alt

অর্থ-বাণিজ্য

রেমিট্যান্সে হুন্ডি বন্ধ করতে হলে ব্যাংকিং সেবা আরও সহজ করতে হবে : বায়রা মহাসচিব

: রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি প্রবাসীদের আয়। ১৯৭৬ সালে মাত্র ২৪ লাখ ডলার বা প্রায় ৩৬ কোটি টাকার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। এখন মাসে গড়ে ১৭০ কোটি থেকে ২০০ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসছে। প্রবাসীদের আয় রির্জাভ বিদেশী মুদ্রা মজুদের বড় একটি অংশ। বিএমইটি-র হিসাবে ১৯৭৬ সাল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০ জন। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ১১ লাখ ৬৬ হাজার ১৭৬ জন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ লাখ ২৫ হাজার ৮৩৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন যা একটি রেকর্ড। বিদেশে কাজের জন্য দেশের মানুষ যে সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাচ্ছেন তাদের সংগঠন হচ্ছে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি’-বায়রা। বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে প্রবাসীদের সার্বিক বিষয়ে নিয়ে কথা বলেছেন সংবাদ’এর অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক রমজান আলী।

সংবাদ : সম্প্রতি ওমানের ভিসা বন্ধ হয়েছে, এর কোন প্রভাব শ্রমবাজারে পড়বে কী ?

আলী হায়দার চৌধুরী : এতে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। পরে এটি আবারও চালু হবে। অবৈধের সংখ্যা যখন মাত্রাধিক হয়ে যায় তখন একটা নিরাপত্তা হুমকির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন ওই দেশের নাগরিককে হাইরিস্ক ক্যাটাগরিতে ফেলে ভিসা স্থগিত করে। এছাড়া ওমানের জনসংখ্যা ৫০ লাখের মতো। ওমানে ২০ লাখের মতো প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা সাত লাখের বেশি। এই সাত লাখ লোক ঠিক মতো কাজ করতে পারলে অর্থনীতিতে কোন প্রভাব পড়বে না।

সংবাদ : প্রবাসীরা বিদেশে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়, এব্যাপারে আপনাদের দায়িত্ব কী ?

হায়দার চৌধুরী : দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেকই বিদেশে পাড়ি দেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে গিয়ে তারা কাজ পান না। বরং অনেক সময় পাচারেরও শিকার হন। এছাড়া অনেকই দালালের খপ্পরে পড়ে ফ্রি ভিসার নামে বাইরে যান। আসলে ফ্রি ভিসা বলতে কোন ভিসা নেই। আর দালালদের খপ্পরে পড়ে এ ধরনের ভিসায় গেলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। যদি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কেউ হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়। দালালদের খপ্পরে পড়ে গেলে তার কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় না। তাদের ধরার কোন পথ থাকে না।

সংবাদ : রেকর্ড পরিমাণ লোক প্রবাসে যাচ্ছে কিন্তু সেই পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসীদের আয় আসছে না?

হায়দার চৌধুরী : হুন্ডির কারণে রেমিট্যান্স বাড়ছে না। হুন্ডিতে সহজে প্রবাসীরা তাদের আয় পাঠাতে পারে। ব্যাংকের নানা জটিলতা কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে না। ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে দীর্ঘ সময় লাগে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া অনেক সময় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে গেলে একদিন ছুটি নিতে হয়। আসলে প্রবাসীদের সেই সময় নেই। তাই হুন্ডিতে প্রবাসীরা রুমে বসে টাকা পাঠাতে পারে। তাদের কোথাও যেতে হয় না। তাই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আনতে গেলে প্রবাসীদের জন্য আরো সহজ কোন উপায় লেনদেন চালু করতে হবে। যাতে হুন্ডির মতো সহজে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে। তা না হলে হুন্ডি বন্ধ করা যাবে না। হুন্ডি বন্ধ করতে হলে ব্যাংকিং সেবার মান আরওবাড়াতে হবে। দূর করতে হবে নানা জটিলতা। তাহলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়বে। অন্যথায় কোন কাজ হবে না। গ্রামের অনেক লোক বিদেশে থাকেন। তারা অনেক বিষয়েই জানেন না, বুঝেন কম। অনেকের পড়ালেখা নেই। গ্রামের বাড়ি থেকে ব্যাংকের দূরত্ব অনেক। তারা হুন্ডিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

সংবাদ : দেশে অর্থনীতিতে আপনাদের ভূমিকা কী ?

হায়দার চৌধুরী : ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ৪৭ বছরে প্রবাসীরা দেশকে অনেক এগিয়ে নিয়েছে। ১৯৭১ সালে আমাদের রিজার্ভ ছিল শূন্যের কোঠায়। ২০২১ এসে রির্জাভ দাঁড়িয়েছিল ৪৪ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। প্রতিবছর দেশে যে পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তার ১০ থেকে ২০ গুণ প্রবাসীরা পাঠায়। ২০২২ সালে রেমিট্যান্স থেকে বাংলাদেশের আয় করেছে ২১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই অগ্রগতি যে কয়টি খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রবাসীদের আয় বা তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স তার মধ্যে অন্যতম। দেশের মোট জিডিপিতে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আর এর অংশীদার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও। কারণ তাদের হাত ধরে প্রবাসীরা বিদেশে যাচ্ছে।

সংবাদ : প্রবাসে নারী কর্মীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা প্রায় শোনা যায়, এ ব্যাপারে আপনারা কি ধরনের ভূমিকা নেন ?

হায়দার চৌধুরী : প্রবাসে কোথাও নারী নির্যাতনের ঘটনা জানার পরে সেখানে আমরা যোগযোগ করি। নারীদের অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তবে দালালের খপ্পরে পড়ে গেলে সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে এখন নারীকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা সচেতন থাকি। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে।

সংবাদ : প্রবাসীরা বাংলাদেশে আসার পরে এয়ারপোর্টে অনেক হয়রানির শিকার হয়, এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কি?

হায়দার চৌধুরী : এয়ারপোর্টের হয়রানির ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশন ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে মিটিং করে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অনেক মিটিং করেছি। দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা যাতে এয়ারপোর্টে এসে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হতে হয়। এছাড়া মালপত্র হারানো যায়। সেই ব্যাপারেও সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। তবে সরকার ইয়ারপোর্টে এখন আগের চেয়ে নজরদারি বাড়িয়েছে। আশাকরি সামনে এই সমস্যা থাকবে না।

ছবি

দেশে মোটরসাইকেল বিক্রি বেড়েছে

ছবি

বাজার সম্প্রসারণে আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে জোর ব্যবসায়ীদের

নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি

অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে ‘ফিকশন’ পাওয়া গেছে: গভর্নর

ছবি

আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার, কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ ব্যাংক

স্টার্টআপ তহবিল: বয়সের ঊর্ধ্বসীমা উঠে গেল

হাউজ লোন ও ক্রেডিট কার্ড ঋণের সীমা বাড়ছে

সরকারি দফতরে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ করা হলো

বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ

ছবি

চীনে বিডা’র অফিস খোলার পরিকল্পনা চলছে: আশিক চৌধুরী

দুই বাণিজ্য সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগ

ছবি

গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ

ছবি

আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক নয়, সরকারের নিজস্ব উদ্যোগে সংস্কার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

সততা-দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলে কোনো ভয় নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান

শেয়ারবাজারে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন

জুলাইয়ের ৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৮১২৫ কোটি টাকা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি

জুলাই হতাহতদের সহায়তায় ২৫ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

বাণিজ্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ

ছবি

বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ

ছবি

আকু দায় মিটিয়ে রিজার্ভ ২৪ বিলিয়নের ঘরে

ছবি

ডিএসইতে লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা ছাড়ালো

৬ মাসের কম সময়ে আইপিও প্রক্রিয়া শেষ করা হবে: ডিএসই চেয়ারম্যান

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভিশন সংরক্ষণে নতুন নির্দেশনা

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ

ছবি

ফুডির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলো স্কিটো

ছবি

বাজারে আসছে নতুন স্মার্টফোন ওয়ানপ্লাস নর্ড ৫ সিরিজ

ছবি

বাংলাদেশসহ ১৪ দেশে নতুন শুল্কের সময়সীমা ‘চূড়ান্ত নয়’ আলোচনার দরজা খোলা

ছবি

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

ছবি

বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে, ভারত ছয় নম্বরে

পাঁচ কার্যদিবসে বিদেশি ও প্রবাসী বিও হিসাব কমেছে প্রায় পাঁচশ’

সূচকের উত্থানে সপ্তাহ শুরু, লেনদেন ৫৭৩ কোটি

ছবি

ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন আদিল চৌধুরী

ছবি

খাদ্যপণ্যের দাম কমায় স্বস্তি, জুনে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৮.৪৮%

২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে গড় ব্যয় ৩০ পয়সা

রিটার্ন জমায় যেসব খাতে মিলবে করছাড়

tab

অর্থ-বাণিজ্য

রেমিট্যান্সে হুন্ডি বন্ধ করতে হলে ব্যাংকিং সেবা আরও সহজ করতে হবে : বায়রা মহাসচিব

রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি প্রবাসীদের আয়। ১৯৭৬ সালে মাত্র ২৪ লাখ ডলার বা প্রায় ৩৬ কোটি টাকার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। এখন মাসে গড়ে ১৭০ কোটি থেকে ২০০ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসছে। প্রবাসীদের আয় রির্জাভ বিদেশী মুদ্রা মজুদের বড় একটি অংশ। বিএমইটি-র হিসাবে ১৯৭৬ সাল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০ জন। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ১১ লাখ ৬৬ হাজার ১৭৬ জন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ লাখ ২৫ হাজার ৮৩৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন যা একটি রেকর্ড। বিদেশে কাজের জন্য দেশের মানুষ যে সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাচ্ছেন তাদের সংগঠন হচ্ছে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি’-বায়রা। বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে প্রবাসীদের সার্বিক বিষয়ে নিয়ে কথা বলেছেন সংবাদ’এর অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক রমজান আলী।

সংবাদ : সম্প্রতি ওমানের ভিসা বন্ধ হয়েছে, এর কোন প্রভাব শ্রমবাজারে পড়বে কী ?

আলী হায়দার চৌধুরী : এতে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। পরে এটি আবারও চালু হবে। অবৈধের সংখ্যা যখন মাত্রাধিক হয়ে যায় তখন একটা নিরাপত্তা হুমকির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন ওই দেশের নাগরিককে হাইরিস্ক ক্যাটাগরিতে ফেলে ভিসা স্থগিত করে। এছাড়া ওমানের জনসংখ্যা ৫০ লাখের মতো। ওমানে ২০ লাখের মতো প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা সাত লাখের বেশি। এই সাত লাখ লোক ঠিক মতো কাজ করতে পারলে অর্থনীতিতে কোন প্রভাব পড়বে না।

সংবাদ : প্রবাসীরা বিদেশে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়, এব্যাপারে আপনাদের দায়িত্ব কী ?

হায়দার চৌধুরী : দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেকই বিদেশে পাড়ি দেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে গিয়ে তারা কাজ পান না। বরং অনেক সময় পাচারেরও শিকার হন। এছাড়া অনেকই দালালের খপ্পরে পড়ে ফ্রি ভিসার নামে বাইরে যান। আসলে ফ্রি ভিসা বলতে কোন ভিসা নেই। আর দালালদের খপ্পরে পড়ে এ ধরনের ভিসায় গেলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। যদি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কেউ হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়। দালালদের খপ্পরে পড়ে গেলে তার কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় না। তাদের ধরার কোন পথ থাকে না।

সংবাদ : রেকর্ড পরিমাণ লোক প্রবাসে যাচ্ছে কিন্তু সেই পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসীদের আয় আসছে না?

হায়দার চৌধুরী : হুন্ডির কারণে রেমিট্যান্স বাড়ছে না। হুন্ডিতে সহজে প্রবাসীরা তাদের আয় পাঠাতে পারে। ব্যাংকের নানা জটিলতা কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে না। ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে দীর্ঘ সময় লাগে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া অনেক সময় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে গেলে একদিন ছুটি নিতে হয়। আসলে প্রবাসীদের সেই সময় নেই। তাই হুন্ডিতে প্রবাসীরা রুমে বসে টাকা পাঠাতে পারে। তাদের কোথাও যেতে হয় না। তাই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আনতে গেলে প্রবাসীদের জন্য আরো সহজ কোন উপায় লেনদেন চালু করতে হবে। যাতে হুন্ডির মতো সহজে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে। তা না হলে হুন্ডি বন্ধ করা যাবে না। হুন্ডি বন্ধ করতে হলে ব্যাংকিং সেবার মান আরওবাড়াতে হবে। দূর করতে হবে নানা জটিলতা। তাহলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়বে। অন্যথায় কোন কাজ হবে না। গ্রামের অনেক লোক বিদেশে থাকেন। তারা অনেক বিষয়েই জানেন না, বুঝেন কম। অনেকের পড়ালেখা নেই। গ্রামের বাড়ি থেকে ব্যাংকের দূরত্ব অনেক। তারা হুন্ডিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

সংবাদ : দেশে অর্থনীতিতে আপনাদের ভূমিকা কী ?

হায়দার চৌধুরী : ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ৪৭ বছরে প্রবাসীরা দেশকে অনেক এগিয়ে নিয়েছে। ১৯৭১ সালে আমাদের রিজার্ভ ছিল শূন্যের কোঠায়। ২০২১ এসে রির্জাভ দাঁড়িয়েছিল ৪৪ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। প্রতিবছর দেশে যে পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তার ১০ থেকে ২০ গুণ প্রবাসীরা পাঠায়। ২০২২ সালে রেমিট্যান্স থেকে বাংলাদেশের আয় করেছে ২১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই অগ্রগতি যে কয়টি খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রবাসীদের আয় বা তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স তার মধ্যে অন্যতম। দেশের মোট জিডিপিতে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আর এর অংশীদার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও। কারণ তাদের হাত ধরে প্রবাসীরা বিদেশে যাচ্ছে।

সংবাদ : প্রবাসে নারী কর্মীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা প্রায় শোনা যায়, এ ব্যাপারে আপনারা কি ধরনের ভূমিকা নেন ?

হায়দার চৌধুরী : প্রবাসে কোথাও নারী নির্যাতনের ঘটনা জানার পরে সেখানে আমরা যোগযোগ করি। নারীদের অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তবে দালালের খপ্পরে পড়ে গেলে সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে এখন নারীকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা সচেতন থাকি। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে।

সংবাদ : প্রবাসীরা বাংলাদেশে আসার পরে এয়ারপোর্টে অনেক হয়রানির শিকার হয়, এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কি?

হায়দার চৌধুরী : এয়ারপোর্টের হয়রানির ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশন ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে মিটিং করে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অনেক মিটিং করেছি। দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা যাতে এয়ারপোর্টে এসে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হতে হয়। এছাড়া মালপত্র হারানো যায়। সেই ব্যাপারেও সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। তবে সরকার ইয়ারপোর্টে এখন আগের চেয়ে নজরদারি বাড়িয়েছে। আশাকরি সামনে এই সমস্যা থাকবে না।

back to top