alt

অর্থ-বাণিজ্য

পোশাক শিল্প : এক বছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রায় ২০ শতাংশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

হঠাৎ করে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতে প্রকৃত রপ্তানি ছিল মোট রপ্তানির প্রায় ৭১ শতাংশ। গত বছরের একই প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃত রপ্তানি আয় ছিল মোট রপ্তানির সাড়ে ৫১ শতাংশ। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রকৃত রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।

যদিও পোশাক খাতের প্রকৃত আয়ের এ হিসাব নিয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়েছে। তারা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা প্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্য কেনা কমিয়ে দেন। এর ফলে কমে যায় পোশাকের বিক্রিও।

অন্যদিকে গত বছরের শেষ দিকে অধিকাংশ কারখানা ২০-৩০ শতাংশ কম উৎপাদন সক্ষমতায় চলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের কারণে উৎপাদনও কম-বেশি ব্যাহত হয়েছে। তাই এ খাতের প্রকৃত আয়ের তথ্য নিয়ে তারা সন্দিহান।

গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক পোশাক খাতের রপ্তানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি বা মূল্য সংযোজন ছিল ৮২২ কোটি মার্কিন ডলার। পোশাকের মোট রপ্তানি আয় থেকে কাঁচামাল আমদানি বাবদ খরচ বাদ দিয়ে প্রকৃত আয়ের এ হিসাব করা হয়েছে।

অনেকে প্রকৃত রপ্তানি আয়কে পোশাক খাতের মূল্য সংযোজন হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। তবে অর্থনীতিবিদেরা এটিকে মূল্য সংযোজন হিসেবে মানতে নারাজ। তারা বলছেন, পোশাক শিল্পে নির্দিষ্ট একটি সময়ে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করা হয়, সেগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যায়। তাই একটি নির্দিষ্ট সময়ের রপ্তানি আয় থেকে আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃত যে আয় পাওয়া যাবে, সেটিকে প্রকৃত মূল্য সংযোজন বলা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে পোশাক রপ্তানি বাবদ মোট আয় ছিল ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলার। তার বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৩৯ কোটি ডলার। তাতে এ খাতের মোট রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৮২২ কোটি ডলারে, যা এ খাতের মোট আয়ের প্রায় ৭১ শতাংশ। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ১ হাজার ২৭ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানি বাবদ ব্যয় ছিল ৪৯৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃত রপ্তানি আয় ছিল ৫২৯ কোটি ডলার, যা মোট আয়ের সাড়ে ৫১ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের শুরু থেকে পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি হঠাৎ করে বেড়ে ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ৭১ শতাংশই ছিল প্রকৃত আয়। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে তা বেড়ে হয় সাড়ে ৭১ শতাংশ।

পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওভেন পোশাকের চেয়ে নিট পোশাকে মূল্য সংযোজনের পরিমাণ বেশি। ওভেন পোশাক রপ্তানি করে যে আয় হয় তার প্রায় ৬০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানির পেছনে ব্যয় হয়ে যায়। আর নিট পোশাকের ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়ের ১৫ শতাংশের মতো খরচ হয় কাঁচামাল আমদানিতে। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর ধরে ওভেনের তুলনায় নিট পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে পোশাক খাতের ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলারের রপ্তানির মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭৬ কোটি ডলার। আর একই সময়ে ওভেন পোশাকের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৮৫ কোটি ডলার। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পোশাক রপ্তানি আয়ের প্রায় সাড়ে ৪৯ শতাংশই ছিল নিট পোশাকের, আর ওভেনের সাড়ে ৩৫ শতাংশ।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরেও নিট এবং ওভেন পোশাকের রপ্তানি ছিল প্রায় সমান সমান। ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ওভেনকে ছাড়িয়ে যায় নিট পোশাকের রপ্তানি। এরপর প্রতি অর্থবছরই নিট পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ের প্রায় সাড়ে ৪৬ শতাংশ ছিল নিট খাতের আর ওভেন খাতের ছিল সোয়া ৩৮ শতাংশ।

রপ্তানিকারকেরা বলছেন, করোনার পর থেকে বিশ্ববাজারে নিট পোশাকের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এমনকি করোনাকালেও নিট পোশাকের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। কারণ, করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময় দেশে দেশে লকডাউন জারি করা হয়, ফলে ঘরের বাইরে পরার পোশাকের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে যায়। বিক্রি না থাকায় বিদেশি ক্রেতারাও ক্রয়াদেশ কমিয়ে দেন। অন্যদিকে ঘরে পরার নিট পোশাকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানিও বাড়তে থাকে।

নিট পোশাক বলতে সাধারণত গেঞ্জির কাপড়ের তৈরি পোশাকই বোঝায়। যেমন টি-শার্ট, পলো শার্ট, সোয়েটার, ট্রাউজার, জগার, শর্টস প্রভৃতি। অন্যদিকে ওভেন পোশাক হিসেবে বোঝানো হয় ফরমাল শার্ট, প্যান্ট, স্যুট, ডেনিম প্রভৃতিকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানি আয়ের ৭০ শতাংশই এসেছে মাত্র নয়টি দেশ থেকে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রয়েছে যথাক্রমে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও কানাডা। এ সময়ে এ নয়টি দেশ থেকে পোশাক রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে ৮১১ কোটি ডলার। উল্লিখিত ৯ দেশের বাইরের দেশগুলো থেকে পোশাক রপ্তানি বাবদ আয় ছিল ৩৫২ কোটি ডলার।

ছবি

বাজারে লেনোভোর আইডিয়াপ্যাড স্লিম ৩ আই সিরিজের নতুন পাঁচটি ল্যাপটপ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন ও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে

তিন কারণে পণ্য রপ্তানিতে আগের মতোই প্রণোদনা পাবেন ব্যবসায়ীরা

ছবি

টানা ৭ মাস বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে

পাল্টা শুল্ক নিয়ে চার উপদেষ্টাকে উদ্বেগ জানালেন ব্যবসায়ীরা

ছবি

ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দেয়ার উদ্যোগ

আমদানিপণ্য দ্রুত খালাসের আহ্বান এনবিআর চেয়ারম্যানের

ছবি

আবুল বারকাতকে রিমান্ডে চেয়ে দুদকের আবেদন, আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হলো

ছবি

দেশে মোটরসাইকেল বিক্রি বেড়েছে

ছবি

বাজার সম্প্রসারণে আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে জোর ব্যবসায়ীদের

নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি

অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে ‘ফিকশন’ পাওয়া গেছে: গভর্নর

ছবি

আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার, কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ ব্যাংক

স্টার্টআপ তহবিল: বয়সের ঊর্ধ্বসীমা উঠে গেল

হাউজ লোন ও ক্রেডিট কার্ড ঋণের সীমা বাড়ছে

সরকারি দফতরে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ করা হলো

বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ

ছবি

চীনে বিডা’র অফিস খোলার পরিকল্পনা চলছে: আশিক চৌধুরী

দুই বাণিজ্য সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগ

ছবি

গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ

ছবি

আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক নয়, সরকারের নিজস্ব উদ্যোগে সংস্কার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

সততা-দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলে কোনো ভয় নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান

শেয়ারবাজারে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন

জুলাইয়ের ৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৮১২৫ কোটি টাকা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি

জুলাই হতাহতদের সহায়তায় ২৫ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

বাণিজ্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ

ছবি

বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ

ছবি

আকু দায় মিটিয়ে রিজার্ভ ২৪ বিলিয়নের ঘরে

ছবি

ডিএসইতে লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা ছাড়ালো

৬ মাসের কম সময়ে আইপিও প্রক্রিয়া শেষ করা হবে: ডিএসই চেয়ারম্যান

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভিশন সংরক্ষণে নতুন নির্দেশনা

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ

ছবি

ফুডির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলো স্কিটো

ছবি

বাজারে আসছে নতুন স্মার্টফোন ওয়ানপ্লাস নর্ড ৫ সিরিজ

ছবি

বাংলাদেশসহ ১৪ দেশে নতুন শুল্কের সময়সীমা ‘চূড়ান্ত নয়’ আলোচনার দরজা খোলা

tab

অর্থ-বাণিজ্য

পোশাক শিল্প : এক বছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রায় ২০ শতাংশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

হঠাৎ করে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতে প্রকৃত রপ্তানি ছিল মোট রপ্তানির প্রায় ৭১ শতাংশ। গত বছরের একই প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃত রপ্তানি আয় ছিল মোট রপ্তানির সাড়ে ৫১ শতাংশ। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রকৃত রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।

যদিও পোশাক খাতের প্রকৃত আয়ের এ হিসাব নিয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়েছে। তারা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা প্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্য কেনা কমিয়ে দেন। এর ফলে কমে যায় পোশাকের বিক্রিও।

অন্যদিকে গত বছরের শেষ দিকে অধিকাংশ কারখানা ২০-৩০ শতাংশ কম উৎপাদন সক্ষমতায় চলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের কারণে উৎপাদনও কম-বেশি ব্যাহত হয়েছে। তাই এ খাতের প্রকৃত আয়ের তথ্য নিয়ে তারা সন্দিহান।

গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক পোশাক খাতের রপ্তানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি বা মূল্য সংযোজন ছিল ৮২২ কোটি মার্কিন ডলার। পোশাকের মোট রপ্তানি আয় থেকে কাঁচামাল আমদানি বাবদ খরচ বাদ দিয়ে প্রকৃত আয়ের এ হিসাব করা হয়েছে।

অনেকে প্রকৃত রপ্তানি আয়কে পোশাক খাতের মূল্য সংযোজন হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। তবে অর্থনীতিবিদেরা এটিকে মূল্য সংযোজন হিসেবে মানতে নারাজ। তারা বলছেন, পোশাক শিল্পে নির্দিষ্ট একটি সময়ে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করা হয়, সেগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যায়। তাই একটি নির্দিষ্ট সময়ের রপ্তানি আয় থেকে আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃত যে আয় পাওয়া যাবে, সেটিকে প্রকৃত মূল্য সংযোজন বলা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে পোশাক রপ্তানি বাবদ মোট আয় ছিল ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলার। তার বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৩৯ কোটি ডলার। তাতে এ খাতের মোট রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৮২২ কোটি ডলারে, যা এ খাতের মোট আয়ের প্রায় ৭১ শতাংশ। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ১ হাজার ২৭ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানি বাবদ ব্যয় ছিল ৪৯৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃত রপ্তানি আয় ছিল ৫২৯ কোটি ডলার, যা মোট আয়ের সাড়ে ৫১ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের শুরু থেকে পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি হঠাৎ করে বেড়ে ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ৭১ শতাংশই ছিল প্রকৃত আয়। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে তা বেড়ে হয় সাড়ে ৭১ শতাংশ।

পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওভেন পোশাকের চেয়ে নিট পোশাকে মূল্য সংযোজনের পরিমাণ বেশি। ওভেন পোশাক রপ্তানি করে যে আয় হয় তার প্রায় ৬০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানির পেছনে ব্যয় হয়ে যায়। আর নিট পোশাকের ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়ের ১৫ শতাংশের মতো খরচ হয় কাঁচামাল আমদানিতে। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর ধরে ওভেনের তুলনায় নিট পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে পোশাক খাতের ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলারের রপ্তানির মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭৬ কোটি ডলার। আর একই সময়ে ওভেন পোশাকের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৮৫ কোটি ডলার। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পোশাক রপ্তানি আয়ের প্রায় সাড়ে ৪৯ শতাংশই ছিল নিট পোশাকের, আর ওভেনের সাড়ে ৩৫ শতাংশ।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরেও নিট এবং ওভেন পোশাকের রপ্তানি ছিল প্রায় সমান সমান। ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ওভেনকে ছাড়িয়ে যায় নিট পোশাকের রপ্তানি। এরপর প্রতি অর্থবছরই নিট পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ের প্রায় সাড়ে ৪৬ শতাংশ ছিল নিট খাতের আর ওভেন খাতের ছিল সোয়া ৩৮ শতাংশ।

রপ্তানিকারকেরা বলছেন, করোনার পর থেকে বিশ্ববাজারে নিট পোশাকের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এমনকি করোনাকালেও নিট পোশাকের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। কারণ, করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময় দেশে দেশে লকডাউন জারি করা হয়, ফলে ঘরের বাইরে পরার পোশাকের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে যায়। বিক্রি না থাকায় বিদেশি ক্রেতারাও ক্রয়াদেশ কমিয়ে দেন। অন্যদিকে ঘরে পরার নিট পোশাকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানিও বাড়তে থাকে।

নিট পোশাক বলতে সাধারণত গেঞ্জির কাপড়ের তৈরি পোশাকই বোঝায়। যেমন টি-শার্ট, পলো শার্ট, সোয়েটার, ট্রাউজার, জগার, শর্টস প্রভৃতি। অন্যদিকে ওভেন পোশাক হিসেবে বোঝানো হয় ফরমাল শার্ট, প্যান্ট, স্যুট, ডেনিম প্রভৃতিকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানি আয়ের ৭০ শতাংশই এসেছে মাত্র নয়টি দেশ থেকে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রয়েছে যথাক্রমে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও কানাডা। এ সময়ে এ নয়টি দেশ থেকে পোশাক রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে ৮১১ কোটি ডলার। উল্লিখিত ৯ দেশের বাইরের দেশগুলো থেকে পোশাক রপ্তানি বাবদ আয় ছিল ৩৫২ কোটি ডলার।

back to top