করপোরেট কর নতুন করে আড়াই শতাংশ কমতে পারে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এই হার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির জন্য কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। তবে শর্ত সাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়া হবে। শর্তের মধ্যে থাকবে একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকা এবং বার্ষিক সর্বমোট ৩৬ লাখ টাকার বেশি খরচ ও বিনিয়োগ হলে তা ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে। বর্তমানে দেশে এ ধরনের শর্ত পরিপালনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে করপোরেট করহার সাড়ে ২৭ শতাংশ।
আগামী ৬ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার কথা রয়েছে। সেখানে করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব উপস্থাপনের কথা রয়েছে। তবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর কমবে না বলে জানা গেছে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ।
গত মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী বাজেট নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আগামী বাজেটে এনবিআরের পক্ষ থেকে শুল্ক-করসংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়। বৈঠক সূত্রে করপোরেট কর কমানোর এ উদ্যোগের বিষয় জানা গেছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে চারবার করপোরেট কর কমানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন ধরে করপোরেট কর কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
বৈঠকের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে টকটাইম ও ইন্টারনেট সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। এটি আরও ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। এর ফলে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়বে। এর আগে ২০১৫-১৬ সালের বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলার ওপর প্রথমবারের মতো সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। প্রথম দফায় ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পরে তিন দফায় বাড়িয়ে তা ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল। অন্যদিকে ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হতে পারে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। সম্পূরক শুল্ক ছাড়াও মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর ভ্যাট ও সারচার্জ আছে। জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে এই দুটি সেবায় সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।
এদিকে সংসদ সদস্যদের বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানির সুবিধা উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়েও এনবিআরের পক্ষ থেকে খসড়া প্রস্তাব তুলে ধরা হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে। আগামী বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানির সময় ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছে এনবিআর। বৈঠকের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সবুজসংকেত মিলেছে। তবে সম্পূরক শুল্ক মওকুফ থাকছে। বর্তমানে গাড়ির ইঞ্জিনের সিসিভেদে ৪৫ থেকে ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়। প্রায় ৩৬ বছর ধরে এই সুবিধা পেয়ে আসছেন সংসদ সদস্যরা।
এদিকে শেয়ারবাজারের মূলধনি আয় বা ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করারোপের পরিকল্পনা করছে এনবিআর। বার্ষিক ৪০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন হলে সে ক্ষেত্রে এ কর বসতে পারে। তবে কত হারে কর বসানো হবে, তা জানা যায়নি। গতকালের বৈঠকে বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হয়। বর্তমানে শেয়ারবাজারের মূলধনি আয়ের ওপর কোনো কর নেই।
বর্তমানে ২৭টি খাতের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা কর অবকাশসুবিধা পায়। এই কর অবকাশসুবিধা আগামী ৩০ জুন শেষ হয়ে যাচ্ছে। কর অবকাশসুবিধা পাওয়া এই তালিকা ছোট করে ১৫টি খাতে নামিয়ে আনা হতে পারে। মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তে এই কর অবকাশসুবিধা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এ ছাড়া অভিন্ন ১৫ শতাংশ ভ্যাট হার প্রবর্তনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। এনবিআরের পরিকল্পনা অনুসারে, প্রাথমিকভাবে ১৫-২০টি পণ্য এই তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব ভ্যাটযোগ্য পণ্যকে ওই তালিকায় যুক্ত করা হবে।
ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আগামী বাজেটে নতুন করে নাও বাড়ানো হতে পারে। আগের মতোই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা বহাল রাখতে চায় এনবিআর। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ হারে করের একটি স্তর রাখা হতে পারে। এর মানে হলো, বর্তমানে সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ। এরপর আরেকটি করহার ৩০ শতাংশ করা হবে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে করের বোঝা না বাড়িয়ে করের জাল বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে এমন পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর না বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ শুল্ক, কর ও ভ্যাট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে এনবিআরকে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে।
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
করপোরেট কর নতুন করে আড়াই শতাংশ কমতে পারে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এই হার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির জন্য কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। তবে শর্ত সাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়া হবে। শর্তের মধ্যে থাকবে একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকা এবং বার্ষিক সর্বমোট ৩৬ লাখ টাকার বেশি খরচ ও বিনিয়োগ হলে তা ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে। বর্তমানে দেশে এ ধরনের শর্ত পরিপালনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে করপোরেট করহার সাড়ে ২৭ শতাংশ।
আগামী ৬ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার কথা রয়েছে। সেখানে করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব উপস্থাপনের কথা রয়েছে। তবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর কমবে না বলে জানা গেছে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ।
গত মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী বাজেট নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আগামী বাজেটে এনবিআরের পক্ষ থেকে শুল্ক-করসংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়। বৈঠক সূত্রে করপোরেট কর কমানোর এ উদ্যোগের বিষয় জানা গেছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে চারবার করপোরেট কর কমানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘদিন ধরে করপোরেট কর কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
বৈঠকের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে টকটাইম ও ইন্টারনেট সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। এটি আরও ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। এর ফলে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়বে। এর আগে ২০১৫-১৬ সালের বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলার ওপর প্রথমবারের মতো সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। প্রথম দফায় ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পরে তিন দফায় বাড়িয়ে তা ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল। অন্যদিকে ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হতে পারে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। সম্পূরক শুল্ক ছাড়াও মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর ভ্যাট ও সারচার্জ আছে। জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে এই দুটি সেবায় সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।
এদিকে সংসদ সদস্যদের বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানির সুবিধা উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়েও এনবিআরের পক্ষ থেকে খসড়া প্রস্তাব তুলে ধরা হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে। আগামী বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানির সময় ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছে এনবিআর। বৈঠকের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সবুজসংকেত মিলেছে। তবে সম্পূরক শুল্ক মওকুফ থাকছে। বর্তমানে গাড়ির ইঞ্জিনের সিসিভেদে ৪৫ থেকে ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়। প্রায় ৩৬ বছর ধরে এই সুবিধা পেয়ে আসছেন সংসদ সদস্যরা।
এদিকে শেয়ারবাজারের মূলধনি আয় বা ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করারোপের পরিকল্পনা করছে এনবিআর। বার্ষিক ৪০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন হলে সে ক্ষেত্রে এ কর বসতে পারে। তবে কত হারে কর বসানো হবে, তা জানা যায়নি। গতকালের বৈঠকে বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হয়। বর্তমানে শেয়ারবাজারের মূলধনি আয়ের ওপর কোনো কর নেই।
বর্তমানে ২৭টি খাতের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা কর অবকাশসুবিধা পায়। এই কর অবকাশসুবিধা আগামী ৩০ জুন শেষ হয়ে যাচ্ছে। কর অবকাশসুবিধা পাওয়া এই তালিকা ছোট করে ১৫টি খাতে নামিয়ে আনা হতে পারে। মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তে এই কর অবকাশসুবিধা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এ ছাড়া অভিন্ন ১৫ শতাংশ ভ্যাট হার প্রবর্তনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। এনবিআরের পরিকল্পনা অনুসারে, প্রাথমিকভাবে ১৫-২০টি পণ্য এই তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব ভ্যাটযোগ্য পণ্যকে ওই তালিকায় যুক্ত করা হবে।
ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আগামী বাজেটে নতুন করে নাও বাড়ানো হতে পারে। আগের মতোই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা বহাল রাখতে চায় এনবিআর। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ হারে করের একটি স্তর রাখা হতে পারে। এর মানে হলো, বর্তমানে সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ। এরপর আরেকটি করহার ৩০ শতাংশ করা হবে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে করের বোঝা না বাড়িয়ে করের জাল বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে এমন পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর না বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ শুল্ক, কর ও ভ্যাট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে এনবিআরকে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে।