিএমপির ধানমন্ডি অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান। তবে উপ-কমিশনার জিসানুল হক বলেন, ফুটবল খেলার মাঠে কথা কাটাকাটির জের ধরে এ সংঘর্ষ হয়েছে। সিকি কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকার এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। নানা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রায়ই তাদের সংঘাতে জড়ানোর খবর সংবাদের শিরোনাম হয়। গত ১৮ মার্চ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। তার আগে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং ১৯ জানুয়ারিও সংঘর্ষ হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।