alt

সারাদেশ

ভর্তুকি কমাতে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ চুক্তির আহ্বান সিপিডির

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

শুধু ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের জন্য দেশে বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়েনি। গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলছে, এর বড় কারণ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি-পরিকল্পনা আর চুক্তি’। এতেই বেড়েছে ব্যয়, যুদ্ধের কারণে যা হয়ে গেছে ‘কয়েকগুণ’। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ‘নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২২ (খসড়া) : এটি কি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হবে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সিডিপির পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

সিপিডি আরও বলছে, বিদ্যুতের বড় ঘাটতি মেটাতে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের প্রয়োজন ছিল, তবে বর্তমানে আইনটি ‘অদক্ষতার’ জায়গা তৈরি করছে। সংস্থাটির মতে, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের ফলে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ‘বাড়তি ব্যয়’ করতে হচ্ছে। কোন কোন ‘পক্ষ’ পাচ্ছে বাড়তি সুবিধাও। তাই অবিলম্বে আইনটি বাতিল করার দাবি জানিয়ে সিপিডি আরও বলছে, ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তিতে গেলে বাড়তি ভর্তুকির চাপ থেকে সরকার সরে আসতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘২০০৯ সালে জরুরি বিদ্যুৎ আইনের প্রয়োজন ছিল। ওই সময় বড় রকমের বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল, সেটা মেটানোর জন্য চুক্তির দরকার ছিল। এরপর চারবার রিনিউ হয়েছে ওই আইন। আমরা মনে করি, এখন যে জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এরকম চুক্তির আর প্রয়োজন নেই।’

দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন-২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন থেকে সরকারের সরে আসা দরকার। এই আইন বিভিন্নভাবে সমস্যা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি নিয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে, এর আগেও যেগুলো হয়েছে- সেগুলো এখন সরকারের জন্য বড় রকমের মাথাব্যথার কারণ। এর মূল কারণ এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন। কয়েকবার এর সংশোধন করে এর মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে এই আইন অবলোপন এবং তা থেকে সরে আসা দরকার। যা হলে প্রতিযোগিতামূলক কাঠামোতে আমরা চলে যেতে পারবো।’

সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি সমন্বয় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কাজ করছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির সমন্বয় করা হচ্ছে ভোক্তার ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে। অথচ এর পুরোটা হয়েছে ফল্টি (ভুল) যেসব পলিসি করা হয়েছে এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইনের অধীনে (তার কারণে)। এর ফলে বিপুল পরিমাণে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সেটির দায় ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিয়ে সাবসিডি অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আইনটি যদি অবলোপন করা হয় এবং সেই অনুযায়ী সব চুক্তির সংশোধনী আনা হয়। নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তির দিকে যদি যাওয়া হয়, তাহলে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যে বাড়তি ভর্তুকি, এখান থেকে ন্যাচারালি সরে আসার সুযোগ রয়েছে। ফসিল ফুয়েল থেকে সরে এসে ধীরে ধীরে রিনিউয়েবল এনার্জির (নবায়নযোগ্য শক্তি) দিকে গেলে বড় রকমের ভর্তুকির চাপ থেকে সরে আসার সুযোগ রয়েছে।’

নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২২ এর খুঁটিনাটি তুলে ধরে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এতে জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যেসব চুক্তি হচ্ছে, সেগুলো কতটা স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে তা আলোচনা হয়েছে। সরকারের রাজনৈতিক লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি আহরণ, তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু বাস্তবায়ন পর্যায়ে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন নীতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের কথা বলা হয়েছে। শুধু সোলার বলেই ছেড়ে দেয়া হয়নি। রুফটফ সোলার, নেট মিটারিং, মিনি গ্রিড, ন্যানো গ্রিড, সোলার ইরিগেশন, চার্জিং স্টেশন, স্ট্রিট লাইটে রিনিউয়েবল এনার্জি, ফ্লোটিং সোলার সিস্টেম- এরকমভাবে ডিটেইল বলা আছে। একইভাবে উইন্ড এনার্জি, বায়োমাস এনার্জি, বায়ো ফুয়েলের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির কিছু নতুন উৎসের কথাও এখানে বলা হয়েছে। এর ভিত্তিতে আগামীতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। এতে কিছু টার্গেটের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির ক্ষেত্রে কিছু টার্গেট দেয়া হয়েছে।’

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর কথা এতে উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্রেডাকে এখানে নোডাল এজেন্সি বলা হয়েছে। আমরাও তাই মনে করি। কিন্তু স্রেডাকে সব ধরনের ক্যাপাসিটি দিতে হবে। বড় পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রস্তাবনা দেখভাল করার ও অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা স্রেডাকে দেয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সংস্কার দরকার আছে। তবে এই সংস্কার আবার খসড়া প্রস্তাবে অনুপস্থিত।’

তিনি বলেন, ‘নতুন নীতিতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের আবার নীতি সংস্কার হয়েছে। মন্ত্রণালয় তার হতে কর্তৃত্ব নিয়ে ফেলছে। এর ফলে এখানে জ্বালানি নীতিতে যে গাইডলাইন দেয়া আছে রেগুলেটরি কমিশনের দাম নির্ধারণে ক্ষেত্রে, আর সরকার এখন যেভাবে দাম নির্ধারণ করেছে তাতে এটা এখন উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করছে। আমরা মনে করি, ট্যারিফ সেটিংয়ে রেগুলেটরি কমিশনেই ফিরে যাওয়া উচিত। নির্গমন সংশ্লিষ্ট টার্গেটগুলোকেও এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আইনটি না থাকলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে কোন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে না। আমরা শুনে এসেছি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের মূল্য সবচেয়ে কম। অথচ নতুন চুক্তির অধীনে আমরা যে ভারত থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ আনা শুরু করলাম, সেটার মূল্য তো ১৫ টাকা। এটা তো বোধগম্য না কী করে এরকম মূল্য, এরকম জায়গায় আমরা চুক্তি করতে পারি।’

জ্বালানি চুক্তি খোলামেলা হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন চুক্তির ডকুমেন্টস আমরা পাই না। কী রেটে চুক্তিগুলো করা হচ্ছে- জনগণের সেটা জানার অধিকার রয়েছে।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সমৃদ্ধ হতে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফাঁকা চর, বাড়ির ছাদ কিংবা রেলওয়ের খোলা জমিতে সোলার বসিয়ে প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা, মেয়াদ আরও বাড়লো

হিটস্ট্রোকে ৪ জনের মৃত্যু

ছবি

ঈদযাত্রা : মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ৫১ শতাংশ, সাড়ে ৪২ শতাংশ নিহত

ছবি

১৫ শ্রমিক নিয়ে সাজেকের খাদে ট্রাক, নিহত ৯

ছবি

রাজধানীতে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত

ছবি

থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

ছবি

বাসের ধাক্কায় চুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু নরসিংদীর বাড়িতে কান্নার রোল

ছবি

অপহরণ ও মারধরের শিকার দেলোয়ার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিংড়া উপজেলার চেয়ারম্যান

ছবি

রাজশাহীতে বৃষ্টি নামাতে বিয়ের পিঁড়িতে দুই ব্যঙ

ছবি

রংপুরে সাজাপ্রাপ্ত দুই যুবদল নেতাকে কারাগাওে পাঠানোর নির্দেশে বিক্ষোভ

ছবি

আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’র কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ

ছবি

পরিবার পাবে ১০ লাখ টাকা চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, আল্টিমেটাম

তিস্তাসহ ৫৪ অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা দাবিতে বাসদের লং মার্চ

ছবি

লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন হাজার হাজার মুসল্লি

ছবি

অসহায় পরিবারের নিরুপায় নির্মমতা! চুরি ঠেকাতে ৩ বছর শেকল বন্দি কিশোর

ছবি

ছাত্র হত্যায় যুবকের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড

হোটেলে আটকে রেখে কিশোর ধর্ষণ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ছবি

ক্যাসিনোকাণ্ডের সেই সেলিম প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল

ভৌতিক বিলের খপ্পর চট্টগ্রামে মিটার-সংযোগবিহীন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৭ লাখ টাকা

ছবি

এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে ঝরেছে ৩৬৭ জনের প্রাণ

ছবি

চুয়েটের ২ শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক গ্রেপ্তার

ছবি

মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে নিহত ১, আহত ১০

ছবি

মায়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে দেশে ফিরছেন ১৫৩ বাংলাদেশি

ছবি

কক্সবাজারে স্পেশাল ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত

ছবি

ট্রেন লাইনচ্যুত, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ছবি

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

নড়াইলে মাদক মামলায় ২ জনের যাবতজ্জীবন

আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’র কারণ খুঁজছে পুলিশ

ছবি

বাগেরহাটে যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে, নিহত ১

ছবি

৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট

ছবি

ফরিদপুরে দুই ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

নন্দীগ্রামে মসজিদের মিটিংয়ে হুমকি, নামাজ শেষে হামলা

ছবি

কক্সবাজারের তিন উপজেলায় কে কোন প্রতীক পেলেন

ছবি

গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে হাতী মরদেহ উদ্ধার

ছবি

মোরেলগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইসতেস্কার নামাজ আদায়

ছবি

তীব্র গরম ও তাপদাহে অতিষ্ঠ মধুপুরবাসী বাড়ছে নানা রোগ

tab

সারাদেশ

ভর্তুকি কমাতে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ চুক্তির আহ্বান সিপিডির

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

শুধু ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের জন্য দেশে বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়েনি। গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলছে, এর বড় কারণ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি-পরিকল্পনা আর চুক্তি’। এতেই বেড়েছে ব্যয়, যুদ্ধের কারণে যা হয়ে গেছে ‘কয়েকগুণ’। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ‘নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২২ (খসড়া) : এটি কি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হবে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সিডিপির পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

সিপিডি আরও বলছে, বিদ্যুতের বড় ঘাটতি মেটাতে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের প্রয়োজন ছিল, তবে বর্তমানে আইনটি ‘অদক্ষতার’ জায়গা তৈরি করছে। সংস্থাটির মতে, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের ফলে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ‘বাড়তি ব্যয়’ করতে হচ্ছে। কোন কোন ‘পক্ষ’ পাচ্ছে বাড়তি সুবিধাও। তাই অবিলম্বে আইনটি বাতিল করার দাবি জানিয়ে সিপিডি আরও বলছে, ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তিতে গেলে বাড়তি ভর্তুকির চাপ থেকে সরকার সরে আসতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘২০০৯ সালে জরুরি বিদ্যুৎ আইনের প্রয়োজন ছিল। ওই সময় বড় রকমের বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল, সেটা মেটানোর জন্য চুক্তির দরকার ছিল। এরপর চারবার রিনিউ হয়েছে ওই আইন। আমরা মনে করি, এখন যে জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এরকম চুক্তির আর প্রয়োজন নেই।’

দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন-২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন থেকে সরকারের সরে আসা দরকার। এই আইন বিভিন্নভাবে সমস্যা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি নিয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে, এর আগেও যেগুলো হয়েছে- সেগুলো এখন সরকারের জন্য বড় রকমের মাথাব্যথার কারণ। এর মূল কারণ এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন। কয়েকবার এর সংশোধন করে এর মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে এই আইন অবলোপন এবং তা থেকে সরে আসা দরকার। যা হলে প্রতিযোগিতামূলক কাঠামোতে আমরা চলে যেতে পারবো।’

সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি সমন্বয় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কাজ করছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির সমন্বয় করা হচ্ছে ভোক্তার ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে। অথচ এর পুরোটা হয়েছে ফল্টি (ভুল) যেসব পলিসি করা হয়েছে এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইনের অধীনে (তার কারণে)। এর ফলে বিপুল পরিমাণে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সেটির দায় ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিয়ে সাবসিডি অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আইনটি যদি অবলোপন করা হয় এবং সেই অনুযায়ী সব চুক্তির সংশোধনী আনা হয়। নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তির দিকে যদি যাওয়া হয়, তাহলে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যে বাড়তি ভর্তুকি, এখান থেকে ন্যাচারালি সরে আসার সুযোগ রয়েছে। ফসিল ফুয়েল থেকে সরে এসে ধীরে ধীরে রিনিউয়েবল এনার্জির (নবায়নযোগ্য শক্তি) দিকে গেলে বড় রকমের ভর্তুকির চাপ থেকে সরে আসার সুযোগ রয়েছে।’

নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২২ এর খুঁটিনাটি তুলে ধরে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এতে জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যেসব চুক্তি হচ্ছে, সেগুলো কতটা স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে তা আলোচনা হয়েছে। সরকারের রাজনৈতিক লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি আহরণ, তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু বাস্তবায়ন পর্যায়ে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন নীতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের কথা বলা হয়েছে। শুধু সোলার বলেই ছেড়ে দেয়া হয়নি। রুফটফ সোলার, নেট মিটারিং, মিনি গ্রিড, ন্যানো গ্রিড, সোলার ইরিগেশন, চার্জিং স্টেশন, স্ট্রিট লাইটে রিনিউয়েবল এনার্জি, ফ্লোটিং সোলার সিস্টেম- এরকমভাবে ডিটেইল বলা আছে। একইভাবে উইন্ড এনার্জি, বায়োমাস এনার্জি, বায়ো ফুয়েলের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির কিছু নতুন উৎসের কথাও এখানে বলা হয়েছে। এর ভিত্তিতে আগামীতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। এতে কিছু টার্গেটের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির ক্ষেত্রে কিছু টার্গেট দেয়া হয়েছে।’

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর কথা এতে উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্রেডাকে এখানে নোডাল এজেন্সি বলা হয়েছে। আমরাও তাই মনে করি। কিন্তু স্রেডাকে সব ধরনের ক্যাপাসিটি দিতে হবে। বড় পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রস্তাবনা দেখভাল করার ও অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা স্রেডাকে দেয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সংস্কার দরকার আছে। তবে এই সংস্কার আবার খসড়া প্রস্তাবে অনুপস্থিত।’

তিনি বলেন, ‘নতুন নীতিতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের আবার নীতি সংস্কার হয়েছে। মন্ত্রণালয় তার হতে কর্তৃত্ব নিয়ে ফেলছে। এর ফলে এখানে জ্বালানি নীতিতে যে গাইডলাইন দেয়া আছে রেগুলেটরি কমিশনের দাম নির্ধারণে ক্ষেত্রে, আর সরকার এখন যেভাবে দাম নির্ধারণ করেছে তাতে এটা এখন উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করছে। আমরা মনে করি, ট্যারিফ সেটিংয়ে রেগুলেটরি কমিশনেই ফিরে যাওয়া উচিত। নির্গমন সংশ্লিষ্ট টার্গেটগুলোকেও এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আইনটি না থাকলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে কোন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে না। আমরা শুনে এসেছি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের মূল্য সবচেয়ে কম। অথচ নতুন চুক্তির অধীনে আমরা যে ভারত থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ আনা শুরু করলাম, সেটার মূল্য তো ১৫ টাকা। এটা তো বোধগম্য না কী করে এরকম মূল্য, এরকম জায়গায় আমরা চুক্তি করতে পারি।’

জ্বালানি চুক্তি খোলামেলা হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন চুক্তির ডকুমেন্টস আমরা পাই না। কী রেটে চুক্তিগুলো করা হচ্ছে- জনগণের সেটা জানার অধিকার রয়েছে।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সমৃদ্ধ হতে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফাঁকা চর, বাড়ির ছাদ কিংবা রেলওয়ের খোলা জমিতে সোলার বসিয়ে প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’

back to top