আগামী এক বছরের জন্য বিশ্ব ইজতেমার মাঠের দায়িত্ব পেয়েছে তাবলীগ জামায়াতের একাংশ জুবায়ের পন্থীরা। অপর দিকে এ সিদ্ধান্তকে একতরফা ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অপর অংশ মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশ টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ বুঝিয়ে দেয়ার পর এ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
সাদ অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি ও একতরফা সিদ্ধান্ত। আমাদের সঙ্গে নাটক করে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা খুবই ব্যথিত। আমাদের মাঠের দায়িত্ব না দিয়ে যদি প্রশাসনের দায়িত্বে থাকত, তাতেও আমাদের দুঃখ ছিল না। কিন্তু সেটা না করে প্রশাসন আমাদের ঠকিয়েছে।’
আগামী এক বছর ইজতেমা মাঠের দেখভালের দায়িত্ব পেতে মাওলানা সাদ কান্ধলভি ও মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের মধ্যে চলছিল দৌড়ঝাঁপ। বিষয়টি নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দুই পক্ষই ছোটাছুটি করেছে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে। হয়েছে একাধিক বৈঠক, আলোচনা। শেষ পর্যন্ত অঘোষিত এ প্রতিযোগিতায় জুবায়েরপন্থীদের কাছে হেরে গেলেন সাদপন্থীরা। বৈঠক, আলোচনা, আশ্বাসের মধ্যেই জুবায়েরের অনুসারীরা পেয়ে গেলেন মাঠের দেখভালের দায়িত্ব। সে হিসাবে এবার মাঠের শামিয়ানা খোলা বা মাঠ গোছানোর কাজও করবেন তাঁরা। অন্যদিকে মাঠ বুঝে না পেয়ে এবারও হতাশায় ভুগছেন সাদের অনুসারীরা।
গত ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধের কারণে এবারও ইজতেমা হয়েছে আলাদাভাবে। প্রথম পর্ব বা মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি। এরপর ১৭ জানুয়ারি প্রশাসনের কাছ থেকে মাঠ বুঝে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি ইজতেমা পালন করেন সাদের অনুসারীরা। ইজতেমা শেষে ২৫ জানুয়ারি তাঁরাও মাঠ বুঝিয়ে দেন জেলা প্রশাসকের কাছে। এর পর থেকে মাঠে বসানো হয় পুলিশি পাহারা।
তাবলিগ জামাত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ইজতেমা শেষে মাঠের দায়িত্ব পেতে দুই পক্ষই নানাভাবে চেষ্টা শুরু করে। দুই পক্ষের লোকজনই ছোটেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে। বিশেষ করে গত শুক্রবার রাতে দুই পক্ষের মুরব্বিদের নিয়ে আলাদভাবে বৈঠক করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। কিন্তু সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তীকালে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দুই পক্ষের বসার কথা থাকলেও কোনো কারণে তা হয়নি। পরবর্তীকালে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার দায়িত্ব দেওয়া হয় গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারকে। এর মধ্যেই হঠাৎ আজ দুপুরে জুবায়ের অনুসারীদের মাঠ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটে।
মাঠ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাহবুব উজ জামান, সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান, টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম। আর জুবায়ের অনুসারীদের পক্ষে মাঠ বুঝে নেন শীর্ষ মুরব্বি মাহফুজ হান্নানসহ নেতৃত্ব পর্যায়ের আরও কয়েকজন।
এ বিষয়ে জানতে মাহফুজ হান্নানের মুঠোফোনে কল করে যোগাযোগ করারা চেষ্টা করে সাংবাদিকরা। কিন্তু তার মোবাইল সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে জানতে চাইলে টঙ্গী থানার ওসি শাহ বলেন, ‘ইজতেমা শেষে এক সপ্তাহ ধরে আমরা মাঠের পাহারায় ছিলাম। পরবর্তীকালে সরকারের সিদ্ধান্ত ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণভাবে জুবায়ের অনুসারীদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দিয়েছি। এখন মাঠের দায়িত্ব তাঁদের।’
এদিকে জুবায়ের অনুসারীদের মাঠ হস্তান্তর করায় ব্যাপক হতাশা প্রকাশ করেছেন মাওলানা সাদ অনুসারীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার বা পুলিশের এমন সিদ্ধান্ত একতরফা বা পক্ষপাতদুষ্ট। ২০১৮ সালে সংঘর্ষের মাধ্যমে দুই পক্ষ আলাদা হওয়ার পর থেকেই ইজতেমা মাঠের দায়িত্ব পালন করছেন জুবায়েরের অনুসারীরা। এবার সাদপন্থীরা মাঠের দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধি—সবার কাছেই ছুটেছেন। তাঁদের থেকে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া হলো জুবায়ের অনুসারীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠের কে থাকবেন বা দায়িত্ব পাবেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে। তাঁদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুবায়েরপন্থীরা মাঠে থাকার কথা। তাই তাঁরাই মাঠ বুঝে নিয়েছেন।’
মাঠের বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে পুনরায় বসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু সিদ্ধান্ত আগে থেকে বা ওপরের মহল থেকে হয়েছে, তাই আর বসার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’
মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩
আগামী এক বছরের জন্য বিশ্ব ইজতেমার মাঠের দায়িত্ব পেয়েছে তাবলীগ জামায়াতের একাংশ জুবায়ের পন্থীরা। অপর দিকে এ সিদ্ধান্তকে একতরফা ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অপর অংশ মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশ টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ বুঝিয়ে দেয়ার পর এ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
সাদ অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি ও একতরফা সিদ্ধান্ত। আমাদের সঙ্গে নাটক করে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা খুবই ব্যথিত। আমাদের মাঠের দায়িত্ব না দিয়ে যদি প্রশাসনের দায়িত্বে থাকত, তাতেও আমাদের দুঃখ ছিল না। কিন্তু সেটা না করে প্রশাসন আমাদের ঠকিয়েছে।’
আগামী এক বছর ইজতেমা মাঠের দেখভালের দায়িত্ব পেতে মাওলানা সাদ কান্ধলভি ও মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের মধ্যে চলছিল দৌড়ঝাঁপ। বিষয়টি নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দুই পক্ষই ছোটাছুটি করেছে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে। হয়েছে একাধিক বৈঠক, আলোচনা। শেষ পর্যন্ত অঘোষিত এ প্রতিযোগিতায় জুবায়েরপন্থীদের কাছে হেরে গেলেন সাদপন্থীরা। বৈঠক, আলোচনা, আশ্বাসের মধ্যেই জুবায়েরের অনুসারীরা পেয়ে গেলেন মাঠের দেখভালের দায়িত্ব। সে হিসাবে এবার মাঠের শামিয়ানা খোলা বা মাঠ গোছানোর কাজও করবেন তাঁরা। অন্যদিকে মাঠ বুঝে না পেয়ে এবারও হতাশায় ভুগছেন সাদের অনুসারীরা।
গত ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধের কারণে এবারও ইজতেমা হয়েছে আলাদাভাবে। প্রথম পর্ব বা মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি। এরপর ১৭ জানুয়ারি প্রশাসনের কাছ থেকে মাঠ বুঝে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি ইজতেমা পালন করেন সাদের অনুসারীরা। ইজতেমা শেষে ২৫ জানুয়ারি তাঁরাও মাঠ বুঝিয়ে দেন জেলা প্রশাসকের কাছে। এর পর থেকে মাঠে বসানো হয় পুলিশি পাহারা।
তাবলিগ জামাত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ইজতেমা শেষে মাঠের দায়িত্ব পেতে দুই পক্ষই নানাভাবে চেষ্টা শুরু করে। দুই পক্ষের লোকজনই ছোটেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে। বিশেষ করে গত শুক্রবার রাতে দুই পক্ষের মুরব্বিদের নিয়ে আলাদভাবে বৈঠক করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। কিন্তু সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তীকালে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দুই পক্ষের বসার কথা থাকলেও কোনো কারণে তা হয়নি। পরবর্তীকালে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার দায়িত্ব দেওয়া হয় গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারকে। এর মধ্যেই হঠাৎ আজ দুপুরে জুবায়ের অনুসারীদের মাঠ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটে।
মাঠ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাহবুব উজ জামান, সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান, টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম। আর জুবায়ের অনুসারীদের পক্ষে মাঠ বুঝে নেন শীর্ষ মুরব্বি মাহফুজ হান্নানসহ নেতৃত্ব পর্যায়ের আরও কয়েকজন।
এ বিষয়ে জানতে মাহফুজ হান্নানের মুঠোফোনে কল করে যোগাযোগ করারা চেষ্টা করে সাংবাদিকরা। কিন্তু তার মোবাইল সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে জানতে চাইলে টঙ্গী থানার ওসি শাহ বলেন, ‘ইজতেমা শেষে এক সপ্তাহ ধরে আমরা মাঠের পাহারায় ছিলাম। পরবর্তীকালে সরকারের সিদ্ধান্ত ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণভাবে জুবায়ের অনুসারীদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দিয়েছি। এখন মাঠের দায়িত্ব তাঁদের।’
এদিকে জুবায়ের অনুসারীদের মাঠ হস্তান্তর করায় ব্যাপক হতাশা প্রকাশ করেছেন মাওলানা সাদ অনুসারীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার বা পুলিশের এমন সিদ্ধান্ত একতরফা বা পক্ষপাতদুষ্ট। ২০১৮ সালে সংঘর্ষের মাধ্যমে দুই পক্ষ আলাদা হওয়ার পর থেকেই ইজতেমা মাঠের দায়িত্ব পালন করছেন জুবায়েরের অনুসারীরা। এবার সাদপন্থীরা মাঠের দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধি—সবার কাছেই ছুটেছেন। তাঁদের থেকে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া হলো জুবায়ের অনুসারীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠের কে থাকবেন বা দায়িত্ব পাবেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে। তাঁদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুবায়েরপন্থীরা মাঠে থাকার কথা। তাই তাঁরাই মাঠ বুঝে নিয়েছেন।’
মাঠের বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে পুনরায় বসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু সিদ্ধান্ত আগে থেকে বা ওপরের মহল থেকে হয়েছে, তাই আর বসার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’