alt

সারাদেশ

খুলনায় পরিস্থিতির আরও অবনতি

মৃত্যু সর্বোচ্চ, লকডাউন ঘোষণা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : রোববার, ২০ জুন ২০২১

খুলনা বিভাগে করোনা সংক্রমণে একদিনে সর্বোচ্চ ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ৬২৫ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় জেলায় মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন।

শুধু খুলনা নয়, সারাদেশেই বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। গত এক সপ্তাহে সারাদেশে শনাক্ত বেড়েছে ৫৫ শতাংশের বেশি; মৃত্যু বেড়েছে ৪৬ শতাংশেরও বেশি। তবে এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা ২২ শতাংশের বেশি এবং সুস্থতা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা জেলা ও মহানগরে একদিনে শনাক্তের পাশাপাশি শনাক্তের হারও বেড়েছে। ঢাকায় সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, জনগণ মাস্ক না পরলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা না করলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।

ঢাকা জেলা ও মহানগরে গত একদিনে সাত হাজার ৮৬৫টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ১১৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এখানে শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগেও ঢাকায় শনাক্তের হার ৫ থেকে ৬ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।

মহানগর ও ঢাকা জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেইন মো. মঈনুল আহসান সংবাদকে বলেন, ‘ঢাকার সঙ্গে কোন জেলারই যোগাযোগ বন্ধ নেই। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসছেন, যাচ্ছেন। এ কারণে এখানেও সংক্রমণ বাড়ছে। সীমান্তবর্তী জেলা থেকেও ঢাকায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে।’

ঢাকায় সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে- এমন আশঙ্কা করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘সারাদেশেই এখন সংক্রমণ বাড়তির দিকে। কেউই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না; মাস্ক পরছেন না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে এখানে সংক্রমণ আরও বাড়বে।’

দেড় মাসের মধ্যে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে গতকাল বিকেলে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা গত ৪৮ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এর আগে গত ২ মে এর চেয়ে বেশি ‘কোভিড-১৯’ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। ওইদিন ৬৯ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত একদিনে মৃত্যুসহ এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ হাজার ৪৬৬ জনে। মোট শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

গত এক দিনে দেশে তিন হাজার ৫৭ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে; এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট লাখ ৪৮ হাজার ২৭ জনে।

২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন মোট এক হাজার ৭২৫ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৮০ হাজার ১৪৬ জন।

একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

খুলনা বিভাগে

গত কয়েক দিনের ধারায় গতকালও বেশি মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এ বিভাগে গত একদিনে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনার পর বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে- ১৪ জনের।

অন্যান্য বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামে ১১ জনের, রাজশাহী বিভাগে ৮ জনের ও রংপুর বিভাগে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন করে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৬৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৪ জন ও নারী ৩৩ জন। এর মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, তিন জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং তিন জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৬৫৭ জন এবং নারী তিন হাজার ৮০৯ জন।

এক সপ্তাহে মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘২৪তম এপিডেমিওলজি সপ্তাহ-২০২১’ এ (১৩ জুন-১৯ জুন) দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের হার দুটোই বেড়েছে।

গত এক সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের (৬ জুন-১২ জুন) চেয়ে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে ৫৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এছাড়াও এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার হার ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সুস্থতার হার বেড়েছে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

গত এক সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯৫ জনের, যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৭০ জন। এই সপ্তাহে ‘কোভিড-১৯’ রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৫৪১ জন; আর আগের সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১৫ হাজার ১৭২ জনের।

টানা দ্বিতীয় দিন ১৮ শতাংশের বেশি শনাক্তের হার

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে দেশে মোট ৫২৮টি ল্যাবে ১৬ হাজার ৯৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৩ লাখ পাঁচ হাজার ৫০৩টি।

গতকাল নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ঢাকা বিভাগে

বিভাগভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার বেশি খুলনা বিভাগে।

ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় একদিনে ৯ হাজার ১৫৪টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৪১১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।

খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় একদিনে এক হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষায় ৬২৫ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় একদিনে ৩৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এই বিভাগে শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ১২ শতাংশ।

অন্যান্য বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় একদিনে দুই হাজার ৫৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৪০১ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে; সংক্রমণের হার ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৯২৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ২০৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৬ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে; নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ২৭ দশমিক ৩১ শতাংশ।

সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ৪৮০টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ।

খুলনায় এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’

করোনার বিস্তার ঠেকাতে আগামী মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে এক সপ্তাহের জন্য খুলনা জেলা ও মহানগরে ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন ব্যতীত কোন গণপরিবহন খুলনায় প্রবেশ করতে বা বের হতে পারবে না।

গতকাল করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা ও মহানগর কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ সিদ্ধান্ত জানান।

খুলনা জেনারেল হাসপাতালকে ৭০ শয্যার ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক জানান, এটি আগামী রোববার (২০ জুন) থেকে চালু হবে। করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হবে।

হেলাল উদ্দিন জানান, ‘কঠোর লকডাউন’ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য অতিশীঘ্রই গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সবাইকে অবহিত করা হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায়, স্বাস্থ্যবিধি পালনে মনিটরিং জোরদার করা এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে প্রচার-প্রচারণা চলমান থাকবে।

খুলনায় ৭ দিনের লকডাউন

খুলনা : জেলা ভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৪৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৫৯৮ জন। মারা গেছেন ২০৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন নয় হাজার ৯৩৪ জন।

এদিকে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খুলনায় ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী সাত দিন জেলা ও নগরে এ লকডাউন কঠোরভাবে পালন করা হবে। শনিবার দুুপুরে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কুষ্টিয়া হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট

কুষ্টিয়া : ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে কুষ্টিয়ার করোনা পরিস্থিতি। হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৫ ঘণ্টায় ৭ জনসহ মোট ৮ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ১১২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৩২ শতাংশ।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি একদিনে এ যাবতকালের সব থেকে বেশি মৃত্যু।

এদিকে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরিতে বর্তমানে ১১৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ওয়ার্ডে নতুন করে আর কোন রোগী ভর্তির সুযোগ নেই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৩০ জন সাধারণ রোগীকে পাশের মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ডায়াবেটিক হাসপাতালে স্থানাস্তর করেছে কর্তৃপক্ষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকে যেসব রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে, সেসব রোগীর প্রত্যেকেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে জেনারেল হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সত্যিই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। যে হারে রোগী আসছে তাতে পুরো হাসপাতাল করোন রোগীর জন্য ছেড়ে দিলেও চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে না।

সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শহর থেকে প্রায় প্রতিটি গ্রামেই করোনা ছড়িয়ে পড়ছে।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গত ১১ জুন মধ্যরাত থেকে অধিক সংক্রমিত কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এই বিধিনিষেধ অনেকটা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। মাঠ পর্যায়ে তা খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায়নি। গতকাল ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে আরও ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি। তবে গতকাল সকাল থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর করতে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা গেছে।

সংক্রমণের চূড়ায় রাজশাহী

রাজশাহী : রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন আরও ১০ জন। রাজশাহীতে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের পিক (চূড়া) অবস্থান করছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জেলায় এখন প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার বিপরিতে গড়ে ৪০ শতাংশ নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, করোনার প্রথম ধাক্কা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে অবস্থা দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে রাজশাহীতে এখন সংক্রমণের পিক চলছে। কয়েকদিনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংক্রমণের হার ৪০ শতাংশ। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানিয়েছেন, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পৌঁছে গেছে রাজশাহীর গ্রামে গ্রামে। গত কয়েকদিন প্রান্তিক পর্যায়ের এমন রোগী পেয়েছেন যা আগে কখনও পাননি। প্রান্তিক এসব মানুষের সংক্রমণের হার প্রায় ৩০ শতাংশ।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাসপাতাল পরিচারক বলছেন, গ্রামে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বেশিরভাগই দিন আনে দিন খায়। উপার্জন করেই তাদের সংসার চলে। তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে শুধু অন্ধ বিশ্বাস আর ভ্রান্ত ধারণা থেকে।

চুয়াডাঙ্গা শহর ও আলুকদিয়া ইউনিয়নে লকডাউন আজ থেকে

চুয়াডাঙ্গা : জেলায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৭ দিনের জন্য চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোপূর্বে জেলার সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলায় ১৫ জুন থেকে ১৫ দিনের লকডাউন কার্যকর রয়েছে।

দিনাজপুরে শনাক্তের হার ৪৭ দশমিক ১০ শতাংশ

দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জনের দেহে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫ জনই সদরের। জেলায় মোট আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৭৬ জন। যার মধ্যে সদরেই আক্রান্ত মোট ৩ হাজার ৯৯৭ জন। সংক্রমণের হার ৪৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

খাগড়াছড়িতে নতুন শনাক্ত ১৩

খাগড়াছড়ি : জেলায় ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩ জন। এর আগে দুই দিনে করোনো আক্রান্ত হয়েছিল ১০ জন। এখন পর্যন্ত জেলায় ছয় হাজার ১৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউপিতে লকডাউন ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজন ও বিকেলে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ৮০ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো। এ অবস্থায় আজ থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউনিয়ন এলাকায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসনের কনফারেন্স রুমে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে ২৬ জুন রাত ১২ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউপিতে কঠোর লকডাউন চলবে। লকডাউন চলাকালে সবকিছু বন্ধ থাকবে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখা যাবে। মোটরসাইকেল ইজি-বাইক চলবে না। ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। গণপরিবহন ও দূরপাল্লার পরিবহন লকডাউন সীমানার বাইরে চলাচল করবে। লকডাউন চলাকালে চায়ের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। সভায় জেলা প্রশাসক ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন ৬ বিজিবি পরিচালক, সিভিল সার্জন, সহকারী পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেহ আকরাম জানান, জেলার জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের বাজার পাড়ার মৃত এলাহী ম-লের ছেলে শুকুর আলী (৭০) ১৩ জুন বেলা ১১টার সময় করোনা উপসর্গ নিয়ে সদর হাসপাতালের ইয়োলোজনে ভর্তি করা হয়। পরদিন নমুনা সংগ্রহের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তিনি মারা যান। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের জ্বীনতলা মল্লিক পাড়ার মৃত আনিছুর রহমানের স্ত্রী ছালেহা বেগম (৭০) করোনার উপসর্গ নিয়ে ১২ জুন রাত ১০ টার সময় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১৬ জুন তার করোনা পজিটিভ আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তার মৃত্যু হয়। একই দিন বিকেলে দামুড়হুদার বিষ্ণপুর গ্রামের হাজী আক্কাস আলী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যান। এই নিয়ে শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পযর্ন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৭৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এটিই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত বলে জানিয়েছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫২৩ জন।

ছবি

স্বামীর পুরুষ অঙ্গ কেটে আত্মহত্যা করলেন স্ত্রী

ছবি

বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক ও দুই দেশের শিশুদের খেলাধুলা অনুষ্ঠিত

ছবি

সাবমেরিন কেবল বিচ্ছিন্ন, ধীরগতি হতে পারে ইন্টারনেট

ছবি

বনের আগুন নেভালেন জেলা প্রশাসক, জানে না বনের কর্তারা

ছবি

বিশেষজ্ঞ প্যানেল ও বারি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিনিময় কর্মশালা

ছবি

৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচ

ছবি

টাঙ্গাইলে সংঘ‌র্ষ থামাতে গিয়ে হামলার শিকার এসআই, ১৬ জন আটক

ছবি

কক্সবাজারে জলকেলি উৎসবের সমাপনীতে আলোকিত জীবনের প্রত্যাশা

ছবি

মায়ানমারের বিজিপির আরও ২৪ সদস্য বাংলাদেশে

ছবি

রাজশাহীতে মোটরসাইকেলে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ৩

ছবি

ইউএসএআইডি এবং সিমিট প্রতিনিধি দলের বারি পরিদর্শন

ছবি

পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ

ছবি

‘আনন্দে’ শুরুর পর সড়কের ঈদযাত্রা কেন ‘বিষাদে’

ছবি

ঘটনা চাপা দিতে ১৫০ বস্তা সিমেন্ট সরিয়ে ফেলার অভিযোগ

মীরসরাইয়ে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, ঘরের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে

ছবি

মাধবপুরে বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

ছবি

টঙ্গীতে আগুনে পুড়ল ১২টি খাদ্য গুদাম

ছবি

জলকেলি উৎসবে মুখরিত কক্সবাজরের রাখাইন পল্লী

শেরপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ উদ্বোধন

কেশবপুরে সকাল-সন্ধ্যা বাজারের দখল নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি উচ্ছেদ আতঙ্কে অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

ছবি

ভালুকায় বোরো ধানে চিটা কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

ভালুকায় বোরো ধানে চিটা কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে সরকারি রাস্তার ১২০টি গাছ কর্তনের অভিযোগ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে

পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করেন পুত্রবধূ

ছবি

মির্জাগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

ছবি

নড়াইলের শ্রীনগর গ্রামে ভ্যানচালককে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা

ছবি

প্রেমিকার ওপর অভিমান প্রেমিকের আত্মহত্যা

ছবি

শ্যামনগর পদ্মপুকুরের প্রধান সড়কের একাংশ যেন বালুর স্তুপে পরিণত

আমার চেয়ে খারাপ লোক এ জেলায় নাই : তাহেরপুত্র বিপ্লব

ছবি

কক্সবাজারে রিসোর্টে পযটক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ছবি

ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা

ছবি

সুনামগঞ্জে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

ছবি

টোলপ্লাজায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ১৪

ছবি

গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, বেশিরভাগ অঞ্চলে বইছে তাপপ্রবাহ

কোম্পানীগঞ্জে পর্যটকের সঙ্গে এএসপির মারামারি

tab

সারাদেশ

খুলনায় পরিস্থিতির আরও অবনতি

মৃত্যু সর্বোচ্চ, লকডাউন ঘোষণা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোববার, ২০ জুন ২০২১

খুলনা বিভাগে করোনা সংক্রমণে একদিনে সর্বোচ্চ ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ৬২৫ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় জেলায় মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন।

শুধু খুলনা নয়, সারাদেশেই বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। গত এক সপ্তাহে সারাদেশে শনাক্ত বেড়েছে ৫৫ শতাংশের বেশি; মৃত্যু বেড়েছে ৪৬ শতাংশেরও বেশি। তবে এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা ২২ শতাংশের বেশি এবং সুস্থতা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা জেলা ও মহানগরে একদিনে শনাক্তের পাশাপাশি শনাক্তের হারও বেড়েছে। ঢাকায় সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, জনগণ মাস্ক না পরলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা না করলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।

ঢাকা জেলা ও মহানগরে গত একদিনে সাত হাজার ৮৬৫টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ১১৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এখানে শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগেও ঢাকায় শনাক্তের হার ৫ থেকে ৬ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।

মহানগর ও ঢাকা জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেইন মো. মঈনুল আহসান সংবাদকে বলেন, ‘ঢাকার সঙ্গে কোন জেলারই যোগাযোগ বন্ধ নেই। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসছেন, যাচ্ছেন। এ কারণে এখানেও সংক্রমণ বাড়ছে। সীমান্তবর্তী জেলা থেকেও ঢাকায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে।’

ঢাকায় সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে- এমন আশঙ্কা করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘সারাদেশেই এখন সংক্রমণ বাড়তির দিকে। কেউই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না; মাস্ক পরছেন না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে এখানে সংক্রমণ আরও বাড়বে।’

দেড় মাসের মধ্যে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে গতকাল বিকেলে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা গত ৪৮ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এর আগে গত ২ মে এর চেয়ে বেশি ‘কোভিড-১৯’ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। ওইদিন ৬৯ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত একদিনে মৃত্যুসহ এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ হাজার ৪৬৬ জনে। মোট শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

গত এক দিনে দেশে তিন হাজার ৫৭ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে; এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট লাখ ৪৮ হাজার ২৭ জনে।

২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন মোট এক হাজার ৭২৫ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৮০ হাজার ১৪৬ জন।

একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

খুলনা বিভাগে

গত কয়েক দিনের ধারায় গতকালও বেশি মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এ বিভাগে গত একদিনে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনার পর বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে- ১৪ জনের।

অন্যান্য বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামে ১১ জনের, রাজশাহী বিভাগে ৮ জনের ও রংপুর বিভাগে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন করে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৬৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৪ জন ও নারী ৩৩ জন। এর মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, তিন জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং তিন জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৬৫৭ জন এবং নারী তিন হাজার ৮০৯ জন।

এক সপ্তাহে মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘২৪তম এপিডেমিওলজি সপ্তাহ-২০২১’ এ (১৩ জুন-১৯ জুন) দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের হার দুটোই বেড়েছে।

গত এক সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের (৬ জুন-১২ জুন) চেয়ে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে ৫৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এছাড়াও এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার হার ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সুস্থতার হার বেড়েছে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

গত এক সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯৫ জনের, যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৭০ জন। এই সপ্তাহে ‘কোভিড-১৯’ রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৫৪১ জন; আর আগের সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১৫ হাজার ১৭২ জনের।

টানা দ্বিতীয় দিন ১৮ শতাংশের বেশি শনাক্তের হার

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে দেশে মোট ৫২৮টি ল্যাবে ১৬ হাজার ৯৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৩ লাখ পাঁচ হাজার ৫০৩টি।

গতকাল নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ঢাকা বিভাগে

বিভাগভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার বেশি খুলনা বিভাগে।

ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় একদিনে ৯ হাজার ১৫৪টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৪১১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।

খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় একদিনে এক হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষায় ৬২৫ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় একদিনে ৩৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এই বিভাগে শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ১২ শতাংশ।

অন্যান্য বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় একদিনে দুই হাজার ৫৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৪০১ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে; সংক্রমণের হার ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৯২৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ২০৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৬ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে; নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ২৭ দশমিক ৩১ শতাংশ।

সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ৪৮০টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ।

খুলনায় এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’

করোনার বিস্তার ঠেকাতে আগামী মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে এক সপ্তাহের জন্য খুলনা জেলা ও মহানগরে ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন ব্যতীত কোন গণপরিবহন খুলনায় প্রবেশ করতে বা বের হতে পারবে না।

গতকাল করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা ও মহানগর কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ সিদ্ধান্ত জানান।

খুলনা জেনারেল হাসপাতালকে ৭০ শয্যার ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক জানান, এটি আগামী রোববার (২০ জুন) থেকে চালু হবে। করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হবে।

হেলাল উদ্দিন জানান, ‘কঠোর লকডাউন’ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য অতিশীঘ্রই গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সবাইকে অবহিত করা হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায়, স্বাস্থ্যবিধি পালনে মনিটরিং জোরদার করা এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে প্রচার-প্রচারণা চলমান থাকবে।

খুলনায় ৭ দিনের লকডাউন

খুলনা : জেলা ভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৪৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৫৯৮ জন। মারা গেছেন ২০৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন নয় হাজার ৯৩৪ জন।

এদিকে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খুলনায় ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী সাত দিন জেলা ও নগরে এ লকডাউন কঠোরভাবে পালন করা হবে। শনিবার দুুপুরে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কুষ্টিয়া হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট

কুষ্টিয়া : ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে কুষ্টিয়ার করোনা পরিস্থিতি। হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৫ ঘণ্টায় ৭ জনসহ মোট ৮ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ১১২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৩২ শতাংশ।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি একদিনে এ যাবতকালের সব থেকে বেশি মৃত্যু।

এদিকে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরিতে বর্তমানে ১১৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ওয়ার্ডে নতুন করে আর কোন রোগী ভর্তির সুযোগ নেই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৩০ জন সাধারণ রোগীকে পাশের মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ডায়াবেটিক হাসপাতালে স্থানাস্তর করেছে কর্তৃপক্ষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকে যেসব রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে, সেসব রোগীর প্রত্যেকেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে জেনারেল হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সত্যিই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। যে হারে রোগী আসছে তাতে পুরো হাসপাতাল করোন রোগীর জন্য ছেড়ে দিলেও চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে না।

সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শহর থেকে প্রায় প্রতিটি গ্রামেই করোনা ছড়িয়ে পড়ছে।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গত ১১ জুন মধ্যরাত থেকে অধিক সংক্রমিত কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এই বিধিনিষেধ অনেকটা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। মাঠ পর্যায়ে তা খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায়নি। গতকাল ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে আরও ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি। তবে গতকাল সকাল থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর করতে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা গেছে।

সংক্রমণের চূড়ায় রাজশাহী

রাজশাহী : রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন আরও ১০ জন। রাজশাহীতে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের পিক (চূড়া) অবস্থান করছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জেলায় এখন প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার বিপরিতে গড়ে ৪০ শতাংশ নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, করোনার প্রথম ধাক্কা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে অবস্থা দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে রাজশাহীতে এখন সংক্রমণের পিক চলছে। কয়েকদিনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংক্রমণের হার ৪০ শতাংশ। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানিয়েছেন, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পৌঁছে গেছে রাজশাহীর গ্রামে গ্রামে। গত কয়েকদিন প্রান্তিক পর্যায়ের এমন রোগী পেয়েছেন যা আগে কখনও পাননি। প্রান্তিক এসব মানুষের সংক্রমণের হার প্রায় ৩০ শতাংশ।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাসপাতাল পরিচারক বলছেন, গ্রামে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বেশিরভাগই দিন আনে দিন খায়। উপার্জন করেই তাদের সংসার চলে। তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে শুধু অন্ধ বিশ্বাস আর ভ্রান্ত ধারণা থেকে।

চুয়াডাঙ্গা শহর ও আলুকদিয়া ইউনিয়নে লকডাউন আজ থেকে

চুয়াডাঙ্গা : জেলায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৭ দিনের জন্য চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোপূর্বে জেলার সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলায় ১৫ জুন থেকে ১৫ দিনের লকডাউন কার্যকর রয়েছে।

দিনাজপুরে শনাক্তের হার ৪৭ দশমিক ১০ শতাংশ

দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জনের দেহে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫ জনই সদরের। জেলায় মোট আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৭৬ জন। যার মধ্যে সদরেই আক্রান্ত মোট ৩ হাজার ৯৯৭ জন। সংক্রমণের হার ৪৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

খাগড়াছড়িতে নতুন শনাক্ত ১৩

খাগড়াছড়ি : জেলায় ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩ জন। এর আগে দুই দিনে করোনো আক্রান্ত হয়েছিল ১০ জন। এখন পর্যন্ত জেলায় ছয় হাজার ১৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউপিতে লকডাউন ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজন ও বিকেলে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ৮০ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো। এ অবস্থায় আজ থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউনিয়ন এলাকায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসনের কনফারেন্স রুমে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে ২৬ জুন রাত ১২ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউপিতে কঠোর লকডাউন চলবে। লকডাউন চলাকালে সবকিছু বন্ধ থাকবে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখা যাবে। মোটরসাইকেল ইজি-বাইক চলবে না। ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। গণপরিবহন ও দূরপাল্লার পরিবহন লকডাউন সীমানার বাইরে চলাচল করবে। লকডাউন চলাকালে চায়ের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। সভায় জেলা প্রশাসক ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন ৬ বিজিবি পরিচালক, সিভিল সার্জন, সহকারী পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেহ আকরাম জানান, জেলার জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের বাজার পাড়ার মৃত এলাহী ম-লের ছেলে শুকুর আলী (৭০) ১৩ জুন বেলা ১১টার সময় করোনা উপসর্গ নিয়ে সদর হাসপাতালের ইয়োলোজনে ভর্তি করা হয়। পরদিন নমুনা সংগ্রহের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তিনি মারা যান। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের জ্বীনতলা মল্লিক পাড়ার মৃত আনিছুর রহমানের স্ত্রী ছালেহা বেগম (৭০) করোনার উপসর্গ নিয়ে ১২ জুন রাত ১০ টার সময় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১৬ জুন তার করোনা পজিটিভ আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তার মৃত্যু হয়। একই দিন বিকেলে দামুড়হুদার বিষ্ণপুর গ্রামের হাজী আক্কাস আলী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যান। এই নিয়ে শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পযর্ন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৭৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এটিই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত বলে জানিয়েছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫২৩ জন।

back to top