বিশ্বে প্রচলিত ছয়টি প্রধান মুদ্রার বিপরীতে নভেম্বরে ইউ এস ডলারের দরপতন হার সবচেয়ে বেশি ছিল। এ সময় মুদ্রাটির ৩ দশমিক ৭ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। তবে এটি আমদানিনির্ভর ও ডলারভিত্তিক ঋণ পরিশোধ করে এমন দেশগুলোর জন্য সুসংবাদ। ডলারের অবমূল্যায়ন হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের আমদানীকৃত পণ্যের জন্য আগের তুলনায় আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে বলে জানা গেছে। সিএনএন।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি ও অক্টোবরের শুরুর দিকে মার্কিন ডলার সূচক ৭ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। ইতিবাচক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ধারণা করা হচ্ছিল ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার আরও বেশি নির্ধারণ করবে।
সুদহার বাড়লে মুদ্রার মানও বাড়তে থাকে। কারণ সেই সময় বাইরের দেশের বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হয়। তারা এর মাধ্যমে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারে, যে কারণে মুদ্রার চাহিদাও বাড়ে। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় মার্কিন অর্থনীতির গতি ধীর হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের ধারণা, ফেড ঋণ খরচ আর বাড়াবে না এবং দ্রুতই সুদহার কমানো শুরু করবে।
কমার্জব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা গবেষণার প্রধান উলরিচ লিউচম্যান সিএনএনকে বলেন, ‘আরও দুই প্রান্তিক মার্কিন ডলারের অবমূল্যায়ন থাকবে বলে আমার মনে হচ্ছে। সুদহার কমানোর বিষয়ে ফেডের সিদ্ধান্ত এ ধারণাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।’
যুক্তরাজ্যের সুইডিশ ব্যাংক হ্যান্ডেলসব্যাঙ্কেনের পুঁজিবাজার টিমের ক্যামেরন উইলার্ড জানান, তিনি ধারণা করছেন আগামী বছরের প্রথমার্ধে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকবে, বছরের শেষদিকে ডলারের মূল্য আবার বাড়তে পারে। কারণ শেষদিকে বেশ কয়েকটি দেশের নির্বাচনের ফল সামনে আসবে। যে কারণে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়তে পারে।’
অস্থির সময়ে বিনিয়োগকারীরা ডলারকে একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখেন, যেখানে তাদের নগদ অর্থের মূল্য বজায় রাখবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ডলারের এ অবমূল্যায়ন দীর্ঘমেয়াদি হবে। এজন্য আমাদের একটি বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প থাকা দরকার, ডলার এখনও বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি এবং বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ মুদ্রা। আমরা এর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা দেখছি না।’
টরন্টো ডোমেনিয়ন (টিডি) সিকিউরিটিজের বৈদেশিক মুদ্রার উদীয়মান বাজার কৌশলের বৈশ্বিক প্রধান মার্ক ম্যাককরমিক বলেন, ‘ডলারের দরপতনের কারণে লাভবান হবে আমদানিনির্ভর দেশগুলো।
তারা খাদ্যশস্য ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কম মূল্যে কিনতে পারবে। ফলে এমন দেশগুলোর সামগ্রিক অর্থনীতির মূল্যস্ফীতি কমতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, জাপান, কোরিয়া, ভারত ও ইউরো ব্যবহার করা অনেক দেশই পণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল।’
আমেরিকান রপ্তানিকারকরাও লাভবান হবে তাদের পণ্যের দাম অন্য মুদ্রায় কমে যাওয়ায় পণ্যের বিক্রি অন্যান্য দেশে বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ডলারের অবমূল্যায়ন আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য খারাপ খবর। কারণ তাদের ওয়াইন বা চীনের তৈরি খেলনার মতো আমদানি করা পণ্যের জন্য এবং বিদেশে ছুটি কাটাতে আগের তুলনায় বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।
লিউচম্যান জানান, ডলারের অবমূল্যায়ন বা দরপতন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কেননা পণ্য আমদানির জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে এবং রপ্তানিকৃত পণ্য থেকেও আয় কম হবে। তবে মূল্য বাড়ানোর পেছনে অন্যান্য কারণও আছে। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি আরও কমার পূর্বাভাস দিয়েছেন।
শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩
বিশ্বে প্রচলিত ছয়টি প্রধান মুদ্রার বিপরীতে নভেম্বরে ইউ এস ডলারের দরপতন হার সবচেয়ে বেশি ছিল। এ সময় মুদ্রাটির ৩ দশমিক ৭ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। তবে এটি আমদানিনির্ভর ও ডলারভিত্তিক ঋণ পরিশোধ করে এমন দেশগুলোর জন্য সুসংবাদ। ডলারের অবমূল্যায়ন হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের আমদানীকৃত পণ্যের জন্য আগের তুলনায় আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে বলে জানা গেছে। সিএনএন।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি ও অক্টোবরের শুরুর দিকে মার্কিন ডলার সূচক ৭ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। ইতিবাচক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ধারণা করা হচ্ছিল ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার আরও বেশি নির্ধারণ করবে।
সুদহার বাড়লে মুদ্রার মানও বাড়তে থাকে। কারণ সেই সময় বাইরের দেশের বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হয়। তারা এর মাধ্যমে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারে, যে কারণে মুদ্রার চাহিদাও বাড়ে। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় মার্কিন অর্থনীতির গতি ধীর হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের ধারণা, ফেড ঋণ খরচ আর বাড়াবে না এবং দ্রুতই সুদহার কমানো শুরু করবে।
কমার্জব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা গবেষণার প্রধান উলরিচ লিউচম্যান সিএনএনকে বলেন, ‘আরও দুই প্রান্তিক মার্কিন ডলারের অবমূল্যায়ন থাকবে বলে আমার মনে হচ্ছে। সুদহার কমানোর বিষয়ে ফেডের সিদ্ধান্ত এ ধারণাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।’
যুক্তরাজ্যের সুইডিশ ব্যাংক হ্যান্ডেলসব্যাঙ্কেনের পুঁজিবাজার টিমের ক্যামেরন উইলার্ড জানান, তিনি ধারণা করছেন আগামী বছরের প্রথমার্ধে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকবে, বছরের শেষদিকে ডলারের মূল্য আবার বাড়তে পারে। কারণ শেষদিকে বেশ কয়েকটি দেশের নির্বাচনের ফল সামনে আসবে। যে কারণে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়তে পারে।’
অস্থির সময়ে বিনিয়োগকারীরা ডলারকে একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখেন, যেখানে তাদের নগদ অর্থের মূল্য বজায় রাখবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ডলারের এ অবমূল্যায়ন দীর্ঘমেয়াদি হবে। এজন্য আমাদের একটি বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প থাকা দরকার, ডলার এখনও বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি এবং বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ মুদ্রা। আমরা এর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা দেখছি না।’
টরন্টো ডোমেনিয়ন (টিডি) সিকিউরিটিজের বৈদেশিক মুদ্রার উদীয়মান বাজার কৌশলের বৈশ্বিক প্রধান মার্ক ম্যাককরমিক বলেন, ‘ডলারের দরপতনের কারণে লাভবান হবে আমদানিনির্ভর দেশগুলো।
তারা খাদ্যশস্য ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কম মূল্যে কিনতে পারবে। ফলে এমন দেশগুলোর সামগ্রিক অর্থনীতির মূল্যস্ফীতি কমতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, জাপান, কোরিয়া, ভারত ও ইউরো ব্যবহার করা অনেক দেশই পণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল।’
আমেরিকান রপ্তানিকারকরাও লাভবান হবে তাদের পণ্যের দাম অন্য মুদ্রায় কমে যাওয়ায় পণ্যের বিক্রি অন্যান্য দেশে বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ডলারের অবমূল্যায়ন আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য খারাপ খবর। কারণ তাদের ওয়াইন বা চীনের তৈরি খেলনার মতো আমদানি করা পণ্যের জন্য এবং বিদেশে ছুটি কাটাতে আগের তুলনায় বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।
লিউচম্যান জানান, ডলারের অবমূল্যায়ন বা দরপতন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কেননা পণ্য আমদানির জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে এবং রপ্তানিকৃত পণ্য থেকেও আয় কম হবে। তবে মূল্য বাড়ানোর পেছনে অন্যান্য কারণও আছে। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি আরও কমার পূর্বাভাস দিয়েছেন।