alt

অর্থ-বাণিজ্য

আইএমএফ-এর অধিকাংশ শর্ত পূরণ, চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় ফেব্রুয়ারিতে

রেজাউল করিম : বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এই ঋণের চতুর্থ কিস্তি ১১০ কোটি বা ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ছাড় হবে এমনটা আশা করছে সরকার। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, চতুর্থ কিস্তি পেতে যে-সব শর্ত আইএমএফ দিয়েছে সেগুলোর প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শর্ত পূরণ হয়েছে। সেহেতু আশা করা যায়, চতুর্থ কিস্তি পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর বিপরীতে কিছু শর্ত মেনে ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে তিন কিস্তির অর্থ ছাড় হয়েছে। আর সম্প্রতি সংস্থাটির প্রতিনিধি দল চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে আগের শর্তগুলোর বাস্তবায়ন মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। তারা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করে চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিবে।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য আইএমএফ যে-সব শর্ত দিয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই পূরণ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) কথা হয় বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনিও অনেকটা আশাবাদী, আইএমএফ এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা হবে না।

বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আইএমএফ ঋণের মোট অর্থ সাতটি কিস্তিতে ছাড় করতে। এর জন্য একেক কিস্তির জন্য ধারাবাহিকভাবে শর্তারোপ করে। ইতোমধ্যেই তিনটি কিস্তির অর্থ ছাড় হয়েছে। সামনে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় হবে। এই ছাড়ের জন্য সংস্থাটি যে-সব শর্ত দিয়েছে সেগুলোর প্রায় সবগুলোই পূরণ করেছে বাংলাদেশ। যেমন, জুন পর্যন্ত রিজার্ভ থাকতে হবে ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে বাংলাদেশের রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের বেশিই আছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য যে-সব মেকানিজম করার কথা তারা বলেছে সেগুলোও বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যে ধরনের সংস্কারের শর্ত দিয়েছে সেগুলোও বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের অগ্রগতিতে তারা খুশিই হবে।’

আইএমএফ এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা হবে না এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদও। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘প্রতিনিধি দলকে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নেবে যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়। সার্বিকভাবে ভেবেচিন্তে এমনভাবে কার্যক্রমে নেয়া হবে যাতে সেগুলো আগামী সরকারও অব্যাহত রাখে। এসব বিষয়ে তারাও সম্মত হয়েছে। তারা যতগুলো লক্ষ্যমাত্রা দেবে তার সব বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা, সেটা অন্য ব্যাপার। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা সহায়তা করবে এবং এর পরের কিস্তির অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা হবে না।’

পরের কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে এতোটা আশাবাদী হওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের দলটি রাজস্ব আহরণ, বাজেট ঘাটতি ও ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। এসব বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গেও তারা আলাদা বৈঠক করবে। সবকিছু বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, এসব বিষয়ে বর্তমান সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার সুফল পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে। আমরা তাদের জানিয়েছি, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা পুরোপুরি না হলেও অনেকটা ফিরে এসেছে। বর্তমানে মুদ্রা বিনিময় হার আগের মতো ওঠানামা করছে না। বেশ কয়েকটি ব্যাংকে কিছুটা তারল্য সহায়তা লাগলেও ভালোর দিকে ফিরে এসেছে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক।’

শুধু চলমান এই ঋণই নয় বাড়তি ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী তিনি। তিনি বলেন, ‘সরকার ব্যাংকসহ রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে যে সংস্কার করতে যাচ্ছে, সে জন্য আরও কিছু অর্থ দরকার হবে। পরের কিস্তি ছাড়ের পর আগামী মার্চে আবার পর্যালোচনা করতে আসবে। আলাপ-আলোচনার পর তা চূড়ান্ত হবে। বিশ্বব্যাংকের কাছেও অর্থ চাওয়া হয়েছে। সরকার আশা করছে, বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে আগামী জুন নাগাদ বাড়তি ৬০০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।’

উল্লেখ্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিনদিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়।

২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশকিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন এবং আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ডলার দিয়েছে। এখন চতুর্থ কিস্তিতে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে।

ছবি

প্রসাধনীতে শুল্ক বাড়ায় রাজস্ব নয়, বাড়বে অর্থপাচার-চোরাচালান: বিসিটিআইএ

ছবি

৪০ শতাংশ কৃষক যথাযথ মজুরি পান না: বিবিএসের জরিপ

বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ১১ ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত

চট্টগ্রামে সমন্বিত তৈরি পোশাক শিল্পাঞ্চল গড়ার প্রস্তাব বিজিএমইএর

অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন ১৭ লাখের বেশি করদাতা: এনবিআর

ছবি

বাক্কো ও আকিজ টেলিকমের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ছয় মাসের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার অনুমোদন

ছবি

সব সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমলো

ছবি

‘শাটডাউন’ এর মধ্যে কাস্টমস চাকরিকে অত্যাবশ্যক ঘোষণা করল সরকার

ছবি

স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলে তদন্তে ভয় নেই’— এনবিআর ইস্যুতে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য

ছবি

বিমানবন্দরের ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে কার্যক্রম গুটাতে বলল কর্তৃপক্ষ

ছবি

অর্থবছরের শেষ দিন শেয়ারবাজারে পতন

ছবি

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের নতুন ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেম

ছবি

রাজস্ব আদায় গতবারের চেয়ে বেশি হবে এটা নিশ্চিত: এনবিআর চেয়ারম্যান

রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, লেনদেন বন্ধ থাকবে

পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে: ডিবিএ সভাপতি

ছবি

দাম কমেছে অপো এ৩এক্স স্মার্টফোনের

ছবি

দুদক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার বেড়ে ৫

ছবি

রাজস্ব আদায়ে জোর, ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

ছবি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১.৩১ বিলিয়ন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

রিজার্ভের নতুন হিসাব প্রকাশ: নিট রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য উল্লম্ফন

স্টার্লিংয়ের এফডিআরের টাকা ফেরত দেয়নি ফারইস্ট ফাইন্যান্স, তদন্তে বিএসইসি

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে পোশাকের দাম বাড়ছে: এইচঅ্যান্ডএম সিইও

ছবি

আলোচনার আশা ভেঙে সচিবালয় থেকে ফিরে গেলেন এনবিআর আন্দোলনকারীরা

লজিস্টিক পলিসির বাস্তবায়নে সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান অপরিহার্য: ঢাকা চেম্বার

পরপর পাঁচ কার্যদিবস উত্থানে শেয়ারবাজার

ছবি

জাপান ও ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে

ছবি

‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিতে কাস্টমস কার্যক্রমে অচলাবস্থা

ছবি

‘শর্ত ছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহার করুন’—ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর অনুরোধ

ছবি

বিদেশিদের হস্তান্তরের আগপর্যন্ত এনসিটি পরিচালনায় আলোচনায় নৌবাহিনী

ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই

বাংলাদেশের কাপড়-পাট-সুতার পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ওয়েবসাইট চালু করলো বিডা

ছবি

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে হয়রানি দূর করার দাবি

tab

অর্থ-বাণিজ্য

আইএমএফ-এর অধিকাংশ শর্ত পূরণ, চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় ফেব্রুয়ারিতে

রেজাউল করিম

বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এই ঋণের চতুর্থ কিস্তি ১১০ কোটি বা ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ছাড় হবে এমনটা আশা করছে সরকার। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, চতুর্থ কিস্তি পেতে যে-সব শর্ত আইএমএফ দিয়েছে সেগুলোর প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শর্ত পূরণ হয়েছে। সেহেতু আশা করা যায়, চতুর্থ কিস্তি পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর বিপরীতে কিছু শর্ত মেনে ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে তিন কিস্তির অর্থ ছাড় হয়েছে। আর সম্প্রতি সংস্থাটির প্রতিনিধি দল চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে আগের শর্তগুলোর বাস্তবায়ন মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। তারা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করে চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিবে।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য আইএমএফ যে-সব শর্ত দিয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই পূরণ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) কথা হয় বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনিও অনেকটা আশাবাদী, আইএমএফ এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা হবে না।

বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আইএমএফ ঋণের মোট অর্থ সাতটি কিস্তিতে ছাড় করতে। এর জন্য একেক কিস্তির জন্য ধারাবাহিকভাবে শর্তারোপ করে। ইতোমধ্যেই তিনটি কিস্তির অর্থ ছাড় হয়েছে। সামনে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় হবে। এই ছাড়ের জন্য সংস্থাটি যে-সব শর্ত দিয়েছে সেগুলোর প্রায় সবগুলোই পূরণ করেছে বাংলাদেশ। যেমন, জুন পর্যন্ত রিজার্ভ থাকতে হবে ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে বাংলাদেশের রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের বেশিই আছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য যে-সব মেকানিজম করার কথা তারা বলেছে সেগুলোও বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যে ধরনের সংস্কারের শর্ত দিয়েছে সেগুলোও বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের অগ্রগতিতে তারা খুশিই হবে।’

আইএমএফ এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা হবে না এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদও। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘প্রতিনিধি দলকে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নেবে যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়। সার্বিকভাবে ভেবেচিন্তে এমনভাবে কার্যক্রমে নেয়া হবে যাতে সেগুলো আগামী সরকারও অব্যাহত রাখে। এসব বিষয়ে তারাও সম্মত হয়েছে। তারা যতগুলো লক্ষ্যমাত্রা দেবে তার সব বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা, সেটা অন্য ব্যাপার। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা সহায়তা করবে এবং এর পরের কিস্তির অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা হবে না।’

পরের কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে এতোটা আশাবাদী হওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের দলটি রাজস্ব আহরণ, বাজেট ঘাটতি ও ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। এসব বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গেও তারা আলাদা বৈঠক করবে। সবকিছু বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, এসব বিষয়ে বর্তমান সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার সুফল পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে। আমরা তাদের জানিয়েছি, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা পুরোপুরি না হলেও অনেকটা ফিরে এসেছে। বর্তমানে মুদ্রা বিনিময় হার আগের মতো ওঠানামা করছে না। বেশ কয়েকটি ব্যাংকে কিছুটা তারল্য সহায়তা লাগলেও ভালোর দিকে ফিরে এসেছে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক।’

শুধু চলমান এই ঋণই নয় বাড়তি ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী তিনি। তিনি বলেন, ‘সরকার ব্যাংকসহ রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে যে সংস্কার করতে যাচ্ছে, সে জন্য আরও কিছু অর্থ দরকার হবে। পরের কিস্তি ছাড়ের পর আগামী মার্চে আবার পর্যালোচনা করতে আসবে। আলাপ-আলোচনার পর তা চূড়ান্ত হবে। বিশ্বব্যাংকের কাছেও অর্থ চাওয়া হয়েছে। সরকার আশা করছে, বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে আগামী জুন নাগাদ বাড়তি ৬০০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।’

উল্লেখ্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিনদিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়।

২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশকিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন এবং আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ডলার দিয়েছে। এখন চতুর্থ কিস্তিতে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে।

back to top