alt

অর্থ-বাণিজ্য

কৃষি ঋণের সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

কৃষি ঋণের সুদ হার বেড়ে ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এখন থেকে কৃষি ও পল্লী ঋণের জন্য ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ সুদ দিতে হবে। গত সোমবার এক সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখীর ধারা অব্যাহত থাকার পরিপ্রেক্ষিতে তা হ্রাস করার লক্ষ্যে নিচের দুটি নির্দেশনা পরিপালনীয় হবে।

এগুলো হলো- ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট’-এর (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। এবং প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট’-এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডরার ঋণ পেতে সংস্থাটির দেয়া শর্ত মেনে ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে নিয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে এই ‘স্মার্ট’ সুদহার করিডোর চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সুদহার নির্ধারণে নতুন এই পদ্ধতি অনুযায়ী, বর্তমানে ‘স্মার্ট’ সুদহার ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই হিসাবে এখন থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ও কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ।

অক্টোবর মাসে ‘স্মার্ট’ সুদহার ছিল ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। তার আগের দুই মাস জুলাই ও আগস্টে এই হার ছিল একই ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

চলতি বছরের অক্টোবরে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন বা সুদ যোগ করে নভেম্বর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক।

সেই হিসাবেই চলতি নভেম্বর মাস থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ সুদ নিতে পারবে ব্যাংক। এছাড়া প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ও কৃষি ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ। নভেম্বরে ঠিক করা ঋণের এই সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।

ওদিকে গত রোববার মূল্যস্ফীতি কমাতে সব ধরনের নীতি সুদহার আরেক দফা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর ধারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রেপো ও স্পেশাল রেপোর সুদহার ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ এবং ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।

গত মাসে উভয় ক্ষেত্রে শতাংশীয় ৭৫ পয়েন্ট বাড়ানো হয়। এ নিয়ে চলতি বছর চার দফায় বাড়ল ২ শতাংশীয় পয়েন্ট। গ্রাহক পর্যায়েও সুদহার বাড়াতে স্মার্ট রেটের সঙ্গে মার্জিনের হার সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।

গত রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন করে নীতি সুদহার পরিবর্তনের এ সিদ্ধান্ত জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে সার্কুলারও জারি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান এবং নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। চলমান সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বাইরে তিন অর্থনীতিবিদের সমন্বয়ে গঠিত মুদ্রানীতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত জুন পর্যন্ত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯ শতাংশ। নতুন ব্যবস্থা চালুর পর থেকে সুদহার একটু একটু করে বাড়ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর ধার নেয়ার সুদহার বাড়ানো হচ্ছে। চলতি বছর এ নিয়ে রেপো ও স্পেশাল রেপোর সুদহার চার দফায় ২ শতাংশীয় পয়েন্ট করে বাড়ানো হলো। আর রিভার্স রেপো তথা ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখার সুদহার এ দফায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর এ ক্ষেত্রে সুদ বাড়লো ১ দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার দ্রুত বেড়ে এরই মধ্যে ১০ শতাংশের ওপরে উঠেছে। এতে করে সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল আরও বাড়বে। একই সঙ্গে স্মার্টের সঙ্গে বিদ্যমান মার্জিনের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হবে। দুইয়ে মিলে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার ১২ শতাংশের কাছাকাছি উঠতে পারে।’

চলতি মাস অক্টোবরে যা ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিময় হার বাজারমুখী করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেয়ার ক্ষেত্রে রেপো ও স্পেশাল রেপোর ব্যবহার হয়। বর্তমানে ব্যাংকগুলো প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ধার নিচ্ছে। নির্বাচনের আগে এভাবে সুদহার বৃদ্ধি ব্যাংক থেকে টাকা বের করা ঠেকাতে পারবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সুদহার বাড়লে স্বাভাবিকভাবে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে।’

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য এতদিন মূলত ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুদের হার বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত হন।

গত তিন মাস ধরেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের ওপরে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

রাণীনগরে ন্যায্যমূল্যের দোকান : স্বল্প আয়ের মানুষের স্বস্তি

ছবি

পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজির ঘটনায় ১১৫ কোটি টাকা জরিমানা

ছবি

মূল্যস্ফীতির চাপে নিত্যপণ্যের বাজার, খাদ্যদ্রব্যে ১৩.৮০% মূল্যবৃদ্ধি

আইএমএফ-এর অধিকাংশ শর্ত পূরণ, চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় ফেব্রুয়ারিতে

এইচআর ম্যানেজমেন্টে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে ‘ট্যালেন্ট লেন্স হাব’

ছবি

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার প্রসারে টিকটকের কর্মশালা

ছবি

৫-৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে রুয়েট সাইবার ফেস্ট ২০২৪

থ্রি মিলিয়ন ক্লাবে প্রবেশ করেছে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং

ছবি

চার ধরনের নতুন নোট আসছে, নকশায় যুক্ত হবে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি

ছবি

সূচকের ওঠানামায় পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন

দুই বছরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার সুপারিশ

ছবি

২৮ উপায়ে ‘দুর্নীতি’, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার ‘পাচার’

ছবি

বিপিও শিল্পের উন্নয়নে বাক্কো ও বিটিআরসি যৌথ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

দক্ষতা উন্নয়নে বেসিস ও সিসিপ এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

বেসিস ও এনআরবি ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

মুক্তাগাছায় ২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এডিবির অর্থায়ন

শ্বেতপত্র কমিটি: দেড় দশকে ২৮ উপায়ে দুর্নীতি, দেশ থেকে পাচার ২৮ লাখ কোটি টাকা

ছবি

ক্রেডিট কার্ডে সুদের হার বাড়ছে, জানুয়ারি থেকে কার্যকর

ছবি

ব্যাংক খাতের সংকট: দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ১০ ব্যাংক

ছবি

ছয় মাসে দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কায় খেলাপি ঋণ: গভর্নর

ছবি

সরকারি প্রকল্পে ১৫ বছরে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি: শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদন

ছবি

ইউনিলিভার বাংলাদেশের সাসটেইনেবিলিটি ব্লুবুক ২০২৪ প্রকাশ

ছবি

মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুনরায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু

ছবি

প্রয়োজনের সময় মানবতার পাশে বিকাশ

ছবি

বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯৩ শতাংশ

ছবি

সবজি-পেঁয়াজের দাম কমেছে, নাগালে আসছে নতুন আলুও

ছবি

ন্যায়সংগত সমাজ গঠনে গভীর সংস্কার প্রয়োজন: রেহমান সোবহান

ছবি

একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম আরও কমলো

ছবি

ওপাস কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের যাত্রা শুরু

ছবি

পিএমআই বাংলাদেশের পুরস্কার পেল বাংলালিন্ক

২য় বর্ষপূর্তি উদযাপন করলো এয়ার এ্যাস্ট্রা

দেশে বিওয়াইডির ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন

ছবি

বেক্সিমকো শিল্প পার্কে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন

ছবি

অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি

ছবি

মেডিকেল প্রফেশনালদের জন্য কো-ব্র্যান্ডেড ক্রেডিট কার্ড চালু

ছবি

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আইসিসিবি’র কর্মশালা

tab

অর্থ-বাণিজ্য

কৃষি ঋণের সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

কৃষি ঋণের সুদ হার বেড়ে ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এখন থেকে কৃষি ও পল্লী ঋণের জন্য ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ সুদ দিতে হবে। গত সোমবার এক সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখীর ধারা অব্যাহত থাকার পরিপ্রেক্ষিতে তা হ্রাস করার লক্ষ্যে নিচের দুটি নির্দেশনা পরিপালনীয় হবে।

এগুলো হলো- ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট’-এর (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। এবং প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট’-এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডরার ঋণ পেতে সংস্থাটির দেয়া শর্ত মেনে ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে নিয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে এই ‘স্মার্ট’ সুদহার করিডোর চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সুদহার নির্ধারণে নতুন এই পদ্ধতি অনুযায়ী, বর্তমানে ‘স্মার্ট’ সুদহার ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই হিসাবে এখন থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ও কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ।

অক্টোবর মাসে ‘স্মার্ট’ সুদহার ছিল ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। তার আগের দুই মাস জুলাই ও আগস্টে এই হার ছিল একই ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

চলতি বছরের অক্টোবরে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন বা সুদ যোগ করে নভেম্বর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক।

সেই হিসাবেই চলতি নভেম্বর মাস থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ সুদ নিতে পারবে ব্যাংক। এছাড়া প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ও কৃষি ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ। নভেম্বরে ঠিক করা ঋণের এই সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।

ওদিকে গত রোববার মূল্যস্ফীতি কমাতে সব ধরনের নীতি সুদহার আরেক দফা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর ধারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রেপো ও স্পেশাল রেপোর সুদহার ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ এবং ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।

গত মাসে উভয় ক্ষেত্রে শতাংশীয় ৭৫ পয়েন্ট বাড়ানো হয়। এ নিয়ে চলতি বছর চার দফায় বাড়ল ২ শতাংশীয় পয়েন্ট। গ্রাহক পর্যায়েও সুদহার বাড়াতে স্মার্ট রেটের সঙ্গে মার্জিনের হার সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।

গত রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন করে নীতি সুদহার পরিবর্তনের এ সিদ্ধান্ত জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে সার্কুলারও জারি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান এবং নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। চলমান সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বাইরে তিন অর্থনীতিবিদের সমন্বয়ে গঠিত মুদ্রানীতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত জুন পর্যন্ত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯ শতাংশ। নতুন ব্যবস্থা চালুর পর থেকে সুদহার একটু একটু করে বাড়ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর ধার নেয়ার সুদহার বাড়ানো হচ্ছে। চলতি বছর এ নিয়ে রেপো ও স্পেশাল রেপোর সুদহার চার দফায় ২ শতাংশীয় পয়েন্ট করে বাড়ানো হলো। আর রিভার্স রেপো তথা ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখার সুদহার এ দফায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর এ ক্ষেত্রে সুদ বাড়লো ১ দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার দ্রুত বেড়ে এরই মধ্যে ১০ শতাংশের ওপরে উঠেছে। এতে করে সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল আরও বাড়বে। একই সঙ্গে স্মার্টের সঙ্গে বিদ্যমান মার্জিনের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হবে। দুইয়ে মিলে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার ১২ শতাংশের কাছাকাছি উঠতে পারে।’

চলতি মাস অক্টোবরে যা ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিময় হার বাজারমুখী করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেয়ার ক্ষেত্রে রেপো ও স্পেশাল রেপোর ব্যবহার হয়। বর্তমানে ব্যাংকগুলো প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ধার নিচ্ছে। নির্বাচনের আগে এভাবে সুদহার বৃদ্ধি ব্যাংক থেকে টাকা বের করা ঠেকাতে পারবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সুদহার বাড়লে স্বাভাবিকভাবে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে।’

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য এতদিন মূলত ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুদের হার বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত হন।

গত তিন মাস ধরেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের ওপরে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, গত অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

back to top