শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা নাওডোবা ইউনিয়নের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৩ দিন কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার(৩০ মে) সকাল ৯টায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার অন্তর্গত পশ্চিম নাওডোবার মাধ্যমিক বিদ্যালয় আমজাদিয়া একাডেমীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার অভিযুক্ত ঐ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো: মাসুদুর রহমান নাওডোবা হাজী জৈনুদ্দিন মাদবর কান্দি গ্রামের মৃত নুরুল মিয়ার পুত্র।
আমজাদিয়া একাডেমী বিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হলেও মাঝেমধ্যে তাকে দিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির দু-একটি ক্লাস নেয়া হতো।এছাড়াও মাসুদুর রহমান ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যক্তিগতভাবে কোচিং করাতেন।
ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনের মত সেদিন সকাল ৯টায় তিনি বিদ্যালয়ে যান। পরে মাসুদুর রহমান একটি কাজের ছুতায় বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে মাসুদুর রহমান তাকে ডাকেন। সেখানে গেলে মাসুদুর রহমান ঐ শিক্ষার্থীর সাথে অশালীন কথাবার্তা বলে এবং শরীরের আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়। একপর্যায় ধর্ষণের জন্য উদ্যত হলে ঐ শিক্ষার্থী তৃষ্ণা পেয়েছে বলে পানি খেতে চায়। তখন মাসুদুর রহমান পানি আনতে গেলে ঐ শিক্ষার্থী দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে এবং তার সহপাঠি ও শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। এরপর ঐ দিনই প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্রছাত্রীরা অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানের বিচারের দাবীতে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করেন।
ঐ শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি এই খারাপ লোকটার কঠিন শাস্তি চাই। আমার সাথে এমনটা হওয়ার পরে জানতে পারি আমার আরেক বান্ধবীর সাথেও এমন ব্যবহার করেছিল। আমার ঐ বান্ধবী ভয়ে কয়কদিন স্কুলে আসেনি। ভয়ে কারো কিছু জানায়ওনি।'
শিক্ষার্থীর বাবা জানান, ঘটনার পরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমাকে অপরাধী মাসুদুর রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মজিবর মাদবর এবং শরীফুল ইসলাম হাওলাদার থানায় অভিযোগ করতে নিষেধ করেছেন। তাই এখনো থানায় অভিযোগ করিনি।
তিনি আরো বলেন, আমার শিশু কন্যার সাথে যে ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে তা মানসিক বিকারগ্রস্ত লোকেরাই করতে পারে। আমি ওই অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরণের চিন্তা মাথায়ও না আনে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানের বাড়ীতে গিয়ে তাকে সহ তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদককে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এবং তার পক্ষে নিউজ করার অনুরোধ করে অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দেন।
আমজাদিয়া একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জিয়া সংবাদকে বলেন, 'ঘটনার পর পরই আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির উদ্যোগে অফিস সহকারী মাসুদুর রহমানকে এক মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বদা সজাগ আছি এবং সামনে আরো বেশী সতর্ক থাকব।'
এবিষয়ে আমজাদিয়া একাডেমীর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর ঢালী সংবাদকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে জানার পর আমি ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করি। সভায় আলোচনা করে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানকে এক মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত সহ ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি এবং তদন্ত কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবাকে থানায় অভিযোগ করতে নিষেধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবাকে আশ্বস্ত করেছি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এর সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আইনের আশ্রয় নেয়ার বিষয়ে তার সাথে আমার কোন কথা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, 'এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার কিংবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোন লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলমান রয়েছে। অভিযুক্ত বর্তমানে পলাতক রয়েছে।'
এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সংবাদকে বলেন, 'ঘটনার বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমাকে জানিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহ সুষ্ঠু তদন্তে যেসকল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা অবগত করেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার চাইলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনী সহায়তা প্রদান করা হবে।'
রোববার, ০৪ জুন ২০২৩
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা নাওডোবা ইউনিয়নের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৩ দিন কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার(৩০ মে) সকাল ৯টায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার অন্তর্গত পশ্চিম নাওডোবার মাধ্যমিক বিদ্যালয় আমজাদিয়া একাডেমীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার অভিযুক্ত ঐ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো: মাসুদুর রহমান নাওডোবা হাজী জৈনুদ্দিন মাদবর কান্দি গ্রামের মৃত নুরুল মিয়ার পুত্র।
আমজাদিয়া একাডেমী বিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হলেও মাঝেমধ্যে তাকে দিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির দু-একটি ক্লাস নেয়া হতো।এছাড়াও মাসুদুর রহমান ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যক্তিগতভাবে কোচিং করাতেন।
ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনের মত সেদিন সকাল ৯টায় তিনি বিদ্যালয়ে যান। পরে মাসুদুর রহমান একটি কাজের ছুতায় বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে মাসুদুর রহমান তাকে ডাকেন। সেখানে গেলে মাসুদুর রহমান ঐ শিক্ষার্থীর সাথে অশালীন কথাবার্তা বলে এবং শরীরের আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়। একপর্যায় ধর্ষণের জন্য উদ্যত হলে ঐ শিক্ষার্থী তৃষ্ণা পেয়েছে বলে পানি খেতে চায়। তখন মাসুদুর রহমান পানি আনতে গেলে ঐ শিক্ষার্থী দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে এবং তার সহপাঠি ও শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। এরপর ঐ দিনই প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্রছাত্রীরা অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানের বিচারের দাবীতে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করেন।
ঐ শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি এই খারাপ লোকটার কঠিন শাস্তি চাই। আমার সাথে এমনটা হওয়ার পরে জানতে পারি আমার আরেক বান্ধবীর সাথেও এমন ব্যবহার করেছিল। আমার ঐ বান্ধবী ভয়ে কয়কদিন স্কুলে আসেনি। ভয়ে কারো কিছু জানায়ওনি।'
শিক্ষার্থীর বাবা জানান, ঘটনার পরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমাকে অপরাধী মাসুদুর রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মজিবর মাদবর এবং শরীফুল ইসলাম হাওলাদার থানায় অভিযোগ করতে নিষেধ করেছেন। তাই এখনো থানায় অভিযোগ করিনি।
তিনি আরো বলেন, আমার শিশু কন্যার সাথে যে ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে তা মানসিক বিকারগ্রস্ত লোকেরাই করতে পারে। আমি ওই অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরণের চিন্তা মাথায়ও না আনে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানের বাড়ীতে গিয়ে তাকে সহ তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদককে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এবং তার পক্ষে নিউজ করার অনুরোধ করে অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দেন।
আমজাদিয়া একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জিয়া সংবাদকে বলেন, 'ঘটনার পর পরই আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির উদ্যোগে অফিস সহকারী মাসুদুর রহমানকে এক মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বদা সজাগ আছি এবং সামনে আরো বেশী সতর্ক থাকব।'
এবিষয়ে আমজাদিয়া একাডেমীর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর ঢালী সংবাদকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে জানার পর আমি ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করি। সভায় আলোচনা করে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানকে এক মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত সহ ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি এবং তদন্ত কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবাকে থানায় অভিযোগ করতে নিষেধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবাকে আশ্বস্ত করেছি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এর সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আইনের আশ্রয় নেয়ার বিষয়ে তার সাথে আমার কোন কথা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, 'এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার কিংবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোন লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলমান রয়েছে। অভিযুক্ত বর্তমানে পলাতক রয়েছে।'
এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সংবাদকে বলেন, 'ঘটনার বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমাকে জানিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহ সুষ্ঠু তদন্তে যেসকল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা অবগত করেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার চাইলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনী সহায়তা প্রদান করা হবে।'