২শ’ কোটি টাকার বিক্রির সম্ভাবনা
দেশে উৎপাদিত একমাত্র আঁশবিহীন সুস্বাদু রংপুরের হাড়িভাঙা আম ইতোমধ্যে দেশে উৎপাদিত সব আমের সেরা তকমা পেয়েছে। দেশ ছাপিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এ আম। এবার আমের ফলনও হয়েছে ভালো কিন্তু আম চাষিদের অভিযোগ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং অব্যাহত ঝড় বৃষ্টির কারণে তারা তাদের উৎপাদিত আমের ন্যায্য মূল্য পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন। তার পরেও এবার ফলন ভালো হওয়ায় আম চাষিরা বেজায় খুশি। এবার ২শ’ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার পদাগজ্ঞ এলাকায় হাড়িভাঙা আম উৎপাদন করে সর্বপ্রথম আম চাষি আবদুস সালাম। তার দেখাদেখি শুরু করে ওই এলাকার অন্য কৃষকরা। ওই এলাকাটির মাটি লাল কাদাযুক্ত হওয়ায় জমিতে বছরে একবার ধান ছাড়া আর কোন ফসল উৎপাদিত হতো না। সে কারণে হাড়িভাঙা আম লালমাটি উপযোগী হওয়ায় এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
ফলে রংপুরের বদরগজ্ঞ ও পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর ও পীরগজ্ঞ উপজেলার লালমাটি এলাকায় হাড়িভাঙা আম এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হচ্ছে। দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করা ওই এলাকার মানুষ এখন হাড়িভাঙা আম রোপন করে এখন পুরোপুরি স্বাবলম্বী। শুধুমাত্র এই আম চাষ করে পুরো এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখার মতো।
সম্পূর্ণ আঁশমুক্ত সুস্বাদু হওয়ায় হাড়িভাঙা আমের এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়সহ অনেক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান ও বিশিষ্টজনদের হাড়িভাঙা আম উপহার হিসেবে পাঠিয়ে এর সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন দেশে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হাড়িভাঙা আমের ভক্ত বলে জানিয়েছেন এলাকার আম চাষিরা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা শামিমুর রহমান জানিয়েছেন এবার রংপুরে ১ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙা আম চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি। প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। উৎপাদিত আম বিক্রি
২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে আমচাষিরা বলছেন গত দু’বছর করোনা মহামারীর কারণে তারা ন্যায্যমূল্য পাননি। এবার অব্যাহত ঝড়-বৃষ্টির কারণে তাদের অনেক আম পড়ে গেছে। সে কারণে আড়াই হাজার টাকার উপরে মন দরে আম বিক্রি করতে না পারলে তাদের তেমন লাভ হবে না। সরেজমিন রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার পদাগজ্ঞ এলাকার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে শত শত একরজুড়ে আম বাগানে আম ঝুলে পড়ছে। আমচাষি সেকেন্দার আলী, তার ভাই আসগার আলী জানিয়েছেন গত দু’বছর করোনা মহামারীর কারণে তাদের তেমন কোন লাভ হয়নি। এবার মহামারী নেই তবে অব্যাহত ঝড়-বৃষ্টির কারণে অনেক আম পড়ে গেছে। এতে তারা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারপরেও যে আম আছে দাম ভালো পেলে তারা লাভবান হবেন। তাদের তিন একর জমিতে আমের বাগানের আম বিক্রি করলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একই কথা বললেন এলাকার আমচাষি সোলায়মান শেখ, তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাড়িভাঙা আম বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের উপহার হিসেবে পাঠিয়ে হাড়িভাঙা আমের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন দেশে এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
এদিকে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানিয়েছেন সরাসরি বাগান থেকে যাতে আম কিনতে পারে সেজন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আমের পাইকারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। টাকা লেনদেনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ খোলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এদিকে আম দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য নামকরা কুরিয়ার সার্ভিসগুলো পদাগজ্ঞ এলাকায় বিশেষ অফিস স্থাপন করেছে। তারা বাগান থেকে আম সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করেছেন।
তবে কৃষি বিশেষজ্ঞ ওবায়দুর রহমান জানিয়েছেন হাড়িভাঙা আম সব জাতের আমের চেয়ে একটু দেরিতে পুষ্ট হয়। সে কারণে ২০ জুনের পর থেকে আম কেনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আম চাষিরাও আনুষ্ঠানিকভাবে ওই তারিখ থেকে আমপাড়া শুরু করবেন। কারণ আম যখন পুরোপুরি পুষ্ট হবে তখন স্বাদও পাবে ভোক্তারা।
২শ’ কোটি টাকার বিক্রির সম্ভাবনা
মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
দেশে উৎপাদিত একমাত্র আঁশবিহীন সুস্বাদু রংপুরের হাড়িভাঙা আম ইতোমধ্যে দেশে উৎপাদিত সব আমের সেরা তকমা পেয়েছে। দেশ ছাপিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এ আম। এবার আমের ফলনও হয়েছে ভালো কিন্তু আম চাষিদের অভিযোগ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং অব্যাহত ঝড় বৃষ্টির কারণে তারা তাদের উৎপাদিত আমের ন্যায্য মূল্য পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন। তার পরেও এবার ফলন ভালো হওয়ায় আম চাষিরা বেজায় খুশি। এবার ২শ’ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার পদাগজ্ঞ এলাকায় হাড়িভাঙা আম উৎপাদন করে সর্বপ্রথম আম চাষি আবদুস সালাম। তার দেখাদেখি শুরু করে ওই এলাকার অন্য কৃষকরা। ওই এলাকাটির মাটি লাল কাদাযুক্ত হওয়ায় জমিতে বছরে একবার ধান ছাড়া আর কোন ফসল উৎপাদিত হতো না। সে কারণে হাড়িভাঙা আম লালমাটি উপযোগী হওয়ায় এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
ফলে রংপুরের বদরগজ্ঞ ও পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর ও পীরগজ্ঞ উপজেলার লালমাটি এলাকায় হাড়িভাঙা আম এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হচ্ছে। দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করা ওই এলাকার মানুষ এখন হাড়িভাঙা আম রোপন করে এখন পুরোপুরি স্বাবলম্বী। শুধুমাত্র এই আম চাষ করে পুরো এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখার মতো।
সম্পূর্ণ আঁশমুক্ত সুস্বাদু হওয়ায় হাড়িভাঙা আমের এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়সহ অনেক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান ও বিশিষ্টজনদের হাড়িভাঙা আম উপহার হিসেবে পাঠিয়ে এর সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন দেশে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হাড়িভাঙা আমের ভক্ত বলে জানিয়েছেন এলাকার আম চাষিরা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা শামিমুর রহমান জানিয়েছেন এবার রংপুরে ১ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙা আম চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি। প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। উৎপাদিত আম বিক্রি
২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে আমচাষিরা বলছেন গত দু’বছর করোনা মহামারীর কারণে তারা ন্যায্যমূল্য পাননি। এবার অব্যাহত ঝড়-বৃষ্টির কারণে তাদের অনেক আম পড়ে গেছে। সে কারণে আড়াই হাজার টাকার উপরে মন দরে আম বিক্রি করতে না পারলে তাদের তেমন লাভ হবে না। সরেজমিন রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার পদাগজ্ঞ এলাকার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে শত শত একরজুড়ে আম বাগানে আম ঝুলে পড়ছে। আমচাষি সেকেন্দার আলী, তার ভাই আসগার আলী জানিয়েছেন গত দু’বছর করোনা মহামারীর কারণে তাদের তেমন কোন লাভ হয়নি। এবার মহামারী নেই তবে অব্যাহত ঝড়-বৃষ্টির কারণে অনেক আম পড়ে গেছে। এতে তারা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারপরেও যে আম আছে দাম ভালো পেলে তারা লাভবান হবেন। তাদের তিন একর জমিতে আমের বাগানের আম বিক্রি করলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একই কথা বললেন এলাকার আমচাষি সোলায়মান শেখ, তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাড়িভাঙা আম বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের উপহার হিসেবে পাঠিয়ে হাড়িভাঙা আমের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন দেশে এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
এদিকে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানিয়েছেন সরাসরি বাগান থেকে যাতে আম কিনতে পারে সেজন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আমের পাইকারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। টাকা লেনদেনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ খোলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এদিকে আম দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য নামকরা কুরিয়ার সার্ভিসগুলো পদাগজ্ঞ এলাকায় বিশেষ অফিস স্থাপন করেছে। তারা বাগান থেকে আম সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করেছেন।
তবে কৃষি বিশেষজ্ঞ ওবায়দুর রহমান জানিয়েছেন হাড়িভাঙা আম সব জাতের আমের চেয়ে একটু দেরিতে পুষ্ট হয়। সে কারণে ২০ জুনের পর থেকে আম কেনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আম চাষিরাও আনুষ্ঠানিকভাবে ওই তারিখ থেকে আমপাড়া শুরু করবেন। কারণ আম যখন পুরোপুরি পুষ্ট হবে তখন স্বাদও পাবে ভোক্তারা।