তরমুজ আলু পচবেনা ক্ষেতে
পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া হলে উপকূলীয় মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে।সারা দেশে এলাকার মাছ পৌছে যাবে দ্রুত। ক্ষেতের তরমুজ ও আলু বিক্রির অভাবে ক্ষেতেই যাবেনা পঁচে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনছে বঙ্গোপসাগরঘেঁষা বরগুনার মানুষ। নদী সাগরের মাছ দ্রুত রাজধানীসহ সারাদেশে পৌছে যাবে কম সময়ে।ঢাকার মানুষ পাবে তাজা সব মাছ। পদ্মা সেতুর সুফল পাবে প্রান্তিক জেলে থেকে পাইকাররা।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) দেশের সামুদ্রিক মাছের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার ।এ কেন্দ্রে প্রতিদিন হাজার টন ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকার মাছ নদী সাগর থেকে ধরে নিয়ে আসে জেলেরা। এ অবতরণ কেন্দ্রের মাছ সড়ক পথে নিয়ে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। মাওয়া পার হয়ে ঢাকাসহ দেশের ৪০টি জেলায় ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ সরবরাহ করেন আড়ৎদার-পাইকাররা। একই সাথে বরগুনার ৩ টি উপজেলার চাষিরা প্রস্ততি নিচ্ছে এবার তরমুজ ও আলু চাষের। প্রতিবছর তরমুেজর বাম্পার ফলন হলেও রফতানীর অভাবে ক্ষেতেই পচেঁ যায় অনেক তরমুজ ও আলু।
এতদিন ফেরিঘাটে যানজটের বিরম্বনায় যথাসময়ে আড়তে পৌঁছাতে পারতনা মাছ,তরমুজ আলু।পথেই নষ্ট হত পন্য। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন বরগুনা ও পাথরঘাটার ব্যবসায়ীরা। তারা পাবে এসব পন্যের বাড়তি দামও। এর সুফল পাবেন পাইকার থেকে শুরু করে প্রান্তিক জেলেরাও। দেশের রফতানী আয়ও বাড়বে।সমৃদ্ধি ঘটবে অবহেলিত এলাকার মানুষের।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ট্রলার মালিক সেলিম হায়দার বলেন, যে টাকা দিয়ে জেলেদের থেকে তারা মাছ কিনে ঢাকায় মাছ পাঠায় প্যাকেজিং, বরফ ও পরিবহনে প্রায় সমপরিমাণ টাকা খরচ হয়।তারপর এ পন্য ফেরীঘাটে পড়ে থাকত দিনের পর দিন। পদ্মা সেতু চালু হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। একদম ফ্রেশ মাছ পাবে দেশের মানুষ। মৎস্য আড়তের মালিক নশা মিয়া বলেন, মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় ফেরীঘাটে সিরিয়াল পেতে প্রচুর টাকা দিতে হয় । এবার স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দিলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবো। মাত্র ৬ ঘণ্টায় মাছ পৌঁছে যাবে ঢাকায়।
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, পাথরঘাটার মাছ কিনতে আসা বেশিরভাগ পাইকার উত্তরাঞ্চলের। মাওয়া ফেরির কারণে ঢাকার পাইকার ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা এতদিন চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম থেকে মাছ ক্রয় করত। এখন এলাকার ব্যবসায়ীরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই ঢাকার বড় মৎস্য ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে মাছ কেনার চুক্তি করতে শুরু করেছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলে মাত্র ৬-৭ ঘণ্টার মধ্যেই মাছ পৌঁছে যাবে ঢাকায়। সুদিনের প্রহর গুনছে উপকূলীয় জেলেরা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে শিকার করা মাছ বিক্রির জন্য অধিকাংশ ট্রলার আসবে এই অবতরণ কেন্দ্রে। ফলে রাজস্ব আয়ও বাড়বে সরকারের।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট মো. লুৎফর রহমান বলেন, বরগুনার অনেক ট্রলার চট্টগ্রাম/খুলনা অঞ্চলে গিয়ে মাছ বিক্রি করত। পদ্মা সেতু চালু হলে চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও নোয়াখালীর জেলেরাও মাছ শিকার শেষে পাথরঘাটা অবতরণ কেন্দ্রে এসে মাছ বিক্রি করবে।
প্রসঙ্গত, এ বছর পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে। যার অর্থেকই ইলিশ। অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি করা মাছের ওপর শতকরা ১.২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করে সরকার।
এদিকে বরগুনার নলী মাইঠা এলাকার তরমুজ চাষি আ: হালিম বলেন,এবারে বরগুনায় বাম্পার ফলন হয়েছিল তরমুজের। প্রথম দিকে শত শত ট্রাক বরগুনায় এসে তরমুজ নিয়ে গেলেও ফেরী বিরম্বনায় শেষের দিকে চাষিরা পানির দামে তরমুজ বিক্রি করে লোকশান গোনে। পদ্মা সেতু চালু হলে সুদিন ফিরে আসবে চাষিদের। তারা আসন্ন শুস্ক মৌসুমে ব্যাপক তরমুজ চাষের পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে।
তরমুজ আলু পচবেনা ক্ষেতে
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া হলে উপকূলীয় মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে।সারা দেশে এলাকার মাছ পৌছে যাবে দ্রুত। ক্ষেতের তরমুজ ও আলু বিক্রির অভাবে ক্ষেতেই যাবেনা পঁচে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনছে বঙ্গোপসাগরঘেঁষা বরগুনার মানুষ। নদী সাগরের মাছ দ্রুত রাজধানীসহ সারাদেশে পৌছে যাবে কম সময়ে।ঢাকার মানুষ পাবে তাজা সব মাছ। পদ্মা সেতুর সুফল পাবে প্রান্তিক জেলে থেকে পাইকাররা।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) দেশের সামুদ্রিক মাছের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার ।এ কেন্দ্রে প্রতিদিন হাজার টন ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকার মাছ নদী সাগর থেকে ধরে নিয়ে আসে জেলেরা। এ অবতরণ কেন্দ্রের মাছ সড়ক পথে নিয়ে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। মাওয়া পার হয়ে ঢাকাসহ দেশের ৪০টি জেলায় ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ সরবরাহ করেন আড়ৎদার-পাইকাররা। একই সাথে বরগুনার ৩ টি উপজেলার চাষিরা প্রস্ততি নিচ্ছে এবার তরমুজ ও আলু চাষের। প্রতিবছর তরমুেজর বাম্পার ফলন হলেও রফতানীর অভাবে ক্ষেতেই পচেঁ যায় অনেক তরমুজ ও আলু।
এতদিন ফেরিঘাটে যানজটের বিরম্বনায় যথাসময়ে আড়তে পৌঁছাতে পারতনা মাছ,তরমুজ আলু।পথেই নষ্ট হত পন্য। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন বরগুনা ও পাথরঘাটার ব্যবসায়ীরা। তারা পাবে এসব পন্যের বাড়তি দামও। এর সুফল পাবেন পাইকার থেকে শুরু করে প্রান্তিক জেলেরাও। দেশের রফতানী আয়ও বাড়বে।সমৃদ্ধি ঘটবে অবহেলিত এলাকার মানুষের।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ট্রলার মালিক সেলিম হায়দার বলেন, যে টাকা দিয়ে জেলেদের থেকে তারা মাছ কিনে ঢাকায় মাছ পাঠায় প্যাকেজিং, বরফ ও পরিবহনে প্রায় সমপরিমাণ টাকা খরচ হয়।তারপর এ পন্য ফেরীঘাটে পড়ে থাকত দিনের পর দিন। পদ্মা সেতু চালু হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। একদম ফ্রেশ মাছ পাবে দেশের মানুষ। মৎস্য আড়তের মালিক নশা মিয়া বলেন, মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় ফেরীঘাটে সিরিয়াল পেতে প্রচুর টাকা দিতে হয় । এবার স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দিলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবো। মাত্র ৬ ঘণ্টায় মাছ পৌঁছে যাবে ঢাকায়।
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, পাথরঘাটার মাছ কিনতে আসা বেশিরভাগ পাইকার উত্তরাঞ্চলের। মাওয়া ফেরির কারণে ঢাকার পাইকার ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা এতদিন চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম থেকে মাছ ক্রয় করত। এখন এলাকার ব্যবসায়ীরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই ঢাকার বড় মৎস্য ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে মাছ কেনার চুক্তি করতে শুরু করেছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলে মাত্র ৬-৭ ঘণ্টার মধ্যেই মাছ পৌঁছে যাবে ঢাকায়। সুদিনের প্রহর গুনছে উপকূলীয় জেলেরা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে শিকার করা মাছ বিক্রির জন্য অধিকাংশ ট্রলার আসবে এই অবতরণ কেন্দ্রে। ফলে রাজস্ব আয়ও বাড়বে সরকারের।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট মো. লুৎফর রহমান বলেন, বরগুনার অনেক ট্রলার চট্টগ্রাম/খুলনা অঞ্চলে গিয়ে মাছ বিক্রি করত। পদ্মা সেতু চালু হলে চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও নোয়াখালীর জেলেরাও মাছ শিকার শেষে পাথরঘাটা অবতরণ কেন্দ্রে এসে মাছ বিক্রি করবে।
প্রসঙ্গত, এ বছর পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে। যার অর্থেকই ইলিশ। অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি করা মাছের ওপর শতকরা ১.২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করে সরকার।
এদিকে বরগুনার নলী মাইঠা এলাকার তরমুজ চাষি আ: হালিম বলেন,এবারে বরগুনায় বাম্পার ফলন হয়েছিল তরমুজের। প্রথম দিকে শত শত ট্রাক বরগুনায় এসে তরমুজ নিয়ে গেলেও ফেরী বিরম্বনায় শেষের দিকে চাষিরা পানির দামে তরমুজ বিক্রি করে লোকশান গোনে। পদ্মা সেতু চালু হলে সুদিন ফিরে আসবে চাষিদের। তারা আসন্ন শুস্ক মৌসুমে ব্যাপক তরমুজ চাষের পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে।