alt

সারাদেশ

রাবিতে এডহক নিয়োগ স্থগিত

প্রতিনিধি, রাবি : শনিবার, ০৮ মে ২০২১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অবৈধ এডহক নিয়োগে জরিতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কার্যক্রমের পর সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এডহকে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের যোগদান স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ৫ মে দেয়া এডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ওই নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তদন্ত সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হলো।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৬ মে উপ-রেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলী স্বাক্ষরে ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন সেকশন অফিসার, ২৪ সহায়ক কর্মচারী এবং ৮৫ জন উচ্চ ও নিম্নসহকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান ৪৩ নেতাকর্মী, রয়েছে চার জন সাংবাদিক নেতা।

এই নিয়োগের পর শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘অবৈধ’ নিয়োগ ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে এসেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তদন্ত কমিটিকে নেতৃত্বে ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন কমিটির সদস্য এবং ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ ও ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। এরপর তারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার কার্যালয়ে যান। পৌনে ১২টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমরা সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। এই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।’

প্রসঙ্গগত, ৬ মে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান তার শেষ কর্মদিবসে সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩৭ জন এডকহ ভিত্তিতে নিয়োগের বিষয়টি সামনে আসে। ওই দিন সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় এই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

‘মানবিক’ কারণে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়োগ, বললেন বিদায়ী উপাচার্য

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এডহক নিয়োগের ঘটনায় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছেন বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান। কিন্তু তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্যের পর বিদায়ী উপাচার্য দাবি করেছেন, তিনি যে নিয়োগ দিয়েছেন সেটি যৌক্তিক এবং তাদের চাকরি না টেকার কোন কারণ নেই। এছাড়া মানবিক কারণে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের যোগদান স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন বিদায়ী উপাচার্য। এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন আবদুস সোবহান। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর ১২(৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমি এই নিয়োগ দিয়েছি। এখানে কেউ হয়তো বলার চেষ্টা করছে নিষেধাজ্ঞা দেয়া ছিল। কিন্তু আমি মনে করি, যেখানে সুস্পষ্ট একটা আইন আছে, ক্ষমতা দেয়া আছে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা আসতে হলে তো ওই আইনটা (অ্যাক্ট) বাতিল হওয়া উচিত আগে। উপাচার্য বলেন, নিয়োগ না টেকার কী কারণ আছে আমি বলতে পারব না। এটার সিদ্ধান্ত কারা নেবে আমি জানি না। অ্যাডহকে নিয়োগ তো অনেক হয়েছে। মাস্টাররোলে ৫৪৪ জনের চাকরি তো এখনও টিকে আছে। সুতরাং এটা না টেকার কী কারণ আছে? আমি মনে করি এটা যৌক্তিক এবং আমি নিজ দায়িত্বে এটা দিয়েছি।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়োগ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আবদুস সোবহান বলেন, যারা ডিজার্ভ করে তারাই এই নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে যাচ্ছিল, আমি এই নিয়োগ মানবিক কারণে দিয়েছি। তারা অনার্স-মাস্টার্স পাস, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের তৃতীয় শ্রেণীর চাকরি পাওয়া আমি খুবই যৌক্তিক মনে করি। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে মাত্র ৪০-৪৫ জন ছাত্রলীগ, এমন আলোচনার প্রসঙ্গে এম আবদুস সোবহান বলেন, কথাটি সত্য নয়। ছাত্রলীগের নেতা হওয়া আর কর্মী হওয়া তো এক নয়। ছাত্রলীগ নেতা, ছাত্রলীগ কর্মী এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান তো একই।

অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান ক্যাম্পাসে আসার সময় তার গাড়ির সঙ্গে টহল পুলিশের একটি গাড়িও আসে। তার আসার আগে থেকেই নিয়োগপ্রাপ্ত অনেকে প্রশাসন ভবনের আশপাশে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দিতে উপাচার্য দপ্তরে ঢুকলে তাদের অনেকে প্রশাসন ভবনে ঢুকে পড়েন। আবদুস সোবহান বের হয়ে আসলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ নিয়োগপ্রাপ্তরা স্লোগান দেন, ‘সোবহান স্যার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ‘সোবহান স্যারের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ক্যাম্পাসে’। এরপর আবদুস সোবহান গাড়িতে বিনোদপুর গেট দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িও ছিল।

ছবি

মায়ানমার ফেরতঃ কারাগারে দুপুরে এক বেলা খাবার, সারাদিন ব্যস্ত ভারি কাজে

ছবি

বারিতে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল শীর্ষক প্রশিক্ষণ

ছবি

গাজীপুরের কোনাবাড়ী জোনাল অফিসে পাওয়ার ট্রান্সফরমারে আগুন

ছবি

গাজীপুরে মরে যাচ্ছে মুরগি

ছবি

মেহেরপুরে মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন জেল

ছবি

দাবদাহে গলে যাচ্ছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের পিচ

ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কার্যালয়ে তালা

ছবি

হরিরামপুরে পূর্ব শত্রতার জেরে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা, মেয়াদ আরও বাড়লো

হিটস্ট্রোকে ৪ জনের মৃত্যু

ছবি

ঈদযাত্রা : মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ৫১ শতাংশ, সাড়ে ৪২ শতাংশ নিহত

ছবি

১৫ শ্রমিক নিয়ে সাজেকের খাদে ট্রাক, নিহত ৯

ছবি

রাজধানীতে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত

ছবি

থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

ছবি

বাসের ধাক্কায় চুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু নরসিংদীর বাড়িতে কান্নার রোল

ছবি

অপহরণ ও মারধরের শিকার দেলোয়ার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিংড়া উপজেলার চেয়ারম্যান

ছবি

রাজশাহীতে বৃষ্টি নামাতে বিয়ের পিঁড়িতে দুই ব্যঙ

ছবি

রংপুরে সাজাপ্রাপ্ত দুই যুবদল নেতাকে কারাগাওে পাঠানোর নির্দেশে বিক্ষোভ

ছবি

আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’র কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ

ছবি

পরিবার পাবে ১০ লাখ টাকা চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, আল্টিমেটাম

তিস্তাসহ ৫৪ অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা দাবিতে বাসদের লং মার্চ

ছবি

লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন হাজার হাজার মুসল্লি

ছবি

অসহায় পরিবারের নিরুপায় নির্মমতা! চুরি ঠেকাতে ৩ বছর শেকল বন্দি কিশোর

ছবি

ছাত্র হত্যায় যুবকের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড

হোটেলে আটকে রেখে কিশোর ধর্ষণ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ছবি

ক্যাসিনোকাণ্ডের সেই সেলিম প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল

ভৌতিক বিলের খপ্পর চট্টগ্রামে মিটার-সংযোগবিহীন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৭ লাখ টাকা

ছবি

এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে ঝরেছে ৩৬৭ জনের প্রাণ

ছবি

চুয়েটের ২ শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক গ্রেপ্তার

ছবি

মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে নিহত ১, আহত ১০

ছবি

মায়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে দেশে ফিরছেন ১৫৩ বাংলাদেশি

ছবি

কক্সবাজারে স্পেশাল ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত

ছবি

ট্রেন লাইনচ্যুত, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ছবি

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

নড়াইলে মাদক মামলায় ২ জনের যাবতজ্জীবন

আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’র কারণ খুঁজছে পুলিশ

tab

সারাদেশ

রাবিতে এডহক নিয়োগ স্থগিত

প্রতিনিধি, রাবি

শনিবার, ০৮ মে ২০২১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অবৈধ এডহক নিয়োগে জরিতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কার্যক্রমের পর সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এডহকে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের যোগদান স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ৫ মে দেয়া এডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ওই নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তদন্ত সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হলো।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৬ মে উপ-রেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলী স্বাক্ষরে ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন সেকশন অফিসার, ২৪ সহায়ক কর্মচারী এবং ৮৫ জন উচ্চ ও নিম্নসহকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান ৪৩ নেতাকর্মী, রয়েছে চার জন সাংবাদিক নেতা।

এই নিয়োগের পর শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘অবৈধ’ নিয়োগ ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে এসেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তদন্ত কমিটিকে নেতৃত্বে ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন কমিটির সদস্য এবং ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ ও ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। এরপর তারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার কার্যালয়ে যান। পৌনে ১২টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমরা সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। এই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।’

প্রসঙ্গগত, ৬ মে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান তার শেষ কর্মদিবসে সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩৭ জন এডকহ ভিত্তিতে নিয়োগের বিষয়টি সামনে আসে। ওই দিন সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় এই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

‘মানবিক’ কারণে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়োগ, বললেন বিদায়ী উপাচার্য

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এডহক নিয়োগের ঘটনায় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছেন বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান। কিন্তু তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্যের পর বিদায়ী উপাচার্য দাবি করেছেন, তিনি যে নিয়োগ দিয়েছেন সেটি যৌক্তিক এবং তাদের চাকরি না টেকার কোন কারণ নেই। এছাড়া মানবিক কারণে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের যোগদান স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন বিদায়ী উপাচার্য। এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন আবদুস সোবহান। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর ১২(৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমি এই নিয়োগ দিয়েছি। এখানে কেউ হয়তো বলার চেষ্টা করছে নিষেধাজ্ঞা দেয়া ছিল। কিন্তু আমি মনে করি, যেখানে সুস্পষ্ট একটা আইন আছে, ক্ষমতা দেয়া আছে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা আসতে হলে তো ওই আইনটা (অ্যাক্ট) বাতিল হওয়া উচিত আগে। উপাচার্য বলেন, নিয়োগ না টেকার কী কারণ আছে আমি বলতে পারব না। এটার সিদ্ধান্ত কারা নেবে আমি জানি না। অ্যাডহকে নিয়োগ তো অনেক হয়েছে। মাস্টাররোলে ৫৪৪ জনের চাকরি তো এখনও টিকে আছে। সুতরাং এটা না টেকার কী কারণ আছে? আমি মনে করি এটা যৌক্তিক এবং আমি নিজ দায়িত্বে এটা দিয়েছি।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়োগ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আবদুস সোবহান বলেন, যারা ডিজার্ভ করে তারাই এই নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে যাচ্ছিল, আমি এই নিয়োগ মানবিক কারণে দিয়েছি। তারা অনার্স-মাস্টার্স পাস, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের তৃতীয় শ্রেণীর চাকরি পাওয়া আমি খুবই যৌক্তিক মনে করি। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে মাত্র ৪০-৪৫ জন ছাত্রলীগ, এমন আলোচনার প্রসঙ্গে এম আবদুস সোবহান বলেন, কথাটি সত্য নয়। ছাত্রলীগের নেতা হওয়া আর কর্মী হওয়া তো এক নয়। ছাত্রলীগ নেতা, ছাত্রলীগ কর্মী এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান তো একই।

অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান ক্যাম্পাসে আসার সময় তার গাড়ির সঙ্গে টহল পুলিশের একটি গাড়িও আসে। তার আসার আগে থেকেই নিয়োগপ্রাপ্ত অনেকে প্রশাসন ভবনের আশপাশে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দিতে উপাচার্য দপ্তরে ঢুকলে তাদের অনেকে প্রশাসন ভবনে ঢুকে পড়েন। আবদুস সোবহান বের হয়ে আসলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ নিয়োগপ্রাপ্তরা স্লোগান দেন, ‘সোবহান স্যার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ‘সোবহান স্যারের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ক্যাম্পাসে’। এরপর আবদুস সোবহান গাড়িতে বিনোদপুর গেট দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িও ছিল।

back to top