মাইকিং, গাড়ির হাইড্রোলিক হর্ন এবং নির্মাণ কাজের অতিরিক্ত শব্দ দূষণের কারণে স্কুলের কার্যক্রম চালাতে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’ এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এই অভিযোগ করেন রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক পদ্দুত কুমার দাস।
প্রকল্পটির মাধ্যমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রতিটি জেলা শহরে শব্দ মাত্রা পরিমাপের বিষয়ে সমীক্ষা ও সচেতনতামূলক মতবিনিময় করছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিবেশ অধিদপ্তর। এই কাজে তাদের সহযোগিতা করছে ই কিউ এম এস কনসাল্টিং লিমিটেড এবং বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। উক্ত প্রকল্পের জরিপ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
পরিবেশ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মিতা রানী দাসের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহাবুর রহমান শেখ। প্রকল্প সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করেন, ক্যাপসের গবেষণা পরিচালক ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রভাষক আবদুল্লাহ আল নাঈম।
সভায় বক্তব্য রাখেন সভায় রাজবাড়ী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম, রাজবাড়ী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে উপ-পরিচালক গোলাম মো. ফারুক, শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালযের সহকারী চায়না সাহা, সরকারি গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম, জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিন্টু, রেডক্রিসেন্ট প্রতিনিধি শারমিন আক্তার, রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক নেতা আবদুল ওহাব সরদারসহ ও সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।
পদ্দুত কুমার দাস বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশ নেয়া কষ্টকর হয়ে উঠেছে। মাইকিংয়ের সময় নির্দিষ্ট করা এবং স্কুল এলাকায় হাইড্রোলিক হর্ন পুরোপুরি বন্ধ না করলে অতিরিক্ত শব্দ দূষণের কারণে স্কুলের কার্যক্রম চালানো চরম কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
প্রধান অতিথি বলেন, রাস্তায় গাড়ি উল্টোদিকে চালানোর কারণে বেশি উচ্চ শব্দে হর্ন বাজাতে হয়। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর ড্রাইভারকে নিয়ে সচেতনতামূলক এরকম সভা বেশি বেশি করতে হবে। একই সঙ্গে নির্মাণ কাজের উচ্চ শব্দও নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করতে হবে আমাদের জনস্বার্থেই। মিতা রানী দাস বলেন, সবাই সচেতন হলে শব্দদুষণ নিয়ন্ত্রণ নয়, অনেক ভালো কাজ করা সম্ভব। এখন যেমন যানবাহনের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি বেড়েছে অদক্ষ্য ও অশিক্ষিত চালক। যারা হর্নের ব্যবহার কোথায় করতে কবে জানেন না। ফলে প্রতিনিয়তই শব্দ দুষণের মাত্রা বাড়ছে। এছাড়া বর্তমানে সভা সেমিনারসহ অন্যান্য প্রচারনায় মাইক ব্যবহারে শব্দ দূষণ বাড়ছে। সারা রাত-দিন সব সময় উচ্চস্বরে মাইকিং করে প্রচারণা করছে। তাছাড়া বর্তমানে বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেম। যা শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ। এবং বিভিন্ন কল কারখানার মেশিনেও শব্দ দূষণ হচ্ছে। এসব শব্দ দূষণের প্রভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন। তাই প্রশাসন কঠোর হবার পাশাপাশি সকলস্তরের মানুষের সচেতনতা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা প্রশাসন এককভাবে এই শব্দ দূষণ বন্ধ করতে পারবে না। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতা করলে উচ্চ শব্দের যন্ত্রণা থেকে বাঁচা যাবে।
জেলা পরিসংখ্যান অফিস কর্মকর্তা হারুন অর রিশদ বলেন, উন্নত দেশে কথা বলার ধরনটাই আলাদা। সবাই আস্তে কথা বলতে অভ্যস্ত। আমাদের দেশে চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। আর অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দের মাইকের ব্যবহার বন্ধে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
রিক্সা ভ্যান শ্রমকি সভাপতি আবদুল ওহাব সরদার বলেন, রাজবাড়ীতে মোটর বাইকের শব্দ সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালের রোগীরা এ থেকে নিস্তার পাচ্ছে না।
শারমিন আক্তার বলেন, জেলা শহরে রাস্তায় হাঁটা বড় দায়। গাড়ির হর্নের কান জালাপালা হয়ে যায়। আর অনুষ্ঠা হলে তো শব্দের যন্ত্রণা থেকে নিস্তার নেই। বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে পরিচালিত টিম রাজবাড়ী শহরে শব্দ দূষণের মাত্রা জানতে ৫ স্থানের সাউন্ড লেভেল মিটার স্থাপন করে। জেলা শহরের নিরব এলাকা হিসেবে সদর হাসপাতালের সামনে, আবাসিক হিসেবে সার্কিট হাউজ এলাকা, বাণিজ্যিক হিসেবে শহরের প্রধান ও গোল চত্তরগুলো মিশ্র হিসেবে, পৌর বা প্রশাসক কার্যালয় এলাকা এবং বিসিক এরিয়াকে শিল্প এলাকা হিসেবে সনাক্ত করেছেন।
এসব এলাকার ৫টি স্থানে ২৪ ঘণ্টা (দিবা ও রাত্রিকালীন)’ দের জন্য সাউন্ড লেভেল মিটার বসিয়েছেন। বিধিমালা অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দিবা এবং রাত ৯টা থেকে পরবর্তীদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন সময়।
এ মেশিনটি প্রতি এক মিনিট পরপর তথ্য দেবে। যার মাধ্যমে শব্দ দূষণের মাত্রা জানা যাবে।
মঙ্গলবার, ০১ মার্চ ২০২২
মাইকিং, গাড়ির হাইড্রোলিক হর্ন এবং নির্মাণ কাজের অতিরিক্ত শব্দ দূষণের কারণে স্কুলের কার্যক্রম চালাতে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’ এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এই অভিযোগ করেন রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক পদ্দুত কুমার দাস।
প্রকল্পটির মাধ্যমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রতিটি জেলা শহরে শব্দ মাত্রা পরিমাপের বিষয়ে সমীক্ষা ও সচেতনতামূলক মতবিনিময় করছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিবেশ অধিদপ্তর। এই কাজে তাদের সহযোগিতা করছে ই কিউ এম এস কনসাল্টিং লিমিটেড এবং বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। উক্ত প্রকল্পের জরিপ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
পরিবেশ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মিতা রানী দাসের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহাবুর রহমান শেখ। প্রকল্প সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করেন, ক্যাপসের গবেষণা পরিচালক ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রভাষক আবদুল্লাহ আল নাঈম।
সভায় বক্তব্য রাখেন সভায় রাজবাড়ী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম, রাজবাড়ী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে উপ-পরিচালক গোলাম মো. ফারুক, শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালযের সহকারী চায়না সাহা, সরকারি গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম, জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিন্টু, রেডক্রিসেন্ট প্রতিনিধি শারমিন আক্তার, রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক নেতা আবদুল ওহাব সরদারসহ ও সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।
পদ্দুত কুমার দাস বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশ নেয়া কষ্টকর হয়ে উঠেছে। মাইকিংয়ের সময় নির্দিষ্ট করা এবং স্কুল এলাকায় হাইড্রোলিক হর্ন পুরোপুরি বন্ধ না করলে অতিরিক্ত শব্দ দূষণের কারণে স্কুলের কার্যক্রম চালানো চরম কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
প্রধান অতিথি বলেন, রাস্তায় গাড়ি উল্টোদিকে চালানোর কারণে বেশি উচ্চ শব্দে হর্ন বাজাতে হয়। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর ড্রাইভারকে নিয়ে সচেতনতামূলক এরকম সভা বেশি বেশি করতে হবে। একই সঙ্গে নির্মাণ কাজের উচ্চ শব্দও নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করতে হবে আমাদের জনস্বার্থেই। মিতা রানী দাস বলেন, সবাই সচেতন হলে শব্দদুষণ নিয়ন্ত্রণ নয়, অনেক ভালো কাজ করা সম্ভব। এখন যেমন যানবাহনের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি বেড়েছে অদক্ষ্য ও অশিক্ষিত চালক। যারা হর্নের ব্যবহার কোথায় করতে কবে জানেন না। ফলে প্রতিনিয়তই শব্দ দুষণের মাত্রা বাড়ছে। এছাড়া বর্তমানে সভা সেমিনারসহ অন্যান্য প্রচারনায় মাইক ব্যবহারে শব্দ দূষণ বাড়ছে। সারা রাত-দিন সব সময় উচ্চস্বরে মাইকিং করে প্রচারণা করছে। তাছাড়া বর্তমানে বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেম। যা শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ। এবং বিভিন্ন কল কারখানার মেশিনেও শব্দ দূষণ হচ্ছে। এসব শব্দ দূষণের প্রভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন। তাই প্রশাসন কঠোর হবার পাশাপাশি সকলস্তরের মানুষের সচেতনতা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা প্রশাসন এককভাবে এই শব্দ দূষণ বন্ধ করতে পারবে না। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতা করলে উচ্চ শব্দের যন্ত্রণা থেকে বাঁচা যাবে।
জেলা পরিসংখ্যান অফিস কর্মকর্তা হারুন অর রিশদ বলেন, উন্নত দেশে কথা বলার ধরনটাই আলাদা। সবাই আস্তে কথা বলতে অভ্যস্ত। আমাদের দেশে চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। আর অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দের মাইকের ব্যবহার বন্ধে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
রিক্সা ভ্যান শ্রমকি সভাপতি আবদুল ওহাব সরদার বলেন, রাজবাড়ীতে মোটর বাইকের শব্দ সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালের রোগীরা এ থেকে নিস্তার পাচ্ছে না।
শারমিন আক্তার বলেন, জেলা শহরে রাস্তায় হাঁটা বড় দায়। গাড়ির হর্নের কান জালাপালা হয়ে যায়। আর অনুষ্ঠা হলে তো শব্দের যন্ত্রণা থেকে নিস্তার নেই। বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে পরিচালিত টিম রাজবাড়ী শহরে শব্দ দূষণের মাত্রা জানতে ৫ স্থানের সাউন্ড লেভেল মিটার স্থাপন করে। জেলা শহরের নিরব এলাকা হিসেবে সদর হাসপাতালের সামনে, আবাসিক হিসেবে সার্কিট হাউজ এলাকা, বাণিজ্যিক হিসেবে শহরের প্রধান ও গোল চত্তরগুলো মিশ্র হিসেবে, পৌর বা প্রশাসক কার্যালয় এলাকা এবং বিসিক এরিয়াকে শিল্প এলাকা হিসেবে সনাক্ত করেছেন।
এসব এলাকার ৫টি স্থানে ২৪ ঘণ্টা (দিবা ও রাত্রিকালীন)’ দের জন্য সাউন্ড লেভেল মিটার বসিয়েছেন। বিধিমালা অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দিবা এবং রাত ৯টা থেকে পরবর্তীদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন সময়।
এ মেশিনটি প্রতি এক মিনিট পরপর তথ্য দেবে। যার মাধ্যমে শব্দ দূষণের মাত্রা জানা যাবে।