কয়েকদিনের তীব্র তাপপ্রবাহের পর রাজধানীসহ কয়েক জেলায় দেখা মিলেছে বৃষ্টির। তবে রাজধানীতে যে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে, তাতে অস্বস্তি কাটেনি, বরং বেড়েছে। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ রাজধানীতে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, বৃহস্পতিবারের (৮ জুন) সামান্য বৃষ্টির কারণে ঢাকার তাপমাত্রা তিন থেকে প্রায় চার ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণেই তাপমাত্রা কমেছে বলেও তাদের মত।
রাজধানীর সামান্য বৃষ্টি জনমনে অস্বস্তি বাড়িয়েছে। চারদিকে গুমোট ও ভ্যাপসা ভাব বিরাজ করছে। এর কারণ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, অন্তত তিন কারণে অস্বস্তি বেড়েছে। প্রথম কারণ হলো, যে প্রচন্ড তাপ সৃষ্টি হয়েছিল, তা দূর করতে রাজধানীতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি এখনও হয়নি। দ্বিতীয় কারণ, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি। এতে অস্বস্তি বেড়েছে। তৃতীয় কারণ হলো, আকাশ মেঘলা থাকার কারণে ভূ-পৃষ্ঠের তপ্ত হাওয়া বেরিয়ে যেতে পারছে না।
তবে আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বলেছেন, আজ বৃষ্টির পরিমাণ খানিকটা বাড়তে পারে। আর তাতে স্বস্তির ভাব আসতে পারে কিছুটা।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত বুধবার নারায়ণগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুরসহ কয়েক জেলায় বৃষ্টি পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে কোথাও পাঁচ মিনিট, কোথাও আধঘণ্টা।
এদিকে, গত মঙ্গলবার রাতে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান। তিনি এও বলেন, ‘কিন্তু এতে খুশি হওয়ার খুব একটা অবকাশ নেই। কারণ ঢাকায় বৃহস্পতিবার যদি বৃষ্টি হয়ও, এটা তাপমাত্রা কমাতে পারবে না। এটার জন্য আরও চার থেকে পাঁচ দিন অপেক্ষা করতে হবে।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ২৮ মে থেকে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে শুরু করে। গত বুধার পর্যন্ত টানা ১১ দিন বিভিন্ন এলাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। বুধবার দেশের রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এই তাপপ্রবাহের পাশাপাশি কিছু এলাকায় বৃষ্টির কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে বুধবার দুপুরের পরই রাজধানীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে থাকে। যদিও তাপমাত্রা খুব বেশি কমেনি। এদিন বিকেল সোয়া ৪টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরায় ‘সামান্য’ বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া দুপুর আড়াইটার পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আকাশে কালো মেঘের পর শুরু হয় বৃষ্টি।
চাপাইনবাবগঞ্জে গত বুধবার দুপুর ৩টার দিকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। ১৫ মিনিটের বৃষ্টিতে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। দীর্ঘদিনের গরমের পর সামান্য বৃষ্টিকেই তারা পরম পাওয়া মনে করছেন।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গত কয়েকদিন গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দিনাজপুরের জনজীবন। সেখানেও বৃষ্টির দেখা মিলেছে। গত বুধবার দুপুরের দিকে প্রায় ১৭ মিনিট ধরে বৃষ্টি হয়েছে জেলার কিছু কিছু এলাকায়। এতে স্বস্তি বোধ করছে মানুষ।
এদিকে, চলমান দাবদাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টিও হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় জানানো হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
দেশে টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে তপ্ত আবহাওয়ায় দেশের সবখানেই তীব্র গরমে অস্থির হয়ে উঠেছিল জনজীবন। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ে পরিস্থিতি হয়ে উঠে আরো অসহনীয়। ঘরে-বাইরে দিনে ও রাতে সমান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।
বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩
কয়েকদিনের তীব্র তাপপ্রবাহের পর রাজধানীসহ কয়েক জেলায় দেখা মিলেছে বৃষ্টির। তবে রাজধানীতে যে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে, তাতে অস্বস্তি কাটেনি, বরং বেড়েছে। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ রাজধানীতে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, বৃহস্পতিবারের (৮ জুন) সামান্য বৃষ্টির কারণে ঢাকার তাপমাত্রা তিন থেকে প্রায় চার ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণেই তাপমাত্রা কমেছে বলেও তাদের মত।
রাজধানীর সামান্য বৃষ্টি জনমনে অস্বস্তি বাড়িয়েছে। চারদিকে গুমোট ও ভ্যাপসা ভাব বিরাজ করছে। এর কারণ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, অন্তত তিন কারণে অস্বস্তি বেড়েছে। প্রথম কারণ হলো, যে প্রচন্ড তাপ সৃষ্টি হয়েছিল, তা দূর করতে রাজধানীতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি এখনও হয়নি। দ্বিতীয় কারণ, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি। এতে অস্বস্তি বেড়েছে। তৃতীয় কারণ হলো, আকাশ মেঘলা থাকার কারণে ভূ-পৃষ্ঠের তপ্ত হাওয়া বেরিয়ে যেতে পারছে না।
তবে আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বলেছেন, আজ বৃষ্টির পরিমাণ খানিকটা বাড়তে পারে। আর তাতে স্বস্তির ভাব আসতে পারে কিছুটা।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত বুধবার নারায়ণগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুরসহ কয়েক জেলায় বৃষ্টি পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে কোথাও পাঁচ মিনিট, কোথাও আধঘণ্টা।
এদিকে, গত মঙ্গলবার রাতে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান। তিনি এও বলেন, ‘কিন্তু এতে খুশি হওয়ার খুব একটা অবকাশ নেই। কারণ ঢাকায় বৃহস্পতিবার যদি বৃষ্টি হয়ও, এটা তাপমাত্রা কমাতে পারবে না। এটার জন্য আরও চার থেকে পাঁচ দিন অপেক্ষা করতে হবে।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ২৮ মে থেকে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে শুরু করে। গত বুধার পর্যন্ত টানা ১১ দিন বিভিন্ন এলাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। বুধবার দেশের রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এই তাপপ্রবাহের পাশাপাশি কিছু এলাকায় বৃষ্টির কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে বুধবার দুপুরের পরই রাজধানীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে থাকে। যদিও তাপমাত্রা খুব বেশি কমেনি। এদিন বিকেল সোয়া ৪টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরায় ‘সামান্য’ বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া দুপুর আড়াইটার পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আকাশে কালো মেঘের পর শুরু হয় বৃষ্টি।
চাপাইনবাবগঞ্জে গত বুধবার দুপুর ৩টার দিকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। ১৫ মিনিটের বৃষ্টিতে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। দীর্ঘদিনের গরমের পর সামান্য বৃষ্টিকেই তারা পরম পাওয়া মনে করছেন।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গত কয়েকদিন গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দিনাজপুরের জনজীবন। সেখানেও বৃষ্টির দেখা মিলেছে। গত বুধবার দুপুরের দিকে প্রায় ১৭ মিনিট ধরে বৃষ্টি হয়েছে জেলার কিছু কিছু এলাকায়। এতে স্বস্তি বোধ করছে মানুষ।
এদিকে, চলমান দাবদাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টিও হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় জানানো হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
দেশে টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে তপ্ত আবহাওয়ায় দেশের সবখানেই তীব্র গরমে অস্থির হয়ে উঠেছিল জনজীবন। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ে পরিস্থিতি হয়ে উঠে আরো অসহনীয়। ঘরে-বাইরে দিনে ও রাতে সমান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।