alt

সারাদেশ

পাহাড়ের অশান্তি এখন সারাদেশের অশান্তি : মেনন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

পাহাড়ের অশান্তি এখন সারাদেশের অশান্তিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, পাহাড়ি-বাঙালি মিলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চত্বরে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’র আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংহতি সমাবেশে একথা বলেন তিনি।

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মিলিত বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলুন’ স্লোগানে এই সমাবেশ হয়।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোট শরিক দলের নেতা মেনন বলেন, “দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই শান্তি প্রক্রিয়া আমরা শুরু করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি উদ্বিগ্ন। এই পাহাড় এখন অশান্ত।

“শুধু তা নয় পাহাড়ের অশান্তিকে ঘিরে এই চট্টগ্রামে ও সারাদেশে অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, গত কয়েকমাস ধরে ওই পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে জঙ্গি মৌলবাদীরা সেখানে সশস্ত্র ট্রেনিং নিচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য। তাদের টার্গেট ছিল কাশিমপুর জেল। কারণ সেখানে জঙ্গিরা রয়েছে।”

সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, “পাহাড়ের অশান্তি এখন সারাদেশের অশান্তি। আশা ছিল এই চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদাহরণ সৃষ্টি করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা হয়নি। বহুবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি।

“পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন প্রণয়ন করতে যতবার পার্লামেন্ট থেকে আমরা বক্তব্য দিয়েছি ততবার আমলাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা হাজির করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল ভূমি কমিশন আইন করতে। ৩০ হাজার আবেদন পড়েছে ভূমি কমিশনে, একটিও নিষ্পত্তি করা হয়নি।”

মেনন বলেন, “জিয়াউর রহমান পার্বত্য সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা নেয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তারা সেদিন সাধারণ নিরীহ মানুষকে এনে অভিবাসী বানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসিয়ে দিয়েছিল। এ ঘটনার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের অভ্যন্তরণে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

“শান্তি চুক্তিতে তাদের পুনর্বাসনের কথা ছিল। তা দূরে থাক, আজ এ বিষয় নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়ে কথা বলতে পারবেন না। আমরা যখন গেছি, হরতাল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। আজকে পাহাড়ে আমরা দেখি আজ অলিখিত সামরিক শাসন। সেখানে শুধু সেনাবাহিনী নয়, এপিবিএন, নতুনভাবে পুলিশের ক্যাম্প করা হচ্ছে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, “একদিন খালেদা জিয়া বলেছিল, ‘শান্তি চুক্তি করে দেশের এক-দশমাংশ শেখ হাসিনা ভারতের হাতে তুলে দিবে’। ৩০ বছর হয়েছে, তা হয়নি। আজ যদি সরকারও একই ধরনের বিচ্ছিন্নতার কথা বলেন, তাহলে পাহাড়ে শান্তি কখনও আসবে না।

“শুধু পাহাড়ের মানুষ নয় মূল স্রোতের সব মানুষকে এ দাবিতে এক হতে হবে। পাহাড়ি-বাঙালি মিলে চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করব। এটা আমাদের দায়িত্ব।”

সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, “যে সরকার এই চুক্তি করেছে সে সরকার আজ ১৪ বছর ক্ষমতায়। তারা বাস্তবায়ন করছে না কেন? তাহলে সরকারের মধ্যে অন্য কোনো সরকার আছে কি না? তারা কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও বড়? না হলে কেন চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারছে না।

“এটি একটি জিওপলিটিক্সের এলাকা। রাঙামাটির সাথে ভারতের যেমন সীমানা আছে, মিয়ানমারেরও আছে। আবার ওদিকে রোহিঙ্গা এসেছে। যে কোনো সময় আগুন জ্বলতে পারে। এখানে অশান্তি রাখলে নানা বিদেশি শক্তি এদের নিয়ে তো খেলবে। বাংলাদেশে শান্তি আসবে না। নানা রকম যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার আশঙ্কা আছে। এটি সরকারকে ভাবতে হবে।”

সিপিবি সভাপতি বলেন, “কোয়াডের সদস্য করতে বাংলাদেশকে আমেরিকা বারবার চাপ দিচ্ছে। আমেরিকা তো নানাভাবে খেলতে পারে। সরকারের মধ্যে যে সরকার আছে, ওখানেও আমেরিকার সোর্স থাকতে পারে। যারা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে না।

“এই ভূরাজনৈতিক খেলা থেকে বের হতে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবিলম্বে চুক্তি বাস্তবায়ন করা দরকার।”

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, “মূলধারার জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ, সমর্থন, সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সহজে হবে না। দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো এ প্রশ্নে নীরব।

“পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে নতুন জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে। পাহাড়ে শুধু পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের বিষয় ছিল। অথচ সেখানে এখন জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী, যাদের বিভিন্ন এজেন্ডা আছে, তাদের উপস্থিতিও দেখছি।”

আবুল মোমেন বলেন, “চুক্তিটা হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও ভূমি অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এগুলো সমাধান না করে, শুধু লোক দেখানো কয়েকটি পদে তাদের বসিয়ে দিলে সমাধান হবে না।

“নতুন করে আবার বসা দরকার। সরকার এবং পার্বত্য জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং বাম প্রগতিশীল শক্তিকে নিয়ে। নতুন করে কথা বলে সমস্যার সমাধানের পথ সরকারকে বের করতে হবে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য অধ্যাপক রণজিৎ দে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য সৌখিন চাকমা, জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্মসমন্বয়কারী জাকির হোসেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঐক্য ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন রশিদ ভুঁইয়া, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুল দাশগুপ্ত।

ছবি

সাবমেরিন কেবল বিচ্ছিন্ন, ধীরগতি হতে পারে ইন্টারনেটে

ছবি

বনের আগুন নেভালেন জেলা প্রশাসক, জানে না বনের কর্তারা

ছবি

বিশেষজ্ঞ প্যানেল ও বারি’র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিনিময় কর্মশালা

ছবি

৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচ

ছবি

টাঙ্গাইলে সংঘ‌র্ষ থামাতে গিয়ে হামলার শিকার এসআই, ১৬ জন আটক

ছবি

কক্সবাজারে জলকেলি উৎসবের সমাপনীতে আলোকিত জীবনের প্রত্যাশা

ছবি

মায়ানমারের বিজিপির আরও ২৪ সদস্য বাংলাদেশে

ছবি

রাজশাহীতে মোটরসাইকেলে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ৩

ছবি

ইউএসএআইডি এবং সিমিট প্রতিনিধি দলের বারি পরিদর্শন

ছবি

পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ

ছবি

‘আনন্দে’ শুরুর পর সড়কের ঈদযাত্রা কেন ‘বিষাদে’

ছবি

ঘটনা চাপা দিতে ১৫০ বস্তা সিমেন্ট সরিয়ে ফেলার অভিযোগ

মীরসরাইয়ে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, ঘরের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে

ছবি

মাধবপুরে বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

ছবি

টঙ্গীতে আগুনে পুড়ল ১২টি খাদ্য গুদাম

ছবি

জলকেলি উৎসবে মুখরিত কক্সবাজরের রাখাইন পল্লী

শেরপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ উদ্বোধন

কেশবপুরে সকাল-সন্ধ্যা বাজারের দখল নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি উচ্ছেদ আতঙ্কে অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

ছবি

ভালুকায় বোরো ধানে চিটা কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

ভালুকায় বোরো ধানে চিটা কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে সরকারি রাস্তার ১২০টি গাছ কর্তনের অভিযোগ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে

পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করেন পুত্রবধূ

ছবি

মির্জাগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

ছবি

নড়াইলের শ্রীনগর গ্রামে ভ্যানচালককে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা

ছবি

প্রেমিকার ওপর অভিমান প্রেমিকের আত্মহত্যা

ছবি

শ্যামনগর পদ্মপুকুরের প্রধান সড়কের একাংশ যেন বালুর স্তুপে পরিণত

আমার চেয়ে খারাপ লোক এ জেলায় নাই : তাহেরপুত্র বিপ্লব

ছবি

কক্সবাজারে রিসোর্টে পযটক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ছবি

ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা

ছবি

সুনামগঞ্জে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

ছবি

টোলপ্লাজায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ১৪

ছবি

গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, বেশিরভাগ অঞ্চলে বইছে তাপপ্রবাহ

কোম্পানীগঞ্জে পর্যটকের সঙ্গে এএসপির মারামারি

ছবি

গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ গোপালগঞ্জে গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

শার্শায় সাংবাদিকের উপর হামলা

tab

সারাদেশ

পাহাড়ের অশান্তি এখন সারাদেশের অশান্তি : মেনন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

পাহাড়ের অশান্তি এখন সারাদেশের অশান্তিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, পাহাড়ি-বাঙালি মিলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চত্বরে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’র আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংহতি সমাবেশে একথা বলেন তিনি।

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মিলিত বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলুন’ স্লোগানে এই সমাবেশ হয়।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোট শরিক দলের নেতা মেনন বলেন, “দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই শান্তি প্রক্রিয়া আমরা শুরু করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি উদ্বিগ্ন। এই পাহাড় এখন অশান্ত।

“শুধু তা নয় পাহাড়ের অশান্তিকে ঘিরে এই চট্টগ্রামে ও সারাদেশে অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, গত কয়েকমাস ধরে ওই পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে জঙ্গি মৌলবাদীরা সেখানে সশস্ত্র ট্রেনিং নিচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য। তাদের টার্গেট ছিল কাশিমপুর জেল। কারণ সেখানে জঙ্গিরা রয়েছে।”

সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, “পাহাড়ের অশান্তি এখন সারাদেশের অশান্তি। আশা ছিল এই চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদাহরণ সৃষ্টি করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা হয়নি। বহুবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি।

“পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন প্রণয়ন করতে যতবার পার্লামেন্ট থেকে আমরা বক্তব্য দিয়েছি ততবার আমলাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা হাজির করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল ভূমি কমিশন আইন করতে। ৩০ হাজার আবেদন পড়েছে ভূমি কমিশনে, একটিও নিষ্পত্তি করা হয়নি।”

মেনন বলেন, “জিয়াউর রহমান পার্বত্য সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা নেয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তারা সেদিন সাধারণ নিরীহ মানুষকে এনে অভিবাসী বানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসিয়ে দিয়েছিল। এ ঘটনার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের অভ্যন্তরণে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

“শান্তি চুক্তিতে তাদের পুনর্বাসনের কথা ছিল। তা দূরে থাক, আজ এ বিষয় নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়ে কথা বলতে পারবেন না। আমরা যখন গেছি, হরতাল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। আজকে পাহাড়ে আমরা দেখি আজ অলিখিত সামরিক শাসন। সেখানে শুধু সেনাবাহিনী নয়, এপিবিএন, নতুনভাবে পুলিশের ক্যাম্প করা হচ্ছে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, “একদিন খালেদা জিয়া বলেছিল, ‘শান্তি চুক্তি করে দেশের এক-দশমাংশ শেখ হাসিনা ভারতের হাতে তুলে দিবে’। ৩০ বছর হয়েছে, তা হয়নি। আজ যদি সরকারও একই ধরনের বিচ্ছিন্নতার কথা বলেন, তাহলে পাহাড়ে শান্তি কখনও আসবে না।

“শুধু পাহাড়ের মানুষ নয় মূল স্রোতের সব মানুষকে এ দাবিতে এক হতে হবে। পাহাড়ি-বাঙালি মিলে চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করব। এটা আমাদের দায়িত্ব।”

সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, “যে সরকার এই চুক্তি করেছে সে সরকার আজ ১৪ বছর ক্ষমতায়। তারা বাস্তবায়ন করছে না কেন? তাহলে সরকারের মধ্যে অন্য কোনো সরকার আছে কি না? তারা কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও বড়? না হলে কেন চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারছে না।

“এটি একটি জিওপলিটিক্সের এলাকা। রাঙামাটির সাথে ভারতের যেমন সীমানা আছে, মিয়ানমারেরও আছে। আবার ওদিকে রোহিঙ্গা এসেছে। যে কোনো সময় আগুন জ্বলতে পারে। এখানে অশান্তি রাখলে নানা বিদেশি শক্তি এদের নিয়ে তো খেলবে। বাংলাদেশে শান্তি আসবে না। নানা রকম যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার আশঙ্কা আছে। এটি সরকারকে ভাবতে হবে।”

সিপিবি সভাপতি বলেন, “কোয়াডের সদস্য করতে বাংলাদেশকে আমেরিকা বারবার চাপ দিচ্ছে। আমেরিকা তো নানাভাবে খেলতে পারে। সরকারের মধ্যে যে সরকার আছে, ওখানেও আমেরিকার সোর্স থাকতে পারে। যারা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে না।

“এই ভূরাজনৈতিক খেলা থেকে বের হতে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবিলম্বে চুক্তি বাস্তবায়ন করা দরকার।”

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, “মূলধারার জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ, সমর্থন, সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সহজে হবে না। দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো এ প্রশ্নে নীরব।

“পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে নতুন জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে। পাহাড়ে শুধু পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের বিষয় ছিল। অথচ সেখানে এখন জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী, যাদের বিভিন্ন এজেন্ডা আছে, তাদের উপস্থিতিও দেখছি।”

আবুল মোমেন বলেন, “চুক্তিটা হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও ভূমি অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এগুলো সমাধান না করে, শুধু লোক দেখানো কয়েকটি পদে তাদের বসিয়ে দিলে সমাধান হবে না।

“নতুন করে আবার বসা দরকার। সরকার এবং পার্বত্য জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং বাম প্রগতিশীল শক্তিকে নিয়ে। নতুন করে কথা বলে সমস্যার সমাধানের পথ সরকারকে বের করতে হবে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য অধ্যাপক রণজিৎ দে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য সৌখিন চাকমা, জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্মসমন্বয়কারী জাকির হোসেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঐক্য ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন রশিদ ভুঁইয়া, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুল দাশগুপ্ত।

back to top