দক্ষিণ সিটি সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীতে সিপিবির শোভাযাত্রা -সংবাদ
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তার ভাষায় জনজীবনের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে পারছে না এ সরকার, নতুন ভয়ের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে হবে। এ উত্তরণকালীন যাত্রা ব্যাহত করতে নানা অপশক্তির চলমান তৎপরতা রুখে দেয়ার আহ্বান জানান প্রিন্স।
তিনি বলেন, ‘সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করবেন না। মানুষ যদি চোখের সামনে দেখে তার জীবনের কোনো উন্নতি হয় নাই তাহেল সে এটার (সংস্কার) পক্ষে থাকবে না।’
শুক্রবার,(২২ আগস্ট ২০২৫) পুরানা পল্টন পার্টি অফিসের সামনে মনি সিংহ সড়কে সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দ্বিতীয় সস্মেলনের উদ্ধোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলণের মাধ্যমে সস্মেলন উদ্ধোধন করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘যদি সংস্কার করতে হয় আগে শ্রমিকের ন্যূনতম জাতীয় মুজরি নির্ধারণ করণ, কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম প্রদান করেন। বাজার থেকে সাধারণ মানুষকে বেশি দামে কিনতে হবে না, রাস্তায় নারী-পুরুষ ও শিশু নির্বিঘেœ হাঁটবে সেই ব্যবস্থা করেন। সংস্কারে অনেক আলোচনা হলেও এগুলো আলোচনা হয় নাই। ক্ষমতার পালাবদল হলেও শ্রেণীর পালাবদল হয় নাই। গরিব মেহনতি মানুষের স্বার্থের সরকার না বলেই এ কাজটি হয় নাই।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রিন্স বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এক যুগেরও বেশি সময় দেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল । জনগণের ন্যূনতম ভোটাধিকার ছিল না। দেশে এমন ভয়ের রাজস্ত কায়েম করেছিল, মানুষ কথা বলতেও ভয় পেত। এ জুলুমের বিরুদ্ধে যখন আমরা সংগ্রাম করলাম তখন পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, এর আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামের নাম করে ব্যবসা করেছে জামায়াত ইসলাম। তারাও ক্ষমতায় ছিল, তাদের মন্ত্রী র্ছিল। তারা পাকিস্তানের সহযোগী ছিল। পরে এসে বিএনপির সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করেছে। তারপরে জাতীয় পার্টি আবার আওয়ামী লীগ। ৫৪ বছরে এদের দেখা হয়ে গেছে। যদি আবার এদের দেখা হয় তাহলে সাম্যের বৈষ্যমহীন সমাজ কায়েম হবে না।
‘বাংলাদেশে ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজের আখেড় গুছিয়েছে’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাম্যের সমাজ গড়তে হলে উঁচু তলার আর গাছতলার নিয়মকে ভাঙতে হবে। বাংলাদেশে ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজের আখেড় গুছিয়েছে। ক্ষমতায় যারা ছিল, তার কেউ কম কেউ বেশি। রাজনীতিতে বড় লোকের স্বার্থ রক্ষাকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘না’ বলে গরিব মেহনতি মানুষের পক্ষে অবস্থান ঘোষণা করতে হবে। প্রতি চারজন মানুষের একজন বহুমুখী দারিদ্রের শিকার। এ গরিব মানুষকে তুলে আনতে হবে। পুরো সমাজ ব্যবস্থার বদল ঘটাতে হবে। এটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষা, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা ।
সমাবেশে ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা জলি তালকুদার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নতুন প্রজন্মের আদর্শবাদী রাজনীতিতে শামিল হওয়ার যে প্রেরণা তৈরি করেছিল একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতিপরায়নতা ও তথাকথিত কিংস পার্টি প্রকল্পের মধ্য দিয়ে তাদের রাজনীতি বিমুখ করছে। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম আদর্শবাদী, নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিতে এগিয়ে এসে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও দেশ গড়ার দায়িত্ব নেবে।
জেলা কমিটির সভাপতি শামসুজ্জামান হীরার সভাপতিত্বে ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সাইফুল ইসলাম সমীরের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- সিপিবির প্রেসিডিয়াম সমস্য রফিকুজ্জামান লায়েক, সস্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আশু ও আহ্বায়ক ত্রিদিব সাহা।
আজ রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সোশ্যাল গার্ডেনে সস্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা দক্ষিণের ৪১টি শাখা ও থানার ১৮৪ জন প্রতিনিধি কাউন্সিলে অংশগ্রহণ করবেন। কাউন্সিল অধিবেশনে জেলা কমিটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।
দক্ষিণ সিটি সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীতে সিপিবির শোভাযাত্রা -সংবাদ
শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তার ভাষায় জনজীবনের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে পারছে না এ সরকার, নতুন ভয়ের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে হবে। এ উত্তরণকালীন যাত্রা ব্যাহত করতে নানা অপশক্তির চলমান তৎপরতা রুখে দেয়ার আহ্বান জানান প্রিন্স।
তিনি বলেন, ‘সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করবেন না। মানুষ যদি চোখের সামনে দেখে তার জীবনের কোনো উন্নতি হয় নাই তাহেল সে এটার (সংস্কার) পক্ষে থাকবে না।’
শুক্রবার,(২২ আগস্ট ২০২৫) পুরানা পল্টন পার্টি অফিসের সামনে মনি সিংহ সড়কে সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দ্বিতীয় সস্মেলনের উদ্ধোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলণের মাধ্যমে সস্মেলন উদ্ধোধন করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘যদি সংস্কার করতে হয় আগে শ্রমিকের ন্যূনতম জাতীয় মুজরি নির্ধারণ করণ, কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম প্রদান করেন। বাজার থেকে সাধারণ মানুষকে বেশি দামে কিনতে হবে না, রাস্তায় নারী-পুরুষ ও শিশু নির্বিঘেœ হাঁটবে সেই ব্যবস্থা করেন। সংস্কারে অনেক আলোচনা হলেও এগুলো আলোচনা হয় নাই। ক্ষমতার পালাবদল হলেও শ্রেণীর পালাবদল হয় নাই। গরিব মেহনতি মানুষের স্বার্থের সরকার না বলেই এ কাজটি হয় নাই।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রিন্স বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এক যুগেরও বেশি সময় দেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল । জনগণের ন্যূনতম ভোটাধিকার ছিল না। দেশে এমন ভয়ের রাজস্ত কায়েম করেছিল, মানুষ কথা বলতেও ভয় পেত। এ জুলুমের বিরুদ্ধে যখন আমরা সংগ্রাম করলাম তখন পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, এর আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামের নাম করে ব্যবসা করেছে জামায়াত ইসলাম। তারাও ক্ষমতায় ছিল, তাদের মন্ত্রী র্ছিল। তারা পাকিস্তানের সহযোগী ছিল। পরে এসে বিএনপির সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করেছে। তারপরে জাতীয় পার্টি আবার আওয়ামী লীগ। ৫৪ বছরে এদের দেখা হয়ে গেছে। যদি আবার এদের দেখা হয় তাহলে সাম্যের বৈষ্যমহীন সমাজ কায়েম হবে না।
‘বাংলাদেশে ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজের আখেড় গুছিয়েছে’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাম্যের সমাজ গড়তে হলে উঁচু তলার আর গাছতলার নিয়মকে ভাঙতে হবে। বাংলাদেশে ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজের আখেড় গুছিয়েছে। ক্ষমতায় যারা ছিল, তার কেউ কম কেউ বেশি। রাজনীতিতে বড় লোকের স্বার্থ রক্ষাকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘না’ বলে গরিব মেহনতি মানুষের পক্ষে অবস্থান ঘোষণা করতে হবে। প্রতি চারজন মানুষের একজন বহুমুখী দারিদ্রের শিকার। এ গরিব মানুষকে তুলে আনতে হবে। পুরো সমাজ ব্যবস্থার বদল ঘটাতে হবে। এটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষা, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা ।
সমাবেশে ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা জলি তালকুদার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নতুন প্রজন্মের আদর্শবাদী রাজনীতিতে শামিল হওয়ার যে প্রেরণা তৈরি করেছিল একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতিপরায়নতা ও তথাকথিত কিংস পার্টি প্রকল্পের মধ্য দিয়ে তাদের রাজনীতি বিমুখ করছে। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম আদর্শবাদী, নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিতে এগিয়ে এসে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও দেশ গড়ার দায়িত্ব নেবে।
জেলা কমিটির সভাপতি শামসুজ্জামান হীরার সভাপতিত্বে ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সাইফুল ইসলাম সমীরের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- সিপিবির প্রেসিডিয়াম সমস্য রফিকুজ্জামান লায়েক, সস্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আশু ও আহ্বায়ক ত্রিদিব সাহা।
আজ রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সোশ্যাল গার্ডেনে সস্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা দক্ষিণের ৪১টি শাখা ও থানার ১৮৪ জন প্রতিনিধি কাউন্সিলে অংশগ্রহণ করবেন। কাউন্সিল অধিবেশনে জেলা কমিটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।