গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান -সংবাদ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি উপজেলা শিক্ষা কমিটি প্রায় তিন বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও এখনও নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পাঠদান চলছে। ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা, বৃষ্টিতে চুইয়ে পড়ছে পানি। তবুও বিকল্প কোনো ভবন না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিদিনই আতঙ্কে থাকছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।
জানা গেছে, ১২০ বছরের পুরোনো বিদ্যালয়, পরিত্যক্ত ভবনের বয়স মাত্র ২৩ বছর, বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৫ সালে। জাতীয়করণ হয় ১৯৭৩ সালে। দীর্ঘ সময় কাঁচা-আধাপাকা ঘরে ক্লাস হওয়ার পর ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়ের জন্য নির্মিত হয় একতলা আধুনিক ভবন। কিন্তু মাত্র ২৩ বছরের মাথায় ভবনটির ছাদ, খুঁটি ও দেয়ালে ফাটল ধরতে শুরু করে। ২০২৩ সালে উপজেলা শিক্ষা কমিটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কারণে ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় গত তিন বছর ধরে ঝুঁঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান। খসে পড়ছে পলেস্তরা, শ্রেণিকক্ষে জমছে পানি, বিদ্যালয়ের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষে বর্ষা মৌসুমে টপ টপ করে পানি পড়ে। মেঝেতে পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতো হয়ে যায়। ছাদ থেকে নিয়মিত পলেস্তরা খসে পড়ে শিক্ষার্থীদের গায়ের ওপরও। ফলে আতঙ্ক নিয়েই ক্লাস করতে হয় সবার।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মোহনা ইসলাম বৃষ্টি জানায়, ক্লাস করার সময় খুব ভয় লাগে। মনে হয় হঠাৎ ছাদ ভেঙে মাথার ওপর পড়ে যাবে। আমরা চাই নতুন ভবন, যাতে নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারি।
একই শ্রেণির শিক্ষার্থী মিশকাত আলী মুগ্ধ ও ইয়ামিন সুলতানা বলে, ভবনটি ভাঙা হওয়ায় পড়াশোনার সময় মনোযোগ ধরে রাখা কষ্টকর।
অভিভাবক কাকন মাহমুদ বলেন, প্রতিদিন সন্তানদের স্কুলে দিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। কখন যেন বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সরকারের কাছে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
অন্য অভিভাবক ফিরোজা বেগম বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলে আনসারী ও হোসনা ইয়াসমিন জানান, পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝেই পলেস্তরা খসে পড়ে। কবে নাগাদ নতুন ভবন হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।
প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩০৯ শিক্ষার্থী ও ৭ জন শিক্ষক রয়েছে। উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসকে একাধিকবার বিষয়টি জানানো হলেও এখনও কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা হয়নি। ফলে পরিত্যক্ত ভবনেই ক্লাস চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের দুঃস্থ অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ জেনেছি। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান -সংবাদ
শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি উপজেলা শিক্ষা কমিটি প্রায় তিন বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও এখনও নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পাঠদান চলছে। ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা, বৃষ্টিতে চুইয়ে পড়ছে পানি। তবুও বিকল্প কোনো ভবন না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিদিনই আতঙ্কে থাকছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।
জানা গেছে, ১২০ বছরের পুরোনো বিদ্যালয়, পরিত্যক্ত ভবনের বয়স মাত্র ২৩ বছর, বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৫ সালে। জাতীয়করণ হয় ১৯৭৩ সালে। দীর্ঘ সময় কাঁচা-আধাপাকা ঘরে ক্লাস হওয়ার পর ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়ের জন্য নির্মিত হয় একতলা আধুনিক ভবন। কিন্তু মাত্র ২৩ বছরের মাথায় ভবনটির ছাদ, খুঁটি ও দেয়ালে ফাটল ধরতে শুরু করে। ২০২৩ সালে উপজেলা শিক্ষা কমিটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কারণে ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় গত তিন বছর ধরে ঝুঁঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান। খসে পড়ছে পলেস্তরা, শ্রেণিকক্ষে জমছে পানি, বিদ্যালয়ের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষে বর্ষা মৌসুমে টপ টপ করে পানি পড়ে। মেঝেতে পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতো হয়ে যায়। ছাদ থেকে নিয়মিত পলেস্তরা খসে পড়ে শিক্ষার্থীদের গায়ের ওপরও। ফলে আতঙ্ক নিয়েই ক্লাস করতে হয় সবার।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মোহনা ইসলাম বৃষ্টি জানায়, ক্লাস করার সময় খুব ভয় লাগে। মনে হয় হঠাৎ ছাদ ভেঙে মাথার ওপর পড়ে যাবে। আমরা চাই নতুন ভবন, যাতে নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারি।
একই শ্রেণির শিক্ষার্থী মিশকাত আলী মুগ্ধ ও ইয়ামিন সুলতানা বলে, ভবনটি ভাঙা হওয়ায় পড়াশোনার সময় মনোযোগ ধরে রাখা কষ্টকর।
অভিভাবক কাকন মাহমুদ বলেন, প্রতিদিন সন্তানদের স্কুলে দিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। কখন যেন বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সরকারের কাছে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
অন্য অভিভাবক ফিরোজা বেগম বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলে আনসারী ও হোসনা ইয়াসমিন জানান, পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝেই পলেস্তরা খসে পড়ে। কবে নাগাদ নতুন ভবন হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।
প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩০৯ শিক্ষার্থী ও ৭ জন শিক্ষক রয়েছে। উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসকে একাধিকবার বিষয়টি জানানো হলেও এখনও কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা হয়নি। ফলে পরিত্যক্ত ভবনেই ক্লাস চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের দুঃস্থ অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বাওনাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ জেনেছি। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।