alt

অর্থ-বাণিজ্য

নতুন বিদেশী ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ শোধ করছে সরকার : সিপিডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৪

পুরনো ঋণ পরিশোধের জন্য সরকার নতুন করে ঋণ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের ঋণ ও ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে। সরকারের অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায় ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে। কোভিড বা ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, ভিন্ন কারণে সরকারের ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

গতকাল ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ঢাকার লেকশোর হোটেলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণ-জিডিপি অনুপাত ২১ দশমিক ৬ শতাংশ তুলনামূলকভাবে বেশি নয়। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরও কঠোর হচ্ছে। বিশেষত জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতার দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে। অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

সিপিডির ঢাকায় বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহে ঋণের বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। দায় পরিশোধের পরিসংখ্যান, সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের ফলাফলের কারণে বিষয়গুলো এসেছে। নীতি নির্ধারকদের অস্বীকারের মনোভাব সর্বদা দেখি, সেটি আরও প্রকটভাবে প্রকাশ পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নীতি নির্ধারকেরা প্রায়ই বলেন, অর্থনীতিবিদেরা ঠিকমত বিশ্লেষণ করতে পারেন না, ভবিষ্যতও বলতে পারেন না। উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা পেশাদার অর্থনীতিবিদদের নিয়ে প্রায়শই শ্লেষাত্মক ও ব্যাঙ্গাত্মক কথা বলেন। আজ থেকে দুই বছর আগে সিপিডিতে বসেই আমি বলেছিলাম, ২০২৪ সাল আমাদের জন্য কঠিন হবে। সেখানে দায়-দেনা পরিশোধে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। ২০২৫ সাল থেকে ঋণ পরিশোধে অস্বস্তি শুরু হবে। ২০২৬ সালে এটা আরও বাড়বে। ঋণের হিসাবে গাফিলতি আছে। এ হিসাবে এখনো অনেক কিছু বিবেচনায় নেয়া হয়নি।’

বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘যদি ১০০ শতাংশ ঋণ নিয়ে থাকে তার ৮০ শতাংশ সরকারের আর ২০ শতাংশ ব্যক্তি খাতের। ব্যক্তি খাতের ঋণের অবস্থা কী, কেউ কি বলতে পারবেন। এ টাকা কেউ কেউ বিদেশে নিয়ে গেছেন। কেউ ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করেছেন। এ হিসাবটা কম গুরুত্বপূর্ণ না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার তো দেশের ভেতরেও ঋণ নিচ্ছে। সেই ঋণের পরিমাণ কত? যে ঋণ আমরা বিদেশ থেকে নিই, তার দ্বিগুণ আমরা দেশ থেকে নিই। সরকারের এখন যে ঋণের পরিমাণ তার দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ ঋণ, সেটিই বড় বিষয়। সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতি বুঝতে হলে বৈদেশিক ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণও দেখতে হবে। বৈদেশিক ঋণের কারণে মাথাপিছু দায়-দেনা যদি ৩১০ ডলার হয়, অভ্যন্তরীণ ঋণ যোগ করলে সেটা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৮৫০ ডলার।’

আমাদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ পরিশোধের ক্যাপাসিটি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, রেভিনিউ বাজেট থেকে উন্নয়ন প্রকল্পকে অর্থায়ন করতে একটা পয়সাও দিতে পারে না। আমরা প্রতারণামূলক বাস্তবতা বা ইউলিসিভ রিয়েলিটিতে আছি।’

অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কা স্বল্প মেয়াদি ঋণের ফাঁদে পড়েছিল, বাংলাদেশেও এমন ঋণ বাড়ছে বলে জানান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ‘দেশের মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বিদেশি ঋণে করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা স্বল্পকালীন ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। রপ্তানি কমে আসায় এসব ঋণ যথাযথভাবে পরিশোধ করতে পারেনি দেশটি। আফ্রিকার কিছু দেশেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ তেমন অবস্থানে নেই। কিন্তু দেশে স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।’

ছবি

আইএসডিবি থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন

ছবি

বিটিএমএ’র সেক্রেটারী জেনারেল হলেন জাকির হোসেন

ছবি

ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ আইএমএফের

নিয়ম মেনে সময় নিয়েই হবে ব্যাংক একীভূতকরণ : এবিবি চেয়ারম্যান

ছবি

দু’টি বিদেশি এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে মে মাসে

ছবি

আবারও বিএসইসি চেয়ারম্যান হলেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

ছবি

টানা পতনে বাজার মূলধন কমলো সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা

ছবি

সবজির বাজার অপরিবর্তিত, তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার দাবি ডিআরইউর

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা স্বেচ্ছাচারিতামূলক আচরণ: টিআইবি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রন আনতে বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো সঠিক : আইএমএফ

ছবি

বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন পাঁচ ও ভারত নয়ে

ছবি

বিআইসিএমের উদ্যোগে হবে পুঁজিবাজার সম্মেলন

ছবি

যমুনা ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফের মধ্যে চুক্তি

ছবি

সোনার দাম আরও কমলো

ছবি

ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি পেলেন মোঃ নুরুল ইসলাম মজুমদার

ছবি

রিজার্ভ কমায় উদ্বেগ ও আতঙ্ক বাড়ছে

ছবি

তড়িঘড়ি ব্যাংক একীভূতকরণ খেলাপিদের দায়মুক্তির নতুন মুখোশ: টিআইবি

ছবি

হঠাৎ ঝলকের পর আবার পতন, বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

পদত্যাগ করেছেন পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ

ঈদের পর শেয়ারবাজার কিছুটা ভালো হতে শুরু করেছে

ছবি

দিনাজপুরে বাঁশ ফুলের চাল তৈরি

ছবি

অভিনেতা ওয়ালিউল হক রুমি মারা গেছেন

ছবি

বিআইপিডি’র অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করছে : এফএফআইএল

ছবি

চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধপরিকর

ছবি

রাজধানীতে ঈদের পরও চড়া সবজির বাজার

ছবি

সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি দাম বাড়ল ৪ টাকা

ছবি

সূচকের পতনে পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন

ছবি

ব্যাংক এশিয়া কিনবে পাকিস্তানি ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশ অংশ

ছবি

এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৭%: আইএমএফ

ছবি

একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় থাকা ব্যাংক চাইলে সরে যেতে পারবে, তবে শর্তসাপেক্ষে : কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি

পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : প্রতিমন্ত্রী

ছবি

একীভূত ব্যাংক : পাঁচটির বাইরে আপাতত আর না

ছবি

ঈদে মানুষের মাঝে স্বস্তি দেখেছি : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিশ্ব ব্যাংকের চেয়ে বেশি দেখছে এডিবি

tab

অর্থ-বাণিজ্য

নতুন বিদেশী ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ শোধ করছে সরকার : সিপিডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৪

পুরনো ঋণ পরিশোধের জন্য সরকার নতুন করে ঋণ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের ঋণ ও ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে। সরকারের অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায় ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে। কোভিড বা ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, ভিন্ন কারণে সরকারের ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

গতকাল ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ঢাকার লেকশোর হোটেলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণ-জিডিপি অনুপাত ২১ দশমিক ৬ শতাংশ তুলনামূলকভাবে বেশি নয়। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরও কঠোর হচ্ছে। বিশেষত জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতার দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে। অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

সিপিডির ঢাকায় বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহে ঋণের বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। দায় পরিশোধের পরিসংখ্যান, সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের ফলাফলের কারণে বিষয়গুলো এসেছে। নীতি নির্ধারকদের অস্বীকারের মনোভাব সর্বদা দেখি, সেটি আরও প্রকটভাবে প্রকাশ পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নীতি নির্ধারকেরা প্রায়ই বলেন, অর্থনীতিবিদেরা ঠিকমত বিশ্লেষণ করতে পারেন না, ভবিষ্যতও বলতে পারেন না। উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা পেশাদার অর্থনীতিবিদদের নিয়ে প্রায়শই শ্লেষাত্মক ও ব্যাঙ্গাত্মক কথা বলেন। আজ থেকে দুই বছর আগে সিপিডিতে বসেই আমি বলেছিলাম, ২০২৪ সাল আমাদের জন্য কঠিন হবে। সেখানে দায়-দেনা পরিশোধে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। ২০২৫ সাল থেকে ঋণ পরিশোধে অস্বস্তি শুরু হবে। ২০২৬ সালে এটা আরও বাড়বে। ঋণের হিসাবে গাফিলতি আছে। এ হিসাবে এখনো অনেক কিছু বিবেচনায় নেয়া হয়নি।’

বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘যদি ১০০ শতাংশ ঋণ নিয়ে থাকে তার ৮০ শতাংশ সরকারের আর ২০ শতাংশ ব্যক্তি খাতের। ব্যক্তি খাতের ঋণের অবস্থা কী, কেউ কি বলতে পারবেন। এ টাকা কেউ কেউ বিদেশে নিয়ে গেছেন। কেউ ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করেছেন। এ হিসাবটা কম গুরুত্বপূর্ণ না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার তো দেশের ভেতরেও ঋণ নিচ্ছে। সেই ঋণের পরিমাণ কত? যে ঋণ আমরা বিদেশ থেকে নিই, তার দ্বিগুণ আমরা দেশ থেকে নিই। সরকারের এখন যে ঋণের পরিমাণ তার দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ ঋণ, সেটিই বড় বিষয়। সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতি বুঝতে হলে বৈদেশিক ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণও দেখতে হবে। বৈদেশিক ঋণের কারণে মাথাপিছু দায়-দেনা যদি ৩১০ ডলার হয়, অভ্যন্তরীণ ঋণ যোগ করলে সেটা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৮৫০ ডলার।’

আমাদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ পরিশোধের ক্যাপাসিটি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, রেভিনিউ বাজেট থেকে উন্নয়ন প্রকল্পকে অর্থায়ন করতে একটা পয়সাও দিতে পারে না। আমরা প্রতারণামূলক বাস্তবতা বা ইউলিসিভ রিয়েলিটিতে আছি।’

অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কা স্বল্প মেয়াদি ঋণের ফাঁদে পড়েছিল, বাংলাদেশেও এমন ঋণ বাড়ছে বলে জানান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ‘দেশের মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বিদেশি ঋণে করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা স্বল্পকালীন ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। রপ্তানি কমে আসায় এসব ঋণ যথাযথভাবে পরিশোধ করতে পারেনি দেশটি। আফ্রিকার কিছু দেশেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ তেমন অবস্থানে নেই। কিন্তু দেশে স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।’

back to top