কোটি মানুষের স্বপ্ন আর অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু। তবে প্রমত্তা নদীরবুকে সেতু নির্মাণ ছাড়াও পদ্মাবহুমুখী সেতু প্রকল্পের রয়েছে আরও নানা উদ্যোগ। যার মধ্যে একটি পদ্মা সেতু জাদুঘর। সেতু এলাকা ও পদ্মা নদীর জীববৈচিত্র্যের নমুনা সংগ্রহ করে তৈরি করা হচ্ছে ব্যতিক্রমী এই জাদুঘর। বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের দোগাছি এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়া-১ এ অস্থায়ীভাবে জাদুঘরটি রয়েছে। তবে অচিরেই স্থায়ী ভবননির্মাণের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মানদী ও নদীকে ঘিরে বসবাসকারী বৈচিত্রময় প্রাণীর নমুনার বিশাল এক সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে সংরক্ষণ করা হলেও প্রতিটি প্রাণীই যেন জীবন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হবে।
২০১৬ সালে পদ্মা সেতু জাদুঘর তৈরিতে প্রাণীর নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে জাদুঘরটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৬ সালে পদ্মা সেতু জাদুঘর তৈরিতে প্রাণীর নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে জাদুঘরটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
জাদুঘরের কিউরেটর সুমন মন্ডল জানান, এক হাজার ৪১৯ প্রজাতির প্রাণীর মোট দুইহাজার ৩৫২টি নমুনা রয়েছে এই জাদুঘরে। দেশের সবচেয়ে ছোট থেকে সবচেয়ে বিরলতম মাছ রয়েছে জাদুঘরটিতে। এছাড়াও এখানে রয়েছে ৩৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ীর ৯২টি নমুনা, ১৭৭ প্রজাতির পাখির ৪৪০টি নমুনা, ৭৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীর ২০০টি নমুনা, ৩২৮ প্রজাতির মাছের ৩৪৩টি নমুনা, ৩০৪ প্রজাতির শামুক-ঝিনুকের ৩১১টি নমুনা, ৬৩ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়ার ৭০টি নমুনা, ২০৯ প্রজাতির পোকামাকড়ের ৩৭৩টি নমুনা, ১৮০ প্রজাতির প্রজাপতি ও মথের ২৩১টি নমুনা রয়েছে।
এক হাজার ৪১৯ প্রজাতির প্রাণীর মোট দুই হাজার ৩৫২টি নমুনা রয়েছে এই জাদুঘরে। দেশের সবচেয়ে ছোট থেকে সবচেয়ে বিরলতম মাছ রয়েছে জাদুঘরটিতে
এছাড়া এই জাদুঘরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ৪৮ অমেরুদণ্ডী প্রাণীর ৬৬টি নমুনা, ২২টি কঙ্কাল ও দেহাবশেষ। বিভিন্ন প্রাণীর ২৫টি ডিমের, ৪৮টি বাসার নমুনাও এখানে রয়েছে। এছাড়াও ৬১ ধরনের মাছ ধরার সরঞ্জাম এবং নদীর বুকে চলা ২০ ধরনের নৌকার নমুনাও রয়েছে।
সুমন মন্ডল আরওবলেন, পদ্মা নদীতে কোন কোন প্রাণী বাস করতো? নতুন করে কোন কোন প্রাণী বাস করছে তার পূর্ণাঙ্গ একটি চিত্র দেখা যাবে এই জাদুঘরে।
জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে থাকাঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. নিয়ামুল নাসের জানান, বিস্তৃত পদ্মানদী ও নদীকে ঘিরে আশেপাশে শতশত প্রাণীর বাস। এসব প্রাণী-বৈচিত্র্যের ইতিহাস সংরক্ষণ ও সবার কাছে তুলে ধরার জন্যই এই জাদুঘর। তবে কোনো প্রাণীকে হত্যা নয়, মৃত প্রাণী সংগ্রহ করেই নমুনা তৈরি করা হয়েছে। ইতিহাসের সংগ্রহশালার পাশপাশি শিক্ষা, গবেষণা ও বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে এই জাদুঘর। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও আধুনিক উপায়ে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করায় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে শত বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে এসব নমুনা। এসব নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণ, সামাজিক ও পরিবেশ বাদী সংগঠন এবং বনবিভাগ ভূমিকা পালন করেছে।
কোনো প্রাণীকে হত্যা নয়, মৃত প্রাণী সংগ্রহ করেই নমুনা তৈরি করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও আধুনিক উপায়ে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করায় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে শতবছর পর্যন্ত টিকে থাকবে এসব নমুনা
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (সড়ক, পরিবেশ, নদীশাসন) সৈয়দ রজ্জব আলী জানান, পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। সেতু জাদুঘরের ভবনের জন্য একটি নকশা পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ঈদের পর ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করবো।
রোববার, ২৬ জুন ২০২২
কোটি মানুষের স্বপ্ন আর অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু। তবে প্রমত্তা নদীরবুকে সেতু নির্মাণ ছাড়াও পদ্মাবহুমুখী সেতু প্রকল্পের রয়েছে আরও নানা উদ্যোগ। যার মধ্যে একটি পদ্মা সেতু জাদুঘর। সেতু এলাকা ও পদ্মা নদীর জীববৈচিত্র্যের নমুনা সংগ্রহ করে তৈরি করা হচ্ছে ব্যতিক্রমী এই জাদুঘর। বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের দোগাছি এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়া-১ এ অস্থায়ীভাবে জাদুঘরটি রয়েছে। তবে অচিরেই স্থায়ী ভবননির্মাণের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মানদী ও নদীকে ঘিরে বসবাসকারী বৈচিত্রময় প্রাণীর নমুনার বিশাল এক সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে সংরক্ষণ করা হলেও প্রতিটি প্রাণীই যেন জীবন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হবে।
২০১৬ সালে পদ্মা সেতু জাদুঘর তৈরিতে প্রাণীর নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে জাদুঘরটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৬ সালে পদ্মা সেতু জাদুঘর তৈরিতে প্রাণীর নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে জাদুঘরটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
জাদুঘরের কিউরেটর সুমন মন্ডল জানান, এক হাজার ৪১৯ প্রজাতির প্রাণীর মোট দুইহাজার ৩৫২টি নমুনা রয়েছে এই জাদুঘরে। দেশের সবচেয়ে ছোট থেকে সবচেয়ে বিরলতম মাছ রয়েছে জাদুঘরটিতে। এছাড়াও এখানে রয়েছে ৩৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ীর ৯২টি নমুনা, ১৭৭ প্রজাতির পাখির ৪৪০টি নমুনা, ৭৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীর ২০০টি নমুনা, ৩২৮ প্রজাতির মাছের ৩৪৩টি নমুনা, ৩০৪ প্রজাতির শামুক-ঝিনুকের ৩১১টি নমুনা, ৬৩ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়ার ৭০টি নমুনা, ২০৯ প্রজাতির পোকামাকড়ের ৩৭৩টি নমুনা, ১৮০ প্রজাতির প্রজাপতি ও মথের ২৩১টি নমুনা রয়েছে।
এক হাজার ৪১৯ প্রজাতির প্রাণীর মোট দুই হাজার ৩৫২টি নমুনা রয়েছে এই জাদুঘরে। দেশের সবচেয়ে ছোট থেকে সবচেয়ে বিরলতম মাছ রয়েছে জাদুঘরটিতে
এছাড়া এই জাদুঘরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ৪৮ অমেরুদণ্ডী প্রাণীর ৬৬টি নমুনা, ২২টি কঙ্কাল ও দেহাবশেষ। বিভিন্ন প্রাণীর ২৫টি ডিমের, ৪৮টি বাসার নমুনাও এখানে রয়েছে। এছাড়াও ৬১ ধরনের মাছ ধরার সরঞ্জাম এবং নদীর বুকে চলা ২০ ধরনের নৌকার নমুনাও রয়েছে।
সুমন মন্ডল আরওবলেন, পদ্মা নদীতে কোন কোন প্রাণী বাস করতো? নতুন করে কোন কোন প্রাণী বাস করছে তার পূর্ণাঙ্গ একটি চিত্র দেখা যাবে এই জাদুঘরে।
জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে থাকাঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. নিয়ামুল নাসের জানান, বিস্তৃত পদ্মানদী ও নদীকে ঘিরে আশেপাশে শতশত প্রাণীর বাস। এসব প্রাণী-বৈচিত্র্যের ইতিহাস সংরক্ষণ ও সবার কাছে তুলে ধরার জন্যই এই জাদুঘর। তবে কোনো প্রাণীকে হত্যা নয়, মৃত প্রাণী সংগ্রহ করেই নমুনা তৈরি করা হয়েছে। ইতিহাসের সংগ্রহশালার পাশপাশি শিক্ষা, গবেষণা ও বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে এই জাদুঘর। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও আধুনিক উপায়ে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করায় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে শত বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে এসব নমুনা। এসব নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণ, সামাজিক ও পরিবেশ বাদী সংগঠন এবং বনবিভাগ ভূমিকা পালন করেছে।
কোনো প্রাণীকে হত্যা নয়, মৃত প্রাণী সংগ্রহ করেই নমুনা তৈরি করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও আধুনিক উপায়ে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করায় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে শতবছর পর্যন্ত টিকে থাকবে এসব নমুনা
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (সড়ক, পরিবেশ, নদীশাসন) সৈয়দ রজ্জব আলী জানান, পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। সেতু জাদুঘরের ভবনের জন্য একটি নকশা পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ঈদের পর ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করবো।