আমানতের তুলনায় ঋণের পরিমাণ বেশি ২৭ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা
দেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানতের চেয়ে ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি। জুন শেষে এই খাতে আমানত দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। একই সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৭২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের তুলনায় ঋণের পরিমাণ বেশি ২৭ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন এই ছয় মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত বেড়েছে ৯৩০ কোটি টাকার বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে এই খাতে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। এ বছরের জুন শেষে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা।
এদিকে ডিসেম্বর শেষে এ খাতে ঋণের স্থিতি ছিল ৭০ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। জুন শেষে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে আর্থিক খাতে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত বেড়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির ঘটনার পর গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় এ খাতে আমানত প্রবাহ কমতে থাকে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আমানতের পরিমাণ কমে ৪১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকায় নেমে এসেছিল। এরপর একই বছরের ডিসেম্বরে শেষে তা আবার বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৭৫২ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এ বছরের শুরুতে আমানত আবার কমেছিল। গত মার্চ শেষে আমানত কমে ৪৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় নেমেছিল। জুন শেষে যা আবার বেড়ে ৪৪ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকায় ঠেকেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অতীতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে আর্থিক দিক দিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেকে গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়। একই সঙ্গে বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ে সফল হতে পারেনি। তাই এসব প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে হু হু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে বর্তমানে ৩৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৩০৮টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে শহরে ২৮৬ ও গ্রামীণ এলাকায় ২৬টি শাখা রয়েছে। এছাড়া ৩৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত ও ঋণের হিসাব আছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ২৬৭টি।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়- ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ বিভাগে আর্থিক খাতের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চট্টগ্রামে ৯ শতাংশ, রাজশাহীতে দশমিক ১৯ শতাংশ এবং সিলেটে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ আমানত কমেছে।
সব বিভাগেই ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। জুন শেষে আর্থিক খাত থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৮৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। চট্টগ্রামে বিতরণ করা হয়েছে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ২ দশমিক ০৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, বরিশালে দশমিক ৪৩ শতাংশ, সিলেটে দশমিক ৮৮ শতাংশ, রংপুরে দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এছাড়া আর্থিক খাতের বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ১২৮ কোটি টাকা সরকারি খাতে এবং বেসরকারি খাতে ৭২ হাজার ৩১১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশই গেছে শিল্পে, ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বাণিজ্যে, ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ কনস্ট্রাকশন খাতে, ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোক্তা খাতে বিতরণ করা হয়।
আমানতের তুলনায় ঋণের পরিমাণ বেশি ২৭ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
দেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানতের চেয়ে ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি। জুন শেষে এই খাতে আমানত দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। একই সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৭২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের তুলনায় ঋণের পরিমাণ বেশি ২৭ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন এই ছয় মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত বেড়েছে ৯৩০ কোটি টাকার বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে এই খাতে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। এ বছরের জুন শেষে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা।
এদিকে ডিসেম্বর শেষে এ খাতে ঋণের স্থিতি ছিল ৭০ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। জুন শেষে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে আর্থিক খাতে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত বেড়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির ঘটনার পর গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় এ খাতে আমানত প্রবাহ কমতে থাকে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আমানতের পরিমাণ কমে ৪১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকায় নেমে এসেছিল। এরপর একই বছরের ডিসেম্বরে শেষে তা আবার বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৭৫২ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এ বছরের শুরুতে আমানত আবার কমেছিল। গত মার্চ শেষে আমানত কমে ৪৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় নেমেছিল। জুন শেষে যা আবার বেড়ে ৪৪ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকায় ঠেকেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অতীতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে আর্থিক দিক দিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেকে গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়। একই সঙ্গে বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ে সফল হতে পারেনি। তাই এসব প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে হু হু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে বর্তমানে ৩৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৩০৮টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে শহরে ২৮৬ ও গ্রামীণ এলাকায় ২৬টি শাখা রয়েছে। এছাড়া ৩৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত ও ঋণের হিসাব আছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ২৬৭টি।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়- ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ বিভাগে আর্থিক খাতের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চট্টগ্রামে ৯ শতাংশ, রাজশাহীতে দশমিক ১৯ শতাংশ এবং সিলেটে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ আমানত কমেছে।
সব বিভাগেই ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। জুন শেষে আর্থিক খাত থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৮৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। চট্টগ্রামে বিতরণ করা হয়েছে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ২ দশমিক ০৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, বরিশালে দশমিক ৪৩ শতাংশ, সিলেটে দশমিক ৮৮ শতাংশ, রংপুরে দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এছাড়া আর্থিক খাতের বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ১২৮ কোটি টাকা সরকারি খাতে এবং বেসরকারি খাতে ৭২ হাজার ৩১১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশই গেছে শিল্পে, ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বাণিজ্যে, ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ কনস্ট্রাকশন খাতে, ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোক্তা খাতে বিতরণ করা হয়।