alt

সারাদেশ

রুমায় পাহাড়ের গহীনে গোলাগুলি, আতঙ্কে জনমানবশূন্য বসতি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩

সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিরুদ্ধে অভিযানের মধ্যে বান্দরবানের রুমা উপজেলার কয়েকটি পাড়া থেকে মারমা ও বম জাতিগোষ্ঠীর লোকজন গহীন পাহাড়ের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে শহরে এসেছেন।

আজ রোববার বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের অন্তত ৫১টি মারমা ও ২০টি বম পরিবার রুমা বাজারের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হল রুমে এবং বম কমিউনিটি সেন্টারে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

মারমা জাতিগোষ্ঠীর নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এর মধ্যে শনিবার এসেছে ৪০টি মামলা পরিবার। আর রোববার আরও ১১টি মারমা এবং ২০টি বম পরিবার পাড়া ছেড়েছে। ভয়ের মধ্যে আর কিছু পরিবার জঙ্গলে পালিয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলী বলেন, “গত দুদিন ধরে রুমা পাইন্দু ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পাহাড়ে কেএনএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযান চালায়। অভিযানের কারণে কেএনএফ সদস্যরা হ্যাপিহিল, বাসত্লাং, মুনওয়াম, মুয়ালপি, সানাক্র, ক্যকতাইং পাড়ায় এসে আশ্রয় নেয়।“

“পাড়ার ভিতর থেকেই তারা সেনাবাহিনীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। সাধারণ নিরীহ গ্রামবাসীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাশের বন ও ঝিঁরিতে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন।”

ইউএনও আরও বলেন, “দুদিন বনে লুকিয়ে থাকার পর নিরাপদ মনে না হলে গ্রামবাসী শিশু-বৃদ্ধ সবাই গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রুমা বাজারে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে খরব পাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে পরিবারগুলোকে রুমা বাজারের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হল রুমে রাখা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে খাবার, কম্বল ও বিছানা-চাদরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

আজ রোববার বিকালে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বলেন, “আমার ইউনিয়নের হ্যাপিহিল, বাসত্লাং, আর্থা, মুননুয়াম ও মুয়ালপি পাড়া এখন জনমানবশূন্য। রোববার বিকাল ৩টার দিকে হ্যাপিহিল ও বাসত্লাং পাড়ার ২০টি পরিবারের ৪০ জনের মত নারী ও শিশু রুমা উপজেলা সদরে চলে এসেছে। তারা বম কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভয়ে এখনও কেউ কেউ বন-জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে পারে।”

এই অবস্থার মধ্যেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ), পাহাড়ে যারা বম পার্টি হিসেবে পরিচিত; তাদের এক সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে আজ রোববার পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের ভাষ্য, শনিবার দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি দল পাইন্দু ইউনিয়নের মুননুয়াম পাড়ার ক্যাম্পে যাওয়ার সময় কেএনএফ সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে সেনবাহিনীর সদস্যরা পাল্টা গুলি করলে কেএনএফের এক সদস্য নিহত হয়। আজ রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কেএনএফের ওই সদস্যের লাশ উদ্ধার করে। তবে নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) কাছ থেকে এ পরিস্থিতি নিয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি না এলেও নিরাপত্তা বাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন ও ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড থেকে পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে এসেছে।

সাদা কাগজে নাম ও স্বাক্ষরবিহীন ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেএনএফের অত্যাচার ও নির্যাতনে পাড়াগুলো থেকে বম ও মারমা বাসিন্দারা বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তারা রুমা উপজেলা সদরের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভবনে অবস্থান করছেন। আশ্রিত পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনী খাবার, শীতবস্ত্র, চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র প্রদান করছে।

পাড়া থেকে পালিয়ে আসা মংপ্রুচিং মারমা রোববার দুপরে মোবাইল ফোনে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েক দিন ধরে গোলাগুলি চলে। ভয়ে পালিয়ে এসেছি। পাড়া থেকে নারী-পুরুষ, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মিলে টানা তিন ঘণ্টা হেঁটে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদর পৌঁছেছি। ঘরের জিনিসপত্র ও গবাদিপশু ফেলে আসতে হয়েছে।”

“কিছু পরিবারের সদস্য হাঁটতে না পেরে রাস্তায় এবং জঙ্গলে থেকে গিয়েছিল। তারা রোববার সকালে এসে পৌঁছেছে।“

হ্লাথোয়াইচিং মারমার পরিবারও পালিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ আগে কেএনএফ সদস্যরা আমাদের পাড়ার এক যুবককে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে। এটা নিয়ে সবাই ভয়ে ছিলাম। এরপরে আর কাউকে বিরক্ত করেনি। তার মধ্যে গতকাল গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভবিষ্যতে খারাপ কিছু হওয়ার ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সবাই পালিয়ে এসেছি।”

“সবাই যে যার মত পালাচ্ছে। আমাদের মুয়ালপি পাড়ায় বম সম্প্রদায়ের আরও ৭০টি পরিবার ছিল। তারাও গতকাল চলে গেছে। তবে তারা কোথায় গেছে আমরা জানি না।”

পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে অক্টোবরে সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‌্যাব।

জঙ্গিদের পাহাড় যোগের এ তথ্য পাওয়ার ওই সময় থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় যৌথ অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব ও সেনা সদস্যরা। পরে এ অভিযান চালানো হয় থানচি উপজেলাতেও।

যৌথ বাহিনীর এ অভিযানে এ পর্যন্ত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১২ জন সদস্য এবং কেএনএফের পাহাড়ে যারা ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত তাদের ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ছবি

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে পারে ইন্টারনেটের ধীরগতি

ছবি

চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু

ছবি

ভাঙছে সীমান্ত নদী ইছামতীর বেড়িবাঁধ : এলাকায় আতঙ্ক

ঢাকাসহ ৪ জেলায় ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

ছবি

ক্রেতা উপস্থিতি কম, বেচা-বিক্রি ‘ঠাণ্ডা’

বেরোবির উপাচার্যের বাসভবনে আক্রমণ-আগুন, যেভাবে উদ্ধার হলেন অবরুদ্ধ ২০ জন

ঘটনার দশদিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ, উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ৭০ ভরি স্বর্ণের এক আনাও

সিলেটে সীমান্তকেন্দ্রিক চোরাচালান, ঘুরেফিরে তিনিই বিভিন্ন থানার ওসি

ছবি

অনেক পত্রিকায় খবর এলো, কিন্তু রুদ্র তো আর আসবে না

সহিংসতা-নাশকতার অভিযোগে ২০১ মামলা, গ্রেপ্তার ২২০৯

ছবি

কারফিউ শিথিলের সময় আরও ভিড়, যানজট

ছবি

রায়গঞ্জে অব্যবস্থাপনায় বন্ধের মুখে প্রাণিসম্পদ উপকেন্দ্রগুলো

এবার সারাদেশে পরীক্ষামূলক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু

ছবি

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ৩৩১ বন্দীর আত্মসমর্পণ

ছবি

ফুটেজ দেখে সেতু ভবনে আগুন-লুটপাটে জড়িতদের ধরা হচ্ছে : ডিবি

সোনারগাঁয়ে জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর না হলেও নাশকতার মামলায় আসামি ৮ শতাধিক, গ্রেফতার অর্ধশত

সেন্টমার্টিনে ট্রলার ডুবিতে ছাত্রলীগ নেতা নিখোঁজ, কোস্টগার্ডের চৌকিতে হামলা

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা মারধরের ঘটনায় আরও ১১ জন গ্রেফতার

ঢাকাসহ চার জেলায় আজ ও কাল ৭ ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল

ছবি

টাঙ্গাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত ২০

ছবি

আবারও বেপরোয়া সার্ভেয়ার বাকের ও হাসান সিন্ডিকেট ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না কক্সবাজার এলএ শাখায়

ছবি

রামু থেকে অস্ত্র ও গুলি নিয়ে সন্ত্রাসী আটক

ছবি

কক্সবাজারে ক্ষমতাসীনদের হামলায় ৫ সংবাদকর্মী আহত

ছবি

নিখোঁজের দুই দিন পর পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

টেকনাফ সমুদ্র উপকূলে পালিয়ে এলো ৫ রোহিঙ্গা

ছবি

টেকনাফগামী ট্রলারে মায়ানমারের গুলি

ছবি

কোটা আন্দোলন: রংপুরে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন

ছবি

শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্বে কুরুচিপূর্ন বক্তব্য দেওয়ায় গজারিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সভা

ছবি

নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের না’গঞ্জে মানববন্ধন

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের দাফন সম্পন্ন

ছবি

রামুতে মাদকসেবী ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

সারাদেশে স্কুল, কলেজ অনিদিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন : কক্সবাজারে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

ছবি

চীন বা ভারত নয়, নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবী

ছবি

মায়ানমারে চলছে বোমা হামলা সীমান্তে এতো কড়াকড়িতেও রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

tab

সারাদেশ

রুমায় পাহাড়ের গহীনে গোলাগুলি, আতঙ্কে জনমানবশূন্য বসতি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩

সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিরুদ্ধে অভিযানের মধ্যে বান্দরবানের রুমা উপজেলার কয়েকটি পাড়া থেকে মারমা ও বম জাতিগোষ্ঠীর লোকজন গহীন পাহাড়ের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে শহরে এসেছেন।

আজ রোববার বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের অন্তত ৫১টি মারমা ও ২০টি বম পরিবার রুমা বাজারের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হল রুমে এবং বম কমিউনিটি সেন্টারে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

মারমা জাতিগোষ্ঠীর নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এর মধ্যে শনিবার এসেছে ৪০টি মামলা পরিবার। আর রোববার আরও ১১টি মারমা এবং ২০টি বম পরিবার পাড়া ছেড়েছে। ভয়ের মধ্যে আর কিছু পরিবার জঙ্গলে পালিয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলী বলেন, “গত দুদিন ধরে রুমা পাইন্দু ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পাহাড়ে কেএনএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযান চালায়। অভিযানের কারণে কেএনএফ সদস্যরা হ্যাপিহিল, বাসত্লাং, মুনওয়াম, মুয়ালপি, সানাক্র, ক্যকতাইং পাড়ায় এসে আশ্রয় নেয়।“

“পাড়ার ভিতর থেকেই তারা সেনাবাহিনীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। সাধারণ নিরীহ গ্রামবাসীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাশের বন ও ঝিঁরিতে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন।”

ইউএনও আরও বলেন, “দুদিন বনে লুকিয়ে থাকার পর নিরাপদ মনে না হলে গ্রামবাসী শিশু-বৃদ্ধ সবাই গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রুমা বাজারে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে খরব পাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে পরিবারগুলোকে রুমা বাজারের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হল রুমে রাখা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে খাবার, কম্বল ও বিছানা-চাদরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

আজ রোববার বিকালে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বলেন, “আমার ইউনিয়নের হ্যাপিহিল, বাসত্লাং, আর্থা, মুননুয়াম ও মুয়ালপি পাড়া এখন জনমানবশূন্য। রোববার বিকাল ৩টার দিকে হ্যাপিহিল ও বাসত্লাং পাড়ার ২০টি পরিবারের ৪০ জনের মত নারী ও শিশু রুমা উপজেলা সদরে চলে এসেছে। তারা বম কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভয়ে এখনও কেউ কেউ বন-জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে পারে।”

এই অবস্থার মধ্যেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ), পাহাড়ে যারা বম পার্টি হিসেবে পরিচিত; তাদের এক সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে আজ রোববার পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের ভাষ্য, শনিবার দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি দল পাইন্দু ইউনিয়নের মুননুয়াম পাড়ার ক্যাম্পে যাওয়ার সময় কেএনএফ সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে সেনবাহিনীর সদস্যরা পাল্টা গুলি করলে কেএনএফের এক সদস্য নিহত হয়। আজ রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কেএনএফের ওই সদস্যের লাশ উদ্ধার করে। তবে নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) কাছ থেকে এ পরিস্থিতি নিয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি না এলেও নিরাপত্তা বাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন ও ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড থেকে পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে এসেছে।

সাদা কাগজে নাম ও স্বাক্ষরবিহীন ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেএনএফের অত্যাচার ও নির্যাতনে পাড়াগুলো থেকে বম ও মারমা বাসিন্দারা বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তারা রুমা উপজেলা সদরের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভবনে অবস্থান করছেন। আশ্রিত পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনী খাবার, শীতবস্ত্র, চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র প্রদান করছে।

পাড়া থেকে পালিয়ে আসা মংপ্রুচিং মারমা রোববার দুপরে মোবাইল ফোনে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েক দিন ধরে গোলাগুলি চলে। ভয়ে পালিয়ে এসেছি। পাড়া থেকে নারী-পুরুষ, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মিলে টানা তিন ঘণ্টা হেঁটে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদর পৌঁছেছি। ঘরের জিনিসপত্র ও গবাদিপশু ফেলে আসতে হয়েছে।”

“কিছু পরিবারের সদস্য হাঁটতে না পেরে রাস্তায় এবং জঙ্গলে থেকে গিয়েছিল। তারা রোববার সকালে এসে পৌঁছেছে।“

হ্লাথোয়াইচিং মারমার পরিবারও পালিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ আগে কেএনএফ সদস্যরা আমাদের পাড়ার এক যুবককে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে। এটা নিয়ে সবাই ভয়ে ছিলাম। এরপরে আর কাউকে বিরক্ত করেনি। তার মধ্যে গতকাল গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভবিষ্যতে খারাপ কিছু হওয়ার ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সবাই পালিয়ে এসেছি।”

“সবাই যে যার মত পালাচ্ছে। আমাদের মুয়ালপি পাড়ায় বম সম্প্রদায়ের আরও ৭০টি পরিবার ছিল। তারাও গতকাল চলে গেছে। তবে তারা কোথায় গেছে আমরা জানি না।”

পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে অক্টোবরে সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‌্যাব।

জঙ্গিদের পাহাড় যোগের এ তথ্য পাওয়ার ওই সময় থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় যৌথ অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব ও সেনা সদস্যরা। পরে এ অভিযান চালানো হয় থানচি উপজেলাতেও।

যৌথ বাহিনীর এ অভিযানে এ পর্যন্ত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১২ জন সদস্য এবং কেএনএফের পাহাড়ে যারা ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত তাদের ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

back to top