দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য ‘সংলাপের’ সম্ভাবনার কথা বললেও তা নাকচ করে দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এদিকে ক্ষমতাসীন নেতাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতারা।
গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের সমাবেশে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা বলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আসুন, গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমরা আপনাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দ্বার খোলা। তিনি বলেছেন, যে কোনভাবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে তিনি প্রস্তুত। আমরা বলতে চাই, বিগত সময়ে জাতিসংঘ যেভাবে তারানকো সাহেবকে পাঠিয়েছিলেন। আামাদের দুই দলকে নিয়ে এক সঙ্গে বসে মিটিং করেছিলেন। আজকেও প্রয়োজনে এই ধরনের দলাদলি না করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক।’
আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই। কোথায় ফারাক? সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে বাধা কোথায়? কীভাবে সেটা নিরসন করা যায়। এটা আলোচনার মধ্য দিয়েই সুরাহা হতে পারে। অন্য কোন পথে নয়।’
যদিও বুধবার (৭ জুন) আওয়ামী লীগের দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই বিষয়টি নাকচ করে দেন। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আলোচনার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের নিজেদের সমস্যা আমরা আলোচনা করব, প্রয়োজন হলে নিজেরাই সমাধান করব।’
আর ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্ত্যবটি দিয়েছেন সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। এটি দল, সরকার এমনকি ১৪ দল কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।’
আমির হোসেন আমু নিজেও দিয়েছেন নতুন বক্তব্য
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বুধবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় আমু বলেছেন, ‘আলোচনার জন্য কাউকে বলা হয় নাই, কাউকে দাওয়াত দেয়া হয় নাই। কাউকে আহ্বান করা হয় নাই। কাউকে আহ্বান করার সুযোগ নাই। এটা আওয়ামী লীগের বাড়ির দাওয়াত নয় যে দাওয়াত করে এনে খাওয়াব।’
সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমু সাহেবের কথা নাকি কাদের সাহেবের কথা, কোনটা সঠিক? আমু সাহেব জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কথা বললেন, আর কাদের সাহেব সংলাপের বিষয়ে বলেছেন সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন ভিন্ন কথা
বুধবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপ বিষয়ে আমির হোসেন আমু যে বক্তব্য রেখেছেন, তাকে কেন গুরুত্ব দিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিবের যুক্তি হলো, আমু ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র কি-না, সেটি তার জানা নেই। তাই তার এ বিষয়ের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেয়ার মানে হয় না।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনৈতিকদের অযাচিত হস্তক্ষেপ নিয়ে আপত্তিও তুলেছেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী। দিয়েছেন সতর্ক বার্তা।
সার্বিক বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘বিষয়টি আসলে ভুল বুঝাবুঝি। আমু ভাই যেটা বলেছেন, তা পলিটিক্যাল। যখন কোন সিদ্ধান্ত আসবে সেটা নেত্রীর (শেখ হাসিনা) পক্ষ থেকে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের চাপ আগেও ছিল, এখনও আছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এসব চাপ নিয়েই আওয়ামী লীগ রাজনীতি করছে, চাপ নিয়েই সরকার চালাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করলেও এবার তিনি কোন ধরনের আলোচনার ঘোর বিরোধী। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোন নির্বাচন হবে না, এটি তার অবস্থান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: দেশের প্রথম ‘সার্টিফায়েড ব্রডকাস্ট টেকনোলজিস্ট’ সালাউদ্দিন সেলিম
আন্তর্জাতিক: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা
অর্থ-বাণিজ্য: চলছে দারাজ ১২.১২ গ্র্যান্ড ইয়ার এন্ড সেল
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: কক্সবাজারে টিএমজিবির বার্ষিক পারিবারিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত