alt

অর্থ-বাণিজ্য

ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর আহ্বান রিহ্যাবের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ০৯ জুন ২০২৪

ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি না কমালে রিয়েল এস্টেট খাতে ধস নামবে বলে মন্তব্য করেছেন রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

রোববার (৯ জুন) সিরডাপ মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান একটি ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে ৩০ শতাংশের মতো ফি প্রদান করতে হচ্ছে যা কোন দেশেই এত ফি নেই। ফলে কেউ এত ফি দিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন না কমালে এখাতে ধস নেমে আসবে। এতে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব হারাবে। আর যদি ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন কমানো হয়, তাহলে সবাই ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হবে। এতে রাজস্ব আদায়ও বেশি হবে।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে গেইন ট্যাক্স ৮ শতাংশ, স্ট্যাম্প ফি দেড় শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি এক শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ, এমআইটি ৫ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর সাড়ে ৪ শতাংশ মিলিয়ে মোট ২২ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন খরচ। এর সঙ্গে যদি করপোরেট ট্যাক্স যোগ করা হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশনের খরচ হয় ৩০ শতাংশ। এই রেজিস্ট্রেশন খরচ সব মিলিয়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এর আগেও রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোর প্রস্তাব দিয়েছি আমরা।’

সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছে সরকার। ঘোষিত বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ। মূল্যস্ফিতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে প্রথম বার বাজেট পেশ করেন ১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকার। ১৫ বছরের ব্যবধানে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনায় বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় ৭ গুণেরও বেশি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় এবং জেলা শহরকে সুন্দর করে সাজাতে ও পরিকল্পিত নগরায়নে রূপান্তরের পাশাপাশি আবাসন সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। এছাড়া সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে সমগ্র নির্মাণ খাত জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের আবাসন সেক্টর শুধু আবাসনই সরবরাহ করছে না, একই সঙ্গে ৪০ লক্ষ শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল ২ কোটি লোকের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে। সৃষ্টি করছে নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের যা প্রকারান্তরে দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার ২ হাজার কোটি টাকার উপরে রাজস্ব পেয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে সুযোগটি রাখায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। এটি বাস্তব সম্মত ও সময় উপযোগী পদক্ষেপ।’

সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের ভ্যাট কমিশনারেট অধীন ভ্যাট বিভাগ প্রচলিত আইনকে পাশ কাটিয়ে নানাবিধভাবে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের অজ্ঞাতে ব্যাংক থেকে তথ্য নিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে বিদ্যমান আইন না মেনে পাঁচ বছরের বকেয়া ভ্যাট দাবী করছে। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় উক্ত নির্দেশনা অমান্য করে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের অজ্ঞাতে ব্যাংকের তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ডেভেলপারদের অফিসে গিয়ে বিগত ৫ বছরের ভ্যাট দাবি করছে এবং বিগত ৫ বছরের হিসাব চেয়ে খাতা-পত্র-কম্পিউটার জব্দ করছে। এমনিতেই আবাসন খাত নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত।

উপরন্তু ভ্যাট কর্তৃপক্ষের এমন কার্যক্রম আবাসন শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এছাড়া প্রথমবার একটা ফ্ল্যাট কেনার পর দ্বিতীয়বার বিক্রি করলে নাম মাত্র খরচে সেই ফ্ল্যাট রেজিষ্ট্রেশন হওয়ার নিয়ম বিভিন্ন দেশে চালু আছে।

এভাবে সম্পদ হস্তান্তর সহজ হলে মানুষ এখাতে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী হবে। সম্পদ অর্থাৎ ফ্ল্যাট যত হাত ঘুরবে সরকার তত রাজস্ব পাবে। “সেকেন্ডারী মার্কেট” সৃষ্টির সে সুবিধাও বাজেটে রাখা হয়নি। আমরা দাবি জানাই বাজেট চূড়ান্তভাবে পাশ করার আগে এই সুবিধা দেয়া হোক।’

তিনি বলেন, ‘মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের আবাসন সুিবধা সহজলভ্য করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করছি। সরকার এক সময় এই সিঙ্গেল ডিজিট সুদের ঋণ প্রদান ব্যবস্থা চালু করেছিল। তখন অনেক মধ্যবিত্তরা সিঙ্গেল ডিজিট সুদের ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছে।

মধ্যবিত্তের আবাসনের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং আবাসন খাতে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, নিবন্ধন ব্যয়, স্বল্প ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের জন্য হাউজিং লোন সম্পর্কে তেমন কোন আলোচনা নেই। দেশের বৃহত্তর অর্থনীতির স্বার্থে জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা আবাসন খাতকে গতিশীল করার জন্য সরকারের যে ধরনের নীতি সহায়তা দরকার ছিল তা বাজেটে দৃশ্যমান নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি সমূহ সম্পৃক্ত করা হলে এই খাত সরকারের রাজস্ব আয়ে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে এবং ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ঝুঁকি মুক্ত হবে। কারণ নতুন সম্পদ সৃষ্টি প্রবৃদ্ধিকে সরাসরি ধনাত্বক করে। অন্যথায় এ খাতের সঙ্গে যুক্ত সবাই ব্যবসায়ীরা মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখী হবেন, সর্বোপরি দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ইতিপূর্বে আবাসন শিল্পের সবাই সমস্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে থেকেছেন, নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছেন। এই শিল্পের বর্তমান সংকটেও তিনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা, এই খাতের বিনিয়োগকারীদের। আমরা আশাকরি সরকার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবেন। বাজেট পাশের পূর্বে আমাদের প্রস্তাবনা ও দাবিগুলো বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী’র প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানাই।’

ছবি

ইউসিবি ও এসএমই ফাউন্ডেশনের মধ্যে চুক্তি

ছবি

রিয়েলমি ঈদ ক্যাম্পেইন বিজয়ী পেলেন মোটরসাইকেল

ছবি

২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের মার্কেট শেয়ারে ইনফিনিক্সের প্রবৃদ্ধি অর্জন

ছবি

সূচক বেড়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে

বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন দিয়েছে আইএমএফ

ছবি

কক্সবাজার-ময়মনসিংহে প্রিয়শপের হাব চালু

ছবি

১০ মাসে বিদেশি ঋণের সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে জাপান

ছবি

ছাগল কান্ডঃ মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের বোর্ড থেকেও সরানো হয়েছে

ছবি

আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি নিয়ে সংশয়

ছবি

বিশ্বব্যাংক ৯০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে

সব ধরনের সবজিসহ মাছ-মাংসের বাজারও উত্তপ্ত

ছবি

কাঁচা মরিচের কেজি ৪০০ টাকা, বেড়েছে আলু-শসার দাম

বড় ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে চামড়ার দাম কম

ছবি

ধারাবাহিক পতনে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা মূলধন কমল ডিএসইতে

ছবি

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের অফিসিয়াল পার্টনার ভিভো

ছবি

উত্তরাঞ্চলে এগ্রিটেক স্টার্টআপ ‘ফসল’ ও ‘সেফ’ এর ফারমার্স সেন্টার চালু

ছবি

বাংলাদেশে হুয়াওয়ের ওয়াই-ফাই ৭ ব্যবহার উপযোগী অ্যাকসেস পয়েন্ট পণ্য উন্মোচন

ছবি

এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ৫৪ কোটি ডলার

বাজেটের অর্থায়ন নিয়ে সংশয় অর্থনীতিবিদদের

বুড়িমারী স্থলবন্দরে ৮ দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ

ছবি

ইনফিনিক্স স্মার্টফোন কিনে বাইক জিতলেন গাজীপুরের রাসেল

ছবি

ইউসিবি এখন এসএমই খাতে বেশি জোর দিচ্ছে : এমডি আরিফ কাদরী

ছবি

চট্টগ্রাম ও সিলেটের সেরা পাঠাও হিরোরা পুরস্কৃত

ব্যাংকারদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ‘শিথিল’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন হার প্রায় শতভাগ

ছবি

নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা না গেলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না: প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

নাটোরের সিংড়ার পশুরহাটে ক্যাশলেস লেনদেনে নগদ

হজযাত্রীদের বিনামূল্যে ২৪ ঘণ্টা জরুরি ডাক্তারের পরামর্শ সেবা প্রদান করবে মেটলাইফ

ছবি

বাজেটে রপ্তানি খাতে প্রস্তাবনার প্রতিফলন ঘটেনি : ইএবি

ছবি

শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক পতন, ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক

ছবি

বিক্রয় বিরাট হাট ২০২৪ ক্যাম্পেইন শুরু

ছবি

টেকসই উন্নয়নের জন্য টেকসই আর্থিক নীতির তাগিদ দিয়েছে ফিকি

ছবি

দেশ ‘অনৈতিক’ অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে ‘যাচ্ছে’

ছবি

প্রস্তাবিত বাজেট বে-নজির বাজেট : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ছবি

খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখছে ‘কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সেচ উন্নয়ন প্রকল্প’

ছবি

বাজেটের পর প্রথমদিনেই শেয়ারবাজারে বড় পতন

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর আহ্বান রিহ্যাবের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪

ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি না কমালে রিয়েল এস্টেট খাতে ধস নামবে বলে মন্তব্য করেছেন রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

রোববার (৯ জুন) সিরডাপ মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান একটি ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে ৩০ শতাংশের মতো ফি প্রদান করতে হচ্ছে যা কোন দেশেই এত ফি নেই। ফলে কেউ এত ফি দিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন না কমালে এখাতে ধস নেমে আসবে। এতে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব হারাবে। আর যদি ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন কমানো হয়, তাহলে সবাই ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হবে। এতে রাজস্ব আদায়ও বেশি হবে।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে গেইন ট্যাক্স ৮ শতাংশ, স্ট্যাম্প ফি দেড় শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি এক শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ, এমআইটি ৫ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর সাড়ে ৪ শতাংশ মিলিয়ে মোট ২২ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন খরচ। এর সঙ্গে যদি করপোরেট ট্যাক্স যোগ করা হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশনের খরচ হয় ৩০ শতাংশ। এই রেজিস্ট্রেশন খরচ সব মিলিয়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এর আগেও রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোর প্রস্তাব দিয়েছি আমরা।’

সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছে সরকার। ঘোষিত বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ। মূল্যস্ফিতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে প্রথম বার বাজেট পেশ করেন ১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকার। ১৫ বছরের ব্যবধানে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনায় বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় ৭ গুণেরও বেশি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় এবং জেলা শহরকে সুন্দর করে সাজাতে ও পরিকল্পিত নগরায়নে রূপান্তরের পাশাপাশি আবাসন সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। এছাড়া সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে সমগ্র নির্মাণ খাত জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের আবাসন সেক্টর শুধু আবাসনই সরবরাহ করছে না, একই সঙ্গে ৪০ লক্ষ শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল ২ কোটি লোকের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে। সৃষ্টি করছে নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের যা প্রকারান্তরে দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার ২ হাজার কোটি টাকার উপরে রাজস্ব পেয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে সুযোগটি রাখায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। এটি বাস্তব সম্মত ও সময় উপযোগী পদক্ষেপ।’

সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের ভ্যাট কমিশনারেট অধীন ভ্যাট বিভাগ প্রচলিত আইনকে পাশ কাটিয়ে নানাবিধভাবে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের অজ্ঞাতে ব্যাংক থেকে তথ্য নিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে বিদ্যমান আইন না মেনে পাঁচ বছরের বকেয়া ভ্যাট দাবী করছে। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় উক্ত নির্দেশনা অমান্য করে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের অজ্ঞাতে ব্যাংকের তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ডেভেলপারদের অফিসে গিয়ে বিগত ৫ বছরের ভ্যাট দাবি করছে এবং বিগত ৫ বছরের হিসাব চেয়ে খাতা-পত্র-কম্পিউটার জব্দ করছে। এমনিতেই আবাসন খাত নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত।

উপরন্তু ভ্যাট কর্তৃপক্ষের এমন কার্যক্রম আবাসন শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এছাড়া প্রথমবার একটা ফ্ল্যাট কেনার পর দ্বিতীয়বার বিক্রি করলে নাম মাত্র খরচে সেই ফ্ল্যাট রেজিষ্ট্রেশন হওয়ার নিয়ম বিভিন্ন দেশে চালু আছে।

এভাবে সম্পদ হস্তান্তর সহজ হলে মানুষ এখাতে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী হবে। সম্পদ অর্থাৎ ফ্ল্যাট যত হাত ঘুরবে সরকার তত রাজস্ব পাবে। “সেকেন্ডারী মার্কেট” সৃষ্টির সে সুবিধাও বাজেটে রাখা হয়নি। আমরা দাবি জানাই বাজেট চূড়ান্তভাবে পাশ করার আগে এই সুবিধা দেয়া হোক।’

তিনি বলেন, ‘মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের আবাসন সুিবধা সহজলভ্য করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করছি। সরকার এক সময় এই সিঙ্গেল ডিজিট সুদের ঋণ প্রদান ব্যবস্থা চালু করেছিল। তখন অনেক মধ্যবিত্তরা সিঙ্গেল ডিজিট সুদের ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছে।

মধ্যবিত্তের আবাসনের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং আবাসন খাতে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, নিবন্ধন ব্যয়, স্বল্প ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের জন্য হাউজিং লোন সম্পর্কে তেমন কোন আলোচনা নেই। দেশের বৃহত্তর অর্থনীতির স্বার্থে জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা আবাসন খাতকে গতিশীল করার জন্য সরকারের যে ধরনের নীতি সহায়তা দরকার ছিল তা বাজেটে দৃশ্যমান নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি সমূহ সম্পৃক্ত করা হলে এই খাত সরকারের রাজস্ব আয়ে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে এবং ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ঝুঁকি মুক্ত হবে। কারণ নতুন সম্পদ সৃষ্টি প্রবৃদ্ধিকে সরাসরি ধনাত্বক করে। অন্যথায় এ খাতের সঙ্গে যুক্ত সবাই ব্যবসায়ীরা মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখী হবেন, সর্বোপরি দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ইতিপূর্বে আবাসন শিল্পের সবাই সমস্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে থেকেছেন, নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছেন। এই শিল্পের বর্তমান সংকটেও তিনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা, এই খাতের বিনিয়োগকারীদের। আমরা আশাকরি সরকার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবেন। বাজেট পাশের পূর্বে আমাদের প্রস্তাবনা ও দাবিগুলো বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী’র প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানাই।’

back to top