রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্ভাব্য সময়সূচি অনুযায়ী আম চাষি, বাগানি বা ব্যবসায়ীরা ২৫ মে লক্ষণভোগ ও রাণিপছন্দ আম গাছ থেকে নামিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারবে।
সেই মোতাবেক গত বুধবার ২৫ মে বাজারে এসেছে লক্ষণভোগ আম। তবে সময় সূচি অনুযায়ী এদিন আরেকটি জাত রাণিপছন্দ আম বাজারে আসার কথা থাকলেও ভালোভাবে পরিপক্ক না হওয়ায় বাজারে নিয়ে আসেনি চাষীরা।
সময়সূচি অনুযায়ী, লক্ষণভোগ আমের পরেই আজ শুক্রবার (২৮ মে) খিরসাপাত ও হিমসাগর বাজারে আসছে। তবে আমের দাম যেমনি হোক বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
গত বুধবার (২৫ মে) সরেজমিনে বানেশ্বর বাজারে গোপাল ভোগ ও বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আমের সাথে লক্ষণভোগ বা লখনা আম বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিনে প্রতিমণ লখনা আম সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই বাজারে প্রতিদিন প্রায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাক আম আসছে।
আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ক্যারেট আম এই বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বাজারে আমের সরবরাহ বাড়ছে। সেই সাথে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ী ও চাষীদের মুখে।
আমের আড়ৎদার আকবর আলী জানান, প্রথম দিনেই ৫ থেকে ৬ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ হাজার মণ লক্ষণভোগ আম বাজারে উঠেছে। গোপাল ভোগ, লক্ষণ ভোগ ও বিভিন্ন আটিঁর আমসহ ১০ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ ৫ থেকে ৬ হাজার মণ মন আম বাজারে এসেছে বলে জানান তারা।
বাজারের আসা আম ব্যবসায়ী আবু সাইদ জানান, গোপাল ভোগ আমের দাম আজ (বুধবার) বেড়েছে। গত ২২ মে গোপাল ভোগ আম সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমাদের রাজশাহীর আম এখন কুরিয়ার সার্ভিস ও অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত এবং বিদেশেও যাচ্ছে। এজন্য গোপালভোগ আমের দাম বেড়ে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আম ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজশাহীতে গাছ থেকে আম নামানোর নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৮ মে খিরসাপাত-হিমসাগর, ৬ জুন ল্যাংড়া, ১৫ জুন আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই বারি-৪ ও আশ্বিনা, ১৫ জুলাই গোলমতী, ২০ আগস্ট ইলমতি আম চাষিরা গাছ থেকে নামাতে পারবেন।
বাকশাইল থেকে আসা জামাল উদ্দীন নামের আম চাষি বলেন, প্রতিবছর বাগান লিজ নিয়ে থাকি । এবছরও ৯টা বাগান নিয়েছি প্রায় ১০ লাখ টাকা দিয়ে। আজ বাজারে ৫ মণ লক্ষণ ভোগ আম নিয়ে এসেছি। দাম একটু কম। তাপরও ফলন ভালো হয়েছে। এবছর ব্যবসা ভালো হবে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার আম নামানো বা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানোর সময়সূচি দেয়ায় খুব ভালো হয়েছে। কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার করে আম পাকাতে বা জোর করে বাজারে বিক্রি করতে পারবে না। তাড়াহুড়ো করার কোন প্রয়োজন নেই। সময়মত আম বাজারে আসবে। মানুষেরা পরিপক্ক সুস্বাদু আমই খাবে।
বাজারে আমের গাড়ি আসলেই গাড়ি ধরে আমগুলো কেটে খাচ্ছিলেন বাজারের শেয়ারে থাকা আড়ৎদাররা। আমের ব্যবসা নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, অপরিপক্ক, ফরমালিনযুক্ত নষ্ট আম বাজারে উঠানো বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
এ সম্পর্কে বানেশ্বর বাজারের এক ইজাদার সুমন শেখ বলেন, আমরা চাই ফরমালিন মুক্ত ও ভেজালমুক্ত আম। যাচাই করার জন্য আমের স্যাম্পল প্রতিটি গাড়িতেই থাকে। আমে কোন সমস্যা থাকলে ধরা পড়ে যাবে। কারণ, তাদের জন্য আমরা বিপদে পড়তে চাই না।
এদিকে এ বছর মৌসুমের শুরু থেকে গতবারের তুলনায় এবার আমের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। শুধু তাই নয়, এই মূলবৃদ্ধি অন্যান্য বছরকেও ছাড়িয়ে গেছে।
আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের মতে, সব জিনিসের দাম বাড়লেও শুধু আমের দামই ছিল কম। তবে এবার ফলন কম হওয়ায় শুরু থেকেই এই ফলের বাজার চড়া। কৃষি বিভাগ বলছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্যই দাম বেড়ে গেছে। ফলন খুব একটা কম হবে না।
আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা আরও জানা যায়, গত বছর আমের ফলন বাম্পার হয়েছিল। তখন সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ১৭ হাজার টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ কারণে চাষিরা আমের দাম পাননি। দাম না থাকায় গুটি আম, লক্ষ্মণভোগ, ফজলিসহ বেশ কিছু আম গাছেই পেকে নষ্ট হয়েছে। নামানোর খরচ উঠবে না বলে অনেক আম নামানো হয়নি। আড়তে পাঠানোর পরও অবিক্রীত থাকায় ফেলে দিতে হয়েছিল। শুধু ভালো জাতের আম হিসেবে স্বীকৃত গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি ও ল্যাংড়ার দাম কিছুটা পেয়েছিলেন চাষিরা।
তবে এবারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। টক-মিষ্টি স্বাদের গুটি আমও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের অবিক্রীত গুটি আম এবার ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। আর গত বছর গোপালভোগের বাজার শুরু হয়েছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ। এবার গোপালভোগের বাজার শুরু হয়েছে প্রতিমণ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। এতে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা খুশি।
তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজাদার হোসেন বলেন, আমের ফলন খুব একটা কম হয়নি।
শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্ভাব্য সময়সূচি অনুযায়ী আম চাষি, বাগানি বা ব্যবসায়ীরা ২৫ মে লক্ষণভোগ ও রাণিপছন্দ আম গাছ থেকে নামিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারবে।
সেই মোতাবেক গত বুধবার ২৫ মে বাজারে এসেছে লক্ষণভোগ আম। তবে সময় সূচি অনুযায়ী এদিন আরেকটি জাত রাণিপছন্দ আম বাজারে আসার কথা থাকলেও ভালোভাবে পরিপক্ক না হওয়ায় বাজারে নিয়ে আসেনি চাষীরা।
সময়সূচি অনুযায়ী, লক্ষণভোগ আমের পরেই আজ শুক্রবার (২৮ মে) খিরসাপাত ও হিমসাগর বাজারে আসছে। তবে আমের দাম যেমনি হোক বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
গত বুধবার (২৫ মে) সরেজমিনে বানেশ্বর বাজারে গোপাল ভোগ ও বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আমের সাথে লক্ষণভোগ বা লখনা আম বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিনে প্রতিমণ লখনা আম সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই বাজারে প্রতিদিন প্রায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাক আম আসছে।
আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ক্যারেট আম এই বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বাজারে আমের সরবরাহ বাড়ছে। সেই সাথে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ী ও চাষীদের মুখে।
আমের আড়ৎদার আকবর আলী জানান, প্রথম দিনেই ৫ থেকে ৬ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ হাজার মণ লক্ষণভোগ আম বাজারে উঠেছে। গোপাল ভোগ, লক্ষণ ভোগ ও বিভিন্ন আটিঁর আমসহ ১০ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ ৫ থেকে ৬ হাজার মণ মন আম বাজারে এসেছে বলে জানান তারা।
বাজারের আসা আম ব্যবসায়ী আবু সাইদ জানান, গোপাল ভোগ আমের দাম আজ (বুধবার) বেড়েছে। গত ২২ মে গোপাল ভোগ আম সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমাদের রাজশাহীর আম এখন কুরিয়ার সার্ভিস ও অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত এবং বিদেশেও যাচ্ছে। এজন্য গোপালভোগ আমের দাম বেড়ে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আম ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজশাহীতে গাছ থেকে আম নামানোর নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৮ মে খিরসাপাত-হিমসাগর, ৬ জুন ল্যাংড়া, ১৫ জুন আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই বারি-৪ ও আশ্বিনা, ১৫ জুলাই গোলমতী, ২০ আগস্ট ইলমতি আম চাষিরা গাছ থেকে নামাতে পারবেন।
বাকশাইল থেকে আসা জামাল উদ্দীন নামের আম চাষি বলেন, প্রতিবছর বাগান লিজ নিয়ে থাকি । এবছরও ৯টা বাগান নিয়েছি প্রায় ১০ লাখ টাকা দিয়ে। আজ বাজারে ৫ মণ লক্ষণ ভোগ আম নিয়ে এসেছি। দাম একটু কম। তাপরও ফলন ভালো হয়েছে। এবছর ব্যবসা ভালো হবে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার আম নামানো বা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানোর সময়সূচি দেয়ায় খুব ভালো হয়েছে। কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার করে আম পাকাতে বা জোর করে বাজারে বিক্রি করতে পারবে না। তাড়াহুড়ো করার কোন প্রয়োজন নেই। সময়মত আম বাজারে আসবে। মানুষেরা পরিপক্ক সুস্বাদু আমই খাবে।
বাজারে আমের গাড়ি আসলেই গাড়ি ধরে আমগুলো কেটে খাচ্ছিলেন বাজারের শেয়ারে থাকা আড়ৎদাররা। আমের ব্যবসা নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, অপরিপক্ক, ফরমালিনযুক্ত নষ্ট আম বাজারে উঠানো বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
এ সম্পর্কে বানেশ্বর বাজারের এক ইজাদার সুমন শেখ বলেন, আমরা চাই ফরমালিন মুক্ত ও ভেজালমুক্ত আম। যাচাই করার জন্য আমের স্যাম্পল প্রতিটি গাড়িতেই থাকে। আমে কোন সমস্যা থাকলে ধরা পড়ে যাবে। কারণ, তাদের জন্য আমরা বিপদে পড়তে চাই না।
এদিকে এ বছর মৌসুমের শুরু থেকে গতবারের তুলনায় এবার আমের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। শুধু তাই নয়, এই মূলবৃদ্ধি অন্যান্য বছরকেও ছাড়িয়ে গেছে।
আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের মতে, সব জিনিসের দাম বাড়লেও শুধু আমের দামই ছিল কম। তবে এবার ফলন কম হওয়ায় শুরু থেকেই এই ফলের বাজার চড়া। কৃষি বিভাগ বলছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্যই দাম বেড়ে গেছে। ফলন খুব একটা কম হবে না।
আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা আরও জানা যায়, গত বছর আমের ফলন বাম্পার হয়েছিল। তখন সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ১৭ হাজার টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ কারণে চাষিরা আমের দাম পাননি। দাম না থাকায় গুটি আম, লক্ষ্মণভোগ, ফজলিসহ বেশ কিছু আম গাছেই পেকে নষ্ট হয়েছে। নামানোর খরচ উঠবে না বলে অনেক আম নামানো হয়নি। আড়তে পাঠানোর পরও অবিক্রীত থাকায় ফেলে দিতে হয়েছিল। শুধু ভালো জাতের আম হিসেবে স্বীকৃত গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি ও ল্যাংড়ার দাম কিছুটা পেয়েছিলেন চাষিরা।
তবে এবারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। টক-মিষ্টি স্বাদের গুটি আমও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের অবিক্রীত গুটি আম এবার ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। আর গত বছর গোপালভোগের বাজার শুরু হয়েছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ। এবার গোপালভোগের বাজার শুরু হয়েছে প্রতিমণ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। এতে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা খুশি।
তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজাদার হোসেন বলেন, আমের ফলন খুব একটা কম হয়নি।