রংপুরে খাদ্য বিভাগের নিন্মমানের চাল কেনা নিয়ে তোলপাড়
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে নিন্মমানের চাল ক্রয় এবং পুরান বস্তা ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই শান্তাহার সিএসডিতে পাঠানো শঠিবাড়ি খাদ্য গুদামের চালের ট্রাক নিন্মমানের চাল হওয়ায় ফেরত দেবার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সেই সাথে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের কঠোর নির্দেশনা উপেক্ষা করে কৃষকদের কাছ থেকে এক ছটাক ধানও ক্রয় করেননি ওই কর্মকর্তা। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান নিয়ে গেলেও বিভিন্ন অজুহাতে ধান নেননি বলে অভিযোগ ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
নিন্মমানের চাল কেনা ও সান্তাহারে খাদ্য বিভাগের সিএসডিতে পাঠানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা।
এ ছাড়াও তার আগের কর্মস্থল পীরগাছা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা থাকাকালে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান না ক্রয় করে মিলারদের কাছ থেকে চাল কিনে ভুয়া কৃষকের নাম দিয়ে চাল কেনা দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে চলতি মৌসুমে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার অধিন শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদামে মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা ছিলো ২ হাজার ৭শ ৪০ মেট্রিক টন। আর কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ হাজার ২৭ মেট্রিক টন ধান। কিন্তু গত তিন মাসে মিলারদের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন ৪ হাজার ৪শ ৮৫ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা দেখানো হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের কাছ এক ছটাক ধানও কেনা হয়নি।
জানা গেছে শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকলিমা বেগম শান্তাহার সিএসডিতে পাঠানো ৫ ট্রাক চাল নিন্মমানের হওয়ায় তা গ্রহন করতে অস্বিকার করে সিএসডি কর্তপক্ষ। শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার অনেক চাপাচাপির পরেও সিএসডি কর্তৃপক্ষ চাল নিতে অস্বিকৃতি জানান। ফলে পাঠানো চালসহ ট্রাক ফিরিয়ে আনতে হয়।
এ ব্যাপারে সান্তাহার সিএসডির ম্যানেজার হারুনর রশিদের সাথে তার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন শঠিবাড়ি খাদ্য গুদাম থেকে চালে ময়েশ্চারের পরিমান বেশি থাকায় রিসিভ না করে ফেরত দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মিঠাপুকুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অমুল্য কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন চালের বস্তা গুলো নতুন না দিয়ে পুরাতন দেবার বিষয়টি তাকে দেখতে হবে। তবে শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো একটি চালের ট্রাক ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জেনেছেন। তার ভাষায় চাল নিন্মমানের ছিলোনা, ময়েশ্চারের পরিমান বেশি ছিলো।
অপরদিকে রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও স্বীকার করেন শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো চালে ময়েশ্চারের পরিমান বেশী থাকায় সান্তাহার সিএসডি এক ট্রাক চাল গ্রহন না করেন ফেরত দিয়েছে। অপরদিকে শঠিবাড়ি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা পীরগাছা খাদ্য গুদামে কর্মরত থাকার সময় কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে মিলারদের চাল কিনে ভুয়া কৃষকের নাম দিয়ে টাকা উত্তোলন করে মিলারদের চাল কেনার টাকা পরিশোধের বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান। তিনি অল্প কিছুদিন হলো এসেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। এবার কৃষকদের কাছে থেকে শঠিবাড়ি খাদ্য গুদামে এক ছটাক ধান কেনা হয়নি বলে স্বীকার করে জানান, কৃষকরা ধান বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ধান কেনা হয়নি বলে শুনেছেন।
এদিকে সংবাদ প্রতিনিধি চাল ক্রয়ে অনিয়মের বিষয় বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার বিষয়টি জানতে পারায় শঠিবাড়ি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগম নিজেই ফোন করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের উদ্ধৃতি দিয়ে এ প্রতিনিধিকে জানান, খাদ্য বিভাগের কিছু কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে লেগেছে। জেলা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তারা সান্তাহার সিএসডি কর্তৃক নিন্মমানের চাল বলে প্রমানিত হওয়ায় চালের ট্রাক ফেরত দিয়েছে এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বিকার করে বলেন তিনি নিন্মমানের কোন চাল ক্রয় করেননি বলে দাবি করেন।
রংপুরে খাদ্য বিভাগের নিন্মমানের চাল কেনা নিয়ে তোলপাড়
সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে নিন্মমানের চাল ক্রয় এবং পুরান বস্তা ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই শান্তাহার সিএসডিতে পাঠানো শঠিবাড়ি খাদ্য গুদামের চালের ট্রাক নিন্মমানের চাল হওয়ায় ফেরত দেবার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সেই সাথে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের কঠোর নির্দেশনা উপেক্ষা করে কৃষকদের কাছ থেকে এক ছটাক ধানও ক্রয় করেননি ওই কর্মকর্তা। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান নিয়ে গেলেও বিভিন্ন অজুহাতে ধান নেননি বলে অভিযোগ ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
নিন্মমানের চাল কেনা ও সান্তাহারে খাদ্য বিভাগের সিএসডিতে পাঠানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা।
এ ছাড়াও তার আগের কর্মস্থল পীরগাছা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা থাকাকালে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান না ক্রয় করে মিলারদের কাছ থেকে চাল কিনে ভুয়া কৃষকের নাম দিয়ে চাল কেনা দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে চলতি মৌসুমে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার অধিন শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদামে মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা ছিলো ২ হাজার ৭শ ৪০ মেট্রিক টন। আর কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ হাজার ২৭ মেট্রিক টন ধান। কিন্তু গত তিন মাসে মিলারদের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন ৪ হাজার ৪শ ৮৫ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা দেখানো হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের কাছ এক ছটাক ধানও কেনা হয়নি।
জানা গেছে শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকলিমা বেগম শান্তাহার সিএসডিতে পাঠানো ৫ ট্রাক চাল নিন্মমানের হওয়ায় তা গ্রহন করতে অস্বিকার করে সিএসডি কর্তপক্ষ। শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার অনেক চাপাচাপির পরেও সিএসডি কর্তৃপক্ষ চাল নিতে অস্বিকৃতি জানান। ফলে পাঠানো চালসহ ট্রাক ফিরিয়ে আনতে হয়।
এ ব্যাপারে সান্তাহার সিএসডির ম্যানেজার হারুনর রশিদের সাথে তার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন শঠিবাড়ি খাদ্য গুদাম থেকে চালে ময়েশ্চারের পরিমান বেশি থাকায় রিসিভ না করে ফেরত দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মিঠাপুকুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অমুল্য কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন চালের বস্তা গুলো নতুন না দিয়ে পুরাতন দেবার বিষয়টি তাকে দেখতে হবে। তবে শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো একটি চালের ট্রাক ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জেনেছেন। তার ভাষায় চাল নিন্মমানের ছিলোনা, ময়েশ্চারের পরিমান বেশি ছিলো।
অপরদিকে রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও স্বীকার করেন শঠিবাড়ি সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো চালে ময়েশ্চারের পরিমান বেশী থাকায় সান্তাহার সিএসডি এক ট্রাক চাল গ্রহন না করেন ফেরত দিয়েছে। অপরদিকে শঠিবাড়ি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা পীরগাছা খাদ্য গুদামে কর্মরত থাকার সময় কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে মিলারদের চাল কিনে ভুয়া কৃষকের নাম দিয়ে টাকা উত্তোলন করে মিলারদের চাল কেনার টাকা পরিশোধের বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান। তিনি অল্প কিছুদিন হলো এসেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। এবার কৃষকদের কাছে থেকে শঠিবাড়ি খাদ্য গুদামে এক ছটাক ধান কেনা হয়নি বলে স্বীকার করে জানান, কৃষকরা ধান বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ধান কেনা হয়নি বলে শুনেছেন।
এদিকে সংবাদ প্রতিনিধি চাল ক্রয়ে অনিয়মের বিষয় বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার বিষয়টি জানতে পারায় শঠিবাড়ি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগম নিজেই ফোন করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের উদ্ধৃতি দিয়ে এ প্রতিনিধিকে জানান, খাদ্য বিভাগের কিছু কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে লেগেছে। জেলা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তারা সান্তাহার সিএসডি কর্তৃক নিন্মমানের চাল বলে প্রমানিত হওয়ায় চালের ট্রাক ফেরত দিয়েছে এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বিকার করে বলেন তিনি নিন্মমানের কোন চাল ক্রয় করেননি বলে দাবি করেন।