গরমে বেশি ভোগান্তিতে বয়স্করা -সোহরাব আলম
গরম যেন পিছু ছাড়ছেই না। তীব্র গরমে অস্থির হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চল। গত কয়েকদিন ধরে চলছে এই অবস্থা। কোথাও কোথাও দু-এক পশলা বৃষ্টিপাত হলেও গরমের তীব্রতা থেকে রেহাই মেলেনি। এর সঙ্গে দফায় দফায় লোডশেডিং ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
পুরো মে মাস বৃষ্টিস্নাত দিন পার করার পূর্বাভাস দেয়া হলেও বৃষ্টি হয়েছে মাত্র তিন থেকে চার দিন। এ সময় বৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টি হচ্ছে না গরমও কমছে না জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে আগামী তিন দিন এমনই গরম থাকবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং বৃষ্টি কম থাকতে পারে।
শুক্রবার (২ জুন) ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গা ছাড়া সারাদেশে তাপপ্রবাহ বইছে। চার জেলায় তীব্র আকার ধারণ করেছে তাপপ্রবাহ। এসব অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে।
শুক্রবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী এবং সৈয়দপুরের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং সিলেট, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান তিনি। এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, আগামী তিন দিন সারাদেশের চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
গাইবান্ধা থেকে সুধির রায় মুঠোফোনে বলেন, ‘গাইবান্ধায প্রচন্ড গরম। সঙ্গে লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁচেছে।। এই অবস্থা আর কতদিন চলবে । এমন গরম থাকলে বয়স্ক ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়বে।’
রংপুর থেকে আবদুর রহমান বলেন, ‘দিনে এবং রাতে একই রকম আবহাওয়া, প্রচন্ড গরম। এটা সহ্য করার মতো না। শুক্রবার গরম যেন আরও বেশি। এ কোন গজব কে জানে।’
আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, গত চার-পাঁচ দিন মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় আছে। ফলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে কম। এর ফলে গরম বেড়েছে বেশি। এছাড়া বাতাসে প্রচুর জলীয়বাষ্প রয়েছে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা বেশি বেশি হলে সেটি সূর্যের তাপমাত্রাকে ধরে রাখে। ফলে গরম বেশি অনুভূত হয় বলে জানান তিনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়া বিশেষজ্ঞ কমিটি গত বৃহস্পতিবার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জুন মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষাকাল) বিস্তার লাভ করতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মিটিং শেষে জানানো হয় এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, এর মধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। জুনে দেশে ৪ থেকে ৬ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে এই অধিদপ্তর।
‘চলতি মাসে দেশে ১ থেকে ২টি বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এবং দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে।’
সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪ দশমিক ১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, মে মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। সারাদেশের গড় তাপমাত্রা ০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের সূত্রের বরাতে জুন মাসে ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
গরমে বেশি ভোগান্তিতে বয়স্করা -সোহরাব আলম
শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩
গরম যেন পিছু ছাড়ছেই না। তীব্র গরমে অস্থির হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চল। গত কয়েকদিন ধরে চলছে এই অবস্থা। কোথাও কোথাও দু-এক পশলা বৃষ্টিপাত হলেও গরমের তীব্রতা থেকে রেহাই মেলেনি। এর সঙ্গে দফায় দফায় লোডশেডিং ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
পুরো মে মাস বৃষ্টিস্নাত দিন পার করার পূর্বাভাস দেয়া হলেও বৃষ্টি হয়েছে মাত্র তিন থেকে চার দিন। এ সময় বৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টি হচ্ছে না গরমও কমছে না জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে আগামী তিন দিন এমনই গরম থাকবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং বৃষ্টি কম থাকতে পারে।
শুক্রবার (২ জুন) ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গা ছাড়া সারাদেশে তাপপ্রবাহ বইছে। চার জেলায় তীব্র আকার ধারণ করেছে তাপপ্রবাহ। এসব অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে।
শুক্রবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী এবং সৈয়দপুরের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং সিলেট, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান তিনি। এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, আগামী তিন দিন সারাদেশের চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
গাইবান্ধা থেকে সুধির রায় মুঠোফোনে বলেন, ‘গাইবান্ধায প্রচন্ড গরম। সঙ্গে লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁচেছে।। এই অবস্থা আর কতদিন চলবে । এমন গরম থাকলে বয়স্ক ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়বে।’
রংপুর থেকে আবদুর রহমান বলেন, ‘দিনে এবং রাতে একই রকম আবহাওয়া, প্রচন্ড গরম। এটা সহ্য করার মতো না। শুক্রবার গরম যেন আরও বেশি। এ কোন গজব কে জানে।’
আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, গত চার-পাঁচ দিন মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় আছে। ফলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে কম। এর ফলে গরম বেড়েছে বেশি। এছাড়া বাতাসে প্রচুর জলীয়বাষ্প রয়েছে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা বেশি বেশি হলে সেটি সূর্যের তাপমাত্রাকে ধরে রাখে। ফলে গরম বেশি অনুভূত হয় বলে জানান তিনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়া বিশেষজ্ঞ কমিটি গত বৃহস্পতিবার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জুন মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষাকাল) বিস্তার লাভ করতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মিটিং শেষে জানানো হয় এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, এর মধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। জুনে দেশে ৪ থেকে ৬ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে এই অধিদপ্তর।
‘চলতি মাসে দেশে ১ থেকে ২টি বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এবং দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে।’
সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪ দশমিক ১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, মে মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। সারাদেশের গড় তাপমাত্রা ০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের সূত্রের বরাতে জুন মাসে ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।