ফুলছড়ির উদাখালী আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির গঠনে অবৈধভাবে ভোটার তালিকা প্রণয়ন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে অবজ্ঞা ও কর্মস্থলে অনুপস্থিত দপ্তরির বেতন উত্তোলনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্মস্থলে আসেননি। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কর্মচারী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেই দপ্তরি অবিনাশ চন্দ্রের। সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, স্যার বিশেষ কাজে বাইরে আছেন। দপ্তরির অনুপস্থিতির বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন শিক্ষক বলেন, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও দপ্তরির নামে প্রতি মাসে বেতন উত্তোলন হচ্ছে। জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও বিদ্যালয়ের দপ্তরির অনুপস্থিতির বিষয়ে কয়েকজন অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্দেশে ৩০ মার্চ ২০২২ তারিখে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত হয়। এরপর গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বিষয়টি আটকে যায়। তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপালের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুর। সে অনুযায়ী আগামী ১২ মার্চ ২০২৩ তারিখে আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের শেষ দিন ছিল ২২ ডিসেম্বর ২০২২। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালাকে অমান্য করে মনগড়াভাবে গত ১০ জানুয়ারি অর্থাৎ ৬২ দিন আগে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নিমিত্তে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন, যা নিয়মবহির্ভূত। প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল পরিকল্পিতভাবে কিছু অভিভাবককে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার উদ্দেশ্যে এমনটা করেছেন বলে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক মনে করেন।
উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে আবারও ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলে আমি ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারতাম। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে মনগড়াভাবে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। আমার মেয়ে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় ভোটার তালিকা হওয়ার কথা কিন্তু আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল কালক্ষেপণ করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর অভিভাবক ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারবেন না। প্রধান শিক্ষকের চাচাতো ভাই বিদ্যালয়ের দপ্তরি অবিনাশ চন্দ্র দীর্ঘদিন থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তার নামে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে। দপ্তরীর কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে ইতোমধ্যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের নামে ভুয়া জমিদান করে দাতাসদস্য অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের ডোনেশনের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ম্যানেজিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। অথচ প্রতিষ্ঠাতার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় রয়েছে। প্রধান শিক্ষক আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ও আমার সহধর্মিনী মমেনা বেগমের নাম অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এমপিও হতে কর্তন করেছিলেন। ভোটার তালিকা প্রণয়নে সমস্যা থাকার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছেন। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনার কাগজ আমাকে দেখালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’ তবে দপ্তরির অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ফুলছড়ির উদাখালী আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়
বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির গঠনে অবৈধভাবে ভোটার তালিকা প্রণয়ন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে অবজ্ঞা ও কর্মস্থলে অনুপস্থিত দপ্তরির বেতন উত্তোলনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্মস্থলে আসেননি। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কর্মচারী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেই দপ্তরি অবিনাশ চন্দ্রের। সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, স্যার বিশেষ কাজে বাইরে আছেন। দপ্তরির অনুপস্থিতির বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন শিক্ষক বলেন, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও দপ্তরির নামে প্রতি মাসে বেতন উত্তোলন হচ্ছে। জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও বিদ্যালয়ের দপ্তরির অনুপস্থিতির বিষয়ে কয়েকজন অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্দেশে ৩০ মার্চ ২০২২ তারিখে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত হয়। এরপর গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বিষয়টি আটকে যায়। তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপালের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুর। সে অনুযায়ী আগামী ১২ মার্চ ২০২৩ তারিখে আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের শেষ দিন ছিল ২২ ডিসেম্বর ২০২২। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালাকে অমান্য করে মনগড়াভাবে গত ১০ জানুয়ারি অর্থাৎ ৬২ দিন আগে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নিমিত্তে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন, যা নিয়মবহির্ভূত। প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল পরিকল্পিতভাবে কিছু অভিভাবককে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার উদ্দেশ্যে এমনটা করেছেন বলে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক মনে করেন।
উদাখালী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে আবারও ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলে আমি ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারতাম। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে মনগড়াভাবে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। আমার মেয়ে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় ভোটার তালিকা হওয়ার কথা কিন্তু আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল কালক্ষেপণ করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর অভিভাবক ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারবেন না। প্রধান শিক্ষকের চাচাতো ভাই বিদ্যালয়ের দপ্তরি অবিনাশ চন্দ্র দীর্ঘদিন থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তার নামে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে। দপ্তরীর কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে ইতোমধ্যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের নামে ভুয়া জমিদান করে দাতাসদস্য অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের ডোনেশনের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ম্যানেজিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। অথচ প্রতিষ্ঠাতার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় রয়েছে। প্রধান শিক্ষক আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ও আমার সহধর্মিনী মমেনা বেগমের নাম অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এমপিও হতে কর্তন করেছিলেন। ভোটার তালিকা প্রণয়নে সমস্যা থাকার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছেন। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনার কাগজ আমাকে দেখালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’ তবে দপ্তরির অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।