alt

সারাদেশ

তুচ্ছ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী খুনে দুই আসামি গ্রেপ্তার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পটুয়াখালীর বাউফলে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২২ মার্চ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী মো. মারুফ হোসেনে বাপ্পী এবং মো. নাফিজ মোস্তফা আনছারী একই স্কুলে পড়ুয়া কয়েকজন উশৃঙ্খল শিক্ষার্থীর হাতে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে বাউফল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৮। পরে গতকাল সোমবার রাতে নরসিংদীর রায়পুরা থেকে মামলার প্রধান আসামি রায়হান ও রাজধানীর পল্লবী থেকে তার অন্যতম সহযোগী হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২২ মার্চ ক্লাসের বিরতির সময় নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সৈকত এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। এরই মধ্যে নবম শ্রেণীর পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী রায়হান এগিয়ে এসে সৈকতের পক্ষ নিয়ে মারুফ ও তার সহপাঠী নাফিজ, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

আশেপাশের আরও কিছু শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে ওই স্থানে নবম এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিন্তু তৎক্ষণাৎ ক্লাস শুরু হওয়ার সময় হয়ে যাওয়ায় তারা যার যার ক্লাসে চলে যায়। দুপুরে টিফিন বিরতিতে পুনরায় তাদের দেখা হলে রায়হান দশম শ্রেণী পড়ুয়া মারুফসহ অন্যদের পরবর্তীতে দেখে নেবে বলে হুমকি প্রদান করে।

এরও আগে গত ১৯ মার্চ সকালে মারুফের বন্ধু সিয়াম এবং রায়হানের মধ্যে তর্কবিতর্কের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা থাকায় একটি রেষারেষির পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল। পরবর্তীতে পূর্বের ঘটনার জের ধরে রায়হান ও তার সহপাঠীদের মধ্যে প্রতিশোধ প্রবণতা এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। যার ফলে ঐ দিনের অমিমাংসিত ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিন স্কুল ছুটির পরপর রায়হান তার দলবল নিয়ে মারুফসহ অন্যদের পিছু নিতে থাকে। রায়হানসহ আরও বেশ কয়েকজন বিদ্যালয় সংলগ্ন পাংগাশিয়া ব্রিজের কাছাকাছি গিয়ে মারুফ, নাফিজ, সিয়ামসহ অন্যদের ব্রিজের ওপর গতিরোধ করে। মারুফ, সিয়াম, নাফিজসহ অন্যরা ওই ব্রিজের কাছাকাছি গেলে রায়হানের নেতৃত্বে ব্রিজের ওপর আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সাইদুর ওরফে সৈকত, হাসিব ওরফে হৃদয়, নাঈম হোসেন, সিফাত এবং মশিউর মিলে মারুফ, নাফিজসহ অন্যদের মারধর শুরু করে।

এরপর রায়হান ছুরি নিয়ে এলোপাতাড়ি সিয়াম, মারুফ ও নাফিজকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রায়হানের ছুরিকাঘাতের ফলে তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। ঘটনাস্থলে তিন শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে হত্যাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিয়াম, নাফিজ ও মারুফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ ও নাফিজকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ এবং নাফিজকে মৃত ঘোষণা করে।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে ইন্দ্রকুল বটতলা চৌরাস্তা বাজারে মারুফের বন্ধু সিয়ামের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত রায়হানের তর্কবিতর্ক হয়। যার একপর্যায়ে তাদের উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এছাড়া তাদের মধ্যে পূর্ব থেকে বেশ কিছু বিরোধ চলে আসছিল। এসব ঘটনার জের ধরে স্কুল ছুটির পর রায়হানের নেতৃত্বে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। গ্রেপ্তারকৃত রায়হান নিয়মিত ফ্রি-ফায়ার এবং পাবজি গেম্স এ আসক্ত ছিল। এসব গেমস্ এ মারামারি দেখে এ ধরনের নৃশংস কাজে উৎসাহিত হয়েছে বলে জানায়।

খন্দকার আল মঈন জানান, ঘটনার পর গ্রেপ্তারকৃত আসামি রায়হান ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে প্রথমে নিজ বাড়িতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি ধৌত করে তৎক্ষণাৎ বাউফলের ধুলিয়া লঞ্চঘাট হতে লঞ্চযোগে ঢাকায় পৌঁছে। লঞ্চযোগে ঢাকায় আসার সময় পথিমধ্যে সে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি নদীতে ফেলে দেয়। এরপর সে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলযোগে নরসিংদীর রায়পুরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এক পরিচিত বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং গ্রেপ্তারকৃত হাসিব ওরফে হৃদয় হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পটুয়াখালী থেকে বাসযোগে ঢাকায় পৌঁছে পল্লবীতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেয়। পরে সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত রায়হান ওরফে রিমন এবং গ্রেপ্তারকৃত হাসিবুল ওরফে হৃদয় স্থানীয় স্কুলটির নবম শ্রেণীর ছাত্র। তারা তাদের সমমনা কিছু উশৃঙ্খল সহপাঠীদের নিয়ে পাংগাশিয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য সবসময় তাদের সঙ্গে ছুরি, চাকু ইত্যাদি বহন করত এবং মারামারিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক বিভিন্ন ঘটনায় লিপ্ত থাকত। তাদের উশৃঙ্খল এবং ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের জন্য স্থানীয় স্কুল শিক্ষকসহ অভিভাবকরা তাদের অপছন্দ করত। তারা এলাকায় তাদের সমবয়সী কিশোরদেরকে নিয়ন্ত্রণ করত এবং নানা অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দিত। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত হাসিবুল এলাকায় বিভিন্ন সময়ে মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃত রায়হানের যাবতীয় অপকর্মের অন্যতম সহযোগী হিসেবে থাকত বলেও জানান র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।

শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মির্জাগঞ্জে মানববন্ধন

টেকসই ফসল উৎপাদনে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

কালীগঞ্জে আজিম হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথা দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশে

মানুষের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে : জি এম কাদের

অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্য আটক

সরিষাবাড়ীতে মাধ্যমিক শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে দিনব্যাপী কর্মশালা

ছবি

পঞ্চাশ বছরের পুরাতন রাস্তা বন্ধের অভিযোগ দুর্ভোগে ১৫ পরিবার

ছবি

কুড়িগ্রামে রেলের পুকুর ভরাট করে ঘর নির্মাণের চেষ্টা

ভোটপূনর্গণনায় বিজয়ী হলেন পরাজিত প্রার্থী

ঘিওরে ১১দিন ব্যাপি লোকনাথ ব্রহ্মাচারীর তিরোধান উৎসব

হবিগঞ্জে বাসচাপায় অটোরিকশা চালকসহ নিহত ৩

ছবি

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, ২ যুবক নিহত

ছবি

বালুয়াকান্দী ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামানের বিরুদ্দে সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের তদন্ত সম্পন্ন

ছবি

পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে থাকছে নানান কর্মসূচি

ছবি

সোনারগাঁয়ে শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৩ তম তিরোধান উৎসব

শরীয়তপুরে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

ছবি

সিলেটে বিএনপির প্রার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিস

ছবি

হবিগঞ্জে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ৩

ছবি

শ্যামপুরে রাসায়নিক গুদাম উদ্বোধন আজ

ছবি

তেলবাহী জাহাজের ট্যাংকারে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬

ছবি

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে খাদ্য রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছি: খাদ্যমন্ত্রী

ফের অপহরণের শিকার ৫ রোহিঙ্গা যুবক

ছবি

ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ঝিনাইদহের আক্তারুজ্জামান যা জানালেন

ছবি

পদ্মায় গোসলে নেমে মৃত্যু, দ্বিতীয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

ছবি

প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৩

ছবি

নির্বাচনে না এলে বিএনপির অবস্থা যা হতে পারে, জানালেন হানিফ

ছবি

রংপুরে অভিযোগ তদন্তে গিয়ে হামলার শিকার ৪ পুলিশ

ছবি

নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

নৌকার প্রার্থীর উঠান বৈঠকে সংঘর্ষ, আহত ৫

ছবি

রাসিক নির্বাচন : ইশতেহারে ১০৫ প্রতিশ্রুতি লিটনের

ছবি

বিসিসি নির্বাচন : নৌকা প্রতীকের প্রচারে ১৪ দল

বানিয়াচং বজ্রপাতে রাখালের প্রাণহানি

ছবি

লেকে গোসল করতে নেমে মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যু

ছবি

সৌদি পৌঁছেছেন ৪৭ হাজার ৩৭৪ হজযাত্রী, মৃত্যু ১

ছবি

হেফাজত নেতা মাওলানা ইয়াহইয়া আর নেই

tab

সারাদেশ

তুচ্ছ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী খুনে দুই আসামি গ্রেপ্তার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পটুয়াখালীর বাউফলে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২২ মার্চ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী মো. মারুফ হোসেনে বাপ্পী এবং মো. নাফিজ মোস্তফা আনছারী একই স্কুলে পড়ুয়া কয়েকজন উশৃঙ্খল শিক্ষার্থীর হাতে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে বাউফল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৮। পরে গতকাল সোমবার রাতে নরসিংদীর রায়পুরা থেকে মামলার প্রধান আসামি রায়হান ও রাজধানীর পল্লবী থেকে তার অন্যতম সহযোগী হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২২ মার্চ ক্লাসের বিরতির সময় নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সৈকত এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। এরই মধ্যে নবম শ্রেণীর পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী রায়হান এগিয়ে এসে সৈকতের পক্ষ নিয়ে মারুফ ও তার সহপাঠী নাফিজ, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

আশেপাশের আরও কিছু শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে ওই স্থানে নবম এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিন্তু তৎক্ষণাৎ ক্লাস শুরু হওয়ার সময় হয়ে যাওয়ায় তারা যার যার ক্লাসে চলে যায়। দুপুরে টিফিন বিরতিতে পুনরায় তাদের দেখা হলে রায়হান দশম শ্রেণী পড়ুয়া মারুফসহ অন্যদের পরবর্তীতে দেখে নেবে বলে হুমকি প্রদান করে।

এরও আগে গত ১৯ মার্চ সকালে মারুফের বন্ধু সিয়াম এবং রায়হানের মধ্যে তর্কবিতর্কের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা থাকায় একটি রেষারেষির পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল। পরবর্তীতে পূর্বের ঘটনার জের ধরে রায়হান ও তার সহপাঠীদের মধ্যে প্রতিশোধ প্রবণতা এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। যার ফলে ঐ দিনের অমিমাংসিত ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিন স্কুল ছুটির পরপর রায়হান তার দলবল নিয়ে মারুফসহ অন্যদের পিছু নিতে থাকে। রায়হানসহ আরও বেশ কয়েকজন বিদ্যালয় সংলগ্ন পাংগাশিয়া ব্রিজের কাছাকাছি গিয়ে মারুফ, নাফিজ, সিয়ামসহ অন্যদের ব্রিজের ওপর গতিরোধ করে। মারুফ, সিয়াম, নাফিজসহ অন্যরা ওই ব্রিজের কাছাকাছি গেলে রায়হানের নেতৃত্বে ব্রিজের ওপর আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সাইদুর ওরফে সৈকত, হাসিব ওরফে হৃদয়, নাঈম হোসেন, সিফাত এবং মশিউর মিলে মারুফ, নাফিজসহ অন্যদের মারধর শুরু করে।

এরপর রায়হান ছুরি নিয়ে এলোপাতাড়ি সিয়াম, মারুফ ও নাফিজকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রায়হানের ছুরিকাঘাতের ফলে তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। ঘটনাস্থলে তিন শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে হত্যাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিয়াম, নাফিজ ও মারুফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ ও নাফিজকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ এবং নাফিজকে মৃত ঘোষণা করে।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে ইন্দ্রকুল বটতলা চৌরাস্তা বাজারে মারুফের বন্ধু সিয়ামের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত রায়হানের তর্কবিতর্ক হয়। যার একপর্যায়ে তাদের উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এছাড়া তাদের মধ্যে পূর্ব থেকে বেশ কিছু বিরোধ চলে আসছিল। এসব ঘটনার জের ধরে স্কুল ছুটির পর রায়হানের নেতৃত্বে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। গ্রেপ্তারকৃত রায়হান নিয়মিত ফ্রি-ফায়ার এবং পাবজি গেম্স এ আসক্ত ছিল। এসব গেমস্ এ মারামারি দেখে এ ধরনের নৃশংস কাজে উৎসাহিত হয়েছে বলে জানায়।

খন্দকার আল মঈন জানান, ঘটনার পর গ্রেপ্তারকৃত আসামি রায়হান ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে প্রথমে নিজ বাড়িতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি ধৌত করে তৎক্ষণাৎ বাউফলের ধুলিয়া লঞ্চঘাট হতে লঞ্চযোগে ঢাকায় পৌঁছে। লঞ্চযোগে ঢাকায় আসার সময় পথিমধ্যে সে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি নদীতে ফেলে দেয়। এরপর সে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলযোগে নরসিংদীর রায়পুরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এক পরিচিত বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং গ্রেপ্তারকৃত হাসিব ওরফে হৃদয় হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পটুয়াখালী থেকে বাসযোগে ঢাকায় পৌঁছে পল্লবীতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেয়। পরে সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত রায়হান ওরফে রিমন এবং গ্রেপ্তারকৃত হাসিবুল ওরফে হৃদয় স্থানীয় স্কুলটির নবম শ্রেণীর ছাত্র। তারা তাদের সমমনা কিছু উশৃঙ্খল সহপাঠীদের নিয়ে পাংগাশিয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য সবসময় তাদের সঙ্গে ছুরি, চাকু ইত্যাদি বহন করত এবং মারামারিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক বিভিন্ন ঘটনায় লিপ্ত থাকত। তাদের উশৃঙ্খল এবং ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের জন্য স্থানীয় স্কুল শিক্ষকসহ অভিভাবকরা তাদের অপছন্দ করত। তারা এলাকায় তাদের সমবয়সী কিশোরদেরকে নিয়ন্ত্রণ করত এবং নানা অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দিত। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত হাসিবুল এলাকায় বিভিন্ন সময়ে মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃত রায়হানের যাবতীয় অপকর্মের অন্যতম সহযোগী হিসেবে থাকত বলেও জানান র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।

back to top