শষ্যভাণ্ডার বলে পরিচিত রংপুরে খাদ্য বিভাগ কর্তৃক মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার কার্যক্রম শুরু করলেও চালের মূল্য সরকারি ক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহ করার চুক্তি করছে না। আজ খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চালকল মালিকদের চুক্তি করার শেষ তারিখ হলেও গতকাল পর্যন্ত জেলার ৭২২ জন মিলারের মাধ্যমে মাত্র ১৫ জন মিলার চুক্তি করেছে। ফলে চলতি আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করছে খোদ খাদ্য বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রংপুর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার হেক্টর জমি, সেখানে চাষ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বৃষ্টিপাত কম হলেও শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে জমিতে আমন ধান চাষ করায় রোগবালাই না থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাল উৎপাদন সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি উৎপদন হয়েছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত দুই থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয় চলতি আমন মৌসুমে সারাদেশের মতো রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে ৯ হাজার ৪৩ মণ ধান এবং খাদ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত ৭২২ জন চালকল মালিকদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আজ চালকল মালিকদের খাদ্য বিভাগের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পে-অর্ডার জমা দিয়ে চুক্তি সম্পাদন করার শেষ দিন।
এজন্য অনেক আগেই ৭২২ জন চালকল মালিক স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নামে চাল কেনার বরাদ্দপত্র প্রদান করেছিল রংপুর খাদ্য অধিদপ্তর। বার বার তাগাদা দেয়ার পরেও চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। গতকাল পর্যন্ত মাত্র ১৫ জন চালকল মালিক খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছে যা ২ শতাংশেরও কম বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের ৮ উপজেলায় ৭২২ জন চালকল মালিক খাদ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত। এরমধ্যে রংপুর মেট্রোপলিটন ১১৬ জন চালকল মালিকদের কাছ থেকে ২ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন চাল, রংপুর সদর উপজেলায় ২ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন, বদরগঞ্জ উপজেলায় ৯৮১ মেট্রিক টন, মিঠাপুকুর উপজেলায় ২ হাজার ৭৪০, পীরগঞ্জ উপজেলায় ৪ হাজার ২৮৩, তারাগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৯০১ মেট্রিক টন, গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৮৯৪, কাউনিয়া উপজেলায় ৮৫৮, এবং পীরগাছা উপজেলায় ১ হাজার ১১০ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চালের প্রতি কেজি বাজারমূল্য খাদ্য বিভাগের চেয়ে কেজিপ্রতি ৩/৪ টাকা বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহের চুক্তি করছে না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম চালের বৃহৎ মোকাম রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় সরেজমিন ঘুরে চালকল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রিপন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খাদ্য বিভাগ ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কিনবে কিন্তু বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ চাল সরবরাহ করলে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা লস হবে। এ অবস্থায় লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সে কারণে খাদ্য বিভাগের কাছে আমাদের আবেদন সরকার যদি চালের ক্রয়মূল্য কেজিপ্রতি দুই টাকা বৃদ্ধি করে তাহলে তারা চাল সরবরাহ করতে পারবে। এ কথা জানান চালকল মালিক সুলতান মিয়া, আলমগীর চৌধুরীসহ অনেকেই।
সার্বিক বিষয়ে রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রিয়াজুর রহমান রাজু জানান, এ পর্যন্ত ১৫ জন চালকল মালিক চুক্তি করেছেন। আজ চুক্তি সম্পাদনের শেষ দিন ফলে আশা করা যায় আজ অধিকাংশ চালকল মালিক চুক্তি সম্পাদন করবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে দুই হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খাদ্য বিভাগের নির্ধারিত সময় ২৮ ফ্রেরুয়ারির মধ্যে চাল কেনা সম্ভব হবে। ধান কেনার ব্যাপারে বলেন আপোষের মাধ্যমে জেলার ৮ উপজেলা থেকে ৯ হাজার ৪৩ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হবে। এখনও কোন ধান কেনা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২
শষ্যভাণ্ডার বলে পরিচিত রংপুরে খাদ্য বিভাগ কর্তৃক মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার কার্যক্রম শুরু করলেও চালের মূল্য সরকারি ক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহ করার চুক্তি করছে না। আজ খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চালকল মালিকদের চুক্তি করার শেষ তারিখ হলেও গতকাল পর্যন্ত জেলার ৭২২ জন মিলারের মাধ্যমে মাত্র ১৫ জন মিলার চুক্তি করেছে। ফলে চলতি আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করছে খোদ খাদ্য বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রংপুর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার হেক্টর জমি, সেখানে চাষ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বৃষ্টিপাত কম হলেও শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে জমিতে আমন ধান চাষ করায় রোগবালাই না থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাল উৎপাদন সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি উৎপদন হয়েছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত দুই থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয় চলতি আমন মৌসুমে সারাদেশের মতো রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে ৯ হাজার ৪৩ মণ ধান এবং খাদ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত ৭২২ জন চালকল মালিকদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আজ চালকল মালিকদের খাদ্য বিভাগের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পে-অর্ডার জমা দিয়ে চুক্তি সম্পাদন করার শেষ দিন।
এজন্য অনেক আগেই ৭২২ জন চালকল মালিক স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নামে চাল কেনার বরাদ্দপত্র প্রদান করেছিল রংপুর খাদ্য অধিদপ্তর। বার বার তাগাদা দেয়ার পরেও চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। গতকাল পর্যন্ত মাত্র ১৫ জন চালকল মালিক খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছে যা ২ শতাংশেরও কম বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের ৮ উপজেলায় ৭২২ জন চালকল মালিক খাদ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত। এরমধ্যে রংপুর মেট্রোপলিটন ১১৬ জন চালকল মালিকদের কাছ থেকে ২ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন চাল, রংপুর সদর উপজেলায় ২ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন, বদরগঞ্জ উপজেলায় ৯৮১ মেট্রিক টন, মিঠাপুকুর উপজেলায় ২ হাজার ৭৪০, পীরগঞ্জ উপজেলায় ৪ হাজার ২৮৩, তারাগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৯০১ মেট্রিক টন, গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৮৯৪, কাউনিয়া উপজেলায় ৮৫৮, এবং পীরগাছা উপজেলায় ১ হাজার ১১০ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চালের প্রতি কেজি বাজারমূল্য খাদ্য বিভাগের চেয়ে কেজিপ্রতি ৩/৪ টাকা বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চাল সরবরাহের চুক্তি করছে না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম চালের বৃহৎ মোকাম রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় সরেজমিন ঘুরে চালকল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রিপন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খাদ্য বিভাগ ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কিনবে কিন্তু বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ চাল সরবরাহ করলে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা লস হবে। এ অবস্থায় লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সে কারণে খাদ্য বিভাগের কাছে আমাদের আবেদন সরকার যদি চালের ক্রয়মূল্য কেজিপ্রতি দুই টাকা বৃদ্ধি করে তাহলে তারা চাল সরবরাহ করতে পারবে। এ কথা জানান চালকল মালিক সুলতান মিয়া, আলমগীর চৌধুরীসহ অনেকেই।
সার্বিক বিষয়ে রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রিয়াজুর রহমান রাজু জানান, এ পর্যন্ত ১৫ জন চালকল মালিক চুক্তি করেছেন। আজ চুক্তি সম্পাদনের শেষ দিন ফলে আশা করা যায় আজ অধিকাংশ চালকল মালিক চুক্তি সম্পাদন করবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে দুই হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খাদ্য বিভাগের নির্ধারিত সময় ২৮ ফ্রেরুয়ারির মধ্যে চাল কেনা সম্ভব হবে। ধান কেনার ব্যাপারে বলেন আপোষের মাধ্যমে জেলার ৮ উপজেলা থেকে ৯ হাজার ৪৩ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হবে। এখনও কোন ধান কেনা সম্ভব হয়নি।