বরগুনা : পায়রা নদীর বেড়িবাঁধে ফের ভাঙন। নিশানবাড়িয়া এলাকায় ভাঙনের একাংশ -সংবাদ
বরগুনার তালতলী উপজেলায় পায়রা নদীর বেড়িবাঁধে ফের নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভেঙে যাচ্ছে বিশখালী নদীর তীর রামনা, কাকচিড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম। তবে ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদ্যোগ কম।
তালতলী উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় নতুন করে দেখা দিয়েছে পায়রা নদীর ভাঙন। এর ফলে উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদ বঙ্গোপসাগরের লোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছে। এছাড়া জয়ালভাঙ্গা, ছোটবগি, পঞ্চাকোড়ালীয়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। একইসঙ্গে বিশখালী নদীর ভাঙনে বামনা উপজেলার রামনা চলাভাঙ্গা এবং পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া, হরিদ্রা ছোনবুনিয়ায় ব্যাপক ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত পরিবার। বাড়িঘর হারিয়ে বহু লোক আশ্রয় নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার পাশে বা শহরের বস্তিতে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিকল্পিত আর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে পড়তে হয় তাদের। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন তারা। ভুক্তভোগীরা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধই পুনর্নির্মাণ করতে পারেনি নতুন করে পায়রা বিশখালির ভাঙন গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া এলাকায় পায়রা নদীর প্রবল জোয়ারে বেড়িবাঁধ প্লাবিত হলে ভাঙনের কবলে পড়ে। ভাঙনের ফলে বর্তমানে বাঁধের এই অংশে দেড় থেকে দুই ফুট মাত্র অবশিষ্ট রয়েছে। তাৎক্ষণিক মেরামত করা না গেলে পরবর্তী জোয়ারে বাঁধের এই অংশ পুরোপুরি ধসে গিয়ে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে। এছাড়াও এই এলাকার প্রায় ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় বাসিন্দা সলেমান বলেন, যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এর আগেও কয়েকবার বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে এলাকায় লোনা পানি ঢুকলে সব ধরনের ফসল ও গাছ মারা যায়। ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়ে। তখন গরু-ছাগলসহ পশু-পাখি নিয়ে বিপদে পড়তে হয়। বাঁধ ঠিক হলে আবার ঘর ঠিক করে বসবাস শুরু করেন। একটু গুছিয়ে উঠতেই দেখা যায় আবার বাঁধ ভেঙে সব শেষ হয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, তেঁতুল বাড়িয়া এলাকায় আবারও বেড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার মানুষ। এবারও তাই হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক গ্রাম ডুবে যাবে। এদিকে বিষখালী নদীর ভাঙনে পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় শত শত লোক পানি উন্নয়ন বোর্ডে রাস্তার পাশে বা শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হাসান বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে একজন উপসহকারী প্রকৌশলীকে সার্ভে করতে পাঠিয়েছেন। সার্ভে রিপোর্ট দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,ক্ষতিগ্রস্থ সব বেড়িবাঁধ মেরামত সম্ভব হয়নি অর্থ বরাদ্ধ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে প্রলঙ্করী ঘূর্নিঝড় সিডরে উপকূলীয় জেলা বরগুনা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে তালতলী উপজেলার মানুষের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়। এরপর থেকেই ঝড় ও জলচ্ছাস থেকে বাঁচতে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বরগুনা : পায়রা নদীর বেড়িবাঁধে ফের ভাঙন। নিশানবাড়িয়া এলাকায় ভাঙনের একাংশ -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
বরগুনার তালতলী উপজেলায় পায়রা নদীর বেড়িবাঁধে ফের নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভেঙে যাচ্ছে বিশখালী নদীর তীর রামনা, কাকচিড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম। তবে ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদ্যোগ কম।
তালতলী উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় নতুন করে দেখা দিয়েছে পায়রা নদীর ভাঙন। এর ফলে উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদ বঙ্গোপসাগরের লোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছে। এছাড়া জয়ালভাঙ্গা, ছোটবগি, পঞ্চাকোড়ালীয়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। একইসঙ্গে বিশখালী নদীর ভাঙনে বামনা উপজেলার রামনা চলাভাঙ্গা এবং পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া, হরিদ্রা ছোনবুনিয়ায় ব্যাপক ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত পরিবার। বাড়িঘর হারিয়ে বহু লোক আশ্রয় নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার পাশে বা শহরের বস্তিতে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিকল্পিত আর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে পড়তে হয় তাদের। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন তারা। ভুক্তভোগীরা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধই পুনর্নির্মাণ করতে পারেনি নতুন করে পায়রা বিশখালির ভাঙন গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া এলাকায় পায়রা নদীর প্রবল জোয়ারে বেড়িবাঁধ প্লাবিত হলে ভাঙনের কবলে পড়ে। ভাঙনের ফলে বর্তমানে বাঁধের এই অংশে দেড় থেকে দুই ফুট মাত্র অবশিষ্ট রয়েছে। তাৎক্ষণিক মেরামত করা না গেলে পরবর্তী জোয়ারে বাঁধের এই অংশ পুরোপুরি ধসে গিয়ে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে। এছাড়াও এই এলাকার প্রায় ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় বাসিন্দা সলেমান বলেন, যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এর আগেও কয়েকবার বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে এলাকায় লোনা পানি ঢুকলে সব ধরনের ফসল ও গাছ মারা যায়। ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়ে। তখন গরু-ছাগলসহ পশু-পাখি নিয়ে বিপদে পড়তে হয়। বাঁধ ঠিক হলে আবার ঘর ঠিক করে বসবাস শুরু করেন। একটু গুছিয়ে উঠতেই দেখা যায় আবার বাঁধ ভেঙে সব শেষ হয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, তেঁতুল বাড়িয়া এলাকায় আবারও বেড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার মানুষ। এবারও তাই হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক গ্রাম ডুবে যাবে। এদিকে বিষখালী নদীর ভাঙনে পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় শত শত লোক পানি উন্নয়ন বোর্ডে রাস্তার পাশে বা শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হাসান বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে একজন উপসহকারী প্রকৌশলীকে সার্ভে করতে পাঠিয়েছেন। সার্ভে রিপোর্ট দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,ক্ষতিগ্রস্থ সব বেড়িবাঁধ মেরামত সম্ভব হয়নি অর্থ বরাদ্ধ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে প্রলঙ্করী ঘূর্নিঝড় সিডরে উপকূলীয় জেলা বরগুনা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে তালতলী উপজেলার মানুষের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়। এরপর থেকেই ঝড় ও জলচ্ছাস থেকে বাঁচতে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।