তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষ হিসেবে কোনো মর্যাদা ছিল না। রাস্তাঘাটে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের পাশাপাশি নানা কটুবাক্য ছুড়ে দিত লোকজন। মানুষের কাছে চেয়ে-চিন্তে খাওয়া সমাজের অবহেলিত এক জনগোষ্ঠীর মানুষের এভাবেই দিন কেটেছে।
সম্প্রতি তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষের মর্যাদা ফিরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানে মিলেছে আশ্রয়ও । প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পেয়েছে, শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলেন্টিয়ার এ্যাওয়ার্ড ও ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা।
এছাড়াও তাদের জন্য জমি ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা যেন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে এজন্য হাঁস, মুরগি, সবজি ও মাছ চাষের মতো ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী জেলার পবা উপজেলায় পাইলট হিসেবে ৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ প্রত্যেকে নিজস্ব একটি করে বাড়ি পাচ্ছেন। বাড়ি পাবার কথা শুনেই উচ্ছ্বসিত এসব তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা।
পবা উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পবা উপজেলায় মোট ঘর ৫৩৫। এর মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৪৭, ২য় পর্যায়ে ৫০, ৩য় পর্যায়ে ১৫০, ৪র্থ পর্যায়ে ২৮৮জন। ক- শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পুনর্বাসনের মাধ্যমে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে পবা উপজেলাকে, একইসাথে রাজশাহী জেলার সবকটি উপজেলায় ক- শ্রেণির নিরুপিত তালিকা অনুযায়ী সকলকে পুনর্বাসন করায় ভূমিহীনমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে রাজশাহী জেলাকে।
জানা গেছে, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য নির্মাণ করা প্রায় ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরে থাকবে দুটি কক্ষ, একটি বারান্দা, একটি টয়লেট ও একটি রান্নাঘর। দুর্যোগসহনীয় এসব ঘর হবে টেকসই এবং প্রতিটি ঘরেই থাকবে সোলার সিস্টেম আর বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা। এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ঘর পাবার আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছেন।
চলতি ধাপে ৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এশিয়ার সর্বকনিষ্ঠ মাকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। পুনর্বাসিত করা হচ্ছে প্রায় ৫০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে। ঘর পাচ্ছে সহায় সম্বলহীন ১৮টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার। উদ্ধারকৃত খাস জমির মধ্যে অধিকাংশই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলে ছিল। প্রায় ৫০ বিঘা খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হিজড়া সংগঠন-বাঁচার আশা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি ও শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত মোস্তফা সরকার ওরফে বিজলী জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বমাতা। দেশের ও বাইরের প্রত্যেকটা মানুষকে তিনি এগিয়ে নিতে অবদান রেখে চলেছেন। হিজড়াদের বাড়ি দেবেন-যা সরকারের একটা মহতি উদ্যোগ। কারণ হতভাগ্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো বাড়ি থেকেই বিতাড়িত হন। পরিবারগুলো তাদের তাড়িয়ে দিতে পারলেই যেন বেঁচে যায়। এছাড়া পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে তারা বঞ্চিত হন। সরকারিভাবে বাড়ি বা ঘর পেলে তারা অনেক উপকৃত হবেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, আমার এই পর্যায়ে তৃতীয় লিঙ্গের ৫ সদস্যকে ঘর দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে তাদের যে সদস্যরা ঘর পায়নি তাদেরকে ঘর দেওয়া হবে।
সুবিধাভোগী যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সহায় সম্বলহীন নিঃস্ব মানুষদের পাশাপাশি বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, ৩য় লিঙ্গ সদস্যদের। খাসজমি উদ্ধার, সঠিকভাবে ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা, সঠিক ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ প্রদানসহ প্রতিটি স্তরে মোকাবেলা করতে হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। রঙিন টিনের ঘরে রঙিন স্বপ্নের বীজ বুনবে পুনর্বাসিত পরিবারগুলো। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণে রাখবে বলিষ্ঠ ভূমিকা। মূল স্ত্রোতধারায় সংযুক্তির মাধ্যমে অর্জিত হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় একটি মানুষও ভূমিহীন- গৃহহীন থাকবে না, সত্য হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকার জানান, পবা উপজেলায় ৫৩৫ টি ঘরের জন্য প্রায় ৫০ বিঘা খাস জমির প্রয়োজন দেখা দেয়। ফলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় প্রভাবশালী জবর দখলকারীদের হাত থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লসমী চাকমা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাংলাদেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবেন না। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পবা উপজেলায় ৫৩৫টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩
তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষ হিসেবে কোনো মর্যাদা ছিল না। রাস্তাঘাটে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের পাশাপাশি নানা কটুবাক্য ছুড়ে দিত লোকজন। মানুষের কাছে চেয়ে-চিন্তে খাওয়া সমাজের অবহেলিত এক জনগোষ্ঠীর মানুষের এভাবেই দিন কেটেছে।
সম্প্রতি তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষের মর্যাদা ফিরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানে মিলেছে আশ্রয়ও । প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পেয়েছে, শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলেন্টিয়ার এ্যাওয়ার্ড ও ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা।
এছাড়াও তাদের জন্য জমি ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা যেন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে এজন্য হাঁস, মুরগি, সবজি ও মাছ চাষের মতো ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী জেলার পবা উপজেলায় পাইলট হিসেবে ৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ প্রত্যেকে নিজস্ব একটি করে বাড়ি পাচ্ছেন। বাড়ি পাবার কথা শুনেই উচ্ছ্বসিত এসব তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা।
পবা উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পবা উপজেলায় মোট ঘর ৫৩৫। এর মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৪৭, ২য় পর্যায়ে ৫০, ৩য় পর্যায়ে ১৫০, ৪র্থ পর্যায়ে ২৮৮জন। ক- শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পুনর্বাসনের মাধ্যমে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে পবা উপজেলাকে, একইসাথে রাজশাহী জেলার সবকটি উপজেলায় ক- শ্রেণির নিরুপিত তালিকা অনুযায়ী সকলকে পুনর্বাসন করায় ভূমিহীনমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে রাজশাহী জেলাকে।
জানা গেছে, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য নির্মাণ করা প্রায় ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরে থাকবে দুটি কক্ষ, একটি বারান্দা, একটি টয়লেট ও একটি রান্নাঘর। দুর্যোগসহনীয় এসব ঘর হবে টেকসই এবং প্রতিটি ঘরেই থাকবে সোলার সিস্টেম আর বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা। এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ঘর পাবার আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছেন।
চলতি ধাপে ৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এশিয়ার সর্বকনিষ্ঠ মাকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। পুনর্বাসিত করা হচ্ছে প্রায় ৫০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে। ঘর পাচ্ছে সহায় সম্বলহীন ১৮টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার। উদ্ধারকৃত খাস জমির মধ্যে অধিকাংশই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলে ছিল। প্রায় ৫০ বিঘা খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হিজড়া সংগঠন-বাঁচার আশা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি ও শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত মোস্তফা সরকার ওরফে বিজলী জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বমাতা। দেশের ও বাইরের প্রত্যেকটা মানুষকে তিনি এগিয়ে নিতে অবদান রেখে চলেছেন। হিজড়াদের বাড়ি দেবেন-যা সরকারের একটা মহতি উদ্যোগ। কারণ হতভাগ্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো বাড়ি থেকেই বিতাড়িত হন। পরিবারগুলো তাদের তাড়িয়ে দিতে পারলেই যেন বেঁচে যায়। এছাড়া পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে তারা বঞ্চিত হন। সরকারিভাবে বাড়ি বা ঘর পেলে তারা অনেক উপকৃত হবেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, আমার এই পর্যায়ে তৃতীয় লিঙ্গের ৫ সদস্যকে ঘর দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে তাদের যে সদস্যরা ঘর পায়নি তাদেরকে ঘর দেওয়া হবে।
সুবিধাভোগী যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সহায় সম্বলহীন নিঃস্ব মানুষদের পাশাপাশি বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, ৩য় লিঙ্গ সদস্যদের। খাসজমি উদ্ধার, সঠিকভাবে ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা, সঠিক ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ প্রদানসহ প্রতিটি স্তরে মোকাবেলা করতে হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। রঙিন টিনের ঘরে রঙিন স্বপ্নের বীজ বুনবে পুনর্বাসিত পরিবারগুলো। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণে রাখবে বলিষ্ঠ ভূমিকা। মূল স্ত্রোতধারায় সংযুক্তির মাধ্যমে অর্জিত হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় একটি মানুষও ভূমিহীন- গৃহহীন থাকবে না, সত্য হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকার জানান, পবা উপজেলায় ৫৩৫ টি ঘরের জন্য প্রায় ৫০ বিঘা খাস জমির প্রয়োজন দেখা দেয়। ফলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় প্রভাবশালী জবর দখলকারীদের হাত থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লসমী চাকমা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাংলাদেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবেন না। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পবা উপজেলায় ৫৩৫টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।