চাকরি পেয়ে খুশি প্রার্থীরা
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে ১৩০ টাকা খরচ করে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নির্বাচিত হয়ে উচ্ছ্বসিত চাকরিপ্রাপ্তরা। তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না এভাবে চাকরি হবে। মাইকে ফলাফল ঘোষণার পর অভিভাবকসহ নির্বাচিতরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া জেলার রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের প্রয়াত অজিত কুমার মন্ডলের মেয়ে পূর্ণিমা রানী মন্ডল জানান, ‘এত সহজে চাকরি হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। দু’বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারে নেমে আসে দুর্ভোগ। স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস’র পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ অফিসার হবার। বাবা-মা দুজনেই উৎসাহ দিতো। সে স্বপ্ন পূরণ না হলেও পুলিশ কনস্টেবল হলাম। কিন্তু কষ্ট একটাই বাবা দেখে যেতে পারল না।’
পূর্ণিমা রানী বর্তমানে নাটোরের আব্দুলপুর সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অনার্স প্রথমবর্ষে পড়াশুনা করছে। তার মা উর্মিলা রানী অনেক কষ্ট করে তার দু’সন্তানকে মানুষ করছেন। অভাবের কারণে কখনও কখনও পড়াশুনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মেয়ের ১৩০ টাকার চাকরিতে খুশি মা। মেধার কারণে চাকরি হওয়ায় সরকার ও পুলিশ বিভাগকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
কুড়িগ্রাম পুলিশ বিভাগে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরপি) পদে চাকরির জন্য এবার নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩ জন। এদের মধ্যে ৬ জন নারী এবং ৩৭ জন পুরুষ।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে এই ৪৩ জনের প্রাথমিকভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর পুলিশ বিভাগের খরচে তাদের আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বিনা খরচে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা শেষে নিয়োগপত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদনকারীদের খরচ হয়েছে মাত্র ১৩০ টাকা। এরমধ্যে ব্যাংক বাবদ ১০০ টাকা এবং অনলাইনে আবেদন পাঠানো বাবদ ৩০ টাকা।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগে কোন ধরনের তদবির বা দালাল ধরলে তাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেয়া হবে বলে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছিল। ফলে এর সুফল পাওয়া গেছে। এবারে শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছতার মাধ্যমে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশে (ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে) বিনা টাকায় চাকরি পেয়েছেন ৩৪ প্রার্থী। শুধু চাকরি নয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের সব ধরনের মেডিকেল চেকআপ পুলিশ হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব। এসব চূড়ান্ত প্রার্থীর অভিভাবকরা বিশ্বাসই করতে পারেননি তাদের সন্তানদের টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি হবে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইনসে টিআরসি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব। এসময় তিনি বলেন, অর্থ ছাড়াই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারের কাউকে কোথাও কোনভাবে একটি টাকাও খরচ করতে হয়নি। অর্থ দিয়ে নিয়োগ পেলে অসৎ পথে ধাবিত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। মানবিক গুনাবলীর মাধ্যমে দেশের সেবা করতে হবে। চাকুরি নয়, সেবা এ মূলমন্ত্রকে নিয়ে প্রত্যাশিত সেবা দিতে হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়গঞ্জ সার্কেল) ইমরান রহমান ও রাজশাহী জেলার (পুঠিয়া সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া।
জানা যায়, এ পরীক্ষায় সর্বমোট ১ হাজার ৩’শ ৬০ নারী-পুরুষ অংশ নেন। যার মধ্য থেকে প্রথম ধাপে ৫৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৮৮ জন এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে ৩৪ জনকে নির্বাচন করা হয়।
চাকরি পেয়ে খুশি প্রার্থীরা
শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে ১৩০ টাকা খরচ করে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নির্বাচিত হয়ে উচ্ছ্বসিত চাকরিপ্রাপ্তরা। তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না এভাবে চাকরি হবে। মাইকে ফলাফল ঘোষণার পর অভিভাবকসহ নির্বাচিতরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া জেলার রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের প্রয়াত অজিত কুমার মন্ডলের মেয়ে পূর্ণিমা রানী মন্ডল জানান, ‘এত সহজে চাকরি হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। দু’বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারে নেমে আসে দুর্ভোগ। স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস’র পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ অফিসার হবার। বাবা-মা দুজনেই উৎসাহ দিতো। সে স্বপ্ন পূরণ না হলেও পুলিশ কনস্টেবল হলাম। কিন্তু কষ্ট একটাই বাবা দেখে যেতে পারল না।’
পূর্ণিমা রানী বর্তমানে নাটোরের আব্দুলপুর সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অনার্স প্রথমবর্ষে পড়াশুনা করছে। তার মা উর্মিলা রানী অনেক কষ্ট করে তার দু’সন্তানকে মানুষ করছেন। অভাবের কারণে কখনও কখনও পড়াশুনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মেয়ের ১৩০ টাকার চাকরিতে খুশি মা। মেধার কারণে চাকরি হওয়ায় সরকার ও পুলিশ বিভাগকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
কুড়িগ্রাম পুলিশ বিভাগে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরপি) পদে চাকরির জন্য এবার নির্বাচিত হয়েছেন ৪৩ জন। এদের মধ্যে ৬ জন নারী এবং ৩৭ জন পুরুষ।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে এই ৪৩ জনের প্রাথমিকভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর পুলিশ বিভাগের খরচে তাদের আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বিনা খরচে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা শেষে নিয়োগপত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদনকারীদের খরচ হয়েছে মাত্র ১৩০ টাকা। এরমধ্যে ব্যাংক বাবদ ১০০ টাকা এবং অনলাইনে আবেদন পাঠানো বাবদ ৩০ টাকা।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগে কোন ধরনের তদবির বা দালাল ধরলে তাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেয়া হবে বলে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছিল। ফলে এর সুফল পাওয়া গেছে। এবারে শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছতার মাধ্যমে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশে (ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে) বিনা টাকায় চাকরি পেয়েছেন ৩৪ প্রার্থী। শুধু চাকরি নয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের সব ধরনের মেডিকেল চেকআপ পুলিশ হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব। এসব চূড়ান্ত প্রার্থীর অভিভাবকরা বিশ্বাসই করতে পারেননি তাদের সন্তানদের টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি হবে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইনসে টিআরসি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব। এসময় তিনি বলেন, অর্থ ছাড়াই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারের কাউকে কোথাও কোনভাবে একটি টাকাও খরচ করতে হয়নি। অর্থ দিয়ে নিয়োগ পেলে অসৎ পথে ধাবিত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। মানবিক গুনাবলীর মাধ্যমে দেশের সেবা করতে হবে। চাকুরি নয়, সেবা এ মূলমন্ত্রকে নিয়ে প্রত্যাশিত সেবা দিতে হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়গঞ্জ সার্কেল) ইমরান রহমান ও রাজশাহী জেলার (পুঠিয়া সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া।
জানা যায়, এ পরীক্ষায় সর্বমোট ১ হাজার ৩’শ ৬০ নারী-পুরুষ অংশ নেন। যার মধ্য থেকে প্রথম ধাপে ৫৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৮৮ জন এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে ৩৪ জনকে নির্বাচন করা হয়।