চলতি বছরেই দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকার নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করবে। বাড়তে থাকা এই মূল্যস্ফীতির কারণে এবার মজুরি বেশ ভালোই বাড়বে বলে ইতোমধ্যে আভাস মিলেছে। এই বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে পোশাকের দাম বাড়াতে বাড়াতে মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশের পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সভাপতি স্টিফেন ল্যামারকে লেখা এক চিঠিতে গত বৃহস্পতিবার এই অনুরোধ করেন ফারুক হাসান। হোয়াটসঅ্যাপে বিজিএমইএর মিডিয়া গ্রুপে গত শুক্রবার এই চিঠির অনুলিপি সরবরাহ করেন বিজিএমইএ সভাপতি নিজেই।
চিঠিতে ফারুক হাসান আগামী ডিসেম্বর থেকে উৎপাদিত হবে- এমন সব তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশের দাম যৌক্তিকভাবে বাড়াতে মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক ও জুতা কোম্পানি ও তাদের সরবরাহকারীদের জাতীয় পর্যায়ের বাণিজ্য সংগঠন হচ্ছে এএএফএ। সংগঠনটি এক হাজারের বেশি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংগঠনের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বছরে ৪৯০ বিলিয়ন বা ৪৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য বিক্রি করে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত ২৭ জুলাই একটি চিঠি দেন এএএফএর সভাপতি স্টিফেন ল্যামার। সেই চিঠিতে এএএফএ সভাপতি শ্রমিকনেতা শহীদুল ইসলাম হত্যাকান্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন।
একই সঙ্গে তিনি তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের জন্য ন্যায্য মজুরি নির্ধারণের অনুরোধ জানান। পোশাক শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে প্রকৃত শ্রমিক প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের উন্মুক্ত সংলাপেরও দাবি জানায় এএএফএ।
ওই চিঠির অনুলিপি বিজিএমইএ সভাপতিও পান। সেই সূত্র ধরেই তিনি এএএফএ সভাপতিকে চিঠি লিখেন। এতে শ্রমিক নেতার হত্যাকান্ডের বিষয় উল্লেখ করেন ফারুক হাসান।
স্টিফেন ল্যামারকে লেখা চিঠিতে ফারুক হাসান লিখেছেন, ‘শ্রমিক নেতার মৃত্যু সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার উদ্বেগ আমরা বুঝতে পারি। আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন, আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে যথাযথ তদন্ত ও দ্রুত বিচার চেয়েছি। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে মামলার তদন্ত করছে।’
চিঠিতে পোশাক শ্রমিকের মজুরির বিষয়ে বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূন্যতম মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য মজুরি বোর্ড কাজ করছে। ইতোমধ্যে বোর্ড কয়েকটি বৈঠক করেছে। তারা কারখানা পরিদর্শনের পাশাপাশি শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। আমি বিশ্বাস করি, এ বছর শেষ হওয়ার আগেই নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ ন্যূন্যতম মজুরি পর্যালোচনার প্রবণতা ও গত পাঁচ বছরের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করলে যৌক্তিকভাবে মজুরি বাড়বে। আজকের সময়ে বিশ্বে মূল্যস্ফীতি থেকে কারোরই রেহাই নেই, তা বাংলাদেশ কিংবা অন্য যেকোনো দেশ হোক। তাছাড়া আপনি জানেন যে, ২০১৩ সালের মজুরি কাঠামোতে ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাধ্যতামূলক করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফলে প্রতি বছর শ্রমিকের মূল মজুরি ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। ন্যূন্যতম মজুরি বোর্ড একটি স্বাধীন সংস্থা, যাতে সমানসংখ্যক হারে শ্রমিক-মালিক ও নিরপেক্ষ সদস্য রয়েছেন। মজুরি বোর্ড স্বাধীনভাবে কাজ করছে। ফলে কত মজুরি বাড়বে, সেটি অনুমান করা আমার পক্ষে কঠিন। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় আমাদের পোশাক শ্রমিকদের মানসম্মত জীবনযাত্রার ব্যয় নিশ্চিতে আমরা ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পোশাকের ন্যায্য ও নৈতিক মূল্য প্রত্যাশা করছি। এএএফএর সদস্যদের কাছে থেকে যুক্তিসংগতভাবে পোশাকের মূল্য বাড়াতে আপনার সম্পৃক্ততার দাবি জানাই।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে উৎপাদিত ক্রয়াদেশের পোশাকের দাম যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির বিষয়টি মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান যাতে বিবেচনা করে, সেজন্য আপনার প্রতি অনুরোধ জানাই। নতুন মজুরি কাঠামোতে রূপান্তরের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, আপনি এই চিঠির বিষয়ে আপনার সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পোশাকের দাম যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
চলতি বছরেই দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকার নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করবে। বাড়তে থাকা এই মূল্যস্ফীতির কারণে এবার মজুরি বেশ ভালোই বাড়বে বলে ইতোমধ্যে আভাস মিলেছে। এই বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে পোশাকের দাম বাড়াতে বাড়াতে মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশের পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সভাপতি স্টিফেন ল্যামারকে লেখা এক চিঠিতে গত বৃহস্পতিবার এই অনুরোধ করেন ফারুক হাসান। হোয়াটসঅ্যাপে বিজিএমইএর মিডিয়া গ্রুপে গত শুক্রবার এই চিঠির অনুলিপি সরবরাহ করেন বিজিএমইএ সভাপতি নিজেই।
চিঠিতে ফারুক হাসান আগামী ডিসেম্বর থেকে উৎপাদিত হবে- এমন সব তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশের দাম যৌক্তিকভাবে বাড়াতে মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক ও জুতা কোম্পানি ও তাদের সরবরাহকারীদের জাতীয় পর্যায়ের বাণিজ্য সংগঠন হচ্ছে এএএফএ। সংগঠনটি এক হাজারের বেশি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংগঠনের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বছরে ৪৯০ বিলিয়ন বা ৪৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য বিক্রি করে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত ২৭ জুলাই একটি চিঠি দেন এএএফএর সভাপতি স্টিফেন ল্যামার। সেই চিঠিতে এএএফএ সভাপতি শ্রমিকনেতা শহীদুল ইসলাম হত্যাকান্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন।
একই সঙ্গে তিনি তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের জন্য ন্যায্য মজুরি নির্ধারণের অনুরোধ জানান। পোশাক শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে প্রকৃত শ্রমিক প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের উন্মুক্ত সংলাপেরও দাবি জানায় এএএফএ।
ওই চিঠির অনুলিপি বিজিএমইএ সভাপতিও পান। সেই সূত্র ধরেই তিনি এএএফএ সভাপতিকে চিঠি লিখেন। এতে শ্রমিক নেতার হত্যাকান্ডের বিষয় উল্লেখ করেন ফারুক হাসান।
স্টিফেন ল্যামারকে লেখা চিঠিতে ফারুক হাসান লিখেছেন, ‘শ্রমিক নেতার মৃত্যু সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার উদ্বেগ আমরা বুঝতে পারি। আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন, আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে যথাযথ তদন্ত ও দ্রুত বিচার চেয়েছি। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে মামলার তদন্ত করছে।’
চিঠিতে পোশাক শ্রমিকের মজুরির বিষয়ে বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূন্যতম মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য মজুরি বোর্ড কাজ করছে। ইতোমধ্যে বোর্ড কয়েকটি বৈঠক করেছে। তারা কারখানা পরিদর্শনের পাশাপাশি শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। আমি বিশ্বাস করি, এ বছর শেষ হওয়ার আগেই নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ ন্যূন্যতম মজুরি পর্যালোচনার প্রবণতা ও গত পাঁচ বছরের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করলে যৌক্তিকভাবে মজুরি বাড়বে। আজকের সময়ে বিশ্বে মূল্যস্ফীতি থেকে কারোরই রেহাই নেই, তা বাংলাদেশ কিংবা অন্য যেকোনো দেশ হোক। তাছাড়া আপনি জানেন যে, ২০১৩ সালের মজুরি কাঠামোতে ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাধ্যতামূলক করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফলে প্রতি বছর শ্রমিকের মূল মজুরি ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। ন্যূন্যতম মজুরি বোর্ড একটি স্বাধীন সংস্থা, যাতে সমানসংখ্যক হারে শ্রমিক-মালিক ও নিরপেক্ষ সদস্য রয়েছেন। মজুরি বোর্ড স্বাধীনভাবে কাজ করছে। ফলে কত মজুরি বাড়বে, সেটি অনুমান করা আমার পক্ষে কঠিন। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় আমাদের পোশাক শ্রমিকদের মানসম্মত জীবনযাত্রার ব্যয় নিশ্চিতে আমরা ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পোশাকের ন্যায্য ও নৈতিক মূল্য প্রত্যাশা করছি। এএএফএর সদস্যদের কাছে থেকে যুক্তিসংগতভাবে পোশাকের মূল্য বাড়াতে আপনার সম্পৃক্ততার দাবি জানাই।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে উৎপাদিত ক্রয়াদেশের পোশাকের দাম যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির বিষয়টি মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান যাতে বিবেচনা করে, সেজন্য আপনার প্রতি অনুরোধ জানাই। নতুন মজুরি কাঠামোতে রূপান্তরের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, আপনি এই চিঠির বিষয়ে আপনার সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পোশাকের দাম যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’