alt

সারাদেশ

চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলা

পরিকল্পনাকারী যুব-ছাত্র অধিকার পরিষদ : পুলিশ

আরও ১০ জন গ্রেপ্তার

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো : শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

চট্টগ্রামের জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা ও মণ্ডপের বাইরে পূজার ব্যানার-পোস্টার ছেঁড়াসহ পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে- ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠন ‘বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ’-এর চট্টগ্রাম মহানগরের নেতৃত্বে থাকা আছে ৪ জন নেতাও। তারা হলেন- বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক মো. নাছির, সদস্যসচিব মিজানুর রহমান, বায়েজিদ বোস্তামী থানার আহ্বায়ক মো. রাসেল, নগর ছাত্র অধিকার আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক মো. ইমন, কর্মী ইয়ার মোহাম্মদ, জিয়া উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত, হাবিবুল্লাহ, ইমরান হোসেন ও মো. মিজান। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে হামলার পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বদাতা ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, কুমিল্লায় দুর্গাপূজার মণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনা জেনেই চট্টগ্রামে সক্রিয় হয়ে ওঠেন সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠনের যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের চার নেতা। নগরীর টেরিবাজার, রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় প্রভাব রাখেন বিএনপি ও জামায়াতের এমন কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিকল্পনা করে গত ১৫ অক্টোবর জুমার নামাজের পর নগরীর জেএম সেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ছক তৈরি করেন। সেই ছক অনুযায়ী মিছিল নিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের উত্তেজিত করে হামলার ঘটনা ঘটান। গ্রেপ্তার এই দশজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পূজামণ্ডপে হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন। এ নিয়ে হামলার ঘটনায় মোট ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক বলেন, সিসি ক্যামেরার ?ফুটেজ, ভিডিও ফুটেজ, ঘটনাস্থলের ছবি ও গ্রেপ্তার আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আমরা নুরুল হক নুরের সংগঠনের কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। এর ভিত্তিতে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারাও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্যপ্রমাণ আছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তারাই হামলার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়ার পুরো কাজটি করেছেন। তবে এর সঙ্গে যে আর কেই জড়িত নেই, আমরা সেটি বলছি না। এর সঙ্গে আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমরা তাদের বিষয়েও তদন্ত করছি।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার নাছির যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক এবং মিজানুর রহমান সদস্য সচিব। রাসেল ওই সংগঠনের বায়েজিদ বোস্তামি থানা শাখার আহ্বায়ক। এছাড়া ইমন ছাত্র অধিকার পরিষদের চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল নেতা। গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে ইমরান হোসেন ছাড়া বাকি সবাই যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। ইমরান চট্টগ্রাম নগরীর বৌবাজারে কুমিল্লা হোটেলের ম্যানেজার ও জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত।

ওসি নেজাম উদ্দীন জানিয়েছেন, নাছিরকে সাতকানিয়ার কেরানীহাট, ইমনকে চকবাজার, মিজানুর রহমানকে চকবাজারের জয়নগর ও রাসেলকে ষোলশহর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের বন্দর, ইপিজেডসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার খবর পেয়েই যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা গোপনস্থানে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন জুমার নামাজের পর নগরীর আন্দরকিল্লায় শাহী জামে মসজিদের সামনে কথিত কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি ও মিছিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নাছির ও মিজানুর রহমান মূল পরিকল্পনকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব নেন। সিদ্ধান্ত হয়, টেরিবাজার ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের দোকান কর্মচারীদের উসকানি দিয়ে উত্তেজিত করে মিছিলে শরিক করা হবে। ওই বৈঠকে নগরীর আন্দরকিল্লা ও রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে দুটি মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত হয়। টার্গেট নির্ধারণ করা হয় রহমতগঞ্জে জেএম সেন হল পূজামণ্ডপ এবং নন্দনকানন ইসকন মন্দির। মিজানুর রহমান, রাসেল, ইমন ও ইমরান মাজেদকে আন্দরকিল্লায় মিছিল সংগঠিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। আর রিয়াজউদ্দিন বাজারের গোলাম রসুল মার্কেটের সামনে থেকে নন্দনকানন ইসকন মন্দির পর্যন্ত আরেকটি মিছিলের দায়িত্ব দেয়া হয় সাদেককে।

কোতোয়ালি থানার ওসি নেজাম উদ্দীন আরও বলেন, আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও তদন্তে আমরা তথ্য পেয়েছি, নাছির মূল পরিকল্পনা করেন। সঙ্গে ছিলেন মিজান। অর্থাৎ নাছির ও মিজান মিলে হামলার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নের ছক সাজান। তবে নাছির ঘটনাস্থলে আসেননি। মিজান, রাসেল, ইমন ও ইমরান মাজেদ আন্দরকিল্লায় এবং সাদেক রিয়াজউদ্দিন বাজারে মুসল্লিদের সংগঠিত করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ভাগ হয়ে উভয়দিকে ছিলেন।

সূত্র জানায়, জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টার পর বিভিন্ন ছবি এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের নেতাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এই ঘটনার পরে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদেও উঠে আসে, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পূজামণ্ডপে হামলার সঙ্গে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠনের নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার তথ্য।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর জেএম সেন হলে পূজামণ্ডপে হামলা চেষ্টার ঘটনায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা অজ্ঞাতনামা আরও অন্তত ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার এসআই আকাশ মাহমুদ ফরিদ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনার পর এ পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় পৃথক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু

ছবি

পাবনায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৮

ছবি

সিলেটে পাথর কোয়ারী দখলে সবার স্বপ্ন এক

ছবি

মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ-ভিডিও কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও একজন 

সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে ন্যাড়া করল কর্মীরা

সৌদি আরবে দালালের হাতে জিম্মি সিলেটি যুবকের মৃত্যু

ছবি

ডেটা ক্লাসিফিকেশন থাকছে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনে : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

ছবি

সাইবার সিকিউরিটি সল্যুশনস নিয়ে মাস্টারকার্ডের কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

ব্যক্তি স্বার্থের দ্বন্দ্বের সময় বোয়ালমারীর একান্নবর্তী পাল পরিবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

ছবি

বোয়ালখালীতে বস্তায় আদা চাষ বাড়ছে

ছবি

কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছে লাইট হাউস

সংস্কৃতি ক্ষরায় শৈলজারঞ্জন সংস্কৃতি কেন্দ্র

ছবি

শালিকের কিচিরমিচিরে মুখরিত বেতাগী বাসস্ট্যান্ড

খোলা ট্রাক, পিকআপ ও ডাম্পারে ধুলাবালু বহন, জনদুর্ভোগ

তানোরে রাসেল ভাইপারের কামড়ে কৃষকের মৃত্যু

ছবি

সরিষাবাড়ীতে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে মানববন্ধন

নরসিংদীতে সেলাই মেশিন বিতরণ

‘দেশবাসী এখনও খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব আশা করে’

কেশবপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র গ্রেপ্তার

শরণখোলায় ৭ ফুট লম্বা দাড়াস সাপ উদ্ধার

ছবি

মধ্যপাড়া খনি শ্রমিকদের ধর্মঘট, উৎপাদন বন্ধ

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে জুস রপ্তানি

চাঁদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত বাবা-ছেলে

ছবি

হবিগঞ্জ-সুজাতপুর সড়ক ভেঙে বেহাল, জনদুর্ভোগ

রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাকে ধরতে ভবনে তল্লাশি, ফোনে বললেন ‘খুঁজে লাভ নেই’

ধনবাড়ীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরি

ছবি

মাতামুহুরীর ভাঙন ঠেকাতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে জিওব্যাগ ডাম্পিং

ছবি

মোরেলগঞ্জে পারিবারিক পুষ্টি বাগানের কৃষকরা পেলেন কৃষি উপকরণ

বরিশালে বোরো মৌসুমেও চালের দাম বাড়ছে

দুমকিতে কৃষি উপকরণ বিতরণ

বাগেরহাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু

সিংড়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা প্রদান

পাকুন্দিয়ায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ

পোরশা সীমান্তে বাংলাদেশি রাখালকে হত্যা করেছে বিএসএফ

চালককে অচেতন করে ইজিবাইক ছিনতাই

ছবি

মৌলভীবাজারের দুই উপজেলা দিয়ে ৭১ জনকে পুশইন

tab

সারাদেশ

চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলা

পরিকল্পনাকারী যুব-ছাত্র অধিকার পরিষদ : পুলিশ

আরও ১০ জন গ্রেপ্তার

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

চট্টগ্রামের জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা ও মণ্ডপের বাইরে পূজার ব্যানার-পোস্টার ছেঁড়াসহ পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে- ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠন ‘বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ’-এর চট্টগ্রাম মহানগরের নেতৃত্বে থাকা আছে ৪ জন নেতাও। তারা হলেন- বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক মো. নাছির, সদস্যসচিব মিজানুর রহমান, বায়েজিদ বোস্তামী থানার আহ্বায়ক মো. রাসেল, নগর ছাত্র অধিকার আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক মো. ইমন, কর্মী ইয়ার মোহাম্মদ, জিয়া উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত, হাবিবুল্লাহ, ইমরান হোসেন ও মো. মিজান। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে হামলার পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বদাতা ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, কুমিল্লায় দুর্গাপূজার মণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনা জেনেই চট্টগ্রামে সক্রিয় হয়ে ওঠেন সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠনের যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের চার নেতা। নগরীর টেরিবাজার, রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় প্রভাব রাখেন বিএনপি ও জামায়াতের এমন কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিকল্পনা করে গত ১৫ অক্টোবর জুমার নামাজের পর নগরীর জেএম সেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ছক তৈরি করেন। সেই ছক অনুযায়ী মিছিল নিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের উত্তেজিত করে হামলার ঘটনা ঘটান। গ্রেপ্তার এই দশজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পূজামণ্ডপে হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন। এ নিয়ে হামলার ঘটনায় মোট ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক বলেন, সিসি ক্যামেরার ?ফুটেজ, ভিডিও ফুটেজ, ঘটনাস্থলের ছবি ও গ্রেপ্তার আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আমরা নুরুল হক নুরের সংগঠনের কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। এর ভিত্তিতে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারাও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্যপ্রমাণ আছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তারাই হামলার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়ার পুরো কাজটি করেছেন। তবে এর সঙ্গে যে আর কেই জড়িত নেই, আমরা সেটি বলছি না। এর সঙ্গে আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমরা তাদের বিষয়েও তদন্ত করছি।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার নাছির যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক এবং মিজানুর রহমান সদস্য সচিব। রাসেল ওই সংগঠনের বায়েজিদ বোস্তামি থানা শাখার আহ্বায়ক। এছাড়া ইমন ছাত্র অধিকার পরিষদের চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল নেতা। গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে ইমরান হোসেন ছাড়া বাকি সবাই যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। ইমরান চট্টগ্রাম নগরীর বৌবাজারে কুমিল্লা হোটেলের ম্যানেজার ও জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত।

ওসি নেজাম উদ্দীন জানিয়েছেন, নাছিরকে সাতকানিয়ার কেরানীহাট, ইমনকে চকবাজার, মিজানুর রহমানকে চকবাজারের জয়নগর ও রাসেলকে ষোলশহর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের বন্দর, ইপিজেডসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার খবর পেয়েই যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা গোপনস্থানে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন জুমার নামাজের পর নগরীর আন্দরকিল্লায় শাহী জামে মসজিদের সামনে কথিত কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি ও মিছিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নাছির ও মিজানুর রহমান মূল পরিকল্পনকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব নেন। সিদ্ধান্ত হয়, টেরিবাজার ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের দোকান কর্মচারীদের উসকানি দিয়ে উত্তেজিত করে মিছিলে শরিক করা হবে। ওই বৈঠকে নগরীর আন্দরকিল্লা ও রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে দুটি মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত হয়। টার্গেট নির্ধারণ করা হয় রহমতগঞ্জে জেএম সেন হল পূজামণ্ডপ এবং নন্দনকানন ইসকন মন্দির। মিজানুর রহমান, রাসেল, ইমন ও ইমরান মাজেদকে আন্দরকিল্লায় মিছিল সংগঠিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। আর রিয়াজউদ্দিন বাজারের গোলাম রসুল মার্কেটের সামনে থেকে নন্দনকানন ইসকন মন্দির পর্যন্ত আরেকটি মিছিলের দায়িত্ব দেয়া হয় সাদেককে।

কোতোয়ালি থানার ওসি নেজাম উদ্দীন আরও বলেন, আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও তদন্তে আমরা তথ্য পেয়েছি, নাছির মূল পরিকল্পনা করেন। সঙ্গে ছিলেন মিজান। অর্থাৎ নাছির ও মিজান মিলে হামলার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নের ছক সাজান। তবে নাছির ঘটনাস্থলে আসেননি। মিজান, রাসেল, ইমন ও ইমরান মাজেদ আন্দরকিল্লায় এবং সাদেক রিয়াজউদ্দিন বাজারে মুসল্লিদের সংগঠিত করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ভাগ হয়ে উভয়দিকে ছিলেন।

সূত্র জানায়, জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টার পর বিভিন্ন ছবি এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের নেতাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এই ঘটনার পরে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদেও উঠে আসে, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পূজামণ্ডপে হামলার সঙ্গে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠনের নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার তথ্য।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর জেএম সেন হলে পূজামণ্ডপে হামলা চেষ্টার ঘটনায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা অজ্ঞাতনামা আরও অন্তত ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার এসআই আকাশ মাহমুদ ফরিদ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনার পর এ পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

back to top