সিলেটের নাগা মরিচ তার অতুলনীয় ঝাল এবং অনন্য ঘ্রাণের জন্য বিশ্বখ্যাত। নাগা মরিচের আদি উৎপত্তি ভারতের আসামের নাগা পাহাড়ি অঞ্চলে। বর্তমানে এটি ভারতের আসাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হয়।
সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গল ও জৈন্তাপুরের হরিপুরে নাগা মরিচের বাণিজ্যিক চাষ জনপ্রিয়। বিশেষভাবে জৈন্তাপুরের দরবস্ত, নিজপাট ফতেপুর, জৈন্তাপুর ও চারিকাটা ইউনিয়নে এই মরিচের চাষ বেশি। নাগা মরিচ কাঁচা অবস্থায় বেশি খাওয়া হয়, কারণ কাঁচা অবস্থায় এর ঘ্রাণ এবং ঝালের মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে।
নাগা মরিচ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। মুখে ঘা হওয়া প্রতিরোধে সহায়ক। গাছটি ছোট, কিন্তু ফল আকারে কামরাঙার মতো। বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত স্কোভিল স্কেলে নাগা মরিচের ঝাল মান ১০+++, যা টাবাসকো সসের চেয়ে প্রায় ৪০১ গুণ বেশি। ২০০৭ সালে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নাগা মরিচকে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বীজ ১০/১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে নরম, ছায়াযুক্ত মাটিতে বপন করলে চারা গজায়। বীজ বপনের ২.৫-৩ মাস পর ফলন আসে। ফুল আসার ১৫ দিন পর থেকেই মরিচ আহরণ করা সম্ভব। দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। মাটির পিএইচ মান ৫.৫-৭.০ রাখলে উন্নত ফলন পাওয়া যায়। গাছের জন্য যথাযথ সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা অপরিহার্য। নাগা মরিচ লেবু গাছ বা অন্যান্য ফসলের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। প্রতিটি গাছ থেকে পুরো মৌসুমে দুই শতাধিক মরিচ সংগ্রহ করা সম্ভব। শীতকালে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বাজারে প্রতি হালি দাম আকারভেদে ১০-২০ টাকা থেকে সরবরাহ কমলে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত যায়। নাগা মরিচের আন্তর্জাতিক চাহিদা রয়েছে; ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারেও রফতানি হয়।
নাগা মরিচ শুধু ঝালের জন্য নয়, বরং পুষ্টি, বৈজ্ঞানিক চাষ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিক থেকেও সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। চাষ ও রফতানির সঠিক ব্যবস্থাপনায় এটি কৃষকের জন্য লাভজনক এবং সিলেটের জন্য আন্তর্জাতিক গর্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনার সমন্বয়, বিশ্বের ঝালের মানচিত্রে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় নাম।
শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
সিলেটের নাগা মরিচ তার অতুলনীয় ঝাল এবং অনন্য ঘ্রাণের জন্য বিশ্বখ্যাত। নাগা মরিচের আদি উৎপত্তি ভারতের আসামের নাগা পাহাড়ি অঞ্চলে। বর্তমানে এটি ভারতের আসাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হয়।
সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গল ও জৈন্তাপুরের হরিপুরে নাগা মরিচের বাণিজ্যিক চাষ জনপ্রিয়। বিশেষভাবে জৈন্তাপুরের দরবস্ত, নিজপাট ফতেপুর, জৈন্তাপুর ও চারিকাটা ইউনিয়নে এই মরিচের চাষ বেশি। নাগা মরিচ কাঁচা অবস্থায় বেশি খাওয়া হয়, কারণ কাঁচা অবস্থায় এর ঘ্রাণ এবং ঝালের মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে।
নাগা মরিচ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। মুখে ঘা হওয়া প্রতিরোধে সহায়ক। গাছটি ছোট, কিন্তু ফল আকারে কামরাঙার মতো। বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত স্কোভিল স্কেলে নাগা মরিচের ঝাল মান ১০+++, যা টাবাসকো সসের চেয়ে প্রায় ৪০১ গুণ বেশি। ২০০৭ সালে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নাগা মরিচকে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বীজ ১০/১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে নরম, ছায়াযুক্ত মাটিতে বপন করলে চারা গজায়। বীজ বপনের ২.৫-৩ মাস পর ফলন আসে। ফুল আসার ১৫ দিন পর থেকেই মরিচ আহরণ করা সম্ভব। দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। মাটির পিএইচ মান ৫.৫-৭.০ রাখলে উন্নত ফলন পাওয়া যায়। গাছের জন্য যথাযথ সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা অপরিহার্য। নাগা মরিচ লেবু গাছ বা অন্যান্য ফসলের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। প্রতিটি গাছ থেকে পুরো মৌসুমে দুই শতাধিক মরিচ সংগ্রহ করা সম্ভব। শীতকালে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বাজারে প্রতি হালি দাম আকারভেদে ১০-২০ টাকা থেকে সরবরাহ কমলে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত যায়। নাগা মরিচের আন্তর্জাতিক চাহিদা রয়েছে; ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারেও রফতানি হয়।
নাগা মরিচ শুধু ঝালের জন্য নয়, বরং পুষ্টি, বৈজ্ঞানিক চাষ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিক থেকেও সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। চাষ ও রফতানির সঠিক ব্যবস্থাপনায় এটি কৃষকের জন্য লাভজনক এবং সিলেটের জন্য আন্তর্জাতিক গর্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনার সমন্বয়, বিশ্বের ঝালের মানচিত্রে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় নাম।