alt

অর্থ-বাণিজ্য

দেশে উদ্বেগজনক হারে আয় বৈষম্য বেড়েছে : বিনায়ক সেন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের মানুষের মধ্যে আয় বৈষম্য বাড়ছে। আর এই আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। আইসিডিডিআরবির ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) উপস্থিত ছিলেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

সেমিনারে ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রবণতা এবং নিয়ামকসমূহ : সাম্প্রতিক প্রমাণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারী ও ইউক্রেন সংঘাত দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তবে এর আগে গত এক দশকে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।’

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সেমিনারে বিনায়ক সেন, খানা আয়-ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, দেশে এখন গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫০। শহরাঞ্চলে গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫৪ আর গ্রামাঞ্চলে তা শূন্য দশমিক ৪৫। একই সঙ্গে দেশে ভোগের ক্ষেত্রেও অসমতা বেড়েছে। ২০২২ সালে দেশে জাতীয় পর্যায়ে ভোগ অসমতার ক্ষেত্রে গিনি সহগ ছিল শূন্য দশমিক ৩৩৪। শহরাঞ্চলে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩৫৬ আর গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে যা ছিল শূন্য দশমিক ২৯১।

গিনি সহগের মান শূন্য হলে বোঝা যায়, সমাজে চূড়ান্ত সমতা আছে। শূন্য দশমিক ৫০ অতিক্রম করলে বোঝা যায়, দেশে উচ্চ অসমতা আছে। ১ হলে বোঝা যায় চূড়ান্ত অসমতা আছে। অর্থাৎ দেশে এখন উচ্চ অসমতা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে বর্তমানে যে সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে, তা ঠিক এই অসমতা মোকাবিলা করার মতো নয়, অর্থাৎ বৈষম্যে তার তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না বলে মন্তব্য করেন বিনায়ক সেন।

তিনি ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, তখন দেশের ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ছিল। তথ্যে দেখা যায়, গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে এ নিয়ে বড় ব্যবধান আছে; গ্রামাঞ্চলের ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার সামাজিক সুরক্ষার আওতায় থাকলেও শহরাঞ্চলের মাত্র ১০ দশমিক ১ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আছে, যদিও শহরাঞ্চলে অসমতা বেশি।

বিনায়ক সেন আরও বলেন, ‘বৈষম্য বাড়ছে সাধারণভাবে এই কথার অর্থ হলো ধনী আরও ধনী হচ্ছে আর দরিদ্র আরও দরিদ্র হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে অসমতার প্রকৃতি কিছুটা ভিন্ন।’ তার ভাষ্যমতে, দেশে দরিদ্র ও অদরিদ্র উভয় শ্রেণীর মানুষের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু অদরিদ্র শ্রেণীর উন্নতির হার বেশি।

বিনায়ক সেন দারিদ্র্যের প্রধান কারণগুলো তুলে ধরেন এবং তা থেকে উত্তরণে বেশ কিছু নীতিগত প্রস্তাব তুলে ধরেন। স্মার্ট সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, টেকসই প্রবৃদ্ধি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থার বিবেচনায় স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সেসব নীতি প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন তিনি।

বিনায়ক সেন উপস্থাপনায় দেখান, সরকারি ব্যয় বাড়লেও কর-জিডিপির অনুপাত কমে যাচ্ছে। ২০০০-০১ সালে দেশে কর জিডিপির অনুপাত ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০১০-১১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ১০ দশমিক ৪ শতাংশ, সেই বছর জিডিপির অনুপাতে সরকারি ব্যয় ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, কিন্তু সরকারি ব্যয়-জিডিপির অনুপাত বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। এই কারণে সরকারের ব্যয়ের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।

ছবি

অক্টোবর মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ অনেক বেড়েছে

ছবি

বকেয়া পরিশোধ না হলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকি আদানি পাওয়ারের

ছবি

টাকার পাচার ঠেকাতে মৌলিক সংস্কার জরুরি

ছবি

সাইবার আক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে, সতর্ক করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা

ছবি

বাংলাদেশে চাল আমদানির শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার

ডিজেল- কেরোসিন: লিটারে ৫০ পয়সা দাম কমালো সরকার

ছবি

মালদ্বীপে রেমিট্যান্স প্রবাহে শীর্ষে বাংলাদেশ, বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা স্থাপনের দাবি প্রবাসীদের

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনার, দ্রুত অপসারণের তাগিদ

ছবি

ইসলামী ব্যাংকের লোকসানে বছর শুরুর ধাক্কা

ছবি

সঞ্চয়পত্রের চেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে ট্রেজারি বিল

ছবি

বিশ্বসেরা ১০০ ব্র্যান্ডের তালিকায় শাওমি

ছবি

দেশে চীনের আইমা ব্র্যান্ডের মোটরবাইক

ছবি

৩ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা ‘বিজমায়েস্ট্রোজ’

ছবি

নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগে কর প্রণোদনা পুনর্বহাল

ছবি

ইন্টারনেট সেবায় বৈষম্য দূর করার আহবান

আবারও গ্লোবাল টপ ফাইভ ব্র্যান্ডের তালিকায় স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স

ব্যাংক খাত থেকে ‘১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে হাসিনার সহযোগীরা : গভর্নর

ছবি

খুলনায় ভর্তুকিমূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি শুরু

ছবি

ব্যাংক লুটপাটে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ,

ছবি

হাসিনার সহযোগীরা সরিয়েছেন ১৭ বিলিয়ন ডলার, ১০ বিলিয়ন একাই এস আলম: গভর্নর

ছবি

সূচকের বড় পতনে ডিএসইতে লেনদেন চলছে

ছবি

বড় পতন শেয়ারবাজারে, সূচক চার বছরে সর্বনিম্নে

ছবি

ডিমের দাম ফেইসবুকে নির্ধারণ, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস এফবিসিসিআইয়ের

ছবি

ব্যবসায়ীদের সংকট: উচ্চ সুদের হার, আস্থার অভাব এবং বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ

ছবি

পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে প্রয়োজন হলে রপ্তানি বন্ধের হুঁশিয়ারি

ছবি

উচ্চ সুদহার, জ্বালানি সংকট : কেউ স্বস্তিতে নেই, বললেন ব্যবসায়ীরা

ছবি

বাংলাদেশে উন্মোচিত হলো নতুন স্মার্টফোন ইনফিনিক্স হট ৫০ প্রো

ছবি

মিরপুরে মি: ডি আই ওয়াই এর তৃতীয় শাখা উদ্বোধন

ছবি

দুবাইয়ে সুপারনোভা চ্যালেঞ্জ ২০২৪ এ সেমি-ফাইনালিস্ট প্রিয়শপ

ছবি

সরকার পতনের পরও রিজার্ভ সংকট কাটেনি, এখনও ২০ বিলিয়নের নিচে

ছবি

আইএটিএ সদস্যপদ পেল এয়ার এ্যাস্ট্রা 

ছবি

কমওয়ার্ড ২০২৪ এ ১৬টি পুরস্কার জিতেছে বিকাশ

ছবি

সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা সাইনোভিয়া ফার্মা কর্তৃপক্ষের

ছবি

সূচকের বড় পতনে পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে

ছবি

বাজার স্থিতিশীল রাখতে ১২ প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি

ছবি

তামাকের ক্ষতিহ্রাস পণ্যের নিয়ন্ত্রণে যুক্তিসংগত নীতিমালা চায় বেন্ডস্টা

tab

অর্থ-বাণিজ্য

দেশে উদ্বেগজনক হারে আয় বৈষম্য বেড়েছে : বিনায়ক সেন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের মানুষের মধ্যে আয় বৈষম্য বাড়ছে। আর এই আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। আইসিডিডিআরবির ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) উপস্থিত ছিলেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

সেমিনারে ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রবণতা এবং নিয়ামকসমূহ : সাম্প্রতিক প্রমাণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারী ও ইউক্রেন সংঘাত দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তবে এর আগে গত এক দশকে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।’

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সেমিনারে বিনায়ক সেন, খানা আয়-ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, দেশে এখন গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫০। শহরাঞ্চলে গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫৪ আর গ্রামাঞ্চলে তা শূন্য দশমিক ৪৫। একই সঙ্গে দেশে ভোগের ক্ষেত্রেও অসমতা বেড়েছে। ২০২২ সালে দেশে জাতীয় পর্যায়ে ভোগ অসমতার ক্ষেত্রে গিনি সহগ ছিল শূন্য দশমিক ৩৩৪। শহরাঞ্চলে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩৫৬ আর গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে যা ছিল শূন্য দশমিক ২৯১।

গিনি সহগের মান শূন্য হলে বোঝা যায়, সমাজে চূড়ান্ত সমতা আছে। শূন্য দশমিক ৫০ অতিক্রম করলে বোঝা যায়, দেশে উচ্চ অসমতা আছে। ১ হলে বোঝা যায় চূড়ান্ত অসমতা আছে। অর্থাৎ দেশে এখন উচ্চ অসমতা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে বর্তমানে যে সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে, তা ঠিক এই অসমতা মোকাবিলা করার মতো নয়, অর্থাৎ বৈষম্যে তার তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না বলে মন্তব্য করেন বিনায়ক সেন।

তিনি ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, তখন দেশের ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ছিল। তথ্যে দেখা যায়, গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে এ নিয়ে বড় ব্যবধান আছে; গ্রামাঞ্চলের ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার সামাজিক সুরক্ষার আওতায় থাকলেও শহরাঞ্চলের মাত্র ১০ দশমিক ১ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আছে, যদিও শহরাঞ্চলে অসমতা বেশি।

বিনায়ক সেন আরও বলেন, ‘বৈষম্য বাড়ছে সাধারণভাবে এই কথার অর্থ হলো ধনী আরও ধনী হচ্ছে আর দরিদ্র আরও দরিদ্র হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে অসমতার প্রকৃতি কিছুটা ভিন্ন।’ তার ভাষ্যমতে, দেশে দরিদ্র ও অদরিদ্র উভয় শ্রেণীর মানুষের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু অদরিদ্র শ্রেণীর উন্নতির হার বেশি।

বিনায়ক সেন দারিদ্র্যের প্রধান কারণগুলো তুলে ধরেন এবং তা থেকে উত্তরণে বেশ কিছু নীতিগত প্রস্তাব তুলে ধরেন। স্মার্ট সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, টেকসই প্রবৃদ্ধি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থার বিবেচনায় স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সেসব নীতি প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন তিনি।

বিনায়ক সেন উপস্থাপনায় দেখান, সরকারি ব্যয় বাড়লেও কর-জিডিপির অনুপাত কমে যাচ্ছে। ২০০০-০১ সালে দেশে কর জিডিপির অনুপাত ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০১০-১১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ১০ দশমিক ৪ শতাংশ, সেই বছর জিডিপির অনুপাতে সরকারি ব্যয় ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, কিন্তু সরকারি ব্যয়-জিডিপির অনুপাত বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। এই কারণে সরকারের ব্যয়ের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।

back to top