মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। ৪০ হলো ভবনটির বয়স তার মধ্যে একবারও করা হয়নি সংস্কার। ফলে ভবনের উপরের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে আর জন্ম নিয়েছে আগাছা। যে কোন সময়ে ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়ে হতে পারে জগন্নাথ ট্রেজিডি, আশঙ্কা কর্মরত কর্মচারীদের।
কালের পরিক্রমায় এখন পোস্ট অফিসের প্রয়োজন কমে গিয়েছে কারণ মানুষ ব্যবহার করছে মোবাইল ফোন। তবে সরকারী বেসরকারী অফিসের কিছু চিঠি আদান প্রদান হয় এই পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে। আর কিছু মানুষ আছেন অধিকতর নিরাপদ ভেবে তাঁদের টাকা জমা রাখেন পোষ্ট অফিসে। আর আধুনিক উপায়ে মানি ট্রান্সফার করা হয় বিধায় পোস্ট অফিস এখনো গুরুত্ব বহন করছে।
অফিসটির কম্পিউটার অপারেটর মাহফুজুর রহমান বলেন, সুদীর্ঘ ৪০ বছরে একবারও পোস্ট হয়নি কোন সংস্কারের কাজ। একারণে দিনে দিনে কার্যালয়ের বেশিরভাগ দেয়াল ও ছাদ নষ্ট হয়ে পড়েছে। অল্প বৃষ্টি হলেও ছাদ ধসে পানি পড়ে ফলে নষ্ট হচ্ছে অনেক রেকর্ড। বর্তমানে এই ভবনে সরকারি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও সরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। কম্পিউটার গুলো স্যাঁত স্যাঁতে জায়গায় রাখার কারণে অনেকটাই অকেজো হয়ে যাচ্ছে।
অফিসের ক্লিনার শেফালি বলেন, একটি সময় ছিল যখন অফিসটি মুখোরিত থাকতো গ্রাহকদের জমজমাট উপস্থিতিতে। আর এখন মানুষের আসা যাওয়া কমে যাওয়ায় পোস্ট অফিসটি অনেকটা অনাদওে হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদের উপরে আগাছা জন্মেছে। বটের গাছও বড় আকার ধারন করেছে। ভবনটি সংস্কার করা গেলে আরও কয়েকবছর চলবে।
স্থানীয়রা বলছেন, পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা পোস্ট অফিসের প্রতি নজর দিচ্ছেন না। এ কারণে একেবারে ভবনটি বেহাল হয়ে পড়েছে। অপরিস্কারভাবে দীর্ঘদিন অবহেলায় থাকার কারণে আগাছা জন্মেছে। দেয়ালে আগাছা জন্মে উঠে গেছে ছাদ পর্যন্ত। অনেক সময় ধরে পানি জমে থাকায় ছাদের অবস্থা হয়েছে করুণ।
যারা বসে কাজ করেন তারা শুধু নিজের বসার স্থানটি পরিষ্কার করে নেন আর কোন দিকে খেয়াল করেনা। উর্ধতন কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে এসব ভবনগুলো বয়সের আগেই ধসে পড়ছে।
জেলার প্রধান ডাকঘরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি উপজেলা ডাকঘরে বাৎসরিক একটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বরাদ্দ থেকে অফিসের সংস্কার সহ প্রয়োজনীয় কর্ম করা হয়ে থাকে। অনেকে বরাদ্দের টাকা খরচ করে না। সরেজমিন দেখা যায়, শুধু ভবনের ভেতরের অংশই নয়, পুরো পোস্ট অফিস চত্বরের প্রতিটি জিনিসের অবস্থাই নাজুক। নিরাপত্তা প্রাচীরের অধিকাংশ জায়গা ভেঙে গেছে। এ কারণে ভবনে কেউ দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে চান না। স্থানীয়রা বলেন, সন্ধ্যার পর লোকজন না থাকায় অফিস চত্বরে মাদকসেবীদের আড্ডাও বসে।
অফিসের পোস্টাল অপারেটর হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিটি উপজেলা পোস্ট অফিসে ১০ জন লোকবল থাকা আবশ্যাক।
অফিসে ১ জন পোস্ট মাস্টার, ২ জন পোস্ট ম্যান, ২ জন পোস্টাল অপারেটর, ১ জন মেইল ক্যারিয়ার, ১ জন নৈশপ্রহরী ও ১ জন ঝাড়ুদার থাকার দরকার। এখানে মাত্র ৫জন লোকবল দিয়ে কার্যক্রম চলছে। একজন পোস্ট মাস্টার, একজন পোস্টম্যান, একজন পোস্টাল অপারেটর, একজন নৈশপ্রহরী, একজন ঝাড়ুদার।
গাংনী উপজেলা পোস্ট মাস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, ১৯৮২ সালে পোস্ট অফিসের ভবনটি নির্মিত হয়। নির্মাণের ৪০ বছর অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কোন সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছাদের সিমেন্ট করা পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে।
ছাদের মরিচাপড়া রড বের হয়ে গেছে। বিমগুলোতে ফাটল ধরেছে। প্রতিদিন এই ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে অফিসের অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। গরমের সময় খুলে পড়ার আশঙ্কায় বৈদ্যুতিক পাখা চালু করা যায় না। ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল, কুষ্টিয়া মোহাম্মদ মোহসিন উদ্দীন বলেন গাংনী পোস্ট অফিসটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে তবে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। সহসায় নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। ৪০ হলো ভবনটির বয়স তার মধ্যে একবারও করা হয়নি সংস্কার। ফলে ভবনের উপরের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে আর জন্ম নিয়েছে আগাছা। যে কোন সময়ে ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়ে হতে পারে জগন্নাথ ট্রেজিডি, আশঙ্কা কর্মরত কর্মচারীদের।
কালের পরিক্রমায় এখন পোস্ট অফিসের প্রয়োজন কমে গিয়েছে কারণ মানুষ ব্যবহার করছে মোবাইল ফোন। তবে সরকারী বেসরকারী অফিসের কিছু চিঠি আদান প্রদান হয় এই পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে। আর কিছু মানুষ আছেন অধিকতর নিরাপদ ভেবে তাঁদের টাকা জমা রাখেন পোষ্ট অফিসে। আর আধুনিক উপায়ে মানি ট্রান্সফার করা হয় বিধায় পোস্ট অফিস এখনো গুরুত্ব বহন করছে।
অফিসটির কম্পিউটার অপারেটর মাহফুজুর রহমান বলেন, সুদীর্ঘ ৪০ বছরে একবারও পোস্ট হয়নি কোন সংস্কারের কাজ। একারণে দিনে দিনে কার্যালয়ের বেশিরভাগ দেয়াল ও ছাদ নষ্ট হয়ে পড়েছে। অল্প বৃষ্টি হলেও ছাদ ধসে পানি পড়ে ফলে নষ্ট হচ্ছে অনেক রেকর্ড। বর্তমানে এই ভবনে সরকারি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও সরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। কম্পিউটার গুলো স্যাঁত স্যাঁতে জায়গায় রাখার কারণে অনেকটাই অকেজো হয়ে যাচ্ছে।
অফিসের ক্লিনার শেফালি বলেন, একটি সময় ছিল যখন অফিসটি মুখোরিত থাকতো গ্রাহকদের জমজমাট উপস্থিতিতে। আর এখন মানুষের আসা যাওয়া কমে যাওয়ায় পোস্ট অফিসটি অনেকটা অনাদওে হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদের উপরে আগাছা জন্মেছে। বটের গাছও বড় আকার ধারন করেছে। ভবনটি সংস্কার করা গেলে আরও কয়েকবছর চলবে।
স্থানীয়রা বলছেন, পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা পোস্ট অফিসের প্রতি নজর দিচ্ছেন না। এ কারণে একেবারে ভবনটি বেহাল হয়ে পড়েছে। অপরিস্কারভাবে দীর্ঘদিন অবহেলায় থাকার কারণে আগাছা জন্মেছে। দেয়ালে আগাছা জন্মে উঠে গেছে ছাদ পর্যন্ত। অনেক সময় ধরে পানি জমে থাকায় ছাদের অবস্থা হয়েছে করুণ।
যারা বসে কাজ করেন তারা শুধু নিজের বসার স্থানটি পরিষ্কার করে নেন আর কোন দিকে খেয়াল করেনা। উর্ধতন কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে এসব ভবনগুলো বয়সের আগেই ধসে পড়ছে।
জেলার প্রধান ডাকঘরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি উপজেলা ডাকঘরে বাৎসরিক একটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বরাদ্দ থেকে অফিসের সংস্কার সহ প্রয়োজনীয় কর্ম করা হয়ে থাকে। অনেকে বরাদ্দের টাকা খরচ করে না। সরেজমিন দেখা যায়, শুধু ভবনের ভেতরের অংশই নয়, পুরো পোস্ট অফিস চত্বরের প্রতিটি জিনিসের অবস্থাই নাজুক। নিরাপত্তা প্রাচীরের অধিকাংশ জায়গা ভেঙে গেছে। এ কারণে ভবনে কেউ দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে চান না। স্থানীয়রা বলেন, সন্ধ্যার পর লোকজন না থাকায় অফিস চত্বরে মাদকসেবীদের আড্ডাও বসে।
অফিসের পোস্টাল অপারেটর হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিটি উপজেলা পোস্ট অফিসে ১০ জন লোকবল থাকা আবশ্যাক।
অফিসে ১ জন পোস্ট মাস্টার, ২ জন পোস্ট ম্যান, ২ জন পোস্টাল অপারেটর, ১ জন মেইল ক্যারিয়ার, ১ জন নৈশপ্রহরী ও ১ জন ঝাড়ুদার থাকার দরকার। এখানে মাত্র ৫জন লোকবল দিয়ে কার্যক্রম চলছে। একজন পোস্ট মাস্টার, একজন পোস্টম্যান, একজন পোস্টাল অপারেটর, একজন নৈশপ্রহরী, একজন ঝাড়ুদার।
গাংনী উপজেলা পোস্ট মাস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, ১৯৮২ সালে পোস্ট অফিসের ভবনটি নির্মিত হয়। নির্মাণের ৪০ বছর অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কোন সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছাদের সিমেন্ট করা পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে।
ছাদের মরিচাপড়া রড বের হয়ে গেছে। বিমগুলোতে ফাটল ধরেছে। প্রতিদিন এই ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে অফিসের অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। গরমের সময় খুলে পড়ার আশঙ্কায় বৈদ্যুতিক পাখা চালু করা যায় না। ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল, কুষ্টিয়া মোহাম্মদ মোহসিন উদ্দীন বলেন গাংনী পোস্ট অফিসটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে তবে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। সহসায় নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।