alt

সারাদেশ

আরাভকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে পুলিশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় পলাতক আসামি স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারে আন্তর্জাতিক পুলিশ তদন্ত সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোল শাখা থেকে এ রেড নোটিশ জারি করতে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাভ খানের বিষয়ে দেশটির পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে।

এদিকে পুলিশ হত্যা মামলায় ‘পরোয়ানা থাকা’ সত্ত্বেও আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম বাংলাদেশে দুইবার এসে ঘুরে গেছেন বলে তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশে ঘুরতে আসা আরাভ খান যে রবিউল ইসলাম এটা তখন পুলিশের অনেক কর্মকর্তাই জানতেন। কিন্তু কিভাবে তিনি পরিচয় পাল্টে এভাবে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছেন এবং কেনই বা তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি তা এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও অনেকেই বলছেন পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ার কারণে পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে পুলিশ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে হৃদয় ওরফে সোহাগই যে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান এবং সে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে দেশটিতে অবস্থান করছে এটি জানার পর তাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আরাভ খানের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে ইন্টারপোলের কাছে। দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান বাংলাদেশের রবিউল ইসলাম এবং তার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ যাবর্তীয় তথ্য-প্রমাণ চিঠির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আমরা আশা করি ইন্টারপোলের সহযোগিতায় আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মিডিয়া মনজুর রহমান বলেন, ‘পলাতক আসামি আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়কে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের মুখোমুখি করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা কাজ করছে। সে যাতে অন্য কোথাও যেতে না পারে সে বিষয়টিও ইন্টারপোলকে অবহিত করা হয়েছে।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আরাভের বিষয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত দুবাই দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ চলমান রয়েছে। আরাভের পেছনে কারা জড়িত রয়েছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের প্রয়োজনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’

২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীতে আরাভের অফিসে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে খুনিরা। আরাভ খান ওই হত্যায় সংশ্লিষ্টদের অন্যতম একজন যিনি তখন রবিউল ইসলাম নামে পরিচিতি ছিলেন। এ হত্যা মামলায় তার নাম আসার পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং পরিচয় পাল্টে হয়ে যান আরাভ খান। ভারতীয় এক দম্পতির আধার কার্ড ব্যবহার করে তাদের সন্তান পরিচয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন। পরে তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে দুবাইয়ের ভিসা নিয়ে দেশটিতে পালিয়ে যান। রবিউল ইসলাম দাবি করে আরেকজন যখন আদালতে আত্মসমর্পণ করে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার পর ইউসুফ নামের ব্যক্তি আদালতে দাবি করেন তিনি রবিউল ইসলাম নন তখন আদালত এটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশন দেন। পুলিশ তদন্ত করতে গেলে থলের বিরাল বেরিয়ে আসে। দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন এবং সে অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের তারাকারা হাজির থাকবেন এমন তথ্য জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ভিডিও পোস্ট করেন তখন পুলিশ জানতে পারে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান আর কেউ নন বাংলাদেশের রবিউল ইসলাম যিনি পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলায় ফেরারি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার এই পলাতক আসামির নাম রবিউল ইসলাম ওরফে আপন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে। কখনও সে নাম ধারণ করে সোহাগ, কখনও বা শেখ হৃদয়। তাকে খোঁজা হচ্ছিল। তখন মামলাটি তদন্ত করে তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিটও দিয়েছিল ডিবি। এরমধ্যে পালিয়ে থাকা রবিউল ভারতে চলে যায়। ফলে তখন তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে তদন্তে ওঠে আসে রবিউল ইসলাম আপন নামের একজন কোর্টে আত্মসমর্পণ করেছে। তারপর তাকে জেলখানায় নেয়া হয়। কিন্তু এটা একটা সাজানো ঘটনা। আত্মসমর্পণ করা রবিউল ইসলাম মূল খুনি রবিউল ইসলামের সঙ্গে অর্থের সুবিধায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিজের নাম রবিউল বলেছিল। যাতে পুলিশ আসল রবিউলকে খুঁজে না পায়। পুলিশ রবিউলের জেলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে আসল রবিউল ভারতে তখন নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি রবিউলের পরিবর্তে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আবু ইউসুফ লিমন জেলে যাওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী যখন আসল রবিউলের কাছ থেকে কোন টাকা পাননি তখন তিনি আদালতে আসল তথ্য প্রকাশ করে দেন। তখন সে আদালতে বলে আমি রবিউল ইসলাম আপন না। আপন হচ্ছে ওনি, যিনি ভারতে আছেন। আমি ভুল করেছি। তখন কোর্ট আবার ডিবিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে সবকিছু বের হয়ে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আরাভ খানের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক শীর্ষ মহলের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। পুলিশের শীর্ষ কর্মকতা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠত ব্যবসায়ী, বিনোদন জগতের তারাকাসহ অনেকের সঙ্গে আরাভ খানের সখ্য ছিল। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছিলেন আরাভ খান। ওই অনুষ্ঠানে বড় অঙ্ক ডেনোশন করেন আরাভ খান।

গত বছরের মার্চ এবং চলতি বছরের ফেব্রুযারি মাসে আরাভ খান দুইবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। যদিও তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন। তখন পুলিশের অনেক কর্মকর্তা জানতেন ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহারে বাংলাদেশে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান পরিচয়ে আসা ব্যক্তি আর কেউ নন পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলামই। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তখন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ছবি

সরকারি কলেজে আসবাব কেনায় একাট্টা আ’লীগ বিএনপি ঠিকাদাররা

ছবি

পায়রা এখন দেশের গভীরতম সমুদ্রবন্দর

ছবি

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

ছবি

আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে, ৬ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির আশঙ্কা

ছবি

দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

ছবি

সখীপুরে বিদ‍্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ছবি

সিলেটে ভূমি জটিলতায় আটকে আছে বধ্যভূমি সংরক্ষণ কাজ

ছবি

কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে ছবি দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতা আটক

ছবি

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বজ্রপাতে নিহত ৩

ছবি

আখাউড়ায় বিজিবি- বিএসএফের যৌথ রিট্রিট সিরিমনি অনুষ্ঠিত

ছবি

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

ছবি

নেত্রকোণায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি

ছবি

চট্টগ্রামে ২৪ চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার ৫

ছবি

গাড়িতে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সেই দম্পতির নামে মামলা

ছবি

ওমরাহ শেষে ফেরার পথে প্রাণ গেল ২ বাংলাদেশির

ছবি

চট্টগ্রামে স্বাধীনতা দিবসে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ

ছবি

খালার জানাযা শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুইভাই নিহত

ছবি

রমজান ও গরমে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ

কুমিল্লায় ৩ নারী মাদকপাচারকারী গ্রেপ্তার

ছবি

সড়কের কাজ ফেলে রাখায় ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

বেনাপোল বন্দরে ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৫৬ কোটি টাকা

শৈলকূপায় ৩৭৯ পরিবার পেল ৩৪ লাখ টাকা অনুদান

বাঘইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৮ শিক্ষক কর্মচারীকে শোকজ

ছবি

খুলনায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, দুর্ভোগে পথচারী

ছবি

লাখাইয়ে ব্রি-২৮ ধানে চিটা কপাল পুড়ল কৃষকের

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

হবিগঞ্জে ২০ হাজার টাকার জন্য যুবককে হত্যা, ঘাতক আটক

পাথরঘাটায় ডাল খেতে বিষ প্রয়োগ করল প্রতিপক্ষ

ছবি

কাল ২৬ মার্চ, প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

ছবি

রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এমডির গাড়ি চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

থানচিতে আগুনে পুড়ল ৪৫ দোকান

ছবি

রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এমডির গাড়ি চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সাতক্ষীরায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক তরুণ নিহত, আহত ২

ছবি

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানসহ ২০-২২ জন আসামি হতে পারে

বিমানের সার্ভার হ্যাক : ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন ছোট ঝামেলা, পুুরো খবর ভুয়া

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ওএমএসের চাল বিতরণ না করে রেখে দিলেন কাউন্সিলর

tab

সারাদেশ

আরাভকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে পুলিশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় পলাতক আসামি স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারে আন্তর্জাতিক পুলিশ তদন্ত সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোল শাখা থেকে এ রেড নোটিশ জারি করতে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাভ খানের বিষয়ে দেশটির পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে।

এদিকে পুলিশ হত্যা মামলায় ‘পরোয়ানা থাকা’ সত্ত্বেও আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম বাংলাদেশে দুইবার এসে ঘুরে গেছেন বলে তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশে ঘুরতে আসা আরাভ খান যে রবিউল ইসলাম এটা তখন পুলিশের অনেক কর্মকর্তাই জানতেন। কিন্তু কিভাবে তিনি পরিচয় পাল্টে এভাবে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছেন এবং কেনই বা তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি তা এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও অনেকেই বলছেন পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ার কারণে পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে পুলিশ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে হৃদয় ওরফে সোহাগই যে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান এবং সে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে দেশটিতে অবস্থান করছে এটি জানার পর তাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আরাভ খানের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে ইন্টারপোলের কাছে। দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান বাংলাদেশের রবিউল ইসলাম এবং তার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ যাবর্তীয় তথ্য-প্রমাণ চিঠির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আমরা আশা করি ইন্টারপোলের সহযোগিতায় আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মিডিয়া মনজুর রহমান বলেন, ‘পলাতক আসামি আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়কে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের মুখোমুখি করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা কাজ করছে। সে যাতে অন্য কোথাও যেতে না পারে সে বিষয়টিও ইন্টারপোলকে অবহিত করা হয়েছে।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আরাভের বিষয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত দুবাই দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ চলমান রয়েছে। আরাভের পেছনে কারা জড়িত রয়েছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের প্রয়োজনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’

২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীতে আরাভের অফিসে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে খুনিরা। আরাভ খান ওই হত্যায় সংশ্লিষ্টদের অন্যতম একজন যিনি তখন রবিউল ইসলাম নামে পরিচিতি ছিলেন। এ হত্যা মামলায় তার নাম আসার পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং পরিচয় পাল্টে হয়ে যান আরাভ খান। ভারতীয় এক দম্পতির আধার কার্ড ব্যবহার করে তাদের সন্তান পরিচয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন। পরে তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে দুবাইয়ের ভিসা নিয়ে দেশটিতে পালিয়ে যান। রবিউল ইসলাম দাবি করে আরেকজন যখন আদালতে আত্মসমর্পণ করে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার পর ইউসুফ নামের ব্যক্তি আদালতে দাবি করেন তিনি রবিউল ইসলাম নন তখন আদালত এটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশন দেন। পুলিশ তদন্ত করতে গেলে থলের বিরাল বেরিয়ে আসে। দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন এবং সে অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের তারাকারা হাজির থাকবেন এমন তথ্য জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ভিডিও পোস্ট করেন তখন পুলিশ জানতে পারে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান আর কেউ নন বাংলাদেশের রবিউল ইসলাম যিনি পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলায় ফেরারি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার এই পলাতক আসামির নাম রবিউল ইসলাম ওরফে আপন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে। কখনও সে নাম ধারণ করে সোহাগ, কখনও বা শেখ হৃদয়। তাকে খোঁজা হচ্ছিল। তখন মামলাটি তদন্ত করে তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিটও দিয়েছিল ডিবি। এরমধ্যে পালিয়ে থাকা রবিউল ভারতে চলে যায়। ফলে তখন তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে তদন্তে ওঠে আসে রবিউল ইসলাম আপন নামের একজন কোর্টে আত্মসমর্পণ করেছে। তারপর তাকে জেলখানায় নেয়া হয়। কিন্তু এটা একটা সাজানো ঘটনা। আত্মসমর্পণ করা রবিউল ইসলাম মূল খুনি রবিউল ইসলামের সঙ্গে অর্থের সুবিধায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিজের নাম রবিউল বলেছিল। যাতে পুলিশ আসল রবিউলকে খুঁজে না পায়। পুলিশ রবিউলের জেলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে আসল রবিউল ভারতে তখন নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি রবিউলের পরিবর্তে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আবু ইউসুফ লিমন জেলে যাওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী যখন আসল রবিউলের কাছ থেকে কোন টাকা পাননি তখন তিনি আদালতে আসল তথ্য প্রকাশ করে দেন। তখন সে আদালতে বলে আমি রবিউল ইসলাম আপন না। আপন হচ্ছে ওনি, যিনি ভারতে আছেন। আমি ভুল করেছি। তখন কোর্ট আবার ডিবিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে সবকিছু বের হয়ে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আরাভ খানের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক শীর্ষ মহলের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। পুলিশের শীর্ষ কর্মকতা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠত ব্যবসায়ী, বিনোদন জগতের তারাকাসহ অনেকের সঙ্গে আরাভ খানের সখ্য ছিল। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছিলেন আরাভ খান। ওই অনুষ্ঠানে বড় অঙ্ক ডেনোশন করেন আরাভ খান।

গত বছরের মার্চ এবং চলতি বছরের ফেব্রুযারি মাসে আরাভ খান দুইবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। যদিও তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন। তখন পুলিশের অনেক কর্মকর্তা জানতেন ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহারে বাংলাদেশে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান পরিচয়ে আসা ব্যক্তি আর কেউ নন পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলামই। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তখন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

back to top