যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রপ্তানি কমলেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে গত বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
অর্থের হিসাবে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ)। আর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয় মোট পোশাকের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। গত চার মাসে এই বড় দুই বাজারের মধ্যে ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৪ শতাংশ। ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যেও রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে নতুন বাজারেও রপ্তানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩ শতাংশ। কানাডায়ও রপ্তানি দেড় শতাংশের মতো কমেছে।
বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। সে সময় প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৩৯৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।
গত সপ্তাহে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা চূড়ান্ত করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। তার আগে গত মাসে বোর্ডের চতুর্থ সভায় মালিকপক্ষ ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দিলে শ্রমিকেরা ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দুই সপ্তাহের এই আন্দোলনে সড়ক অবরোধ, কারখানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ থাকে। এছাড়া চারজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
গত রোববার বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিল্পের সক্ষমতা বিচার করেই ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে প্রথম ৮ মাসে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি কমেছে ১৪ শতাংশ।
পোশাক রপ্তানি পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ফারুক হাসান বলেন, ‘রপ্তানি পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ইপিবির পরিসংখ্যানে দ্বৈত গণনার কারণে রপ্তানির পরিমাণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি সংশোধন করতে বলা হয়েছে। কাজটি এখনও শুরু হয়নি। নতুন বাজারে আমরা ভালো করছিলাম। তবে ভারতে রপ্তানি ভালো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল, নভেম্বর থেকে ক্রয়াদেশ বাড়বে। তবে মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ক্রয়াদেশ আসার গতি শ্লথ হয়েছে।’
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ থেকে ইইউর দেশগুলোতে ৭০৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৬৭৯ কোটি ডলারের পোশাক। সেই হিসেবে রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
গত চার মাসে ইইউর ২৭ দেশের মধ্যে ১২টিতে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে। বাকি ১৫টিতে বেড়েছে। ইইউর দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও পোল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হয়। ইইউর এই শীর্ষ ছয় গন্তব্যের মধ্যে শুধু জার্মানিতে রপ্তানি কমেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে ২৫৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৩ শতাংশ কম।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে নতুন বাজারে ২ হাজার ৮৬৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। নতুন বাজারের মধ্যে ভারত ছাড়া জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের ৫৬ শতাংশের গন্তব্যের শীর্ষ পাঁচ দেশ যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ফ্রান্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এই পাঁচ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে।
জার্মানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৬৬৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১১ শতাংশ কম। এছাড়া যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়েছে ১৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত চার মাসে স্পেন ও ফ্রান্সের বাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে যথাক্রমে ১৩১ ও ১৮১ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্পেনে ১৭ শতাংশ ও ফ্রান্সে রপ্তানি বেড়েছে আড়াই শতাংশ।
শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রপ্তানি কমলেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে গত বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
অর্থের হিসাবে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ)। আর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয় মোট পোশাকের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। গত চার মাসে এই বড় দুই বাজারের মধ্যে ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৪ শতাংশ। ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যেও রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে নতুন বাজারেও রপ্তানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩ শতাংশ। কানাডায়ও রপ্তানি দেড় শতাংশের মতো কমেছে।
বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। সে সময় প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৩৯৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।
গত সপ্তাহে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা চূড়ান্ত করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। তার আগে গত মাসে বোর্ডের চতুর্থ সভায় মালিকপক্ষ ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দিলে শ্রমিকেরা ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দুই সপ্তাহের এই আন্দোলনে সড়ক অবরোধ, কারখানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ থাকে। এছাড়া চারজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
গত রোববার বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিল্পের সক্ষমতা বিচার করেই ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে প্রথম ৮ মাসে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি কমেছে ১৪ শতাংশ।
পোশাক রপ্তানি পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ফারুক হাসান বলেন, ‘রপ্তানি পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ইপিবির পরিসংখ্যানে দ্বৈত গণনার কারণে রপ্তানির পরিমাণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি সংশোধন করতে বলা হয়েছে। কাজটি এখনও শুরু হয়নি। নতুন বাজারে আমরা ভালো করছিলাম। তবে ভারতে রপ্তানি ভালো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল, নভেম্বর থেকে ক্রয়াদেশ বাড়বে। তবে মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ক্রয়াদেশ আসার গতি শ্লথ হয়েছে।’
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ থেকে ইইউর দেশগুলোতে ৭০৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৬৭৯ কোটি ডলারের পোশাক। সেই হিসেবে রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
গত চার মাসে ইইউর ২৭ দেশের মধ্যে ১২টিতে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে। বাকি ১৫টিতে বেড়েছে। ইইউর দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও পোল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হয়। ইইউর এই শীর্ষ ছয় গন্তব্যের মধ্যে শুধু জার্মানিতে রপ্তানি কমেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে ২৫৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৩ শতাংশ কম।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে নতুন বাজারে ২ হাজার ৮৬৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। নতুন বাজারের মধ্যে ভারত ছাড়া জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের ৫৬ শতাংশের গন্তব্যের শীর্ষ পাঁচ দেশ যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ফ্রান্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এই পাঁচ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে।
জার্মানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৬৬৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১১ শতাংশ কম। এছাড়া যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়েছে ১৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত চার মাসে স্পেন ও ফ্রান্সের বাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে যথাক্রমে ১৩১ ও ১৮১ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্পেনে ১৭ শতাংশ ও ফ্রান্সে রপ্তানি বেড়েছে আড়াই শতাংশ।