আমরা সবাই বিশ্বাস করি যে ব্যবসা সফল করার জন্য অভিজ্ঞতাই সবকিছু। কিন্তু আজকের উদ্ভাবন ও অন্বেষণের যুগে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা এই মিথ্যা প্রথা ভেঙে অল্প বয়সেই ভাগ্যবান ব্যবসায়ী হয়ে উঠছেন। তারা প্রমাণ করছে যে সাফল্য অর্জনের জন্য বয়স কোন বাধা এবং প্রয়োজন নয় বরং একজন ব্যক্তির যোগ্যতা এবং উদ্ভাবনী মানসিকতাই যেকোন পেশাকে সফল করতে যথেষ্ট। এমনই একজন তরুণ উদ্যোক্তা হলেন, আবু সায়েম যিনি মাত্র ২৩ বছর বয়সে একজন ডিজিটাল মার্কেটার এবং একজন সফল উদ্যোক্তা কঠোর সাধনা আর অধ্যাবসায় একজনকে সাফল্যের চূড়ায় নিতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে উদ্যোক্তা সায়েম। মাসে লাখ টাকা আয় করেন তিনি গড়ে তুলেছেন দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
তিনি আরও বলেন, বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং শিখুক। নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং সুবিধা নেয়া উচিত। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করতে পারলে বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব। এখন শহরের পাশাপাশি সায়েম তার নিজের গ্রামের তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং শেখাতে শুরু করেছেন। রংপুর বিভাগীয় নগরীতেও গড়ে তুলেছেন দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখান থেকে অফ্যায়িলিয়েটেড মার্কেটিং, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), লিড জেনারেশন, সিপিএ মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ আউট সোসিংয়ের বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আবু সায়েম রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আউয়ালের ছেলে। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। মা আরজিনা বেগম গৃহিণী। চার বোন ও দুই ভাইয়ের সংসার তাদের। এর মধ্যে সায়েম হলেন ভাইবোনদের মধ্যে পরিবারে পঞ্চম। অভাব অনটন ছিল তাদের নিত্য সঙ্গী। বাবা মারা যাওয়ার পর সর্বশান্ত ছিল পুরো পরিবার। তখনই কিছু করার ইচ্ছে থেকে ঝুঁকে পড়েন ইন্টারনেটে। সারাদিন গুগল ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সাইট ঘেটে ঘেটে ফ্রিল্যন্সিংএর ধারণা রপ্ত করতে থাকেন সায়েম।
ফ্রিল্যান্সার সায়েম বলেন, পরিবারে আমরা দুই ভাই ও চার বোন। এর মধ্যে দায়িত্ব একটু বেশি। পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং থেকে আমার আয়ের পথ খুলেছে। এখন মাসে আয় লাখ টাকার কাছাকাছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের আয় থেকে পরিবারের দেখভাল ও ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখার আগ্রহের কথা জানান এই তরুণ।
সায়েম ২০১৩ সালে তার অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে এবং অল্প সময়ের মধ্যে সে অনেক সাফল্য অর্জন করে বর্তমানে সায়েম তার নিজের কোম্পানির ২৩ বছর বয়সী সিইও। তার কোম্পানি ইনবক্স আইটি ইনস্টিটিউট এবং সায়েম একাডেমি। এখানে অনেক তরুণ-তরুণী ফ্রীল্যানসিং এর প্রশিক্ষণ নিয়ে সাবলম্বী হয়েছেন। রংপুর ছাড়াও যারা প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী তাদের জন্য খুলেছেন অনলাইন সায়েম একাডেমি।
তার সমৃদ্ধ সাফল্যের সবচেয়ে কারণ তার কাজের প্রতি তার মনোভাব। তিনি যখন প্রথম প্রকল্পটি পান তখন তিনি এইচ এসসিতে পড়তেন যদিও শুরুটা ছিল অনেক আগে এবং তখন থেকেই তার সফল কর্মজীবনের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকে সায়েমকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। লক্ষ্যের প্রতি তার ঝোঁকই তাকে সর্বকালের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তাদের একজন করে তোলে।
এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, অর্থনৈতিক খাতে ফ্রিল্যান্সিং এর ভূমিকা অনেকটা বেশি এবং আগামীর বাংলাদেশ হবে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। এজন্য সামনের দিনগুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর গুরুত্ব অনেক বেশি। করোনা মহামারীর কারণে দেশের মানুষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে ঝুঁকে পড়েছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এখনই বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে ফ্রিল্যান্সিং। ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে দেশের হাজার হাজার বেকার তরুণ-তরুণী লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। তিনি আরো বলেন, যারা বিক্ষিপ্তভাবে ফ্রিল্যান্সিং আসছে তাদেরকে ভালো করে প্রশিক্ষণ দিয়ে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর ব্যাপারে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
এ সমস্ত মেধাবী তরুণ উদ্যোক্তাদের সরকারের উদ্যোগে সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে তাদের কাজের পরিধি সম্প্রসারণ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩
আমরা সবাই বিশ্বাস করি যে ব্যবসা সফল করার জন্য অভিজ্ঞতাই সবকিছু। কিন্তু আজকের উদ্ভাবন ও অন্বেষণের যুগে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা এই মিথ্যা প্রথা ভেঙে অল্প বয়সেই ভাগ্যবান ব্যবসায়ী হয়ে উঠছেন। তারা প্রমাণ করছে যে সাফল্য অর্জনের জন্য বয়স কোন বাধা এবং প্রয়োজন নয় বরং একজন ব্যক্তির যোগ্যতা এবং উদ্ভাবনী মানসিকতাই যেকোন পেশাকে সফল করতে যথেষ্ট। এমনই একজন তরুণ উদ্যোক্তা হলেন, আবু সায়েম যিনি মাত্র ২৩ বছর বয়সে একজন ডিজিটাল মার্কেটার এবং একজন সফল উদ্যোক্তা কঠোর সাধনা আর অধ্যাবসায় একজনকে সাফল্যের চূড়ায় নিতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে উদ্যোক্তা সায়েম। মাসে লাখ টাকা আয় করেন তিনি গড়ে তুলেছেন দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
তিনি আরও বলেন, বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং শিখুক। নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং সুবিধা নেয়া উচিত। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করতে পারলে বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব। এখন শহরের পাশাপাশি সায়েম তার নিজের গ্রামের তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং শেখাতে শুরু করেছেন। রংপুর বিভাগীয় নগরীতেও গড়ে তুলেছেন দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখান থেকে অফ্যায়িলিয়েটেড মার্কেটিং, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), লিড জেনারেশন, সিপিএ মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ আউট সোসিংয়ের বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আবু সায়েম রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আউয়ালের ছেলে। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। মা আরজিনা বেগম গৃহিণী। চার বোন ও দুই ভাইয়ের সংসার তাদের। এর মধ্যে সায়েম হলেন ভাইবোনদের মধ্যে পরিবারে পঞ্চম। অভাব অনটন ছিল তাদের নিত্য সঙ্গী। বাবা মারা যাওয়ার পর সর্বশান্ত ছিল পুরো পরিবার। তখনই কিছু করার ইচ্ছে থেকে ঝুঁকে পড়েন ইন্টারনেটে। সারাদিন গুগল ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সাইট ঘেটে ঘেটে ফ্রিল্যন্সিংএর ধারণা রপ্ত করতে থাকেন সায়েম।
ফ্রিল্যান্সার সায়েম বলেন, পরিবারে আমরা দুই ভাই ও চার বোন। এর মধ্যে দায়িত্ব একটু বেশি। পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং থেকে আমার আয়ের পথ খুলেছে। এখন মাসে আয় লাখ টাকার কাছাকাছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের আয় থেকে পরিবারের দেখভাল ও ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখার আগ্রহের কথা জানান এই তরুণ।
সায়েম ২০১৩ সালে তার অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে এবং অল্প সময়ের মধ্যে সে অনেক সাফল্য অর্জন করে বর্তমানে সায়েম তার নিজের কোম্পানির ২৩ বছর বয়সী সিইও। তার কোম্পানি ইনবক্স আইটি ইনস্টিটিউট এবং সায়েম একাডেমি। এখানে অনেক তরুণ-তরুণী ফ্রীল্যানসিং এর প্রশিক্ষণ নিয়ে সাবলম্বী হয়েছেন। রংপুর ছাড়াও যারা প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী তাদের জন্য খুলেছেন অনলাইন সায়েম একাডেমি।
তার সমৃদ্ধ সাফল্যের সবচেয়ে কারণ তার কাজের প্রতি তার মনোভাব। তিনি যখন প্রথম প্রকল্পটি পান তখন তিনি এইচ এসসিতে পড়তেন যদিও শুরুটা ছিল অনেক আগে এবং তখন থেকেই তার সফল কর্মজীবনের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকে সায়েমকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। লক্ষ্যের প্রতি তার ঝোঁকই তাকে সর্বকালের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তাদের একজন করে তোলে।
এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, অর্থনৈতিক খাতে ফ্রিল্যান্সিং এর ভূমিকা অনেকটা বেশি এবং আগামীর বাংলাদেশ হবে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। এজন্য সামনের দিনগুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর গুরুত্ব অনেক বেশি। করোনা মহামারীর কারণে দেশের মানুষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে ঝুঁকে পড়েছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এখনই বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে ফ্রিল্যান্সিং। ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে দেশের হাজার হাজার বেকার তরুণ-তরুণী লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। তিনি আরো বলেন, যারা বিক্ষিপ্তভাবে ফ্রিল্যান্সিং আসছে তাদেরকে ভালো করে প্রশিক্ষণ দিয়ে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর ব্যাপারে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
এ সমস্ত মেধাবী তরুণ উদ্যোক্তাদের সরকারের উদ্যোগে সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে তাদের কাজের পরিধি সম্প্রসারণ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।