সারা দেশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, নেমে গেছে তাপমাত্রা। দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। আগামী দুই দিন এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রমতে, দেশের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ ও কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘এই আবহাওয়া আরও দুই দিন থাকতে পারে। তাপমাত্রা প্রায় একই থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টি হতে পারে। মূলত ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারা দেশে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি হবে। এর আগেও কোথাও কোথাও বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে তিনি জানান। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সবনিম্ন তাপমাত্রা ১৪, ময়মনসিংহে ১২ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৪, সিলেটে ১৫, রংপুরে ১০ দশমিক ৫, খুলনায় ১৩ এবং বরিশালে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের এলাকার অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি বা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রাজশাহী জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিল এটি। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, বৃহস্পতিবার দিন শুরু হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে। এ দিন বেলা ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হলো এখানে।
আবহাওয়া অফিসের হিসাবে, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নামলে তা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এ ছাড়া ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীতে শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহওয়া দপ্তর। কোন কারণে তাপমাত্রা না কমলেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
এছাড়া কুড়িগ্রাম জেলা বার্তা পরিবেশক জানান,
কুড়িগ্রামে কনকনে শীত আর হিমেল ঠান্ডা হাওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। তীব্র ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার ফলে কাজে বের হতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। বয়স্ক আর শিশুরা অল্পতেই কাহিল হয়ে পড়ছে। দেখা দিচ্ছে নানা রোগব্যাধি। বৃহস্পতিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, শীতার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত জেলায় এক কোটি ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আরও ৩৫ হাজার ৭০০ কম্বল দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ পর্যায়ে রয়েছে। প্রচন্ড ঠান্ডার ফলে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করছে শীতার্ত মানুষ। সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। সন্ধ্যার পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গোটা এলাকা। প্রতিদিন হাসপাতালে বাড়ছে নতুন নতুন রোগীর সংখ্যা। নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ মোটা কাপড়েও ঠেকাতে পারছে না হিম ঠান্ডা।
সদর উপজেলার চর সারডোব এলাকার শ্রমিক দিনোবন্ধু কাজ করছেন আলু খেতে তিনি জানান, ‘বাতাসে হাত-পা জমি যাইতেছে। পেটের জ্বালায় কাজ করছি। কাজ না করলে খামু কি!’
এই গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা জানান, ঠান্ডাতে শিশুরা পাতলা পায়খানা করে। জ¦র, সর্দি, কাশি হয়। ঠান্ডা পানি ব্যবহার করায় মহিলাদের হাত-পায়ে ঘা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেদুল হাসান বলেন, চরাঞ্চলে যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রয়েছে, আস্তে আস্তে সেগুলো আমরা তাদের মাঝে বিতরণ করছি।
বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২২
সারা দেশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, নেমে গেছে তাপমাত্রা। দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। আগামী দুই দিন এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রমতে, দেশের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ ও কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘এই আবহাওয়া আরও দুই দিন থাকতে পারে। তাপমাত্রা প্রায় একই থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টি হতে পারে। মূলত ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারা দেশে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি হবে। এর আগেও কোথাও কোথাও বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে তিনি জানান। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সবনিম্ন তাপমাত্রা ১৪, ময়মনসিংহে ১২ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৪, সিলেটে ১৫, রংপুরে ১০ দশমিক ৫, খুলনায় ১৩ এবং বরিশালে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের এলাকার অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি বা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রাজশাহী জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিল এটি। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, বৃহস্পতিবার দিন শুরু হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে। এ দিন বেলা ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হলো এখানে।
আবহাওয়া অফিসের হিসাবে, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নামলে তা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এ ছাড়া ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীতে শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহওয়া দপ্তর। কোন কারণে তাপমাত্রা না কমলেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
এছাড়া কুড়িগ্রাম জেলা বার্তা পরিবেশক জানান,
কুড়িগ্রামে কনকনে শীত আর হিমেল ঠান্ডা হাওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। তীব্র ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার ফলে কাজে বের হতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। বয়স্ক আর শিশুরা অল্পতেই কাহিল হয়ে পড়ছে। দেখা দিচ্ছে নানা রোগব্যাধি। বৃহস্পতিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, শীতার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত জেলায় এক কোটি ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আরও ৩৫ হাজার ৭০০ কম্বল দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ পর্যায়ে রয়েছে। প্রচন্ড ঠান্ডার ফলে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করছে শীতার্ত মানুষ। সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। সন্ধ্যার পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গোটা এলাকা। প্রতিদিন হাসপাতালে বাড়ছে নতুন নতুন রোগীর সংখ্যা। নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ মোটা কাপড়েও ঠেকাতে পারছে না হিম ঠান্ডা।
সদর উপজেলার চর সারডোব এলাকার শ্রমিক দিনোবন্ধু কাজ করছেন আলু খেতে তিনি জানান, ‘বাতাসে হাত-পা জমি যাইতেছে। পেটের জ্বালায় কাজ করছি। কাজ না করলে খামু কি!’
এই গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা জানান, ঠান্ডাতে শিশুরা পাতলা পায়খানা করে। জ¦র, সর্দি, কাশি হয়। ঠান্ডা পানি ব্যবহার করায় মহিলাদের হাত-পায়ে ঘা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেদুল হাসান বলেন, চরাঞ্চলে যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রয়েছে, আস্তে আস্তে সেগুলো আমরা তাদের মাঝে বিতরণ করছি।