alt

সারাদেশ

আগেভাগে কুমিল্লায় বিএনপিকর্মীরা, নেতারা রেখেছেন থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা

প্রতিনিধি, কুমিল্লা : শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

কুমিল্লা নগরীর প্রতিটি অলি-গলিতে হাঁটতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে পড়ছে অপরিচিত মুখ। পরিচয় জিজ্ঞেস করলে বলছেন, তারা বিএনপির নেতাকর্মী; এসেছেন সমাবেশে অংশ নিতে।

শুক্রবার সকালে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা ও পাশের জেলাগুলো থেকে আসা নেতা-কর্মীরা জানান, বিএনপির চলমান বিভাগীয় সমাবেশগুলোর আগে হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘট তাদের সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় ফেলেছে। এজন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে অনেকে দুদিন আগেই চলে এসেছেন।

নেতা-কর্মীদের কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাসায় উঠেছেন; কেউ থাকছেন আবাসিক হোটেলে। কারও কারও জন্য দলের নেতারা থাকার ব্যবস্থা করেছেন। যাদের জন্য বন্দবস্ত হয়নি তারা সরাসরি সমাবেশস্থলে এসেছেন।

কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন জানান, কুমিল্লা উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর এবং চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এ পাঁচটি ইউনিট নিয়ে কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। কুমিল্লার পাশাপাশি চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই ‘প্লেস’ নির্ধারণ করে রেখেছেন।

সুতরাং কেউ আগে চলে আসলেও তাদের থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকেও ২০ হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বয়কের দায়িত্বে থাকা আমিন উর রশিদ আরও বলেন, তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এ গণসমাবেশে আসবেন। সব মিলিয়ে সমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটাতে চান।

“সমাবেশ ঘিরে পুরো জেলায় সাজ সাজ রব অবস্থা। নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস আর আগ্রহ দেখে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, কুমিল্লার গণসমাবেশ সফল ও সার্থক হবে।“

শনিবার কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। সমাবেশের দুদিন আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীতে দলটির নেতা-কর্মীদের ঢল নামতে শুরু করেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরের বাসিন্দা বিএনপি কর্মী আবুল খায়ের বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লায় এসেছেন। তিনি বলেন, পরে আসতে সমস্যা হতে পারে। এজন্য তারা ১৭ জন আগেই চলে এসেছেন। দলের নেতারা তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তারাও সমাবেশকে সফল করতে প্রস্তুত।

কুমিল্লার লাকসাম পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম খোকন বলেন, “আমাদের প্রায় ছয়শ নেতা-কর্মী এরই মধ্যে কুমিল্লায় অবস্থান নিয়েছে। কেউ স্বজনদের বাসায় আবার কেউ আবাসিক হোটেলে আছে। শুক্রবারের মধ্যে আরও হাজার খানেক লোক আসবে। আর বাকিরা শনিবার যোগ দেবে।”

কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আমান উল্লা আমান বলেন, “আমাদের এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী এখন কুমিল্লায় আছেন। সমাবেশ আগে আমাদের ৬ হাজার নেতাকর্মীরা আসবে। আমাদের নেতা সকল কিছুর ব্যবস্থা করেছেন।”

কুমিল্লা নগরী ও আশপাশের আবাসিক হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- কুমিল্লার শতাধিক আবাসিক হোটেলে আনুমানিক হাজার খানেক কক্ষ ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে।

নগরীর রেসকোর্স এলাকায় ‘রেড রুফ ইন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের’ ম্যানেজার ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হোটেলে ২৮ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে। ২৬ তারিখ পর্যন্ত এই হোটেলে কোনো সিট খালি নাই।”

নগরীর শাসনগাছা এলাকার ঢাকা রেস্ট হাউসের পরিচালক হাজী আহাম্মদ আলী ও কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের হোটেল নুরজাহান কর্তৃপক্ষও তাদের রুম খালি নেই বলে জনিয়েছেন।

অন্য বিভাগে সমাবেশের সময় পরিবহন ধর্মঘট বিএনপিকে ‘বেকায়দায়’ ফেললেও কুমিল্লায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। নেতা-কর্মীদের মনে আশঙ্কা থাকলেও পরিবহন ধর্মঘটের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। গণসমাবেশকে ঘিরে এরই মধ্যে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা; ব্যাপক প্রচারণাও চালাচ্ছেন। পুরো নগরী সেজে উঠেছে বিএনপির ব্যানার-ফেস্টুনে।

কুমিল্লার বিএনপির নেতাদের ভাষ্য, গণসমাবেশকে ঘিরে অন্য বিভাগের মতো ধর্মঘট ডাকলে সরকার ও পরিবহন মালিকরাই সমস্যায় পড়বে। কারণ দেশের অর্থনীতির ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তীস্থান কুমিল্লা। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মধ্যবর্তী স্থানও কুমিল্লা। কুমিল্লা জেলার বাইরে চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নেতা-কর্মীদের কুমিল্লায় আসতেও খুব একটা সমস্যায় পড়তে হবে না। ট্রেন ও সড়কের বেশ কয়েকটি পথে দুই জেলা থেকে কুমিল্লায় প্রবেশের সুযোগ রয়েছে।

তবে এরপরও দূরের নেতা-কর্মীদের সমস্যার বিষয়টি মাথায় রেখে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক নেতা।

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, “আমরা বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ধর্মঘটে যাবো না। বিষয়টি এরই মধ্যে আমাদের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আর পরিবহন বন্ধ থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মালিকরা। তাই তাদের (বিএনপির) বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা স্বাভাবিক নিয়মে পরিবহন ব্যবস্থা চালিয়ে যাবো। ”

তবে পরিবহন ধর্মঘট ডাকলেও তাতে লাভ দেখছেন না চাঁদপুর থেকে আসা ফখরুল নামের এক বিএনপি কর্মী। তিনি বলেন, “সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে হাজার হাজার নেতা-কর্মী কুমিল্লার বিভিন্ন যায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের আতঙ্ক ছিল বাস বন্ধের। এখন আমরা কুমিল্লায় পৌঁছে গেছি, আর সমস্যা নেই। কাল ট্রেন ও বাসে কুমিল্লায় আসবেন আরও নেতা-কর্মী।”

এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কুমিল্লা টাউন হল মাঠের সমাবেশস্থল গিয়ে দেখা যায়- বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দলের নেতারা স্লোগানে কর্মীদের চাঙ্গা রাখছেন। সমাবেশ উপলক্ষে বিকালেই ৭২ ফুট দীর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রস্থ মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেছে ঢাকা থেকে আসা ডেকোরেটর কর্মীরা। মাঠের চারপাশে ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানোর কাজ চলছে।

বিএনপির মঞ্চ তৈরিতে নিয়োজিত ঢাকার ‘নিপা ডেকোরেটরের’ কর্মী ওমর ফারুক বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে কাজ শেষ হবে। ভালোভাবেই কাজটি শেষ করতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি।”

মোরেলগঞ্জে জুলাই বিপ্লব স্মরণে বিএনপির দোয়া

সিরাজগঞ্জে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে যমুনায় ভাঙছে পাড়ের জমি, ঘরবাড়ি

বিয়ানীবাজারে ভাতিজির আত্মহত্যার খবর শুনে চাচির মৃত্যু

‘হালদা দূষণকারীদের চিহ্নিত করতে হবে নির্যাতনকারী হিসেবে’

ছবি

‘অদক্ষ-ব্যর্থ’ অভিযোগে সিলেট ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবি, শনিবার থেকে পরিবহন বন্ধের হুমকি

ছবি

ডিআইজির কার্যালয়ের সামনে এনসিপি ও ছাত্রদের বিক্ষোভ

ছবি

চট্টগ্রামে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির অবস্থান, সড়ক অবরোধ

ছবি

ভোলায় গৃহবধূকে ‘দলবদ্ধ ধর্ষণ’: শ্রমিক দল নেতা ফরিদ বহিষ্কার

করোনায় সিলেটে এক বৃদ্ধের মৃত্যু

ছবি

সাক্ষাৎকারের চাপে অতিষ্ঠ, বাড়ি ছাড়লেন মুরাদনগরের সেই নির্যাতিত নারী

ছবি

কেএমপি কমিশনারের অপসারণ দাবিতে রূপসা সেতু অবরোধ

ছবি

কমিশনার অপসারণের দাবিতে খুলনায় টানা কর্মসূচি, রোববার থেকে সর্বাত্মক অবরোধের হুঁশিয়ারি

ছবি

চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা: চিন্ময়ের ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দায়ী, বলছে পুলিশ

ছবি

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রথ মেলায় চাঁদাবাজি বন্ধ করায় সস্তিতে ব্যবসায়ীরা

২৩ বছর পর পটুয়াখালীতে বিএনপির সম্মেলন আজ

ছাতকে ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মত বিনিময়

করিমগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার বিতরণ

ছবি

মাতামুহুরীর চরের জমিতে পেঁপে চাষে সৌখিন চাষি বাদশা লাভবান

১৩ বছর ধরে অবৈধভাবে শিক্ষকতা বেরোবির তাবিউর রহমান প্রধানের বিরুদ্ধে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

পূর্বাচলে ঘোড়ার মাংসসহ গ্রেপ্তার ১

ছবি

পলাশে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার সৌন্দর্যের প্রতীক তালগাছ

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের সিলেট মুরারি চাঁদ কলেজ

মাদক কারবারিদের হামলায় ডিবি পুলিশ আহত

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে

ডিমলায় জমি নিয়ে বিরোধ, নিহত ১

ভৈরবে পাইকারি চাল বাজারে অভিযান জরিমানা

ছবি

প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

১০১ পরিবারকে ঘর দিচ্ছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন

দুর্গাপুরে জনবসতি এলাকায় ময়লার ভাগাড় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

নরসিংদীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে-গুলি করে হত্যা

ছবি

সিরাজগঞ্জে বর্ষার আগমনে জেলে পরিবারগুলোতে ফিরেছে স্বস্তি

ঝালকাঠি পৌরসভায় ট্রাক স্ট্যান্ড না থাকায় আবাসিক এলাকায় পার্কিং

বেতাগীতে ডেঙ্গুতে শিক্ষকের মৃত্যু

গাইবান্ধায় বাড়ছে অপরাধ, জনমনে উদ্বেগ

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের সমাবেশ

রামুতে পরিত্যক্ত অস্ত্র উদ্ধার আটক ২

tab

সারাদেশ

আগেভাগে কুমিল্লায় বিএনপিকর্মীরা, নেতারা রেখেছেন থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা

প্রতিনিধি, কুমিল্লা

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

কুমিল্লা নগরীর প্রতিটি অলি-গলিতে হাঁটতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে পড়ছে অপরিচিত মুখ। পরিচয় জিজ্ঞেস করলে বলছেন, তারা বিএনপির নেতাকর্মী; এসেছেন সমাবেশে অংশ নিতে।

শুক্রবার সকালে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা ও পাশের জেলাগুলো থেকে আসা নেতা-কর্মীরা জানান, বিএনপির চলমান বিভাগীয় সমাবেশগুলোর আগে হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘট তাদের সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় ফেলেছে। এজন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে অনেকে দুদিন আগেই চলে এসেছেন।

নেতা-কর্মীদের কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাসায় উঠেছেন; কেউ থাকছেন আবাসিক হোটেলে। কারও কারও জন্য দলের নেতারা থাকার ব্যবস্থা করেছেন। যাদের জন্য বন্দবস্ত হয়নি তারা সরাসরি সমাবেশস্থলে এসেছেন।

কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন জানান, কুমিল্লা উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর এবং চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এ পাঁচটি ইউনিট নিয়ে কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। কুমিল্লার পাশাপাশি চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই ‘প্লেস’ নির্ধারণ করে রেখেছেন।

সুতরাং কেউ আগে চলে আসলেও তাদের থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকেও ২০ হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বয়কের দায়িত্বে থাকা আমিন উর রশিদ আরও বলেন, তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এ গণসমাবেশে আসবেন। সব মিলিয়ে সমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটাতে চান।

“সমাবেশ ঘিরে পুরো জেলায় সাজ সাজ রব অবস্থা। নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস আর আগ্রহ দেখে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, কুমিল্লার গণসমাবেশ সফল ও সার্থক হবে।“

শনিবার কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। সমাবেশের দুদিন আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীতে দলটির নেতা-কর্মীদের ঢল নামতে শুরু করেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরের বাসিন্দা বিএনপি কর্মী আবুল খায়ের বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লায় এসেছেন। তিনি বলেন, পরে আসতে সমস্যা হতে পারে। এজন্য তারা ১৭ জন আগেই চলে এসেছেন। দলের নেতারা তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তারাও সমাবেশকে সফল করতে প্রস্তুত।

কুমিল্লার লাকসাম পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম খোকন বলেন, “আমাদের প্রায় ছয়শ নেতা-কর্মী এরই মধ্যে কুমিল্লায় অবস্থান নিয়েছে। কেউ স্বজনদের বাসায় আবার কেউ আবাসিক হোটেলে আছে। শুক্রবারের মধ্যে আরও হাজার খানেক লোক আসবে। আর বাকিরা শনিবার যোগ দেবে।”

কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আমান উল্লা আমান বলেন, “আমাদের এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী এখন কুমিল্লায় আছেন। সমাবেশ আগে আমাদের ৬ হাজার নেতাকর্মীরা আসবে। আমাদের নেতা সকল কিছুর ব্যবস্থা করেছেন।”

কুমিল্লা নগরী ও আশপাশের আবাসিক হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- কুমিল্লার শতাধিক আবাসিক হোটেলে আনুমানিক হাজার খানেক কক্ষ ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে।

নগরীর রেসকোর্স এলাকায় ‘রেড রুফ ইন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের’ ম্যানেজার ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হোটেলে ২৮ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে। ২৬ তারিখ পর্যন্ত এই হোটেলে কোনো সিট খালি নাই।”

নগরীর শাসনগাছা এলাকার ঢাকা রেস্ট হাউসের পরিচালক হাজী আহাম্মদ আলী ও কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের হোটেল নুরজাহান কর্তৃপক্ষও তাদের রুম খালি নেই বলে জনিয়েছেন।

অন্য বিভাগে সমাবেশের সময় পরিবহন ধর্মঘট বিএনপিকে ‘বেকায়দায়’ ফেললেও কুমিল্লায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। নেতা-কর্মীদের মনে আশঙ্কা থাকলেও পরিবহন ধর্মঘটের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। গণসমাবেশকে ঘিরে এরই মধ্যে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা; ব্যাপক প্রচারণাও চালাচ্ছেন। পুরো নগরী সেজে উঠেছে বিএনপির ব্যানার-ফেস্টুনে।

কুমিল্লার বিএনপির নেতাদের ভাষ্য, গণসমাবেশকে ঘিরে অন্য বিভাগের মতো ধর্মঘট ডাকলে সরকার ও পরিবহন মালিকরাই সমস্যায় পড়বে। কারণ দেশের অর্থনীতির ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তীস্থান কুমিল্লা। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মধ্যবর্তী স্থানও কুমিল্লা। কুমিল্লা জেলার বাইরে চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নেতা-কর্মীদের কুমিল্লায় আসতেও খুব একটা সমস্যায় পড়তে হবে না। ট্রেন ও সড়কের বেশ কয়েকটি পথে দুই জেলা থেকে কুমিল্লায় প্রবেশের সুযোগ রয়েছে।

তবে এরপরও দূরের নেতা-কর্মীদের সমস্যার বিষয়টি মাথায় রেখে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক নেতা।

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, “আমরা বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ধর্মঘটে যাবো না। বিষয়টি এরই মধ্যে আমাদের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আর পরিবহন বন্ধ থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মালিকরা। তাই তাদের (বিএনপির) বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা স্বাভাবিক নিয়মে পরিবহন ব্যবস্থা চালিয়ে যাবো। ”

তবে পরিবহন ধর্মঘট ডাকলেও তাতে লাভ দেখছেন না চাঁদপুর থেকে আসা ফখরুল নামের এক বিএনপি কর্মী। তিনি বলেন, “সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে হাজার হাজার নেতা-কর্মী কুমিল্লার বিভিন্ন যায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের আতঙ্ক ছিল বাস বন্ধের। এখন আমরা কুমিল্লায় পৌঁছে গেছি, আর সমস্যা নেই। কাল ট্রেন ও বাসে কুমিল্লায় আসবেন আরও নেতা-কর্মী।”

এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কুমিল্লা টাউন হল মাঠের সমাবেশস্থল গিয়ে দেখা যায়- বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দলের নেতারা স্লোগানে কর্মীদের চাঙ্গা রাখছেন। সমাবেশ উপলক্ষে বিকালেই ৭২ ফুট দীর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রস্থ মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেছে ঢাকা থেকে আসা ডেকোরেটর কর্মীরা। মাঠের চারপাশে ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানোর কাজ চলছে।

বিএনপির মঞ্চ তৈরিতে নিয়োজিত ঢাকার ‘নিপা ডেকোরেটরের’ কর্মী ওমর ফারুক বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে কাজ শেষ হবে। ভালোভাবেই কাজটি শেষ করতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি।”

back to top