জুন-জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর গত আগস্টে তা আবার বেড়েছে। গত সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। আর খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে আরও বেশি। মূল্যস্ফীতি বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। বরং শিল্প ও সেবা খাতে আয় কমেছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিবিএসের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই মাসে দেশে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেক বেড়ে গেছে। এ মাসে সার্বিক খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাই মাসে যেটি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আলু, ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতে। সেই সঙ্গে বন্যা এবং অতি বৃষ্টির কারণে আগস্ট মাসে পণ্য সরবরাহ চেইন ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।’
এদিকে মূল্যস্ফীতি দ্রুত গতিতে বাড়লেও মানুষের আয় সে হারে বাড়েনি। বরং কোন কোন খাতে আয় কমেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির হার ও মজুরি বৃদ্ধির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ফারাক স্বল্প আয়ের ও অদক্ষ শ্রমিকদের প্রকৃত আয় কমিয়ে দিয়েছে। তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কমেছে ক্রয়ক্ষমতা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বিবিএস সূত্রে জানা যায়, আগস্টে মজুরি হার সামান্য বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশে, যা জুলাইয়ে ছিল ৭ দশমিক ৫২, জুনে ৭ দশমিক ৩৯ এবং মে মাসে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এদিকে বিবিএস-এর সিপিআই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আগস্টে কৃষি খাতে মজুরি বাড়লেও কমেছে শিল্প ও সেবা খাতে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, কৃষি খাতে আগস্টে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮৯ এবং জুলাইয়ে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্টে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
কিন্তু শিল্প খাতে আগস্টে মজুরি হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা জুলাইয়ে ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্টে ছিল ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এদিকে সেবা খাতে মজুরি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্টে এ হার ছিল ৭ শতাংশ।
শিল্প খাতে আগস্টে মজুরি হার জুলাই মাসের চেয়ে দশমিক ০৬ শতাংশ কমে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে হওয়ার অর্থ হলো, জুলাই মাসে যে কর্মীটির বেতন ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১০৬ টাকা ৯৭ পয়সা হয়েছিল, আগস্টে তা কমে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সায় নেমেছে।
এদিকে আগের জুলাই মাসে সার্বিক খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ থাকলেও আগস্টে সেটি কমে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আগস্টে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশে।
এর মধ্যে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আগস্টে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হওয়ার অর্থ হলো, ২০২২ সালে আগস্টে একজন মানুষ যে পণ্য ও সেবা ১০০ টাকায় কিনতেন, চলতি বছরের আগস্টে একই পণ্য কিনতে তার খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৯২ পয়সা। মূল্যস্ফীতি হলো একধরনের করের মতো, যা ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, আগস্টে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের মাস, অর্থাৎ জুলাইয়ে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর মানে আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাম এলাকায় আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১১ শতাংশে। উভয় ক্ষেত্রে খাদ্য মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ১০ শতাংশের নিচে ছিল।
রোববার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জুন-জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর গত আগস্টে তা আবার বেড়েছে। গত সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। আর খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে আরও বেশি। মূল্যস্ফীতি বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। বরং শিল্প ও সেবা খাতে আয় কমেছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিবিএসের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই মাসে দেশে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেক বেড়ে গেছে। এ মাসে সার্বিক খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাই মাসে যেটি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আলু, ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতে। সেই সঙ্গে বন্যা এবং অতি বৃষ্টির কারণে আগস্ট মাসে পণ্য সরবরাহ চেইন ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।’
এদিকে মূল্যস্ফীতি দ্রুত গতিতে বাড়লেও মানুষের আয় সে হারে বাড়েনি। বরং কোন কোন খাতে আয় কমেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির হার ও মজুরি বৃদ্ধির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ফারাক স্বল্প আয়ের ও অদক্ষ শ্রমিকদের প্রকৃত আয় কমিয়ে দিয়েছে। তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কমেছে ক্রয়ক্ষমতা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বিবিএস সূত্রে জানা যায়, আগস্টে মজুরি হার সামান্য বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশে, যা জুলাইয়ে ছিল ৭ দশমিক ৫২, জুনে ৭ দশমিক ৩৯ এবং মে মাসে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এদিকে বিবিএস-এর সিপিআই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আগস্টে কৃষি খাতে মজুরি বাড়লেও কমেছে শিল্প ও সেবা খাতে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, কৃষি খাতে আগস্টে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮৯ এবং জুলাইয়ে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্টে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
কিন্তু শিল্প খাতে আগস্টে মজুরি হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা জুলাইয়ে ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্টে ছিল ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এদিকে সেবা খাতে মজুরি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্টে এ হার ছিল ৭ শতাংশ।
শিল্প খাতে আগস্টে মজুরি হার জুলাই মাসের চেয়ে দশমিক ০৬ শতাংশ কমে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে হওয়ার অর্থ হলো, জুলাই মাসে যে কর্মীটির বেতন ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১০৬ টাকা ৯৭ পয়সা হয়েছিল, আগস্টে তা কমে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সায় নেমেছে।
এদিকে আগের জুলাই মাসে সার্বিক খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ থাকলেও আগস্টে সেটি কমে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আগস্টে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশে।
এর মধ্যে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আগস্টে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হওয়ার অর্থ হলো, ২০২২ সালে আগস্টে একজন মানুষ যে পণ্য ও সেবা ১০০ টাকায় কিনতেন, চলতি বছরের আগস্টে একই পণ্য কিনতে তার খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৯২ পয়সা। মূল্যস্ফীতি হলো একধরনের করের মতো, যা ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, আগস্টে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের মাস, অর্থাৎ জুলাইয়ে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর মানে আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাম এলাকায় আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১১ শতাংশে। উভয় ক্ষেত্রে খাদ্য মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ১০ শতাংশের নিচে ছিল।