আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রংপুরের পীরগঞ্জে ও লালদিঘীর ফতেপুরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে ওয়াজেদ মিয়ার কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, কোরান খানি, মিলাদ ও দোয়া, তবারক বিতরণ এবং স্মৃতি চারণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রয়াত বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচির সূচনা হয়। কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে ছায়াদত হোসেন বকুল, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম, রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর, জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মন্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক শাহিন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবন্দ এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
লালদিঘীর জয়সদন চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহিদুল ইসলাম পিন্টুর সভাপতিত্বে ও তাজিমুল ইসলাম শামীমের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ছায়াদত হোসেন বকুল প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ (ডিডব্লিউএসএস), ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ড. ওয়াজেদ মিয়ার পরিবার, রংপুর জেলা ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনগুলো তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সুরা ফাতেহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরীবদের মধ্যে খাবার বিতরণ এবং স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার (সুধা মিয়া) বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী। বরেণ্য এই পরমাণুবিজ্ঞানী ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামের এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী।
মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মরহুমা ময়জুন নেছা বিবির সন্তান ওয়াজেদ মিয়াকে সবাই ‘সুধা মিয়া’নামেই চিনতেন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু। ১৯৫৬ সালে পজলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন রাজশাহী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানের স্মাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবছরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’সম্পন্ন শেষে ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। উপমহাদেশে প্রথম শ্রেণির এই বিজ্ঞানী ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দিয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন।
বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। ১৯৬১ সালের প্রথম দিকে ছাত্রলীগে যোগ দেন তিনি। ১৯৬১-১৯৬২ শিক্ষাবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬২ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে এবং ঐ বছরই জেনারেল আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেফতারও হন। আজন্ম সৎ ও নিভৃতচারী এই বিজ্ঞানী ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সময় ড. ওয়াজেদ মিয়া জার্মানিতে ছিলেন। তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তারা।
ব্যক্তিজীবনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে অভ্যস্ত এই বিজ্ঞানীর দুই সন্তান। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই রাত ৮টায় প্রথম সন্তান কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম। একমাত্র কন্যা মনোবিজ্ঞানী সায়মা হোসেন পুতুল। বঙ্গবন্ধুর জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হওয়া সত্ত্বেও ড. ওয়াজেদ মিয়াকে কখনো ক্ষমতার কাছাকাছি দেখা যায়নি।
নির্লোভ, সৎ এই খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে ইত্তেকাল করেন।
বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রংপুরের পীরগঞ্জে ও লালদিঘীর ফতেপুরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে ওয়াজেদ মিয়ার কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, কোরান খানি, মিলাদ ও দোয়া, তবারক বিতরণ এবং স্মৃতি চারণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রয়াত বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচির সূচনা হয়। কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে ছায়াদত হোসেন বকুল, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম, রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর, জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মন্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক শাহিন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবন্দ এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
লালদিঘীর জয়সদন চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহিদুল ইসলাম পিন্টুর সভাপতিত্বে ও তাজিমুল ইসলাম শামীমের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ছায়াদত হোসেন বকুল প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ (ডিডব্লিউএসএস), ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ড. ওয়াজেদ মিয়ার পরিবার, রংপুর জেলা ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনগুলো তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সুরা ফাতেহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরীবদের মধ্যে খাবার বিতরণ এবং স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার (সুধা মিয়া) বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী। বরেণ্য এই পরমাণুবিজ্ঞানী ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামের এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী।
মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মরহুমা ময়জুন নেছা বিবির সন্তান ওয়াজেদ মিয়াকে সবাই ‘সুধা মিয়া’নামেই চিনতেন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু। ১৯৫৬ সালে পজলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন রাজশাহী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানের স্মাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবছরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’সম্পন্ন শেষে ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। উপমহাদেশে প্রথম শ্রেণির এই বিজ্ঞানী ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দিয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন।
বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। ১৯৬১ সালের প্রথম দিকে ছাত্রলীগে যোগ দেন তিনি। ১৯৬১-১৯৬২ শিক্ষাবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬২ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে এবং ঐ বছরই জেনারেল আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেফতারও হন। আজন্ম সৎ ও নিভৃতচারী এই বিজ্ঞানী ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সময় ড. ওয়াজেদ মিয়া জার্মানিতে ছিলেন। তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তারা।
ব্যক্তিজীবনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে অভ্যস্ত এই বিজ্ঞানীর দুই সন্তান। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই রাত ৮টায় প্রথম সন্তান কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম। একমাত্র কন্যা মনোবিজ্ঞানী সায়মা হোসেন পুতুল। বঙ্গবন্ধুর জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হওয়া সত্ত্বেও ড. ওয়াজেদ মিয়াকে কখনো ক্ষমতার কাছাকাছি দেখা যায়নি।
নির্লোভ, সৎ এই খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে ইত্তেকাল করেন।