alt

সারাদেশ

বন্যার প্রভাব মুন্সীগঞ্জে, তলিয়ে যাচ্ছে সবজি ও ধান

প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ : শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২

সিলেট অঞ্চলের বন্যার পানি দেশের মধ্যাঞ্চল দিয়ে নামতে শুরু করেছে। উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপে মুন্সীগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে উঠতি সবজি ও পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

ফসলের অধিকাংশ জমি থেকে সবজি উত্তোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু অসময়ের পানিবৃদ্ধিতে কৃষকের এখন মাথায় হাত। প্রতিদিনই দ্রুত বাড়ছে পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

মুন্সিগঞ্জের সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় এবার ঘূর্ণিঝড় ও জোয়ারের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় এক দফা আলুর বীজ পচে যায়। পরে আরেক দফা আলু রোপণে দেরি হওয়ায় উত্তোলনেও দেরি হয়েছিল। তাই কৃষক এ বছর কিছুটা দেরিতে আলু ওঠানোর পর ওই সব জমিতে সবজি, বোরো ধান ও ভুট্টা চাষ করেছিলেন। কিন্তু সিলেট অঞ্চলের পানির প্রভাবে কৃষকের সবজি ও ধানের তলিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সরেজমিনে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মহাখালী, বজ্রযোগিনী, রামপাল, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং-টঙ্গিবাড়ী, আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের রোপণ করা করলা, কহি, ধুন্দল, লাউ, চালকুমড়া, ঝিঙা জমিগুলোর মাচার নিচে বইছে পানি। কোনো কোনো জমির মাচা তলিয়ে গেছে পানিতে। মাচার ওপরে অধিকাংশ জমির গাছগুলো ঢলে পড়ে রয়েছে।

বজ্রযোগীনী গ্রামের সবজিচাষি কাদির বেপারী বলেন, বন্যার পানি আসায় আমাদের তরকারি সব নষ্ট হইয়া গেল। এখন বন্যার পানি আসায় আমাদের ফসলগুলো এভাবে নষ্ট হয়ে গেল। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছি।

ধামধ গ্রামের রিয়াজুল বলেন, আমি এক কানি জমি (১৪৪ শতাংশ) জমি চাষ করছিলাম। আমার ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বন্যা হওয়ার কারণে সবজি সব নষ্ট হয়ে গেছে। ফসলগুলো পুরো মাত্রায় উঠতে শুরু করেছে মাত্র। এর মধ্যে পানিটা এসে আমাদের ফসল সব নষ্ট করে দিল।

সুয়াপাড়া গ্রামের মিজান বলেন, আমি ৮০০ করলাগাছ রোপণ করেছিলাম। এতে আমার ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত হাজার ২০ টাকার করলা বিক্রি করেছি। বন্যার পানি এসে সব তলাইয়া নিয়ে গেল।

ধামধ গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, আমরা আষাঢ় মাসের শেষ পর্যন্ত ফসল জমি হতে তুলি। কিন্তু বন্যার পানিতে এবার সব জমি ভাষিয়ে নিয়ে গেল। জমি হতে সব ছোট সবজিসহ সব সবজি তুলে নিয়ে আসলাম। মোট দেড় হাজার গাছে ধুন্দল লাগাইছিলাম। এখন জমিতে একবুক পানি।

এ অঞ্চলের সবজির ওপর ভিত্তি করে মুন্সীগঞ্জ ও টঙ্গিবাড়ীতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আড়ত। এসব আড়ত থেকে মৌসুমে উৎপাদিত হাজার হাজার মণ সবজি প্রতিদিন চলে যায় ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, পিরোজপুর, বরিশালসহ অন্যান্য জেলায়। কিন্তু জমি তলিয়ে যাওয়ায় ব্যস্ততাও নেই আড়তগুলোতে।

এদিকে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী, আড়িয়ল, বলই, বালিগাওঁ, কুরমিরা, সিংহেরনন্দন, পাঁচগাঁও, মান্দ্রা, ভিটি মালধা, যশলং, রাউৎভোগ লৌহজং উপজেলার খেদেরপাড়া, কলমা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় রোপণ করা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষক আধাপাকা ধান কেটে গোলায় তোলার চেষ্টা করছেন। অনেক জমিতে ধান পুরো পেকে গেলেও শ্রমিক-সংকটে তা ঘরে তুলতে পারছেন না চাষিরা।

ধানচাষি আবদুল মতিন বলেন, পাঁচ দিন আগেও আমার ধানের জমি শুকনা ছিল। হঠাৎ পানি আসায় এখন জমির মধ্যে ডুবাইয়া আধাপাকা ধান কাটতেছি।

এ ব্যাপারে পানি উন্নায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, মুন্সীগঞ্জে পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকুল পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার এবং মাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রভাহিত হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচারক মো. খোরশেদ আলম বলেন, মানুষ খাল-বিল ভরাট করে পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা বন্ধ করে যত্রতত্র হাউজিং প্লট তৈরি করছে। ফলে পানি দ্রুত নামতে পারছে না। এ কারণে অসময়ে কৃষকের জমি দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যততত্র স্থাপন নির্মাণ করলে আমাদের কিছু করার থাকে না। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারে।

মোরেলগঞ্জে শাফায়েত হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে গ্রামবাসী

শেরপুরে কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার তিনজন গ্রেপ্তার

মহালছড়িতে নারী সমাবেশ

ছবি

তাহলে সততার কীসের মূল্যায়ন: গ্রেপ্তারের আগে আইভী

মানিকছড়ি হাসপাতালে জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

যাদুকাটা নদী খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন

খোকসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালসহ দুজনকে জরিমানা

পাবনার হাট-বাজারে অপরিপক্ব টক লিচু বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

ছবি

ডিমলার নদ-নদীগুলো অবৈধ দখলে মরা খাল, আবাদি জমি

ঝালকাঠিতে ডাকাতি মামলায় ৯ জনের সশ্রম কারাদণ্ড

ছবি

মোরেলগঞ্জে সন্তানহারা মায়ের কান্না, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া

রাজশাহীতে মাদক ব্যবসায়ী আটক

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নারী নিহত

চাঁদপুরে পুকুর ভরাটের দায়ে জরিমানা

গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

ছবি

সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙন আতঙ্কে তীরবর্তী মানুষ

করিমগঞ্জে বজ্রপাতে ৩ গরুর মৃত্যু

ফরিদগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

৬ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯

ধর্মপাশায় গাছ থেকে পড়ে কিশোরের মৃত্যু

সেনবাগে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

দুই জেলায় বৃদ্ধ ও কিশোরীর আত্মহত্যা

রামুর বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে চুরি-ডাকাতি : জনমনে আতঙ্ক

কালিহাতীতে ভেটেরিনারি দোকানে জরিমানা

ছবি

যশোরে আইন উপেক্ষা করে চলছে পুকুর ভরাট

ভুয়া পশু চিকিৎসকের কারাদণ্ড

ছবি

রাস্তা খুঁড়ে লাপাত্তা ঠিকাদার দ্রুত পাকাকরণের দাবি

ছবি

রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম, ইউএনওর কাছে অভিযোগ

রায়গঞ্জে একই দিনে দুজনের আত্মহত্যা

প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি, ২০ লাখ টাকা লুট

ডিবি থেকে সরানো মল্লিক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি

সীমান্তবর্তী ৩৩ জেলায় পুলিশের বাড়তি সতর্কতা

ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে রামগড় ও লক্ষীছড়িতে বিক্ষোভ

ছবি

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি

tab

সারাদেশ

বন্যার প্রভাব মুন্সীগঞ্জে, তলিয়ে যাচ্ছে সবজি ও ধান

প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ

শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২

সিলেট অঞ্চলের বন্যার পানি দেশের মধ্যাঞ্চল দিয়ে নামতে শুরু করেছে। উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপে মুন্সীগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে উঠতি সবজি ও পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

ফসলের অধিকাংশ জমি থেকে সবজি উত্তোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু অসময়ের পানিবৃদ্ধিতে কৃষকের এখন মাথায় হাত। প্রতিদিনই দ্রুত বাড়ছে পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

মুন্সিগঞ্জের সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় এবার ঘূর্ণিঝড় ও জোয়ারের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় এক দফা আলুর বীজ পচে যায়। পরে আরেক দফা আলু রোপণে দেরি হওয়ায় উত্তোলনেও দেরি হয়েছিল। তাই কৃষক এ বছর কিছুটা দেরিতে আলু ওঠানোর পর ওই সব জমিতে সবজি, বোরো ধান ও ভুট্টা চাষ করেছিলেন। কিন্তু সিলেট অঞ্চলের পানির প্রভাবে কৃষকের সবজি ও ধানের তলিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সরেজমিনে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মহাখালী, বজ্রযোগিনী, রামপাল, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং-টঙ্গিবাড়ী, আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের রোপণ করা করলা, কহি, ধুন্দল, লাউ, চালকুমড়া, ঝিঙা জমিগুলোর মাচার নিচে বইছে পানি। কোনো কোনো জমির মাচা তলিয়ে গেছে পানিতে। মাচার ওপরে অধিকাংশ জমির গাছগুলো ঢলে পড়ে রয়েছে।

বজ্রযোগীনী গ্রামের সবজিচাষি কাদির বেপারী বলেন, বন্যার পানি আসায় আমাদের তরকারি সব নষ্ট হইয়া গেল। এখন বন্যার পানি আসায় আমাদের ফসলগুলো এভাবে নষ্ট হয়ে গেল। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছি।

ধামধ গ্রামের রিয়াজুল বলেন, আমি এক কানি জমি (১৪৪ শতাংশ) জমি চাষ করছিলাম। আমার ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বন্যা হওয়ার কারণে সবজি সব নষ্ট হয়ে গেছে। ফসলগুলো পুরো মাত্রায় উঠতে শুরু করেছে মাত্র। এর মধ্যে পানিটা এসে আমাদের ফসল সব নষ্ট করে দিল।

সুয়াপাড়া গ্রামের মিজান বলেন, আমি ৮০০ করলাগাছ রোপণ করেছিলাম। এতে আমার ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত হাজার ২০ টাকার করলা বিক্রি করেছি। বন্যার পানি এসে সব তলাইয়া নিয়ে গেল।

ধামধ গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, আমরা আষাঢ় মাসের শেষ পর্যন্ত ফসল জমি হতে তুলি। কিন্তু বন্যার পানিতে এবার সব জমি ভাষিয়ে নিয়ে গেল। জমি হতে সব ছোট সবজিসহ সব সবজি তুলে নিয়ে আসলাম। মোট দেড় হাজার গাছে ধুন্দল লাগাইছিলাম। এখন জমিতে একবুক পানি।

এ অঞ্চলের সবজির ওপর ভিত্তি করে মুন্সীগঞ্জ ও টঙ্গিবাড়ীতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আড়ত। এসব আড়ত থেকে মৌসুমে উৎপাদিত হাজার হাজার মণ সবজি প্রতিদিন চলে যায় ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, পিরোজপুর, বরিশালসহ অন্যান্য জেলায়। কিন্তু জমি তলিয়ে যাওয়ায় ব্যস্ততাও নেই আড়তগুলোতে।

এদিকে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী, আড়িয়ল, বলই, বালিগাওঁ, কুরমিরা, সিংহেরনন্দন, পাঁচগাঁও, মান্দ্রা, ভিটি মালধা, যশলং, রাউৎভোগ লৌহজং উপজেলার খেদেরপাড়া, কলমা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় রোপণ করা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষক আধাপাকা ধান কেটে গোলায় তোলার চেষ্টা করছেন। অনেক জমিতে ধান পুরো পেকে গেলেও শ্রমিক-সংকটে তা ঘরে তুলতে পারছেন না চাষিরা।

ধানচাষি আবদুল মতিন বলেন, পাঁচ দিন আগেও আমার ধানের জমি শুকনা ছিল। হঠাৎ পানি আসায় এখন জমির মধ্যে ডুবাইয়া আধাপাকা ধান কাটতেছি।

এ ব্যাপারে পানি উন্নায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, মুন্সীগঞ্জে পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকুল পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার এবং মাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রভাহিত হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচারক মো. খোরশেদ আলম বলেন, মানুষ খাল-বিল ভরাট করে পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা বন্ধ করে যত্রতত্র হাউজিং প্লট তৈরি করছে। ফলে পানি দ্রুত নামতে পারছে না। এ কারণে অসময়ে কৃষকের জমি দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যততত্র স্থাপন নির্মাণ করলে আমাদের কিছু করার থাকে না। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারে।

back to top